অফিডিয়ান | পর্ব – ১৪

13 Min Read

২১. আজ এগারোটার পরপর ই বিছানায় চলে গেলো রুমাইশা। ঘুম আসছে ওর প্রচন্ড। বাইরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে, যার জন্য ঘুমেরা আর ও বেশি জেকে ধরেছে রুমাইশা কে। ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া তে ঘুম টা বেশ জমে এলো। বিছানায় যাওয়ার আধা ঘন্টার ভেতরেই ঘুমের ঘোরে তলিয়ে গেলো রুমাইশা।

দেড়টার দিকে একবার জেগে গেলো ও, কিন্তু পুরোপুরি জাগলো না, শুধু কান দুটো সজাগ হলো। কিন্তু তুমুল বৃষ্টির শব্দ ছাড়া কিছুই শুনলো না, পরক্ষণেই আবার ঘুমিয়ে পড়লো।
বৃষ্টির বেগ সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো ওঠানামা করছে। কিছুক্ষন ঝমঝম বৃষ্টি, তো কিছুক্ষন ঝিরিঝিরি। বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে আকা বাকা হয়ে ভূপৃষ্ঠে পতিত হতে লাগলো বৃষ্টির প্রতিটি ফোটা৷
ঠিক এমন সময়ে রুমাইশার ঘুম ঘোর ছুটাতে দরজার কর্কশ নকের শব্দ এসে কানে লাগলো।
কেউ একজন সমান তালে দরজায় কড়া নাড়িয়ে যাচ্ছে৷
কড়া নাড়ার শব্দে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠলো রুমাইশা।
বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালো , তারপর ধীর পায়ে হেটে দরজার নিকট পৌছালো। বাইরে তখন ও তুমুল বেগে বৃষ্টি পড়ছে।
রুমাইশা দরজায় কান পাতলো, বুকের ভেতর ঢিপ ঢিপ করছে ওর৷
বাইরে থেকে কোনো শব্দ আসছে না। সাহস সঞ্চয় করে রুমাইশা আওয়াজ দিলো, — কে?

তারপর আবার ও দরজায় কান পেতে রইলো। ওপাশ থেকে কেউ উত্তর করছে না৷
এমন সময় আবার ও নক পড়লো দরজায়।
হৃৎপিণ্ডের গতি অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে লাগলো রুমাইশার।
দরজার কাছ থেকে ফিরে এসে আবার বিছানায় বসলো। দরজা ও খুলবে না! সাফওয়ান ছাড়া এই সময়ে আর কেউ আসবে না। নিশ্চই ওকে মেরে ফেলতেই এসেছে! রুমাইশা যে সব জেনে গেছে!

নকের শব্দ অনেক ক্ষন আর হলো না, বাইরে বৃষ্টির বেগ ও এখন কমে গেছে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে আবার ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতে লাগলো রুমাইশা। ঠিক তখনই আবার ও দরজায় খট খট শব্দ করে নক পড়লো।

এবারের নক টা অন্য গুলোর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি উগ্র৷
রুমাইশা ভেবে পেলো না কি করবে! বিছানা থেকে নেমে আবার ও দরজার কাছে গেলো৷ দোনোমনা করতে লাগলো দরজা খুলবে কি খুলবে না সেটা নিয়ে৷
বাইরে বৃষ্টির বেগ আবার বাড়তে শুরু করেছে। কি ডিসিশন নিবে সেটা ভাবতে ভাবতেই আবার কয়েকটা উগ্র নক পড়লো দরজায়৷

রুমাইশা এবার কোনো কিছু না ভেবে সাথে সাথেই দরজা খুলে দিলো। আর চোখের পলকে দরজার ওপাশে থাকা মাস্ক পরিহিত ব্যাক্তি টা তার শক্ত পুরুষালি পেশিবহুল হাত টা দিয়ে তড়িৎ গতিতে রুমাইশার গলা চেপে ধরে ঠেলতে ঠেলতে সোজা বিছানার ওপরে নিয়ে চেপে ধরলো।

অতর্কিত আমলায় তাল হারিয়ে ফেললো রুমাইশা। শ্বাস নালিতে চাপ পড়া মাত্রই সাফোকেশন শুরু হলো ওর৷
নিজের দুই হাত দিয়ে প্রাণপণে গলা থেকে সাফওয়ানের হাত খানা সরানোর চেষ্টা করলো ও, কিন্তু ব্যর্থ হলো। তীব্র চাপে জিহবা বেরিয়ে আসতে চাইলো, চোখ দুইটা উলটে যাওয়ার উপক্রম হলো ওর।

— আমার ওপর নজরদারি চালাচ্ছো রুমাইশা কাদের! এই তুমি! আমার ওপর নজরদারি চালাচ্ছো?
রুমাইশার কানের একদম কাছে মুখ নিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল সাফওয়ান।

তারপর কানের কাছ থেকে মুখ সরিয়ে, অসহ্য যন্ত্রণায় নীল হয়ে যাওয়া রুমাইশার মুখের দিকে শকুনি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো৷
সাফওয়ানের হাত টা গলা থেকে সরানোর চেষ্টারত অবস্থায় রুমাইশার হাত দুইটা আস্তে আস্তে শক্তি হারিয়ে শিথিল হয়ে যেতে শুরু করলো, বাঁচার আকুতি নিয়ে শেষবারের মতো চোখ মেলে তাকালো রুমাইশা।
জ্বলজ্বল নিশাচরী চোখ দুইটা দিয়ে সেই আকুতি স্পষ্ট দেখতে পেলো সাফওয়ান৷ নিজের হাতের বাধন টা অল্প একটু আলগা করলো।

সামান্য ছাড়া পেয়েই মুখ দিয়ে প্রচন্ড জোরে নিঃশ্বাস নিলো রুমাইশা। আর তারপরেই অসহায়ের মতো কাশতে শুরু করলো, মুখ দিয়ে লালা বেরিয়ে আসলো ওর।
কিন্তু রুমাইশার এমন মরমর অবস্থা দেখেও মন গলল না সাফওয়ানের, গলা ছাড়লো না ও৷

আচমকা সাফওয়ান রুমাইশার বুকে নিজের গায়ের গন্ধের কোনো বস্তুর উপস্থিতি টের পেলো৷ রুমাইশার মুখের ওপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে চোখ নামালো রুমাইশার বুকে।
সন্দেহের চোখে আর ও একবার চোখ তুলে তাকালো রুমাইশার চোখের দিকে৷

বেদনাবিধুর দৃষ্টিতে সাফওয়ানের সন্দেহপূর্ণ চাহনির দিকে তাকিয়েই ওর মনে পড়লো রুনিয়া আসার পর জঙ্গল থেকে কুড়িয়ে পাওয়া সেই বস্তু টা ও ওর অন্তর্বাসের ভেতরেই ঢুকিয়ে রেখেছিলো৷ ঘটনা টা মনে পড়তেই আঁতকে উঠল রুমাইশা।
সাফওয়ান নিজের তীক্ষ্ণ নাক দিয়ে কয়েকবার জংলী পশুদের মতো করে রুমাইশার বুকের কাছ টার ঘ্রাণ নিলো৷
আর তারপর সেই বস্তু টা যে একান্তই তার সেটা নিশ্চিত হওয়া মাত্রই রুমাইশার দিকে অগ্নিচক্ষু দিয়ে তাকালো সাফওয়ান৷
গলার বাধন যেটুকু আলগা করেছিলো সেটুকু আবার ও সুদৃঢ় বন্ধনে চেপে ধরলো সাফওয়ান৷ আর সাথে সাথেই আগের মতো আবার ও হাত পা অবশ হয়ে এলো রুমাইশার।
সাফওয়ান রুমাইশার গলার নিচে তার বক্ষের আরম্ভস্থলে
নিজের হাত স্পর্শ করে ধীর গতিতে দুইটা আঙুল রুমাইশার কামিজের অভ্যন্তরে অন্তর্বাসের ভেতর দিয়ে বক্ষ বিভাজিকা ছুয়ে দিয়ে নিয়ে গেলো অন্তর্বাসের সীমান্ত রেখায়, আর তার পর সেই কাঙ্ক্ষিত বস্ত টা পেয়েও গেলো সাফওয়ান৷ এক টান দিয়ে সেটা বের করলো ও৷
টান দেওয়ার সাথে সাথে সাফওয়ানের নখের আচড়ে রুমাইশার বুকের মাঝখানে ছিলে গিয়ে কিঞ্চিৎ রক্তিম আভা দেখা গেলো৷
আর এরপরেই রুমাইশার গলা পুরোপুরি ছেড়ে দিলো সাফওয়ান৷ তারপর রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে ছিটকিনি দিয়ে দিলো।

শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে ছাড়া পাওয়া মাত্রই রুমাইশা নিজের গলা তে হাত দিয়ে প্রচণ্ড শব্দ করে দম নিলো৷ চোখ থেকে অনর্গল পানি পড়তে লাগলো ওর৷ মুখ থেকে কষ বের হয়ে গাল বেয়ে পড়ছে ওর। শ্বাসকষ্টের রোগীর মতো জোরে জোরে দম নিতে থাকলো রুমাইশা৷

সাফওয়ান এবার এক ঝটকায় রুমাইশার হাত ধরে বিছানা থেকে উঠিয়ে নিজের বুকের সাথে রুমাইশার পিঠ চেপে ধরলো, তারপর রুমাইশার চিবুক চেপে ধরে রুমাইশার কানের কাছে মুখ নিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, ‘তোর সাহস কত বড়, তুই আমার ওপর নজর রাখছিস! কবে থেকে জানিস তুই আমার ব্যাপারে? কবে থেকে? কবে থেকে আমার অবস্থা সম্পর্কে জানিস বল, এখনি!”

রুমাইশা কোনো উত্তর করতে পারলো না কান্না ছাড়া। গলা যেন বসে গেছে ওর৷
বাইরের বৃষ্টির বেগ ক্রমশ বাড়তে থাকলো আর সেই সাথে সমান তালে বাড়তে থাকলো সাফওয়ানের ক্রোধ।
— আমার রুমে কেন গিয়েছিলি? কিসের জন্য গিয়েছিলি আমার রুমে? গোয়েন্দাগিরি করছিস? আমার ওপর?”

সেদিন ছেলেরা সবাই নামাজে গেলে সবার অগোচরে সাফওয়ানের রুমে হানা দেয় রুমাইশা৷ যেখানে রুনিয়ার ও যাওয়ার অনুমতি নেই সেখানে ও অনধিকার প্রবেশ করে। সাফওয়ানের রুমের একটা দেয়াল জুড়ে বুককেস রাখা। সেখানে অধিকাংশ বই-ই বিভিন্ন গাছ ও গুল্ম সম্পর্কে যার নাম ও কখনো শোনেনি রুমাইশা৷ আর বাকি যে গুলো, সেগুলো সব সরিসৃপ দের নিয়ে, বিশেষ করে সাপ।

টেবিলে রাখা ছিলো একটি কালো মলাটের মোটা ডায়েরি, যেটা খুলে কয়েক পাতা উলটে দেখেছিলো রুমাইশা৷ সেটা ছিলো সাফওয়ানের রিসার্চ পেপার, তার নিজেরই সম্পর্কে। বিছানার এক কোণে এক টুকরো খোলস পেয়েছিলো সাফওয়ানের, যেটা ফেরার সময়ে হাতে করে নিয়ে চলে এসেছিলো রুমাইশা।
ওই খোলসের সাথে জঙ্গলে দেখা খোলসের হুবহু মিল দেখে রুমাইশা বুঝে যায়, সাফওয়ানই ছাদ থেকে মাটিতে লাফ দিয়ে জঙ্গলে যায়। কিন্তু কেন যায় সেটা উদঘাটন করতে গিয়েই বিপত্তি টা বাধে৷

নামাজ শেষে বাড়িতে ফিরে নিজের রুমে অন্য কারো স্পর্শের গন্ধে দিশেহারা হয়ে যায় সাফওয়ান, কিন্তু কিছুক্ষন ভাবনা চিন্তা করার পরই পেয়ে যায় আসল কালপ্রিট কে৷

রুমাইশার কোনো উত্তর না পেয়ে সাফওয়ান প্রচণ্ড রেগে গেলো। রুমাইশা কে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিজের ডান হাত দিয়ে রুমাইশার দুই গালের টুটি চেপে ধরলো ও।
ব্যাথায় কুকড়ে গেলো রুমাইশা। চোখ থেকে অঝরে পানি পড়তে লাগলো, মুখ থেকে অস্ফুট শব্দ বেরিয়ে আসলো ওর।

সাফওয়ান নিজের মুখ রুমাইশার মুখের একদম কাছে নিয়ে গিয়ে কঠিন স্বরে বলল, ‘শাফিন বা বাইরের অন্য কেউই যদি এই ব্যাপারে জানে, তাহলে সেটা হবে তোর শেষ দিন৷”
তারপর ভরাট পুরুষালি কণ্ঠে ধীরে ধীরে বলল, ‘ইফ ইয়্যু ওয়ানা লিভ, জাস্ট কিপ ইয়োর মাউথ শাট, টোটালি শাট। অর আই উইল গিভ ইয়্যু আ কিস অব ডেথ অন ইয়োর নেক লাইক দ্যা প্রিভিয়াস ওয়ান, এ্যন্ড ইয়্যু উইল নো লংগার বি ইন দিজ ওয়ার্ল্ড, মাইন্ড ইট!”

আর ও কিছুক্ষন রুমাইশা কে এইভাবেই চেপে ধরে রেখে এক ঝটকায় নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলো সাফওয়ান৷
তারপর তড়িতগতিতে দরজা খুলে যেভাবে এসেছিলো সেভাবেই আবার বেরিয়ে গেলো।

সাফওয়ান চলে যাওয়ার সাথে সাথেই মাটিতে হাটু গেড়ে বসে পড়লো রুমাইশা। গলার বা পাশে সাফওয়ানের হাতের দুই আঙুলের ছাপ বসে গেছে, জায়গা টা লাল হয়ে আছে।
ফ্লোরে বসে গলায় হাত দিয়ে হাসফাস করতে লাগলো রুমাইশা।
প্রচন্ড ব্যাথা অনুভুত হচ্ছে গলায়, ঢোক গিলতেও কষ্ট হচ্ছে৷ গালের পাশ দিয়ে কষ পড়ে কামিজে লেগেছে৷ ধুয়ে ফেলতে হবে সব।

অনেক কষ্টে ফ্লোর থেকে উঠলো রুমাইশা। ক্লোজেট থেকে একটা ওভার সাইজ টি শার্ট আর ট্রাউজার বের করলো ও৷
ওয়াশরুমে গিয়ে নিতম্ব ছাড়ানো চুল গুলো খুলে দিয়ে ঝর্ণা ছেড়ে দিলো। ঝর্ণার পানি গায়ে পড়ার সাথে সাথেই ফুপিয়ে কেদে উঠলো রুমাইশা।
— এই কি সেই সাফওয়ান যে কিনা ওর পশম কেউ স্পর্শ করলেও ছুটে আসতো! যে ওর কান্না দেখতে পারতোনা! যেকিনা ওর জন্য যাকে তাকে মেরে বসতো! এই কি সে!
হ্যা, ওর যে দোষ নেই তা নয়, সাফওয়ানের বিনা অনুমতিতে সাফওয়ানের রুমে ঢুকেছে, ওর ওপর নজরদারি করেছে, জানার চেষ্টা করেছে সাফওয়ানের এমন হওয়ার কারণ! কিন্তু তাই বলে এইরকম টর্চার করবে! এর চাইতে মেরে ফেলাই তো ভালো ছিলো!”
ওয়াশরুমের ফ্লোরে বসে জোরে জোরে কান্না করতে থাকে রুমাইশা। গলার ব্যাথাতে শব্দ করতে প্রচণ্ড কষ্ট হওয়া সত্বেও কান্না থামছে না ওর৷

কিছুক্ষন পর ভেজা চুল নিয়ে গায়ে টাওয়েল জড়িয়ে ওয়াশরুম থেকে বাইরে বের হলো রুমাইশা। ড্রেসিং টেবিলের তাকে রাখা স্যাভলন ক্রিম টা থেকে অল্প একটু ক্রিম নিয়ে আলতো করে লাগিয়ে দিলো নিজের বুকের মাঝখানের ক্ষত স্থানে। তারপর বিছানায় রেখে যাওয়া বটল গ্রীন টি শার্টের সাথে আকাশি রঙের কটনের ট্রাউজার পরে নিলো। চুল গুলো মুছে পিঠের ওপর ছেড়ে রাখলো।
অতঃপর বিছানায় উঠে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে হাটু জোড়া বুকের কাছে নিয়ে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বসে রইলো।

“””
নিজের রুমে গিয়ে মোটেও স্বস্তি পাচ্ছে না সাফওয়ান। বার বার রুমাইশার যেই যন্ত্রণায় কাতর চেহারা টা চোখের সামনে ফুটে উঠেছে। রাগের মাথায় রুমাইশা কে এইভাবে অত্যাচার করা মোটেও ওর উচিত হয়নি৷ অপরাধবোধে অস্থির হয়ে পায়চারি করতে শুরু করলো সাফওয়ান সমস্ত ছাদ জুড়ে।

গতকাল রুমাইশা জঙ্গলে যাওয়ার দুই রাত আগে সাফওয়ান গিয়েছিলো সেখানে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ওর পকেট ওয়াচ টা সেখানেই পড়ে যায়।
টাইমেক্স কোম্পানির এই পকেট ওয়াচ টা ওর দাদু ওকে ছোটবেলায় দিয়ে বলেছিলেন এটা নাকি ওর অনেক কাজে লাগবে। কিন্তু কি কাজে লাগবে সেটা ছোটবেলায় না বুঝলেও এখন সেটার ব্যাবহার খুব ভালো ভাবেই জানা সাফওয়ানের৷

সেদিন রাতে নিজের রুমে এসে ও বুঝলো পকেট ওয়াচ টা জঙ্গলেই পড়ে গেছে। কিন্তু রুমাইশা জঙ্গলে যাওয়ার রাতে সাফওয়ান জঙ্গলে গিয়ে তন্নতন্ন করে খুজেও ওয়াচ টা পায়নি। আর তখনি নিজের রুমে পাওয়া কারো গায়ের গন্ধের কথা মনে পড়ে ওর৷ আর সেই ব্যাক্তি যে তাদের বাড়িতে বিদ্যমান কেউ সেটাও বুঝে যায় সাফওয়ান। আর সেটা রুমাইশা ছাড়া আর কেউ না।

ব্যাপার টা বুঝার পর থেকেই ক্রোধ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে সাফওয়ানের৷ আর তাই রুমাইশা কে একটা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই এইভাবে অত্যাচার চালিয়েছে ও।

— কেন করলাম আমি এমন! কেন করলাম! ওকে তো ভালো ভাবেই বোঝাতে পারতাম! ও যদি মরে যেত! কি হতো তখন! কেন করলাম আমি এমন!”
এসব ভাবতে ভাবতে পায়চারি থামিয়ে টি টেবিলের পাশে রাখা চেয়ার টিতে বসে কনুই উরুতে ঠেকিয়ে দুই হাত দিয়ে নিজের মাথার চুল আকড়ে ধরে রইলো সাফওয়ান।

— আমার রিমু! আমার আদরের রিমু! কি করলাম আমি!”
মনে মনে আওড়াতে থাকলো ও!

চেয়ারের ওপর ওভাবেই খানিকক্ষণ কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে বসে রইলো সাফওয়ান।
বসে বসে ভেবে মন আর মস্তিষ্কের সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলো পরিস্থিতি টা অন্য ভাবে সামলানোর।

রুমে গিয়ে নিজের মার্সিডিজ বেঞ্জ এর চাবিটা হাতে নিলো সাফওয়ান, তারপর দোতলার দিকে এগোলো। উদ্দেশ্য ওর রুমাইশার রুম……..

Share This Article
Leave a comment

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।