অফিডিয়ান | পর্ব – ৭৪

26 Min Read

পুলিশ সুপার কবিরের কথাতে সম্মতি জানিয়ে বললেন,
— হ্যা, তুমি কালই একবার আফতাব কে নিয়ে গোপনে তাকে দেখে এসো, কিন্তু তিনি আছেন কোথায়?

— ইশতিয়াক আহমেদ নামের একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রাইভেট কোম্পানির ম্যানেজারের বাড়িতে। সেখানেই আজ কিছুদিন যাবৎ তিনি আছেন। ইশতিয়াক আহমেদের ছোট ছেলে শাফিন আহমেদ, এস সি টি কোম্পানির সি ই ও, তার সাথে লোকটা কোনো ভাবে সম্পৃক্ত বলে জানতে পেরেছি।

নাম গুলো শুনে পুলিশ সুপার যেন একটু চমকালেন। তারপর কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন,
— নাম গুলো কেমন জানি শোনা শোনা লাগছে। মনে হচ্ছে এই নাম গুলোর সাথে আমি অনেক আগে থেকেই পরিচিত।

তারপর আবার কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন,
— শোনো, আগের থেকেই আফতাব কে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। আমি নিজেই একটু খোজ খবর করি, তারপর কাল সকালে তোমাকে আমি জানাবো। এই নাম গুলো আমার খুব পরিচিত পরিচিত লাগছে। আমি একটু ঘাটাঘাটি করে দেখি। এখন তুমি বাসায় চলে যাও৷

কবির ‘ওকে স্যার’ বলে বিদায় নিয়ে চলে গেলো নিজের বাসার উদ্দ্যেশ্যে, আর পুলিশ সুপার নিজের জন্য নির্ধারিত গাড়িতে উঠলেন। চোখে মুখে ওনার চিন্তার ছাপ।

১০১. সকাল সকাল খেয়ে দেয়ে নানু বাসায় যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বসে আছে সাদমান আর শাহমীর। সাফওয়ান রেডি হয়ে রুমের ভেতরের সোফায় বসে আছে রুমাইশার জন্য, সে নিচে গেছে সানিয়া আর শাফিনের গোছানো হয়েছে কিনা দেখতে। ওদের কেও সাথে নিয়ে ঘুরে আসবে ও বাড়ি থেকে। রুমাইশার এখনো গোছানো কমপ্লিট হয়নি। সে ওদের খোজ খবর নিয়ে এসে গোছাবে৷

কিছুক্ষণ বাদেই রুমাইশা এলো রুমে। অফ হোয়াইটের ওপর বেবি পিংক আর আর অর্কিড রঙা সুতার কাজ করা মসলিনের একটা সালওয়ার কামিজ পরণে ওর, ওড়না টা বুকের ওপর ফেলানো৷ সাজগোজ কিছুই কমপ্লিট হয়নি তার এখনো, ভেজা চুল গুলো পিঠের ওপর এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে আছে। কিন্তু বউ কে এমন এলোমেলো বেশে দেখেই ঘায়েল হয়ে গেলো সাফওয়ান। অপলকে তাকিয়ে রইলো ও রুমাইশার দিকে।

রুমাইশা রুমে ঢুকেই ড্রেসিং টেবিলের দিকে এগোতে এগোতে বলল,
— সাফওয়াইন্না, তুমি বাচ্চা দের নিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসো, আমার এই পাঁচ সাত মিনিট লাগবে। শাফিন রাও রেডি প্রায়। যাও এখনি, গাড়ি বের করো গিয়ে।

সাফওয়ান পেছন থেকে গলা খাকারি দিয়ে বলল,
— বাচ্চাদের কে শাফিন দের সাথে দিয়ে দিই? তুমি আর আমি আলাদা যাই?

চাপা সুরে বলল যেন সাদমান শাহমীরের কানে এ কথা না যায়। রুমাইশা চুলে চিরুনি করছিলো, সাফওয়ানের কথা শুনে চিরুনী করা থামিয়ে ও সাফওয়ানের দিকে মাথা ঘুরিয়ে তাকালো, তারপর ভ্রুকুটি করে বলল,
— যত বয়স হচ্ছে তত তোমার বোধ বুদ্ধি লোপ পাচ্ছে বলো! নতুন বিয়ে হয়েছে কাদের? আমাদের না ওদের? ওরা এখন একটু কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করবে, আলাদা ঘুরবে, আলাদা খাবে, সেখানে তুমি বাচ্চা দের কে কিভাবে পাঠাতে চাও বলতো!

সাফওয়ান বেজার মুখে অন্য দিকে তাকিয়ে চাপা সুরে ধুরো’ বলে উঠলো। তারপর বসা থেকে উঠে, বিছানার ওপর থেকে রাশা কে কোলে নিয়ে সাদমান আর শাহমীর কে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
দোতলা পর্যন্ত যেতে যেতেই শাফিন বের হলো রুম থেকে। শাফিন কে একা দেখে সাফওয়ান সিড়ি বেয়ে নামতে নামতে জিজ্ঞেস করলো,
— তুই একা কেন? সানিয়া কই?

শাফিন কোমরে হাত দিয়ে বলল,
— এখনো রেডি হচ্ছে, এই মেয়ে মানুষ দের মোটেও রেডি হওয়া শেষ হয়না।

সাফওয়ান ‘সবই কপাল’ বলে দোতলার সিড়ি বেয়ে নিচে নামলো, শাফিন ও নামলো ওর পেছন পেছন। এরপর রুনিয়ার সাথে কথা বলে বিদায় নিয়ে ওরা মেইন ডোর দিয়ে বাইরে চলে গেলো।
শাফিন গিয়ে গ্যারাজ থেকে মার্সিডিজ টা বের করলো, তারপর সাফওয়ান গিয়ে বের করলো ওর ল্যমবরগিনি টা। আর এরপর রুমাইশা আর সানিয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রইলো ওরা।

খানিক বাদেই রুমাইশা আর সানিয়া দুজন একসাথে বের হলো গল্প করতে করতে। সানিয়া নতুন বউ বলে রুনিয়া তাকে শাড়ি পরতে বলেছে, খয়েরী রঙা একটা কাতান শাড়ী পরেছে সে। ফর্সা গায়ে সে শাড়ীর রঙ ফুটে পড়েছে অত্যান্ত সুন্দর ভাবে।

দুজনেই গাড়ির কাছাকাছি আসার পর সানিয়া রুমাইশা কে বলল,
— আপু, সাদমান আর শাহমীর আমাদের সাথে যাক, আপনি আর বড় ভাইয়া রাশা কে নিয়ে যান।

রুমাইশা প্রথমে আপত্তি করলেও পরবর্তীতে শাফিন আর সানিয়ার বারংবার অনুরোধে অবশেষে রাজি হলো। সাদমান আর শাহমীর কে নিয়ে শাফিন আর সানিয়া দুজন আগেই বেরিয়ে গেলো। আর এরপর রুমাইশা আর সাফওয়ান গাড়িতে উঠলো। গাড়িতে উঠেই সাফওয়ান রুমাইশা কে বলল,
— দেখেছো! আমার ভাইয়ের বউ টাই শুধু আমার মনের কথা টা বুঝতে পেরেছে। আর তোমরা!

রুমাইশা মুখ বেকিয়ে বলল,
— হুম, হয়েছে, এখন তুমি গাড়ি চালাও, বেশি বইকো না।

.

সহকারী পুলিশ সুপার কবির হোসেন থানায় আসার উদ্দ্যেশ্যে বের হচ্ছিলো। সেই মুহুর্তেই তার কাছে পুলিশ সুপারের ফোন এলো। কবির বাসা থেকে বেরোতে বেরোতে কল টা রিসিভ করে সালাম বিনিময় করে বলল,
— জ্বি স্যার, বলুন।

পুলিশ সুপার বললেন,
— কবির, আজ থেকে বারো-তেরো বছর আগে তুমি কোথায় ছিলে বা কি করতে?

কবির উত্তর দিলো,
— তখন আমি সম্ভবত অনার্সে ছিলাম, সেকেন্ড বা থার্ড ইয়ারে। কিন্তু কেন স্যার?

পুলিশ সুপার বললেন,
— তখন একটা ঘটনা শুনেছিলে? এম এম কলেজের একজন তরুণ প্রফেসর কে নিয়ে সারাদেশে খুব হৈচৈ পড়ে গেছিলো! যে কিনা একজন হিটম্যান ছিলো, মানুষ মারা ছিলো তার প্রফেশন!

কবির কিছুক্ষণ ভেবে উত্তর দিলো,
— হ্যা স্যার, এরকম কিছু শুনেছিলাম, কিন্তু ক্লিয়ারলি তেমন কিছুই মনে নেই। কিন্তু এ ঘটনা নিয়ে আবার কি হচ্ছে?

পুলিশ সুপার বললেন,
— থানায় আসো, বলছি। দ্রুত আসো।

ঘন্টা দুয়েক পর কবির উপস্থিত হলো থানায়। তারপর সোজা চলে গেলো পুলিশ সুপারের রুমে। পুলিশ সুপার পুরোনো ফাইল গুলো ঘাটছিলেন। কবির কে ভেতরে আসতে দেখে তিনি ফাইল গুলো বন্ধ করে এক পাশে সরিয়ে রাখতে রাখতে বললেন,
— এসো কবির, বসো এখানে।

কবির এসে পুলিশ সুপারের সামনের চেয়ার টেনে বসলো। তারপর অপেক্ষায় রইলো পুলিশ সুপারের কাজ শেষ হওয়ার। পুলিশ সুপার ফাইল গুলো ভালো ভাবে গুছিয়ে রেখে টেবিলের ওপর কনুই ঠেকিয়ে দু হাত এক জায়গায় নিয়ে এসে বললেন,
— কাল রাতে আমি তোমাকে বলেছিলাম যে ইশতিয়াক আহমেদ, শাফিন আহমেদ, এ নাম গুলো আমার খুব চেনা চেনা লাগছে। এরা আসলে কারা সেটা জানো?

কবির মাথা নাড়ালো, তারপর মুখে বলল,
— জ্বি, না স্যার। কখনো শুনেছি বলে মনে পড়ছে না।

পুলিশ সুলার ভাবুক ভঙ্গিতে মাথে নেড়ে বললেন,
— মনে থাকার কথা ও না, সেটা অনেক বছর আগের ঘটনা। সকালে তোমাকে একজন প্রফেসরের কথা বলছিলাম মনে আছে নিশ্চয়?

কবির মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। পুলিশ সুপার আবার বললেন,
— সেই প্রফেসরের নাম হলো সাফওয়ান আহমেদ, এই ইশতিয়াক আহমেদ হলো তার বাবা, আর শাফিন আহমেদ তার ছোট ভাই। সাফওয়ান আহমেদ হয়তো আর বেচে নেই। বা বেচে থাকলেও কোথায় কিভাবে বেচে আছে সেটা সবারই অজানা। ঘটনা টা বেশ ইন্টারেস্টিং, শুনতে চাও?

কবির মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে বলল,
— জ্বি স্যার শুনতে চাই।

বলে নিজের চেয়ার টাতে নড়ে চড়ে বসলো।

.

সাফওয়ান রা যখন পৌছালো তখন ঘড়ির কাটা বেলা এগারোটার দিকে ঝুকে গেছে। শাফিন রা আগেই চলে এসেছে, আর সাফওয়ান রা একটু দেরি করেই এসেছে। রাস্তায় যেখানেই ভালো লেগেছে সেখানেই নেমে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়েছে ওরা। আর তারপর অবশেষে এসে পৌছেছে বাড়িতে।

সাফওয়ানের গাড়িটা বাড়িতে ঢোকার সাথে সাথেই আয়েশা নেমে এলেন। রুমাইশা রাশা কে কোলে নিয়ে বের হলো, আয়েশা রুমাইশার কোল থেকে রাশা কে নিয়ে নিলেন। তারপর সবাইকে নিয়ে ঘরের দিকে এগোলেন। সানিয়া এসেই আফসানার সাথে গল্প জুড়ে দিয়েছে। এখনো তাদের গল্প শেষ হয়নি। শাফিন আর রাফসান দুজনে অপেক্ষায় ছিলো সাফওয়ানের পৌছানোর, তিনজন মিলে মাঠের দিকে ঘুরতে যাবে বলে প্লান করে বসে আছে ওরা।

সাফওয়ান এসে হালকা একটু নাস্তা করেই বেরিয়ে গেলো শাফিন আর রাফসানের সাথে। আর রুমাইশা গেলো আফসানা আর সানিয়া যে রুমে আছে সে রুমে। রুমাইশা সে ঘরে প্রবেশ করার সাথে সাথেই আফসানা চুপসে গেলো। হাসি হাসি মুখ টা আঁধার কালো হয়ে গেলো তার। কাচুমাচু হয়ে সে একদিকে সরে বসলো।

রুমাইশা এসেই হাসি মুখে আফসানা কে জিজ্ঞেস করলো,
— কেমন আছো ভাবি? তোমার মাথার আঘাতের কি অবস্থা এখন?

আফসানা মুখে জোর পূর্বক হাসি ফুটিয়ে উত্তর দিলো,
— জ্বী আপু, ভালো আছি। মাথার আঘাত টাও ঠিক ঠাক হওয়ার পথে, কাল ডাক্তার এসে সেলাই কেটে দিয়ে যাবে বলেছে।

আফসানার এ হঠাৎ পরিবর্তন চোখে পড়লো সানিয়ার। রুমাইশা কে দেখে সে আফসানার এই মিইয়ে যাওয়ার কারণ খুজে পেলো না। আর রুমাইশার মতো এমন হাসি খুশি আর আপন করে নেওয়া মানুষ দেখেও যে কেউ মিইয়ে যেতে পারে সেটাই সে বুঝে উঠতে পারলো না।
ও বাড়িতে যেদিন থেকে শাফিনের বউ হয়ে এসেছে সেদিন থেকেই এই হাসিখুশি মেয়েটা তাকে যখনই সময় পাচ্ছে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছে৷
শাফিন যেবার তাকে বলেছিলো যে তার বড় ভাইয়ের বউ তার খুব কাছের আত্মীয়দের ভেতরেরই একজন আর সম্পর্কে সানিয়ার ননদও হয়, আবার শাশুড়ী মা ও তাকে প্রচন্ড পছন্দ করে, সেদিন সানিয়ার মনে হয়েছিলো যে, কখনো যদি সে ফরে আসে তাহলে তার পক্ষে হয়তো শ্বশুর বাড়িতে সার্ভাইব করা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়াবে৷ কিন্তু ভগ্নি তুল্ল এই হাসি খুশি মেয়েটাকে দেখে তার পরবর্তীতে আর একবারও এমন মনে হয়নি।
যদিও এত অল্পদিনের পরিচয়ে মানুষ চেনা যায় না, তবুও যতটুকু সে রুমাইশা কে দেখেছে বা চিনেছে তাতে রুমাইশা কে তার একদমই টিপিক্যাল ননদ বা জা এর মতো মনে হয়নি। এসে থেকেই সে তার থেকে তিন বছরের বড় এই ননদ কাম জায়ের থেকে সর্বদা স্নেহপূর্ণ আচরণ পেয়েছে।

কিন্তু সেই তাকে দেখে মুখের হাসি হারিয়ে ফেলা আফসানার প্রতি কিছুটা মনোক্ষুণ্ণ হলো সানিয়া। রুমাইশা বিছানার ওপর পা তুলে বসলো, তারপর সানিয়া কে উদ্দ্যেশ্য করে বলল,
— কতদিন পর নিজের বাপের বাড়িতে এলাম বলতো! দীর্ঘ তেরো বছর পর। তোমার বড় ভাইয়ার সাথে বিয়ের পর মনে হয় একবার কি দুবার এসেছি এখানে, তারপর আর আসা হয়নি। কেমন যেন নতুন নতুন লাগছে সবকিছু।

আফসানার অস্বস্তি হচ্ছে প্রচন্ড, মনে হচ্ছে তার দম আটকে আসবে এখনি। রুমাইশার দিকে সে তাকাতে পারছে না৷ অপরাধবোধ তাকে কুরে কুরে খেয়ে ফেলছে যেন এই মুহুর্তে। কথাও বের হতে চাইছে না মুখ দিয়ে ওর। অনেক চেষ্টা করে কোনো রকমে আফসানা বলে উঠলো,
— তোমরা গল্প করো, আমি দেখে আসি আম্মার কিছু লাগবে কিনা!

বলেই কারো কোনো কথার অপেক্ষা না করেই কিছুটা তাড়াহুড়ো করেই নেমে গেলো আফসানা। সানিয়া তাকিয়ে রইলো সেদিকে। তারপর রুমাইশার দিকে ফিরে বলল,
— কি হয়েছে বলো তো আপু? ভাবি তো ভালোই কথা বলছিলো এতক্ষন, হঠাৎ ওনার মন খারাপ হয়ে গেলো কেন?

রুমাইশা সেদিকে তাকিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়ে সানিয়া কে বলল,
— অন্যের মনের কথা আমি কিভাবে বলবো বলো! আচ্ছা, এসব কথা বাদ দাও, তুমি আর শাফিন হানিমুনে যাচ্ছো কবে? ঠিক করেছো?

সানিয়া লজ্জা পেলো কিঞ্চিৎ, ফর্সা গাল দুটোতে রক্তিম আভা দেখা গেলো, তা দেখে মুচকি হাসলো রুমাইশা। সানিয়া চোখ নামিয়ে বলল,
— এখনো ডেট ফিক্সড হয়নি, আপনার ছোট ভাই বলছিলো যে আপনারা ফিরে গেলে তবেই যাবে, আপনাদের কে বাড়িতে রেখে সে কোথাও যেতে চাচ্ছে না।

রুমাইশা বলল,
— কি বলো! আচ্ছা, শাফিন রা ফিরুক, আমি ওর সাথে কথা বলে দেখছি। নতুন নতুন বিয়ে করেছো, কোথায় ঘুরে টুরে বেড়াবে সারাক্ষণ, তা না!

সানিয়া লাজুক হেসে রুমাইশার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— আপনাদের বিয়ের পর ভাইয়া কোথায় ঘুরতে নিয়ে গেছিলো আপনাকে?

রুমাইশা ঠোঁট উলটে বলল,
— রাস্তায়।

সানিয়া হেসে উঠলো খিলখিল করে, তারপর জিজ্ঞেস করলো,
— কি বলেন! রাস্তায় কেন?

প্রতিউত্তরে রুমাইশা বলল,
— তার যখন ভাল্লাগতো তখন আমাকে বলতো চল ঘুরে আসি, তারপর আমাকে সহ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরতো, আমরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতাম ঘন্টার পর ঘন্টা, তারপর ফিরে আসতাম বাড়িতে।

সানিয়া কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— ভাইয়া আপনাকে তুই করে বলতো নাকি আপু?

রুমাইশা ফিক করে একটু হেসে বলল,
— শুধু কি তুই করে বলেই ক্ষান্ত ছিলো, চটকানাও খেতাম সারাদিন, আর শুধু মেজাজ দেখাতো, আনরোম্যান্টিকের বস্তা ছিলো একটা। ওনার রোম্যান্টিকতা দেখা যেতো শুধু রাতের বেলা৷ যদিও এখন তার আপগ্রেড হয়েছে। এখন তার রাতের বেলার রোম্যান্টিকতা প্রসারিত হয়ে দিনের বেলার অর্ধেক টা জুড়ে নিয়েছে।

রুমাইশার কথা শুনে সানিয়া লজ্জা পেয়ে খিলখিল করে হেসে উঠলো।

১০২. থানার বাইরে একটা চায়ের দোকানে বসে আছে কবির, মুখে তার চিন্তার ছাপ। পুলিশ সুপারের থেকে আহমেদ পরিবারের কাহিনী টা ও শুনেছে। খুবই নিদারুণ, একই সাথে ভয়ঙ্কর ঘটনা। সাফওয়ান নামক লোকটার জন্য মনে মনে খুব আফসোস হচ্ছে ওর। এমন মেধাবী আর দক্ষ একজন কত সহজেই হারিয়ে গেলো সবার ভেতর থেকে৷
এমন সময়ে একজন কনস্টেবল এসে কবিরের ফোন টা তার হাতে দিয়ে বলল,
— স্যার আপনার ফোন টা অনেক ক্ষন ধরে বাজছে। তাই আমি নিয়ে এসেছি।

কবির তার হাত থেকে ফোন টা নিলো, তার একজন দামী ক্যামেরা ওয়ালা বন্ধুকে একটা কাজ দিছিলো, সে-ই কল করেছে। কল ব্যাক দিলো কবির, ওপাশের লোকটা কল রিসিভ করতেই কবির বলে উঠলো,
— হ্যা সাগর বল। কাজ হয়েছে?

ওপাশ থেকে সাগর লোকটা বলল,
— হ্যা দোস্ত, ওরা সকালে কোথায় যেন গিয়েছে সবাই মিলে। ওরা বের হলেই আমি শ্যুট করেছি। দূর থেকেই করেছি, কেউ দেখতে পায়নি, সন্দেহও করেনি, সবার ফটোই নিয়েছি। তোকে হোয়াটসঅ্যাপে ডকুমেন্ট করে পাঠিয়ে দিয়েছি, দেখে নে একবার।

কবির সাগর নামের ছেলেটাকে ধন্যবাদ বলে কল কেটে দিলো। তারপর ডাটা কানেকশন অন করে হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকলো। সাগরের পাঠানো ছবি গুলো খুব মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকলো ও৷
সাদ্দাত হুসেইন লোকটার পরণে নেভি ব্লু রঙা ফুল স্লিভ টি শার্ট, আর কালো রঙা প্যান্ট, লোকটা সত্যিই দারুণ দেখতে। বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা, চোখে মুখে চৌকস চৌকস একটা ভাব, চোখের দৃষ্টি বিচক্ষণ, টি শার্টে ঢেকে থাকা বিশাল শরীর টা সুগঠিত। লোকটার পাশে দাঁড়ানো অফ হোয়াইটের থ্রিপিস পরা সুগঠিত, সুশ্রী চেহারার মেয়েটার মুখে হাসি, কোলে একটা মেয়ে বাচ্চা। মেয়েটি সম্ভবত সাদ্দাত হুসেইনের স্ত্রী।

অন্য একটা ফটো তে শাফিন নামক ছেলেটা, সাথে দুইটা জমজ বাচ্চা। সাদ্দাত হুসেইনের মুখের সাথে অনেক খানি মিলে, হয়তো এ বাচ্চা দুটোও সাদ্দাত হুসেইন এর। অন্য ফটো তে আর একটা মেয়ে, শাড়ি পরে আছে, ফর্সা গালে একটা টোল পড়ছে৷ এ মেয়েটি কে হবে? শাফিনের ওয়াইফ হয়তো।

কবির মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকলো ছবি গুলো। এমন সময় থানার ভেতর থেকে তার এক সহকর্মীর ফোন এলো। কবির রিসিভ করে কানে ধরতেই ওপাশ থেকে লোকটি বলে উঠলো,
— কুকুর গুলো অবশেষে মুখ দিয়ে বাংলা বের করেছে, আপনি আসুন, যা জিজ্ঞেস করার করুন।

কবির আসছি বলে কল কেটে দিয়ে ফোন টা পকেটে পুরে থানার ভেতর চলে গেলো। থানার আন্ডারগ্রাউন্ড ফ্লোরের একটা সেলে এতক্ষন ধরে নরখাদক গুলোকে আপ্যায়ন করা হচ্ছিলো। কবির সেখানে ঢুকলো। তারপর তাকিয়ে দেখলো সবগুলোর দিকে একবার।
অবস্থা নাজেহাল সবগুলোর। চোখের পানি নাকের পানি এক হয়ে গেছে, নাক মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে অনেকের৷ অনেকের কানের পাশ দিয়ে রক্ত বেয়ে বেয়ে নিচে পড়ছে৷ অসাড় হয়ে পড়ে আছে সবগুলো মেঝেতে। লিডার কেও এই সেলেই এনে রাখা হয়েছে। তাকেও তার প্রয়োজন মতো উত্তম মধ্যম দেওয়া হয়েছে। সে বেচারা এক পাশে মেঝেতে বসে হাপাচ্ছে আর সেই অদ্ভুত ভাষায় মাঝে মাঝেই বিড়বিড় করে কি সমস্ত বলে যাচ্ছে।

কবির সামনে এগোলো, তারপর নরখাদক দের একটার কাছে গিয়ে তার চুলের মুঠি ধরে উচু করে মেঝে থেকে উঠিয়ে বসালো। তারপর শক্ত গলায় জিজ্ঞেস বলল,
— প্রথম থেকে শুরু কর। নাম কি তোর? কত দিন ধরে এ পথে আছিস? কেন এসেছিস এই রাস্তায়, আর আজ পর্যন্ত কত জন কে খুন করেছিস, সব বল এক মাথা থেকে।

লোকটির ঠোঁট কাপছে থরথর করে। মারের চোটে হুস হারিয়ে ফেলেছে যেন, চোখ একটা বন্ধ হওয়ার জোগাড়। লোকটা উঠে ভালোভাবে বসলো, তারপর তার পেছনের দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দিলো। এরপর ধীরে ধীরে বলতে শুরু করলো,
— আমার নাম আক্কাস। আমি গরিব মানুষ, ব্যাবসা করার উদ্দ্যেশ্যে এলাকার এক লোকের থেকে দশ লাখ টাকা ধার নিছিলাম, কিন্তু ব্যাবসা করতে পারিনি, টাকা গুলো উড়ায় ফেলছি। কিন্তু এরপর পাওনাদার যখন টাকার জন্য চাপ দিতে শুরু করে তখন আমি আবার বেরিয়ে পড়ি টাকা ধার করার জন্য। কিন্তু কেউ অত টাকা ধার দিতে চায় না। এদিকে পাওনাদার দিন কে দিন চেপে ধরতে শুরু করলো, বেশি দেরি করলে মামলা করে দিবে বলে হুমকি দিলো। এরপর আমি হন্যে হয়ে টাকার সন্ধান করতে শুরু করলাম ছিনতাই ও করেছি কয়েকদিন, কিন্তু তাতে সে টাকার এক ভাগ ও জোগাড় হয়নি। তখনি একদিন আমার এক ছিনতাইকারী বন্ধু জানালো যে এক জায়গায় গেলে আমি টাকা ধার পাবো, যত টাকা চাই পাবো, কোনো সূদ দিতে হবে না, টাকা ফেরত দেওয়ার ও কোনো নির্দিষ্ট তারিখ নেই, যখন ইচ্ছা দিতে পারবো। বন্ধুর কথা শুনে চলে গেলাম সেখানে। কিন্তু সেখানে গিয়ে আর ও একটা অফার পেলাম, আমার যত টাকা লাগবে তারা দিবে, সে টাকা আর কখনোই আমার ফেরত দেওয়া লাগবে না, তবে তার বিনিময়ে তাদের সঙ্গে যোগ দিতে হবে, আর তাদের মতো করে চলতে হবে, তাদের ভাষা শিখতে হবে, মোটকথা তারা যেভাবে জীবনযাপন করে সেভাবে আমাকেও করতে হবে। আমি ভাবলাম, এ আর এমন কি? এর জন্য আমাকে যত ইচ্ছা টাকা দিবে ব্যাপার টা ভেবেই আমার খুশি লাগছিলো। আমি ওদের থেকে পনেরো লাখ টাকা নিলাম। পাওনা দার এর টাকা শোধ করে বাকি টাকা রেখে দিলাম পরিবারের জন্য। আর তারপর চলে এলাম এদের সাথে। কিন্তু যখন এদের সাথে থাকা শুরু করলাম তখনই বুঝতে পারলাম যে এরা অন্য মানুষের মতো স্বাভাবিক না, অস্বাভাবিক। এরা মানুষের মাংস খায়। মানুষ কে গরু ছাগলের মতো জবাই করে, পিস পিস করে কাটে। কিন্তু এ কথা যতক্ষণে জানতে পারলাম ততক্ষণে আমার আর ফিরে যাওয়ার কোনো রাস্তা ছিলো না। তাই বাধ্য হয়ে অন্য সবার সাথে স্রোতে গা ভাসিয়ে দিলাম আমি। আর মাংস টা খেতেও খারাপ ছিলো না, তাই আর অসুবিধা হয়নি। সে থেকে এদের সাথেই আছি, আস্তে আস্তে এদের ভাষা শিখেছি, আদিবাসী দের মতো জীবনযাপন বেছে নিয়েছি, যখন যেটা করতে বলেছে করেছি। আমি এদের সাথে যোগ দেওয়ার পর থেকে দেড়শোর মতো মানুষ কে মারা হয়েছে, এর আগে কত মানুষ কে ওরা মেরেছে তা আমি জানি না।

বলে লোকটা থামলো। এত অল্প কথা বলতে গিয়েও হাপিয়ে গেলো আক্কাস লোকটা। ঘন ঘন নিঃশ্বাস পড়তে লাগলো তার।

কবির লোকটাকে কিছুক্ষণ দম নিতে দিয়ে লিডার ব্যাক্তি টাকে দেখিয়ে আবার বলল,
— ওই চুলে জট পাকানো কুকুর টাকে জিজ্ঞাসা বাদ করবো। তুই আমাকে ওর কথার অর্থ বলবি আর ওকে আমার, বুঝেছিস?

লোকটা অনেক কষ্টে কোনো রকমে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। কবির একজন কনস্টেবল কে ইশারা করলো বাকিদের অন্য সেলে নিয়ে যেতে। কনস্টেবল টি বাকিদের নিয়ে চলে যাওয়ার পর কবির আক্কাস কে মেঝের ওপর দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে গেলো লিডারের দিকে৷ তারপর লিডারের কাছে পৌছে তাকে মেঝেতে ধপ করে ছেড়ে দিলো। এরপর পেছন থেকে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে লিডারের সামনে বসলো ও। হাতে ওর তেল চকচকা লাঠি। কথা না বেরোলেই শরীরের সর্বোচ্চ জোরের সহিত এটার আঘাত পড়বে ওদের পিঠে৷

কবির আক্কাসের দিকে তাকিয়ে বলল,
— ও কে বলতে বল ও কোথা থেকে এসেছে, ওর পরিচয় কি আর কবে থেকে এবং কেন এই কাজের সাথে ও জড়িত।

আক্কাস কবিরের কথা গুলো ট্রান্সলেট করে বলল লিডার কে, লিডার চুপ করে রইলো খানিক্ষন, তারপর গলা খাকারি দিয়ে বলা শুরু করলো, আক্কাস কবির কে সেগুলো ট্রান্সলেট করে বলতে লাগলো,
— আমার নাম ইফিনি অবু। আমার বাড়ি আফ্রিকার কঙ্গো তে। আমি একজন ট্রাভেলার ছিলাম। পৃথিবীর সব দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করাই ছিলো আমার নেশা। একসময় এসে আমার খুব ইচ্ছা হলো আমাজন জঙ্গল ঘুরে দেখার। আমি জানি, একবার সেখানে ঢুকলে কেউ আর বের হতে পারে না। তারপর ও আমি আমার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে চলে গেলাম সেখানে৷ আর জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে একসময় আমি একটা ট্রাইবের সন্ধান পেলাম। আমাজনে ট্রাইবের ছড়াছড়ি। তাদের অনেকের কাছেই এখনো কোনো সভ্যতার আলো পৌছায়নি। সেই ট্রাইবে গিয়ে আমি কিছুদিন থাকা শুরু করলাম। ওরা সবকিছুই খেতো, সাথে মানুষ ও খেতো, কিন্তু ওরা কাউকে আক্রমণ করতো না। যদি কোনো ব্যাক্তি অসুস্থ হতো বা, গুরুতর আহত হতো তাহলে তাকে কষ্ট পাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে তাদের কে জবাই করে পুড়িয়ে খেয়ে ফেলা হতো। সেখানে থাকতে থাকতে আমিও আস্তে আস্তে মানুষের মাংস খাওয়া শুরু করলাম। এর কিছুদিন পর আমি সে ট্রাইব থেকে বের হয়ে অন্য একটা ট্রাইবের সন্ধান পেলাম, যারা পুরোদস্তুর মানুষের মাংস খায়। বাইরের কেউ এলেই তাকে তারা ধরে ফেলে এবং খেয়ে নেয়৷ আমাকেও ওরা আক্রমণ করতে আসে। কিন্তু আমি ওদের বোঝাই যে আমিও ওদেরই একজন। আর ওদের মতো আমিও মানুষের মাংস খেতে পছন্দ করি। আর এরপর ওরা আমকে ওদের ট্রাইবের একজন হিসেবে মেনে নেয়। তবে শর্ত দেওয়া থাকে আমি আর কখনোই স্বাভাবিক মানুষের মতো করে চলতে পারব না, ওদের মতো করেই চলতে হবে আমাকে সারাজীবন। আর ওদের এ শর্ত আমি মেনে নিই। আর এরপর যখন আমাজন থেকে আমি একেবারের জন্যই ফিরে আসি, ততদিনে মানুষের মাংস আমার নেশা হয়ে দাড়িয়েছে। সে মাংস ছাড়া আমি আর কিছুই বুঝিনা। তাই আমি ঠিক করলাম আমি নিজেই একটা ট্রাইব গঠন করবো, আর আমার সাথে যোগ দেওয়া মানুষ দের কে আমি বোঝাবো যে মানুষের মাংস আসলেই কত টা সুস্বাদু হয়! এরপর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আমি আমার ফলোয়ার্স জোগাড় করতে থাকি। লোকচক্ষুর আড়ালে গিয়ে আমি এ কাজ করতে থাকি যেন কেউ কখনো ভুলেও আমাকে সন্দেহ করে না বসে, আর আমার টার্গেট ছিলো সবসময় সমাজেত অসহায় মানুষ গুলো, যাদের কে সহজেই নিজের কাজে লাগানো যায়। আর এরপর একসময় আমি বাংলাদেশে এসে পড়ি। বাংলাদেশের মানুষ কে লোভ ধরিয়ে অনেক কাজ করানো যায়, আর এই সুযোগ কেই আমি কাজে লাগিয়ে ফেলি। এখানের বাংলাদেশী সবাই কে আমি কোনো না কোনো প্রলোভন দেখিয়ে আমার দলে টেনেছি।
আমার হিসাব নেই আজ পর্যন্ত আমি কত মানুষকে খুন করে খেয়েছি। গত চার বছরে আমার পেট ভরার জন্য যত গুলো মানুষের প্রয়োজন ছিলো ততগুলোকে খেয়েছি আমি। বেচে থাকলে আর ও খাবো।

বলেই থামলো লিডার। শেষের কথা টা শুনে অবুর মুখে কষে একটা ঘুষি দিলো কবির। অবু সে ঘুষির টাল সামলাতে না পেরে পাশের দেয়ালে গিয়ে মাথার সাথে বাড়ি খেলো। কবির চেয়ার ছেড়ে উঠে বাইরে যাওয়ার উদ্দ্যেশ্যে এগোলো। তার এখন পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলা দরকার৷ জংলি গুলোর স্বীকারোক্তি গুলো পুলিশ সুপার কে জানিয়ে সব গুলোর একটা ব্যাবস্থা করতে হবে এখনি।

তখনি পেছন থেকে অবু লোকটা সেই অদ্ভুত ভাষায় নিজের মনেই কিছু একটা বলে উঠলো। অবুর কণ্ঠস্বর শুনে আবার পেছনে ফিরলো কবির। তারপর আক্কাস কে জিজ্ঞেস করলো,
— কি বলল ও আবার?

আক্কাস বলল,
— গালাগাল করলো কাউকে, সাফওয়ান না কি জানি নাম।

সাফওয়ান নাম টা শোনা মাত্রই কবিরের ভ্রু কুচকে এলো। সেল থেকে ও আর বের হলো না, আবার এসে বসলো চেয়ারে।

Share This Article
Leave a comment

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।