রহস্য

আ মি না

হকচকিয়ে গেলো রুমাইশা। ভয়ে হাতে ভর দিয়ে বিছানার এক কোণায় সরে গিয়ে আয়েশা কে কল দেওয়ার জন্য ফোনের সুইচ টিপলো ও, ‘এ কি! ফোনের নেটওয়ার্ক নেই কেন! কি হলো নেটওয়ার্কের, একটু আগেও তো ছিলো!”

আ মি না

অনেক গুলো দিন পর নিজের রুমে এসে রুমাইশার কেমন জানি ফাকা ফাকা ঠেকলো। কিন্তু জ্বরের ঘোরে এসব নিয়ে ভাবার সময় পেলো না ও। বিছানায় যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়লো ও।

আ মি না

দু বার রিং হওয়ার পর ফোন ধরলো শাফিন৷ ফোন ধরেই শাফিন বলল, —এদিকে সব ক্লিয়ার ভাইয়া। মা একটু আগে রান্না ঘরে এলো। বাবা রুমে আছে। কাজের খালা এখনো আসেনি।” সাফওয়ান প্রতিউত্তরে শুধু হুম বলে ফোন রেখে দিলো।

আ মি না

বিছানায় চিত হয়ে , লম্বা চুল গুলো এক পাশে করে রেখে কোলবালিশে ডান পায়ের হাটু ঠেকিয়ে বুকের ওপর হাত রেখে শুয়ে আছে রুমাইশা। ঘুম নেই ওর চোখে। আর যা হয়েছে আজ রাতে তাতে ওর ঘুম আসলেই বরং আশ্চর্যের ব্যাপার হতো।

আ মি না

দেড়টার দিকে একবার জেগে গেলো ও, কিন্তু পুরোপুরি জাগলো না, শুধু কান দুটো সজাগ হলো। কিন্তু তুমুল বৃষ্টির শব্দ ছাড়া কিছুই শুনলো না, পরক্ষণেই আবার ঘুমিয়ে পড়লো। বৃষ্টির বেগ সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো ওঠানামা করছে।

আ মি না

আজ জানালায় গ্লাস লাগাতে একদমই ভুলে গেছে রুমাইশা। কিন্তু কিচ্ছু করার নেই৷ এখন গ্লাস লাগাতে গিয়ে শব্দ হলেই ও পুরাই শেষ। আপাতত গ্লাসের ভাবনা মাথা থেকে তাড়াতাড়ি সরিয়ে সামনের দিকে মনযোগ দিল ও৷

আ মি না

নামাজ শেষে ইশতিয়াক, সাফওয়ান আর শাফিন বাড়ি ফরে এলো। সৌভাগ্যের বিষয় এটাই যে কোনো অসুবিধা হয়নি। শাফিন আর সাফওয়ান দুজনেই শেষের কাতারে দাড়িয়েছিলো।

আ মি না

রুনিয়া খাবার নিয়ে ছাদে এলেন। কারো পায়ের শব্দ শুনে সাফওয়ান সতর্ক হয়ে উঠলো। ফুল স্লিভ শার্ট পরে গলার কাছের স্কেলি আবরণ টাকে মেকআপ দিয়ে সুচারুতার সাথে ঢেকে দিয়ে, চোখে ডার্ক গগলস, মুখে মাস্ক পরে, চুল গুলো হাত দিয়ে মাথার পেছন এর দিকে সরিয়ে দিলো।

আ মি না

সাদা ওড়নাটা বিছিয়ে আছে বিছানার ওপর, নিতম্ব ছাড়ানো চুল গুলো ডানপেশে হয়ে ছড়িয়ে আছে। নরম হাত দুইটা দিয়ে মোবাইল ফোন টা ধরে উপরের দাঁত দিয়ে নিচের ঠোঁট কামড়ে ভাবছে রুমাইশা বাক্যটা কিভাবে সাজালে সাফওয়ান ভাইয়ের মনপুত হবে।

আ মি না

রুমাইশা শোয়া থেকে উঠে বসল। চোখ দুটো মুছে নিলো ভালোভাবে৷ এই অসময়ে কে আসবে? ফুপ্পি? না শাফিন! ভাবতে ভাবতে উঠে দরজা খুলে দিলো রুমাইশা। কিন্তু কাউকেই সামনে পেলো না৷ মনে মনে শাফিনের ওপর খুব বিরক্ত হলো।

আ মি না

সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে স্পুনে লেগে থাকা আইসক্রিম চেটে খাওয়ার জন্য মুখটা খুললো সাফওয়ান। আর এরপর মুখ হা করতেই সাফওয়ানের কুচকুচে কালো মুখগহ্বরের ভেতর ক্যানাইন দাঁতের জায়গায় রুমাইশা দেখতে পেলো দুইটা ঝকঝকে সাদা, তীক্ষ্ণ, ধারালো, লম্বা আর সরু দাঁত।

আ মি না

এক্সাম শুরু হতে আর ১ দিন আছে, ধুমছে পড়াশোনা করছে রুমাইশা। সাথে শাফিন ও। সেই দিনের পর থেকে সাফওয়ান এর সাথে রুমির আর দেখা হয়নি। শেষ রাতের সেই অদ্ভুত শব্দটাও আর হয়নি। সেটাকে নিছকই মনের ভুল ভেবে নিয়েছে রুমাইশা, হয়তো মস্তিষ্কের ওপর চাপ পড়ছিলো অনেক তাই ভুলভাল দেখেছে৷ ওসব নিয়ে আর মাথা ঘামায়নি ও৷