হৃদ রোগ | পর্ব ৯

6 Min Read

স্নিগ্ধ এক সকাল , বাইরে হালকা শীত শীত ভাব । চারিদিকে পাখির “কিচিরমিচির” শব্দ শোনা যাচ্ছে। সবে সূয্যি মামার আগমন ঘটেছে , আকাশটা হালকা হলুদ রঙের। জানলা দিয়ে সূর্যের কিরণ এসে ঘরে পড়ছে । এখন ঘড়িতে সকাল ন’ টা বেজে পনেরো মিনিট , সুদেষ্ণা মরার মতো ঘুমাচ্ছে । তখনই সুদেষ্ণার ফোন সশব্দে বেজে উঠলো,,,,,,,,,, বিরক্তিতে চোখ, নাকমুখ কুঁচকে গেলো সুদেষ্ণার। নামটা না দেখেই ফোনটা কানে নিয়ে বললো,,,,,,,,,,,,,,
হ্যাঁ বল,,,,,,।
তুই রেডি ভাই ??? কখন বেরোবি ?
হুম,,,,,,,,,,,,,
সু তুই এখনো ঘুমাচ্ছিস ? তুই ভুলে গেছিস আজকে এস. কে এর ক্লাস আছে ? না গেলে কিন্তু কপালে দুঃখ আছে,,,,,,,
ঘুম উড়ে গেল সুদেষ্ণার „„„„„ একলাফে উঠে বসলো । তুই ফোন করলি যখন আর একটু আগে করতে পারলি না ? তুই ফোন রাখ ,,,,,,,, আমি রেডি হয়ে তোকে ফোন করছি । কেয়া কে কিছু না বলতে দিয়ে ফোন রাখলো সুদেষ্ণা,,,,,,,, তারপর গেলো ফ্রেশ হতে ।
. কেয়া আর সুদেষ্ণা একই ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট হওয়ায় দুজনেরই সাবজেক্ট এক । আজকে বুধবার, প্রথম ক্লাস দশটা পনেরোতে এস. কে স্যার এর । যাদের মেজর সাবজেক্ট ম্যাথ ,তাদের ম্যাথ ক্লাস করতেই হয় । তাছাড়া স্যার ভীষন রাগি মানুষ।
________________________________________________
• মধ্য দুপুর প্রায়, সূর্য মাথার ওপর অবস্থান করছে। ইদানিং ঠান্ডা, গরম ভাব চলছে। সকালে শীত শীত ভাব থাকে আর দুপুরের দিকে গরম । এখন আপাতত গরম লাগছে সুদেষ্ণার,,,,,,,, বিরক্তিতে মুখ বেঁকালো সুদেষ্ণা । তারপর কপালের ঘাম মুছে এগিয়ে গেলো মেইন ক্যামপাসের দিকে। পাশে কেয়াও পায়ে পা মিলিয়ে এগিয়ে গেলো সামনের দিকে।
সুদেষ্ণা গিয়ে ধপ করে অনু আর স্নেহার মাঝে বসে পড়লো,,,,,, তারপর স্নেহার হাত থেকে জলের বোতল নিয়ে ঢক ঢক করে জল খেলো,,,,,,,।
এই সু জানিস , সামনের সপ্তাহে সোমবার আমাদের নবীনবরণ হবে,,,,,,, তো আমরা তোর নাচে নাম দিয়ে দিয়েছি । অনিক উৎসাহ নিয়ে বললো,,,,,।
সুদেষ্ণা সবার দিকে একবার তাকালো , তারপর বললো ,,,,,,,,, আমি নাচ-টাচ করতে পারবো না ।
কেনো করবি না ?? তুই তো ভালোই নাচ করিস ,,,,,,,, তাছাড়া সবাই যদি এরকম করে তাহলে অনুষ্ঠানটা জমবে কীভাবে?? ,,,,,, অনু দুঃখ প্রকাশ করে বললো।
তোর যখন এতই অনুষ্ঠান জমানোর শখ ,,,,,, তাহলে তুই নাচ কর না । আকাশ অনুকে উদ্দেশ্যে করে বললো।
আমি নাচ করবো , না গান করবো,,,,,, তোকে বলে করবো ? অনু মুখ বাঁকিয়ে বললো,,,,,,।
তুই নাচের “ন” জানিস ?,,,,,,,,,, আকাশ দাঁত কেলিয়ে বললো।
আমি না হয় জানি না , তুই জানিস ??
শোন , আমি যথেষ্ট ভালো নাচ করি । দারা দেখাচ্ছি,,,,,, অনিক গারমি গানটা লাগা , বলে আকাশ উঠে দাঁড়ালো। সবাই আকাশের দিকে আগ্ৰহ নিয়ে তাকিয়ে আছে , গান বেজে চলেছে ও দাঁড়িয়ে আছে ,,,, তারপর হঠাৎ শুয়ে গারমি স্টেপ করতে লাগলো । যেমনটা “নোরা ফতেহ ” করে। সবাই শব্দ করে হেঁসে উঠলো,,,,,,, । ক্যামপাসের অনেকেই তাকিয়ে আছে, কেউ হাঁসছে আবার কেউ বিরক্তি প্রকাশ করছে ।
কইসা লাগা মেরা ডান্স,,,,, আকাশ একটু ভাব নিয়ে বললো।
অসাধারণ ভাই , তোকে তো “ডান্স প্লাস” এ যে শো’ টা আছে ওতে থাকা উচিৎ,,,,,,,, অনিক দাঁত কেলিয়ে বললো।
ওই তোরা এখনো এখানে কেনো?? দুটো থেকে হল রুমে সিনিয়র রা মিটিং রেখেছে যাবি না??,,,,,,,,,,,ওদের কথোপকথনের মধ্যে কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের একটা ছেলে এসে বললো।
তুই চল আমরা আসছি,,,,,,,, অনিক বললো।
কীসের মিটিং রে ? সুদেষ্ণা ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করলো।
আরে নবীনবরণ অনুষ্ঠান নিয়ে,,,,,,, স্নেহা বললো।
ওহ,,,,,, চল তাহলে । এই বলে সবাই হল রুমের উদ্দেশ্যে গেলো ।
_______________________________________________
হল রুমে মূলত সবাই ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট উপস্থিত আছে । তাছাড়া হিমাদ্রর গ্ৰুপ আর কিছু সিনিয়র আছে । হিমাদ্রকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না , সুদেষ্ণা চোখ হিমাদ্রকেই খুঁজছে।অনেক দিন ধরে সুদেষ্ণার হিমাদ্রর সঙ্গে দেখা হচ্ছে না , আজকে তো হিমাদ্রর আসার কথাও নয় ,,,,,,, আবার আসতেও পারে, কেনোনা হিমাদ্রর গ্ৰুপের সবাই এখানে উপস্থিত আছে ।
অবশেষে সুদেষ্ণার অপেক্ষা সফল হলো,,,,,,,, হিমাদ্র এসেছে । পড়নে তার ব্ল্যাক শার্ট প্যান্ট । এসেই সে চেয়ারে বসলো , তারপর বললো,,,,,,,, আমি দুঃখিত আপনাদের অপেক্ষা করানোর জন্য । এখন আমরা আমাদের মিটিং স্টার্ট করছি,,,,,,,,,,
আর কিছু সুদেষ্ণা শুনতে পাইনি, এক ধ্যান এ তাকিয়ে রইলো সামনের সুপুরুষ এর দিকে । সামনের মানুষটা কতো সুন্দর কথা বলছে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে,,,,,,,,,
এই ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো ভাই? মনে হচ্ছে হাফ বাসর এখানেই সেরে ফেলবি ,,,,,,,, অনু দাঁত কেলিয়ে বললো।
সুদেষ্ণা থেকে কোনো উত্তর এলোনা,,,,,,, অনেকক্ষন পর সুদেষ্ণার ধ্যান ভাঙ্গলো । যখন মিটিং শেষ হলো । আসল কথা হলো সুদেষ্ণা কিছু শোনেনি, সে তো হিমাদ্রকে দেখতে ব্যস্ত ছিলো । দুঃখের কথা হচ্ছে হিমাদ্র একবারো তার দিকে তাকাইনি । তার জন্য অষ্টাদশী ভীষন কষ্ট পেয়েছে। কোনো ব্যাপার না , সবার সময় এক যায় না । যখন সুদেষ্ণার সময় আসবে সেও হিমাদ্রকে নাকানি চোবানি খাওয়াবে । এখন আপাতত কালকের অপেক্ষা,,,,,,,,
চলবে,,,,,,,,,,,

Share This Article
Leave a comment

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।