১৬ পৃষ্ঠায় | পর্ব – ১৬

5 Min Read

চোখের কোণার থেকে অশ্রুজল গড়িয়ে পড়তে লাগল কান্না ভেজা ভাঙা কন্ঠে বলল,,
“আপনি যদি এখনি না আসেন তাহলে আমি এই অন্ধকারে সিঁড়ি থেকে নেমে নিজের ক্ষতি করে ফেলবো”
আবারো সেই নিরবতা। নিনি অধৈর্য হয়ে রাগে শব্দ করে উঠলো। তারপর সিঁড়ি মধ্যে এক পা বাড়াতেই হঠাৎ কে যেন তাকে কোলে তুলে নিল। হচকচিয়ে বুক ধড়ফড় করে উঠে। শরীরের ঘ্রাণের মাধ্যমে বুঝতে পারলো এটা কে! এনোন কটাক্ষ গলায় বলল,,
“এই আঁধারে সিঁড়ি থেকে নামছো কেন গাধা!?”
নিনি হা হয়ে গেল। অনর্থক তাকে বকছে। সেও ঝাড়ি গলায় বলল,,
“তো এই অন্ধকারে আপনি লুকে আছেন কেন?”
“ওয়াট ইউ মিন! আমি লুকতে যাবো কেন?” অবাক হয়ে বলল এনোন।
“কতক্ষণ যাবত আপনাকে ডেকে চলছি আর আপনি দেখি এক ফুটো শব্দও করলেন না!”
এতক্ষণে পুরো ব্যাপার বুঝলো এনোন বলল,,
“পকেটে মোবাইল আছে সেটা বের করো।”
“প্রথমে আমার কথার উত্তর দেন” রেগে বলে নিনি।
“দিব, মোবাইল বের করে ফ্লাশলাইট অন করো কিছু দেখা যাচ্ছে না।”
নিনি হাত বাড়িয়ে উল্টো হাতে মোবাইল বের করলো তারপর ফ্লাশলাইট অন করে ‌সামনে ধরে বলল,,
“এবার বলেন”
রুমের দিকে হাঁটতে লাগলো এনোন। নিনি এখনো তার দিকে চেয়ে আছে উত্তরের অপেক্ষায়। তাকে খাটে বসিয়ে হয়রানি সুরে বলল,,
“ছাদে গিয়েছিলাম আমি, ইম্পোটেন্ট কল আসছিল তাই, আর তুমি সিঁড়ির কাছে দাঁড়িয়ে কি করছিলে?”
বুঝতে পেরে নিজেকে নিজে একদফা গালি মারলো নিনি। ভুল বোঝাবুঝি তে কি হয়ে গেল! আমতা আমতা করে বলল,,
“আমি ভাবছিলাম আপনি আমাকে সারপ্রাইজ দিচ্ছেন।”
হাসলো এনোন। তার এখনো বাচ্চামো ভাব রয়ে গেছে। অধিক চেয়ে অধিক কিছু ভেবে বসে সে। নিনি বলল,,
“পুরো ঘর অন্ধকার হয়ে আছে কেন?”
“লোডসেডিং হয়েছে!” বিরক্ত হয়ে বলল এনোন। নিনি আর কিছু না বলে ওহ বলে সুর টানলো। ফ্লাশলাইট তার মুখের সামনে ধরে বলল,,
“ঘেমেটেমে একাকার অবস্থা হয়ে আছো তুমি, এক কাজ করো গিয়ে গোসল করে নাও ফ্রেশ লাগবে।”
কিছু একটা ভাবলো নিনি তারপর বলল,,
“আপনিও আসেন”
“ওয়াট!” অবাক হয়ে চমকে বলল এনোন। থতমত খেয়ে গেল নিনি। কি বলতে গিয়ে কি বলে ফেলল!
কথার লাজ ঠিক করে বলল,,
“না মানে..আমি বললাম কি আপনি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকেন নাহলে আমার ভয় করবে।”
বাঁকা মুচকি হাসলো এনোন। নিনি কাপড় নিয়ে আস্তে আস্তে বাথরুমে চলে গেল।
কিছুক্ষণ পরেই বেরিয়ে আসলো নিনি। সাদা রঙের থ্রি-পিস পড়ে। এনোন ও ফ্রেশ হয়ে আসতেই বলল,,
“শুয়ে পড়ো”
“উঁহু, ঘুম আসছে না” পিটপিট করে তাকিয়ে বলল নিনি। ভ্রু কুঁচকালো এনোন মাথা মুছতে মুছতে বলল,,
“তো জেগে থাকবা নাকি!”
“হুম”
এক পলক তাকালো এনোন তারপর বারান্দায় গিয়ে তোয়াল রেখে এসে বলল,,
“জেগে না থেকে ঘুমিয়ে পড়ো আর কথা বাড়িও না”
“এই মরা গরমে ঘুম আসবে বলে আপনার মনে হয়?” চোখ মুখ বিরক্তিতে কুঁচকে বলল নিনি। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল এনোন। মোবাইলের ফ্লাশলাইট আবারো অন করে বলল,,
“আমি আসছি” বলে সে পা বাড়াতে নিলে হুট করে লাইট জ্বলে উঠলো পুরো রুম জুড়ে। নিনি ভয়ে কেঁপে উঠলো। এনোন মোবাইল লাইট অফ করে তার দিকে এক পলক তাকিয়ে বলল,,
“এবার ঘুমিয়ে পড়ো”
নিনি বিরক্ত হয়ে শব্দ বের করে বলল,,
“উফফ, এতো ঘুম ঘুম করছেন কেন আপনি! ঘুম আসছে না আমার, ছাদে যাবো।”
এনোন কপাল কুঁচকালো বলল,, No.
“Yes!” জিদ নিয়ে বলে নিনি।
“দেখো এ অবস্থায় ছাদে যাওয়া ভালো হবে না সো ঘুমিয়ে পড়ো রাত গভীর হয়ছে।” ঠান্ডা মাথায় বলল এনোন। নিনি দাঁড়িয়ে তার সামনে এসে পেটে হাত রেখে বলে,,
“ওর ও ইচ্ছা হচ্ছে ছাদে যেতে, তারপরও মানা করবেন?” বাচ্চামো মুখোভাব করে আদুরে সুরে বলল সে। আর উপায়ন্তর পেল না এনোন তর্জনী দিয়ে কপাল ঘষে বলল,, ওকে।”
___________
রাত প্রায় দুইটা ছুঁই ছুঁই। পুরো শহর নির্জন নিস্তব্ধ। আঁধারের গহীনে ডুবিত নগর। এক কিঞ্চিৎ পরিমাণ আলোর ছিটেফোঁটা নেই। পুরো শহর ঘুমের দেশে পারি জমিয়েছে।
এনোন বলল,,
“হয়েছে, নিচে চলো এবার।”
অবাক হয়ে আড়চোখে তাকালো নিনি। মিনিট খানেক হয়েছে ছাদে এসেছে এর মধ্যে নিচে যাওয়ার জন্য উদ্দেগ নিচ্ছে সে! নিনি তার কাছ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সামনের দিকে তাকালো। বলল,,
“আপনি এতো নিরামিষ কেন!”
চোখ কুঁচকে চমকালো এনোন। কাছে এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল তাকে। নিনি মুচকি হাসলেও তা দেখতে পেল না এনোন। বলল,,
“আমাকে নিরামিষ মনে হয় তোমার?”
“হু”
“ওহ~~~”
এনোন নিনির দিকে গভীর ভাবে কাছে আসতেই। নিনি লাজুক হেঁসে সরিয়ে দিল। বলল,,
“আমি ওটা বলতে চাইনি”
“তো?” ঘোর লাগা কন্ঠে বলতেই নিনি দৃষ্টি সরিয়ে বলল,,
“কিছু না, নিচে যাবো” বলে সে লজ্জাবতী হয়ে দ্রুত নিচে নেমে এলো।
চলবে…

[ পার্ট ছোট হয়েছে জানি কালকে বড় করার চেষ্টা করবো, আর কালকে থেকে আগের টাইমে গল্প পোস্ট করবো, কেমন হয়েছে জানাবেন। ]

Share This Article
Leave a comment

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।