পরের দিন ভোর সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বিহান ভাই উনার রুমে নেই উনি কখন বেরিয়ে গিয়েছেন তা কেউ জানেনা।আমি নিরবে উনাকে খুজে চলেছি কোথায় আছে এদিক ওদিক খুজছি।উনাকে যতই না পাচ্ছি ততই বুকের ব্যাথা বেড়ে চলেছে।ঘড়ির কাটা যেনো সরতেই চাইছে না।ঘড়ির কাটা কি আজ ঘুরছে না।প্রতিটা সেকেন্ড যেনো হাজার বছরের সময় এর মতো পার হচ্ছে।ভোর পাঁচটা থেকে সকাল সাত টা পর্যন্ত ঘড়ি দেখেছি অসংখ্যবার।মনে হচ্ছে কয়েক ঘন্টা অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু ঘড়ির দিকে তাকালেই দেখছি দশ মিনিট ও সময় অতিক্রম করে নি।মন খারাপ হলে সময় গুলো যেনো আরো ঘাড়ে চেপে ধরে।ভালো সময় নিমিষেই ফুরিয়ে যায় আমার,আর এই বিষাক্ত সময় যেনো অতিবাহিত হতেই চাইছে না।
–মামা এবং মামি দুজন ই জানেন বিহান ভাই এর সাথে আমার কি নিয়ে ঝামেলা।এটা বিভোর ভাই দের ফ্যামিলির কাউকে বুঝতে দিতে নিষেধ করেছেন।তারা কষ্ট পেতে পারে ব্যাপার টা জানলে।বিহান ভাই তো তাদের সাথে যাওয়ার জন্য রাগ করেন নি আমার মিথ্যা বলার জন্য রাগ করেছেন।তবুও ব্যাপার টা তাদের কানে না যাওয়ায় ভালো।
মন খারাপ হলে পৃথিবীর কোনো কিছুই ভাল লাগেনা আমার।খেতেও পারিনা,হাসতেও পারিনা,সারাদিন সুয়ে থাকি।সকাল থেকে বিছানা ছেড়ে আর উঠিনি আমি।মন খারাপ আর টেনশনে ছোট বেলা থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ি আমি।নিজে নিজে কল্পনায় হাজার বার ভেবেছি এই বুঝি উনি এসে বলবেন কাল রাতে খুব রেগে গিয়েছিলাম মাথা ঠিক ছিলো না,তুই মিথ্যা বললি কেনো?আমার এই ভাবনা সত্যি হবে কখন।
–দুপুরের খানিক টা আগে কড়া রোদ, উত্তপ্ত চারদিক,ভ্যাপসা গরম।মামা খালি গায়ে বারান্দায় বসে চা খাচ্ছেন টেবিল ফ্যান চালিয়ে আর মামিকে বলছেন,দিয়াকে উঠিয়ে জোর করে হলেও খাইয়ে দাও।গরমে না খেয়ে থাকলে পিত্ত গরম হয়ে শরীর খারাপ হবে।মামি আজ আগে আগেই দুপুরের রান্না শেষ করেছে।আগুনের তাপে মুখ কেমন রক্তবর্ন হয়ে আছে মামির।হাতে এক গাদা কাপড় মামার মনে হয় ধুয়ে দিবে।মামাকে বললো,আচ্ছা দিয়া যে ছোট মানুষ তোমার ছেলে কি তা জানেনা।কোথায় একটু কি বলেছে তাই নিয়ে রাগ দেখাচ্ছে।তোমার ছেলের এই অতিরিক্ত রাগ দিয়া বলেই সহ্য করে আর কেউ হলে করতো না।আমি দেখেছি দিয়ার সাথে রাগ একটু বেশী দেখায় বিহান।মামা হেসে বললেন,এইজন্য তো আমার দিয়া মা কে এনেছি।ছেলে তো একটু রাগি আছেই, তবে রাগ বেশীক্ষণ থাকবে না।মামি মামার পাশে ফ্লোরে পাটিতে বসে বললেন,তোমার ছেলে আমাকে রুশার বিয়ের রাগে বলেছিলো বাবাকে বলো তার বোনের মেয়ে এনে দিতে।না এনে দিলে আমি এমন কান্ড করবো ফুপ্পি দিয়াকে বিয়ে দিতে বাধ্য হবে।আমাকে সরাসরি বললো,আম্মু আমি বিয়ে করতে চাই।এখন আমাকে বিয়ে না দিলে জীবনেও বিয়ে করবোনা।ছেলের কথা শুনে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম ভেবেছিলাম আমার যে রাগী ছেলে মেয়েদের সাথে কথা বলে না আমার কপালে বোধহয় ছেলের বউ দেখা নেই।কিন্তু ছেলে আমাকে অবাক করে বলেছিলো আমি বিয়ে করতেই চাই মানে চাই।তাও সেটা দিয়াকেই, আমি ছোট বেলা থেকে ভেবে রেখেছি বড় হয়ে দিয়াকে বিয়ে করবো।তোমার ছেলে দিয়া ছাড়া কিছুই বোঝে না আবার রাগ দেখালে দিয়ার সাথেই দেখাবে।মামা হেসে বললেন,ওরা নিজেরাই মিটিয়ে নিবে তুমি ভেবো না।মামি বললেন,ছেলে না খেয়ে থাকলে আমি খেতে পারিনা কিছুই।ওই একটায় ছেলে আমার।মামা বললেন,বাড়ি এসে খেয়ে নিবে আমি যাচ্ছি গিয়ে বোঝাচ্ছি।এই দো-তলা বিশিষ্ট বাড়িটায় উপরে চাররুম আর নিচে চাররুম
।বিহান ভাই আর আমি উপরে থাকি বলে মামা মামি নিচে থাকেন।উনারা চান আমাদের স্পেস দিতে।আমাদের ফ্রি ভাবে সময় কাটাতে দেওয়ার জন্য মামা মামি বিহান ভাই এর বিয়ের পর থেকে নিচে থাকেন।রান্না খাওয়া সব নিচেই হয় উপরে শুধু আমরা দুজনে থাকি।মামা মামি অনেক অনুরোধ করার পরেও আমি খাই নি।
–সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়েছে,এমন সময় রিয়া এসেছে আমাদের বাড়িতে।রিয়া নিচে থেকে সবার সাথে কথা বলে সোজা আমার কাছে চলে এসছে।মলিন মুখে হাসলে পৃথিবীর যেকোনো মানুষ ই বুঝতে পারে।অনিচ্ছাকৃত হাসি দিয়ে রিয়াকে বললাম,কখন এসছিস।
–রিয়া আমাকে দেখেই বললো,তোর কি শরীর খারাপ দিয়া।
–হ্যাঁ একটু খারাপ,মাথায় প্রচন্ড পেইন তো তাই।
–ওষুধ খাস নি দিয়া।চোখ মুখ একদম ই শুকিয়ে গিয়েছে। একজন ডাক্তারের বউ এর এমন অসুস্থতা মেনে নেওয়া যায় না।
–ডাক্তারের পেসক্রিপশন অসুস্থ রোগিকে সুস্থ করতে পারে।কিন্তু ডাক্তার নিজেই তো কারো না কারো মেডিসিন তাইনা রিয়া।মাঝে মাঝে বিহান নামক মেডিসিন এর অভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়ে দিয়া।
–ইস রে!এই কথাটা যদি বিহান ভাই শুনতে পেতো এই শহরে ভালবাসার কার্ফু জারী করতো।এই কথাটা বিহান ভাইকে নিজ দায়িত্বে জানিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমার।দাঁড়া ফোন দিয়ে নেই বিহান ভাই কে।রিয়া উনাকে ফোন দিলে উনি ফোন টা তুলে বললেন,রিয়া বলো।
–উনার কন্ঠ শুনে যেনো মনের মাঝে তোলপাড় শুরু হলো।
–রিয়া বললো,বিহান ভাই আপনাদের বাড়ি৷ এসছি কোথায় আপনি?
–এইতো একটু বাইরে আছি। তুমি থাকো খেয়ে যেও বাসায়।
–আপনি ছাড়া আপনাদের বাসা ভাল লাগে না।
–আমার আসতে একটু লেট হবে রিয়া,তুমি থাকো যেও না।
–আপনাকে একটা গ্রেট নিউজ দিতে ফোন দিলাম।একটা অনেক সুখের আর একটা দুঃখের।কোনটা আগে শুনবেন বলুন।
–বিহান ভাই এর মাঝে তেমন একটা গুরুত্ব নেই।আমরা যে কেউ এমন কেউ নিউজ দিতে চাইলে পাগল হয়ে যায়, দ্রুত বলতে বলি।কিন্তু উনি কিছুই বললেন না।ফোন কানে নিয়েই সাইডে যেনো কার সাথে কথা বলছেন।
–রিয়া আবার বললো,বিহান ভাই শুনবেন না।
–উনি শান্ত কন্ঠেই বললেন,হ্যাঁ বলো শুনছি।
–একটা হলো দিয়া খুব অসুস্থ আমি জানি আপনার জন্য এটা অনেক বড় ব্যাড নিউজ।অন্যটা হলো দিয়া আপনাকে নিয়ে অনেক গুলো ভালবাসার বুলি আউড়িয়েছে।
-উনি কোনো রিয়াকশন না দেখিয়ে বললেন,তোমাকে কি এগুলা শিখিয়ে দিয়েছে বলার জন্য।নিজের মিথ্যা বলতে বাধে না আবার তোমাকেও মিথ্যা বলানোর জন্য ফোর্স করছে।রিয়া অন্যর কথায় কখনো মিথ্যা বলোনা তাহলে নিজের দাম থাকবে না।তোমাকে আমি খুব ভাল মেয়ে বলে জানি।আশা করবো সারাজীবন আমার চোখে এমন ই থাকবে তুমি।
–কসম না বিহান ভাই কেউ আমায় কিছু শিখায় নি।
–ফোনটা কেটে গেলো ওপাস থেকে।রিয়া বললো,কি নিয়ে মান অভিমান চলে দিয়া।
–এমনি,তেমন কিছুই না।
–লুকাচ্ছিস কেনো?বলনা কি নিয়ে।
–আমি কি তোকে কিছু শিখিয়েছি বলার জন্য।আমাকে নিয়ে উনার ধারনা এমন ই বুঝলি।
–ভালবাসা জমে ক্ষীর দেখছি।এখুনি বাড়ি গিয়ে কাকিমনিকে বলতে হচ্ছে।কাকিমনি অনেক চিন্তা করতো তোদের নিয়া।ইয়াহু।ব্যাগ থেকে কয়েক টা শীট বের করে দিয়ে আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো,এই নে ধর তুই আজ ক্লাসে যাস নি তোর টা নিয়ে এসছি।আমি এখন উঠি।রিয়া উঠতেই বিভোর ভাই আমার ঘরে ঢুকে রিয়ার সামনে দাঁড়ালো।আমি বিছানায় সুয়ে থেকে স্পষ্ট দেখতে পেলাম দুজন মানব মানবী যখন প্রেমে পড়ে তখন তাদের চোখ যেনো কথা বলে,ঠোঁট যেনো কথা বলে।রিয়া আর বিভোর ভাই দুজনে দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে দুজনের ওষ্টদ্বয়ে নির্মল হাসি।এই হাসিতে কোনো শব্দ নেই তবে আছে দুজনের নিরব গভীর অনুভূতি। এ অনুভূতির মানে ওরা দুজন ছাড়া পৃথিবীর কেউ বুঝবে না।প্রেমে পড়ার মুহুর্ত টা এতটায় চমৎকার দুজন ভালবাসার মানুষ যখন প্রথম অনুভব করে একে অপরকে ভালবেসেছে তখন পৃথিবীর সব সুখ তাদের কাছে এসে ধরা দেয়।এই সুন্দর অনুভূতি বলে বোঝাতে পারে না কেউ।বিভোর ভাই রিয়া এই সুন্দর অনুভূতির মাঝে বিরাজমান আছে দুজনে এখন।বিভোর ভাই রিয়াকে চোখের ইশারা করে কিছু বোঝাচ্ছেন,রিয়া লাজুক চাহনিতে উনার ভাষা বুঝার চেষ্টা করছে।রিয়া মুখে হাসি নিয়ে বেরিয়ে গেলো বিভোর ভাই আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে রিয়ার পিছ পিছ চলে গেলো।
সারাদিন অতিক্রম করার পর গম্ভীর মুডেই ফিরে এলেন বাসায় বিহান ভাই।প্রায় দুইদিন যে কিছু খান না তার জন্য মুখটা শুকিয়ে গিয়েছে উনার।উনি ভীষণ রাগ করলে কারো সাথে টোটাল কথা বলেন না, উনার সাথেও কেউ ভয়ে কথা বলে না।কেননা উনি বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে পারেন এই অভ্যাস টা উনার আছে।বিহান ভাই বাড়িতে এসে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচতলার রুমেই গিয়ে বসলেন।মামি আস্তে করে গিয়ে বললেন,খাবার নিয়ে আসছি তোমার জন্য এখানে।তুমি খাও নি বলে তোমার বাবা আমি দিয়া কেউ খাই নি।বিহান ভাই শান্ত কন্ঠেই বললো,আমি ডায়নিং এ আসছি আম্মু এখানে কষ্ট করে আনতে হবে আনতে হবে না।তোমরা খাও নি কেনো?না খেয়ে একদম ঠিক করো নি।
–ডায়নিং বসে চুপচাপ বিহান ভাই খাবার খাচ্ছেন।
–মামি বললেন,বাবা দিয়া ও খাই নি কিন্তু।
–উনার মাঝে নিরবতা।
–মামি আবার বললেন,রাগ করো না বাবা। বিভার কথা ভেবেই দিয়া মিথ্যা বলেছে।
–বিহান ভাই কোনো কথা না বলে খাবার খেয়ে হাত ধুয়ে উঠে গেলেন।
কেটে গেছে চারদিন এর মাঝে একবার ও বিহান ভাই আমার দিকে তাকান নি কথা ও বলেন নি।এমন কি দো’তলায় ও যান নি।সময় মতো গিয়ে চুপচাপ খাবার খেয়ে উঠে গিয়েছেন।আমি উনার সাথে অসংখ্যবার কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু উনি একদম ই পাত্তা দেন নি আমায়।উনি ছাড়া জীবন টা এত ভয়ংকর হতে পারে ভাবতেও পারিনি আমি।আমি উনার কাছে যেভাবেই হোক ক্ষমা চাইবো। যত ইচ্ছা বকুক যা ইচ্ছা বলুক।কিন্তু উনি তো কথায় বলছেন না।ভীষণ বকুক তবুও কথা বলুক।কথা না বলার মতো শাস্তি কি এই পৃথিবীতে আর কিছুতে আছে?আছে বলে মনে হয়না।অন্য সময়ে তো বকেন সাহস হলো কিভাবে মিথ্যা বলার আরো কত কিছু বলেন কিন্তু এবারে একদম ই নিশ্চুপ। কষ্ট কি আমাকে দিচ্ছেন নাকি নিজেকে দিচ্ছেন।কারণ উনার রাগ হলে ভাঙাচুরা করেন,চিল্লান ভয়ানক কিছু করেন কিন্তু এবার রাগ নিজের ভেতরে চেপে আছেন।চারদিন পরে মামি জোর করে রাতে আমাকে ডিনারের জন্য নিয়ে আসলেন।বিহান ভাই আর আমি পাশাপাশি চেয়ারে বসেছি।প্লেটে ভাত নিয়ে আঙুল দিয়ে নাড়াচাড়া করছি আর আড় চোখে বার বার উনার দিকে তাকাচ্ছি।এক বার ভাত মুখে নিতেই নাকে উঠে কাশি শুরু হলো।উনি এই চারদিন পরে মনে হয় সরাসরি আমার দিকে তাকালেন।আমিও উনার দিকে তাকিয়ে কেশে যাচ্ছি।ঝাল নাকে মুখে উঠে গিয়েছে।দীর্ঘদিন পরে চোখ চোখ পড়লো দুজনের।উনার চোখে রাগ নেই কোনো তবে এক সমুদ্র সমান কষ্ট দেখতে পেলাম।দ্রুত আমার মাথায় হাত দিলেন আর সাথে সাথে পানির গ্লাস এগিয়ে দিলেন।উনার চোখের দিকে তাকিয়ে আমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়লো।চোখ পানিতে ভেজা দেখে আমার মাথা হাত সরিয়ে নিয়ে পানির গ্লাস রেখে হাত ধুয়ে উঠে চলে গেলেন।উনার অভিমান কি এতটায় তীব্র হয়েছে যে আর কথায় বলবেন না কোনদিন।সেই রাতেই উনি ছাদে গিয়ে বসেছেন।উনার পরনে কালো হাতা লম্বা গেঞ্জি,গেঞ্জির হাতা গুটিয়ে রাখা কনুই পর্যন্ত,পরনে কালো জিন্স,পায়ে সিম্পল স্যান্ডেল পরা।আমি ও আস্তে করে ছাদে গেলাম।উনি টি টেবল আর চেয়ার নিয়ে বসে ল্যাপটপ দেখছেন।সিড়ি দিয়ে ওঠার সময় দেওয়ালে চাপ লেগে চাপচে ছিদ্র হওয়া হাতে আঘাত লেগে আবার রক্ত বেরোনো শুরু হলো।আমি উনার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।উনি বুঝলেন আমি উনার সামনে তবুও তাকালেন না।
ওড়নার এক কোনা আঙুলে পেচাতে পেচাতে মিহি কন্ঠে বললাম,বিহান ভাই।
উনি চোখ তুলে তাকালেন,উনার চাহনিতে শীতলতা।তাকিয়ে দেখেন আমার হাত দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত বেরোচ্ছে।উনি দৃষ্টি সরাসরি আমার আঙুলের দিকে দিলেন।চোখে মুখে দুঃচিন্তা উনার। দুই ঠোঁটের মাঝে কিঞ্চিত ফাঁকা।ল্যাপটপের সাটার অফ করে সোজা হাত চালিয়ে দিলেন চুলের মাঝে।আমার হাত যত দেখছেন ততই চোখ আগুনে পরিনত হচ্ছে রাগে।বিরক্ত ভাবে হাত চালাচ্ছেন চুলে। সাইডে থাকা ফুলের টবএ লাথি মেরে ফুলদানি টা ভেঙে কয়েক টুকরো করে ফেললেন। নিজের পা খানিক টা কেটে আমার দিকে তাকিয়ে পকেট থেকে রোমাল বের করে আমার আঙুলে পেচিয়ে দিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে চলে গেলেন।
ছাদ থেকে নেমে উনার রুমে এসে দেখি উনি নেই।বিছানায় পড়ে আছে দলা করে রাখা এক টুকরো কাগজ।কাগজ টা মেলে দেখি লেখা,
“এই সময় ভীষণ খারাপ
এই সময় কেনো কাটছে না,
বিরহের সময় কি তবে বেশী শক্তিশালী সুখের সময়ের থেকে।
বিরহ যতটা তাকে ভাবাচ্ছে, সুখ তো ততটা তাকে ভাবায় নি কখনো।
তাকে ভাবার জন্য হলেও
বিরহ দীর্ঘ হোক অনন্তকাল।”
সাইডে আরেক টা কাগজে লেখা পেলাম,
“এই অবেলায় তোমারি আকাশে নীরব আপোষে ভেষে যায়।
সেই ভীষণ শীতল ভেজা চোখ কখনো দেখাইনি তোমায়।”
——-বিহান ভাই