লাভার নাকি ভিলেন | সিজন – ২ | পর্ব – ২৮

লাভার নাকি ভিলেন - সিজন ২

আকাশ মেঘলা ২ জনেই রাজনীতি নিয়ে ব্যাস্ত। আবির শেষ পর্যন্ত মেঘলার পাশেই দাঁড়াল।আর আকাশের হয়ে কাজ করছে ইরা। আর মাত্র ১ দিন বাকি নির্বাচনের।

এদিকে সামিরার বাড়িতেও সাজ সাজ রব। নাবিল তার এক ফ্রেন্ডের কাছ থেকে টাকা এনে সামিরার বিয়ের সমস্ত মার্কেটিং করে দিয়েছে।সামিরার খুশি যেন আর ধরে না। জনিও কোন ঝামেলা করে নি।

আজ সামিরা আর নাবিলের হলুদ সন্ধ্যা।সামিরা খুব খুশি নাবিলও খুশি তবে কোথাও একটু ঝামেলা আছে তাই নাবিলের মুখে হাসি নেই।

সামিরাঃ আচ্ছা তুমি কি এই বিয়েতে খুশি নও? সত্যি করে বলো আমাকে কি তোমার পছন্দ না?

নাবিলঃ তোমাকে আমি ভালবাসি সামিরা তোমাকে নিয়ে আমার কোন ঝামেলাও নেই।

সামিরাঃ তবে কি নিয়ে টেনশান করছো? যে খুন তুমি করো নি সেটা নিয়ে চিন্তা করার কোন মানে হয় না সত্যির জয় একদিন হবেই।

নাবিলঃ আমি সেটা নিয়েও ভাবছি না…

সামিরাঃ তাহলে…??

নাবিলঃ যানো এই অনুষ্টান আয়োজন দেখে আমার বারবার একটা কথাই মনে হচ্ছে এই বুঝি আকাশ আসবে এসে বলবে দোস্ত তুই আমাকে রেখে বিয়ে করে ফেলছিস তুই না বলেছিলি তোর বিয়েতে আমরা ২ জন ঠিক এক রকম করে সাজব। আমি বলেছিলাম জীবনের সবচেয়ে মজা তোর বিয়েতে করব আজ তুই সব ভুলে গেলি?আমাকে ছাড়াই বিয়ের পীড়িতে বসে পড়লি তুই এটা পারলি দোস্ত?কথাগুলি বলতে নাবিল কেঁদে ফেলেছে।

সামিরাঃ যে তোমার জীবন টা উলট পালট করে দিল তুমি এখনো তার কথা ভাবছো?

নাবিলঃ কি করে ভুলে যাব সামিরা? আমি যে সেই দলের নই যারা ৯৯ দিনের কথা ভুলে গিয়ে ১ দিনের কথা মনে রাখে। আকাশ আমার বুকের একটা পাঁজর ছিল আর সেটা এমনি এমনি হয় নি আমার সকল বিপদে সবার আগে ছুটে আসত আকাশ। আমাকে কেউ কিছু বললে আকাশ সহ্য করতে পারত না ছোট বেলায় একটা চকলেট খেলেও আমাকে ভাগ দিয়ে খেত। জীবনে যত অনুষ্টানে ও গিয়েছে আমাকে ছাড়া যায় নি।
যখন মারামারি করে হাসপাতালে থাকতাম আকাশ সারারাত জেগে আমার পাশে বসে থাকত আজ কি করে সব ভুলে যাব? কি করে ভুলে যাব আকাশ নামের একটা ছায়া ছিল আমার।কি করে মেনে নিব সেই ছায়াটা আর নেই।
যানো ওকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি ওর উপড় আমার কোন অভিযোগ নেই আজ আকাশ এখানে থাকলে আমার যে কত ভাল লাগত।কতই না মজা করত আকাশ সারা বাড়ি একাই মাতিয়ে রাখত।আর আমার পাগলি বোনটা তো খুশিতে পাগলই হয়ে যেত।
ওদের ছাড়া আমি বিয়ে করছি ভাবতেই পারছি না।আজ তোমার সারাবাড়ি লোকজনে ভর্তি থাকলেও আমার মনের ঘর যে শুন্য সামিরা।তাই হাসতে চেয়েও হাসতে পারছি না। সামিরা আমাকে একটু একা থাকতে দাও প্লিজ।

সামিরাঃ ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি আর দোয়া করি তোমাদের মধ্যে সব যেন খুব তাড়াতাড়ি মিটে যায় আমি তোমার মুখে হাসি দেখার অপেক্ষায় থাকব নাবিল।আমি বিশ্বাস করি এত ভালবাসা কখনই বিফল যেতে পারে না আকাশ তোমার ভালবাসা ঠিক বুঝবে দেখো।

নাবিল সামিরাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলল।সব খারাপের পিছনে নাকি একটা ভাল দিক থাকে দেখো সামিরা সব উলট পালট হওয়ার বিনিময়ে আমি তোমাকে পেলাম
তুমি না খুব ভাল সামিরা তোমার জায়গায় অন্য কেউ হলে রাগ করত।অথচ তুমি আমাকে বুঝলে আমি ভাগ্যবান যে তোমাকে পেয়েছি।

দেখতে দেখতে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেল নাবিল আর সামিরার হলুদ শুরু হবে।
সময়মত বেশ উৎসবের সাথে গায়ে হলুদ হয়ে গেল। সামিরার সব ফ্রেন্ডরা মিলে অনেক মজা করেছে নাবিলো অনেক মজা করেছে । অনুষ্টানের শেষে সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছিল।

কিন্তু হটাৎই নাবিলের চোখ গেল পাশের রুমের টিভির পর্দায় আর নিউজটা কানে আসতেই নাবিলেদউয়র হাসি মুখ নিমিষেই কাল হয়ে গেল।
নাবিল ছুটে গেল টিভির রুমে।

টিভিতেঃ
ব্রেকিং নিউজ, আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে চলেছে দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন যাতে থাকছে ১২ টি পদ এবং প্রতিটি পদের বীপরিতে ২ জন করে মোট ২৪ জন অংশগ্রহন করতে চলেছে । যার মধ্যে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আকাশ চৌধুরী ও মেঘলা হোসাইন।

এই আকাশ চৌধুরী বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং মেঘলা সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাবিলের বোন।
(আমি রাজনীতি সম্পর্কে বা পদ বিষয়ে তেমন কিছু যানি না পদের নামে ভুল থাকলে ক্ষমা করবেন)
তবে আশ্চর্যের বিষয় আজ সারাদিন আকাশ এবং মেঘলা ২ জনেই প্রচারনায় ব্যাস্ত থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকেই তাদের কারোরি খোঁজ মিলছে না।
আকাশ এবং তার এসিস্ট্যান্ট ইরা কারোরি দেখা মিলছে না পার্টি অফিসে।অন্যদিকে মেঘলার এসিস্ট্যান্ট আবিরের দেখা মিললেও সে যানে না মেঘলা ম্যাডাম কোথায় আছেন।তারা সবাই কি ঠিক আছেন নাকি কোন ঝামেলা হয়েছে সেসবের খোঁজ জানাব কিছুক্ষনের মধ্যেই সে পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।

নিউজটা শুনার সাথে সাথে নাবিলের মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পড়ল।নাবিলের হাত পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে।

নাবিল টিভির রুম থেকে বেরিয়েই নিজের ঘরে গিয়ে হলুদের কাপড় চোপড় খুলে ড্রেস চেঞ্জ করে নিল।

এরিমধ্যে সামিরা তার ঘরে এল।

সামিরাঃ কি করছো?

নাবিল বিচলিত হয়ে গম্ভির গলায় উত্তর দিল চলে যাচ্ছি।

সামিরাঃ মজা করছো?

নাবিলঃ না সত্যি সত্যি আমি চলে যাচ্ছি আমাদের বিয়েটা হচ্ছে না সামিরা।

সামিরাঃ তুমি এসব কি বলছো নাবিল?

নাবিলঃ বলছি না যা ঘটছে সেটাই দেখাচ্ছি।বলে নাবিল পা বাড়াল।

পিছন থেকে সামিরা নাবিলের হাত টেনে ধরল।

সামিরাঃ না তুমি এটা করতে পারো না নাবিল আমি তুমাকে ভালবাসি তুমি আমায় কোথায় রেখে যাচ্ছো।আজ বাদে কাল আমাদের বিয়ে আমাদের হলুদ হয়ে গেছে এখন বিয়েটা ভেংগে গেলে আমি লোকের সামনে মুখ দেখাব কি করে।

নাবিলঃ তোমার বিয়ের অভাব হবে না সামিরা আর জনিও হাসপাতালে আছে ও যেহেতু এতদিন কিছু করে নি আর কোন ঝামেলা করবে বলে মনে হয় না। আর আমি চলে যাওয়ার পর মান সম্মান রাখতে তোমার বাবা মা তোমাকে ভাল ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দিবে। তোমার জন্য এটাই ভাল হবে সামিরা।আমার সাথে নিজেকে জড়িয়ে কষ্ট পেয় না।আর আমাকে আটকানোর চেষ্টা করে লাভ নেই সামিরা আমাকে যেতে হবে।আমার মনে হচ্ছে আকাশ মেঘলা ২ জনেই বিপদে আছে। আমি থাকতে ওদের কোন ক্ষতি হতে দিব না।

সামিরাঃ আর আমি? আমি কি কেউ নই নাবিল? সত্যিই তুমি আমাকে ভালোবাসো নি।কিন্তু আমি তোমাকে বেসেছি বিশ্বাস করো আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না।প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না।

নাবিলঃ ভাল ত আমিও বাসি সামিরা কিন্তু দায়িত্বের বেড়াজালে আজ নিজের ভালবাসাকে বলি দিতে হচ্ছে আমাকে। আমি যানি আকাশ আর মেঘলা বিপদে আছে ওদের রক্ষা করা আমার কর্তব্য। (মনে মনে)

নাবিল সামিরার হাত থেকে নিজের হাত টা ছাড়িয়ে চলে যেতে লাগল কিছুটা দুরে গিয়ে সামিরার দিকে ফিরে তাকিয়ে নাবিলের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠল।

সামিরার ২ চোখ বেয়ে নোনা জল গড়িয়ে পড়ছে হাজারো না বলা কথার সাক্ষি দিচ্ছে তার কাঁপা কাঁপা ঠোঁট।

নাবিলঃ কি করে এই মায়ামাখা মুখটাকে ভুলে যাব? আমি চলে যাওয়ার পরেই তো ওকে অন্য যায়গায় বিয়ে দিয়ে দিবে আমি কি করে সেটা মেনে নিব।আর ওকে আমি নিয়েই বা যাব কি করে? আমি যে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি সেখানে ওকে নিয়ে ওর জীবনটা নষ্ট করার অধিকার আমার নেই তারচেয়ে ও নাইবা হলো আমার অন্য কারোর কাছে সুখি হোক।নাবিল নিজের চোখের জল লুকাতে হন হন করে হেঁটে চলে গেল।

নাবিল ফিরে এসে মেঘলাকে খুঁজতে শুরু করেছে।সে আকাশের সকল গোপন জায়গায় চিনে তাই প্রথমে সেখানে খোঁজার চেস্টা করল যদিও তার দৃঢ় বিশ্বাস আকাশ মেঘলাকে বিপদে ফেলে নি বরং মেঘলা এবং আকাশ ২ জনেই বিপদে আছে।

কিন্তু নাবিল অনেক খুঁজেও আকাশ বা মেঘলার খোঁজ পেল না।

এদিকে মেঘলা হাত বাঁধা অবস্থায় মাটিতে বসে আছে আর আকাশ বন্দুক হাতে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সাথে ইরা আরো কিছু গুন্ডাও আছে।

আকাশঃ মেঘলা ভালই ভালই বলছি তুই পেপারে সাইন কর তুই নিজের পদ প্রত্যাহার করবি।

মেঘলাঃ আমার ভাবতেও লজ্জা করছে এই আকাশকে আমি একদিন ভালবেসেছিলাম।

আকাশঃ লজ্জা তো আমারও করছে যে তোর মত একটা মেয়েকে আমি ভালবেসেছিলাম যে কিনা কখনো কোনদিন আমাকে বুঝে নি।যাক সেসব কথা ভালবাসার হিসাব নিতে আমি এখানে আসি নি আর দায়িত্ব যখন নিয়েছিলাম পালন তো করতেই হবে সাইন কর তা না হলে তোকে মেরে এখানেই পুঁতে রেখে যাব।

মেঘলাঃ আমি সাইন করব না মরে গেলেও করব না।

আকাশঃ তুই জানিস আমার কথা না শুনলে তোর সাথে কি কি ঘটবে।

এবার আকাশ আর মেঘলা ২ জনকেই অবাক করে দিয়ে দিয়ে পিছন থেকে নাবিল বলে উঠল। আমিও দেখতে চাই কি কি ঘটতে পারে।
চালা গুলি আকাশ পৃথিবীর বুক থেকে ভালবাসা বিশ্বাস ভরসা নামক শব্দগুলি মুছে যাক।

নাবিলকে দেখে মেঘলা চিৎকার করে কেঁদে উঠল।

মেঘলাঃ ভাইয়া তুই বেঁচে আছিস?

ইরাঃ বেঁচে থাকলেও এখন আর থাকবে না আজ তোদের ২ টা কে এখানে পুঁতে রেখে যাব।

নাবিলঃ হ্যা হ্যা হ্যা চালাও গুলি ইরা আর বাঁচতে চাই না বাঁচার সব ইচ্ছাই আজ মারা গেছে।এতদিন ভেবেছিলাম আমার সাথে এমন করার পিছনে নিশ্চুই কোন কারন আছে আজ দেখলাম কোন কারন নেই বরং শুধুমাত্র ক্ষমতার জন্য ও আমার সাথে এত জঘন্য গেম টা খেলেছে।
ছিঃ আকাশ ছিঃ তুই তো বন্ধু নামের কলংক প্রেমিক নামের বেইমান।

জীবনে প্রথম বলছি আমি তোকে চিনতে ভুল করেছিলাম তুই নাবিলের বন্ধু হওয়ার যোগ্য নস। তুই ভালবাসা না ঘৃনা পাওয়ার যোগ্য।তোর জন্য কি না করেছি আকাশ? অযথা কত ছেলেকে মেরেছি তুই এক কথায় কত কিছু ছেড়ে দিয়েছি একবার বলে দেখতি হাসতে হাসতে পদ ছেড়ে দিতাম। কিন্তু তুই তো আমাদের বন্ধুত্বটাকে অপমান করলি।
কান খুলে শুনে নে আকাশ আজ তোর জয় নাই সবচেয়ে বড় পরাজয় হচ্ছে।যে নাবিল তোর জন্য হাসতে হাসতে মরতে রাজি ছিল সে আজ তোকে বলছে সে তোকে ভাল নয় ঘৃনা করে i just hate you akash…!!!

চালা গুলি আগে আমার বুকে গুলি চালা। নিজের চোখে তো বোনের মৃত্যু দেখতে পারব না।তাই আগে আমাকেই মার অন্তত এইটুকু উপকার কর।

মেঘলাঃ ভাইয়া ওকে এসব বলে লাভ নেই ওকে চিনতে আমরা সবাই ভুল করেছি ও কোনদিনি লাভার ছিল না ও একটা ভিলেন। শোন আকাশ ভাইয়া নির্বাচন করছে না তাই ওর সাথে তোমার কোন শত্রুতা নেই যা আছে আমার সাথে আছে তাই ওর কোন ক্ষতি করো না। ওকে যেতে দাও। ভাইয়া তুই এখান থেকে যা।

আকাশ এতক্ষন চুপচাপ সব শুনছিল কিছুই বলে নি।এবার আকাশ চেঁচিয়ে উঠল,
আকাশঃ এই তোদের এত সাহস হয় কি করে আমাকে কথা শুনাস? জানিস না আমি তোদের এই কথাগুলি সহ্য করতে পারব না তবুও কেন বললি? কেন বললি?আকাশ অস্থির হয়ে গেছে।পাগলের মত আবল তাবল করতে করতে বলল
আজ আমি সব হিসাব মিলাব তোদের সবাইকে সবকিছু থেকে মুক্তি দিয়ে নিজেও মুক্ত হব।

এই কে আছিস নাবিলকে ধর।মুহুর্তেই কয়েকজন এসে নাবিলকে ধরে ফেলল নাবিল একটুও বাঁধা না দিলেও মেঘলা চেঁচিয়ে উঠল।
মেঘলাঃ ভাইয়াকে ছেড়ে দাও আকাশ প্লিজ।
আকাশ মেঘলার দিকে বন্দুক তাক করে বলল আবার বল আমি কি?

মেঘলাঃ তুমি একটা ভিলেন….

আকাশ যেই বন্দুকে ফিগার টানতে গেল নাবিল চেঁচিয়ে উঠল না আকাশ না মেঘলা আমার একমাত্র বোন তুই ওর সাথে এমনটা করিস না ওকে ক্ষমা করে দে।

আকাশ হা হা করে হেসে উঠল,

আকাশঃ একজনের জন্য অন্যজনের কত টান একেই বোধহয় বলে রক্তের টান।একজন অন্যজনের কত আপন।
আফসোস জীবনে কত কিছু করলাম কতবার নিজের জীবনের বাজি রাখলাম কিন্তু কেউ তা মনে রাখল না সবাই ভুলে গেছে।
যানিস নাবিল নাতো নাবিল আর নাতো আকাশ বেইমান আসলে এই পৃথীবিটাই বেইমান রে নাবিল বলেই আকাশ নিজের উপড় নিজে গুলি চালিয়ে দিল।

সাথে সাথে নাবিল আর মেঘলা চিৎকার করে উঠল। মেঘলা সাথে সাথেই সেন্সলেস হয়ে গেল আর নাবিল সবাইকে এক ঝটকায় ছাড়িয়ে দিয়ে দৌড়ে গিয়ে আকাশকে জড়িয়ে ধরল।

নাবিলঃ কি করলি আকাশ? তুই এটা কেন করলি?

আকাশঃ তোর মনে আছে নাবিল? একদিন বলেছিলি পৃথিবীর সবাই একপাশে থাকলে আর আমি আকাশ অন্যপাশে থাকলে নাবিল আকাশের পাশেই থাকবে।মনে আছে কথাগুলি?তুই না ভুলে গেছিস রে নাবিল কিন্তু আমি ভুলি নি।তোর বলা সব কথা আজ মিথ্যে হয়ে গেছেরে তাই আমার বাঁচার ইচ্ছেটাও শেষ হয়ে গেছে।
যানি আমাকে তুই ঘৃনা করিস তবুও শেষ সময়ে আমার শেষ ইচ্ছা টা রাখিস। মেঘলাটা সারাজীবনেই বোকা ছিল এখনো আছে ওকে কোথায় রেখে যাচ্ছি যানি না তবুও আমার শেষ ইচ্ছা ওকে তুই দেখে রাখিস। নাবিল আমাকে কথা দে তুই ওকে দেখে রাখবি।

নাবিলঃ চুপ কর আকাশ চুপ কর তোর কিচ্ছু হবে না আমি তোর কিছু হতে দিব না।

আকাশঃ কেন বাঁচাবি আমায় আমি তো একটা বেইমান….!!! আমি আর বাঁচতে চাই না কার জন্য বাঁচব? বুকের একপাশ তোর নামে অনেক আগেই লিখে দিয়েছিলাম কিন্তু আজ তুই তা শুন্য করে দিলি। মেঘলা নাহয় বোকা কিন্তু তুই আমায় কি করে ভুল বুঝলি নাবিল? তুই না আমার না বলা কথা বুঝতি।

নাবিলঃ চুপ করবি তুই…???

আকাশঃ তোর নির্দোষ হওয়ার সমস্ত প্রমান আবিরের কাছে আছে নিয়ে নিস। কেন কি করেছি আর হয়েছিল সময়ের অভাবে বলে যেতে পারলাম না আমি মারা যাওয়ার পর হয়ত যানতে পারবি অথবা কোনদিন যানবি না। কিন্তু একটা কথা যেনে রাখিস আমার বুকের পাঁজর টা নাবিলেই ছিল আছে যতক্ষন বাঁচব ততক্ষন থাকবে ।
আমি আর কথা বলতে পারছি না দম নিতে কষ্ট হচ্ছে অনেকদিন ঘুমাইনি রে নাবিল আজ তোর বুকে মাথা রেখে পরম শান্তির ঘুম দিব এর চেয়ে ভাল আর কি হতে পারে? নাবিল আমার সময় শেষ হয়ে আসছে একটাবার মেঘলাটাকে আমার কাছে আনবি শেষবার ওর মুখটা দেখে যাই…
বলতে বলতে আকাশের কথা বলা বন্ধ হয়ে গেল চোখ বন্ধ করে নিয়েছে আকাশ।
আকাশের কথা বলা বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে নাবিলের নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে আকাশের মাথা নাবিলের কোলে,আকাশের সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে পাশেই মেঘলা অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে…..!!!

Share This Article
Leave a comment

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।