পাথরের বুকে ফুল

অরিএান আর রিমন হতভম্ভ হয়ে একজন আর একজনের মুখ চাওয়া চাই করছে।তাদের অবস্থা দেখে মনে হয় ভয়ঙ্কর কিছু দেখেছে।তবে তারা যা দেখছে এক কথায় এটা মেয়েদের জন্যে একদম সাধারন একটা ব্যাপার।অরিএান আর রিমনের সামনে ওয়াসেনাত আর রিমি ঝগড়া করছে।আসলে ঝগড়া করছে বললে ভুল হবে মারা মারি করছে।যাকে বলে চুল ছিঁড়াছিড়ি টাইপের মারা মারি।ওয়াসেনাতের রুমের এখন বেহাল অবস্থা যাকে বলে বস্তির মত অবস্থা। এক কথায় এটাকে বস্তিই মনে হচ্ছে অরিএান আর রিমনের কাছে।আজ সবাই একসাথে শপিং মলে যাবে বলে ঠিক করেছে।মানে ওয়াসেনাতের ফ্যামিলি, অরিএান আর রিমন। বিয়ের শপিং করতে।আসলে লামিয়ার বিয়ে এক সাপ্তাহ পরে তাই ওয়াসেনাতের বিয়ে কিছু দিন পিছানো হয়েছে।অরিএান আর রিমন কিছু সময় আগেই এই বস্তিতে মানে ওয়াসেনাতের রুমে পা রেখেছে।আর তারা যা দেখেছে তা মুখে বলা দুষ্কর। ওয়াসেনাত রিমির দিকে বালিশ ছুড়ে দিতে দিতে বলে………
__তুই আমার রিমি হতেই পারছ না। বল তুই কে? আর কোথা থেকে এসেছিস?
__বাসা থেকেই এসেছি।আর আমিই রিমি শালি বহুত তোর পকপকানি শুনেছি আর না যা ভাগ.. আর এক বার ওনার নামে কিছু বলবি তো আমি তোর সব চুল ছিঁড়ে ফেলবো।
__তাই না কি??আয় আমি দেখি কত ছিঁড়তে পারছ।ওই কচুর অরিএানের মাথায় এক বালতি ঠান্ডা পানি পোরুক।শালা আবুল পোলা, যা বলছি এবার আয় আমার মাথার চুল ছিঁড়তে।তবে কেমনে ছিঁড়বি চুল তো হিজাবের ভিতরে(বলেই হু হা করে হাসতে হাসতে বালিশ ছুড়ে দেয়)
__এই তুমি আমাকে কচুর অরিএান বলেছ??😡😡মানে কি? আর বাচ্চাদের মত এভাবে মারা মারি লাপা লাপি ধাপা ধাপি করছ কেন?ছোটো বাচ্চা নাকি!!লুক এট দিস রুম.. লুক লাইক এ স্লাম!!রাবিশ (রেগে চেঁচিয়ে বলে উঠে)

ওয়াসেনাত আর রিমি দুজনেই অরিএানদের ব্যাপারে কিছু জানতো না।তাই তারা যে এসে সব দেখে পেলেছে ব্যাপারটা ভাবতেই দুজনেই লজ্জা পায়।কারন তারা তিন বছরের বাচ্চাদের মত মারামারি করছিল।তাদের মারামারির টপিক্সই ছিল অরিএান। রিমি প্রচণ্ড ভাবে অরিএানের সাপোর্টে গুণগান করছিল যা ওয়াসেনাত মানতে নারাজ।তার কথা রিমি তো তার বেস্ট ফ্রেন্ড সো তার কথাই তার মুখে বেশি থাকার কথা না কি অরিএানের।এভাবে তর্কবিতর্ক করতে করতে তা মারামারিতে পৌছে যায়।আর তার পরেই অরিএান আর রিমন হাজির হয়।ওয়াসেনাত আর রিমিকে এভাবে চুপ থাকতে দেখে অরিএান বলে উঠে……..
__কি হল যাবে না?নাকি আরো কিছুক্ষণ কুস্তিগিরি করবে বলে ঠিক করেছ।

ওয়াসেনাত নিজের হিজাব ঠিক করে রিমির কানে কানে ফিসফিস করে বলে উঠে……
__দেখলি তোর জান পাখি কচুর ভাই কেমন রুডলি কথা বলে। আর চোখগুলো দেখ মনে হয় গিলে খেয়ে ফেলবে। কি ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছে।
__তুই চুপ যা তা না হলে প্রথম থেকে সব বলে ভাইয়ার স্পেশাল ধোলাই খায়ামু।
__যা ভাগ।দুই দিন একটু ভালো মেয়ের মত ছিলাম দেখে কি মনে করছ আমি সত্যি ভালো হয়ে গেছি। আরে নারে তুই যতটা নিরিহ ভাবিস ততটাও না।
__এই তোমাদেরকে ফিসিরফিসির করতে বলা হয়েছে নাকি আমাদের সাথে যেতে।
__যাচ্ছি তো কথায় কথায় ধমক মারেন কেন।
__কোথায় ধমক মারছি আমি তো বললাম
__ভাই চুপ যা আজকে ভাবি কেমন যেন হয়ে আছে তাই চুপ থাকাই ভালো(রিমন)

ওয়াসেনাত আজ এত রেগে আছে কেন তা অরিএানের মাথায় ডুকছে না। আসলে আজ সকাল থেকে ওয়াসেনাতের নাম্বারে নানা মেসেজ আসছে সাথে ওই দিনের একটা পিকও দেওয়া হয়েছে যাতে অরিএান ওয়াসেনাতের সামনে হাটুগেড়ে বসে ছিল।মেসেজটা এমন ছিল.. অনেক তো হল প্রেম এবার না হয় বাকিটা আমার সাথে হবে।…..মেসেজ পড়েই তার আজ ছোটো ছোটো কথায় রেগে যাওয়ার মত সমস্যা হচ্ছে।

ওয়াসেনাত অরিএান, রিমি রিমন আর লামিয়া অরিএানের গাড়িতে উঠেছে।আর বাকিরা অরিএানের আর একটা গাড়িতে উঠেছে।ওয়াসেনাতের বাবা তাদের সাথে যায় নি।কিন্তু তার মা আর ফুফু অন্য গাড়িতে আছে।ওয়াসেনাত নাক মুখ লাল করে লু্কিং গ্লাসে তাকিয়ে আছে।অরিএান ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করছে।অরিএান ড্রাইভিং সিরে বসতেই লামিয়া তার পাশে বসে পরে ব্যাপারটায় অরিএান প্রথমে প্রচণ্ড রেগে যায় কিন্তু ওয়াসেনাতকে ফুলতে দেখে তার ভালোই লাগে।তাই গাড়ি আপন গতিতে ড্রাইভ করা শুরু করে।পিছনে রিমি আর রিমনের মাঝে বসেছে ওয়াসেনাত।সবার মাঝে পিনপিনে নিরবতা। রিমন এই নিরবতা ভেঙে বলে উঠে……..
__আচ্ছা ভাবি আমার সাথে তো আপনার তেমন পরিচয় হয় নি।আপনি আমাকে চিনেন তো??
__কি যে বলেন ভাইয়া ওনি আমাকে আপনার কথা অনেক বলেছে। আপনি ওনার ভাই তাই তো?আর সম্পর্কে আমার দেবর?রাইট

রিমন কিছুক্ষণ অরিএানের দিকে আবার কিছুক্ষণ ওয়াসেনাতের দিকে তাকায়।সে ভাবতে পারে নি অরিএান তাকে এভাবে পরিচয় করাবে আর ওয়াসেনাতও বিনা বাক্যে এভাবে মেনে নিবে।
__দেখেন আপনি আমাকে ভাবি ডাকিয়েন না কেমন যেন লাগে।তার চাইতে নাম ধরেই বলেন।আর আমি আপনাকে ভাইউ বলে ডাকবো।ইশশশ কত দিনের সখ একটা বড় ভাইয়ের।আর আপনি যদি ভাইউ হয়ে যান তবে তো আর কথাই নেই।কি হবেন??
__ হবো না মনে কি ১০০% হবো।ওয়াওওও আমি ভেবেছি একই কথাটা তুমি মানবে কি না আর তুমিতো আমার মনের কথাই আমাকে বলে দিলে।আর হে আপুসোনা ডাকি তোমাকে কিমন।
__আচ্ছা। তবে আমার ভাই হওয়া মনে কিন্তু আইসক্রিম ফুচকা আর বিরিয়ানি পার্টি দিতে হবে।আজই একটা পার্টি দি কি বল?নতুন রিলেশনশিপে তো ট্রিট দিতেই হয়।তাই না
__অবশ্যই (হেসে হেসে বলে উঠে)

ওয়াসেনাত আর রিমন মনের মাধুরী মিশিয়ে গল্প জুড়েছে।ব্যাপারটায় অরিএান প্রচণ্ড ভাবে ক্ষুব্ধ। বেচারা মাঝে মধ্যে দুই একটা কথা বলেও পাত্তা পায় না।রিমিও প্রচণ্ড বিরক্ত। অরিএান আর রিমিও অনেক কথা বলেছে তাদের মনোযোগ আকর্ষন করার জন্যে কিন্তু কিছু লাভ হল না।তারা তাদের মতই চালিয়ে যাচ্চে।এর মাঝে লামিয়াকে অরিএানের ঠাটিয়ে চর মারতে ইচ্ছে করছে।ফাজিল মেয়ে শুধু তার গায়ের উপর পরছে।জাস্ট অসজ্জকর। অরিএান এবার না পারতে খুব জোড়ে ব্রেক মারে। সাথে সাথে সবাই কিছুটা সামনে ঝুঁকে পড়ে।সবাই আবাক হয়ে তাকিয়ে আছে অরিএানের দিকে অরিএান এবার প্রচণ্ড রুডলি বলে উঠে……..
__মিস লামিয়া আপনি পিছনে গিয়ে বসেন। আর ওয়াসেনাত তুমি আমার পাশে আসো।
__কেন অরিএান আপনার কি আমার সাথে বসতে অসুবিধা হচ্ছে??
__প্রথমত আমি আপনার কে হই??
__মানে
__ওয়াসেনাত আপনার কে হয় আগে বলুন
__মামাতো বোন
__তাহলে সম্পর্কের সূএ মতে আমি ওয়াসেনাতের কি হই??
__আপনিতো ওর জামাই।
__সো ডোন্ট কল মি অরিএান। অনলি কল মি দুলাভাই তা নাহলে ভাইয়া। অনডার্স্টেন। (রাগি গলায় বলে উঠে)
__সরি
__ওয়াসেনাত সামনে আশো।
__কেন আমি এখানেই বসি ভাইউর সাথে।
__হ্যাঁ। অরিএান ও বসুক এখানে কিছু সময়েরত ব্যাপার।
__ওয়াসেনাত আমি কি বলেছি কানে যায় নি??

ওয়াসেনাত এবার বুঝতে পরেছে অরিএান রেগে আছে তাই ওর পাশে বসাই ভালো হবে তাই ওয়াসেনাত বাহিরে চলে আসে অরিএানের পাশের সিটে বসে পরে।লামিয়া রাগি ভাব নিয়ে ওয়াসেনাতের দিকে তাকিয়ে থেকে রিমির পাশে বসে।লামিয়ার বসার কারনে রিমি রিমনের কাছে চলে যায়।রিমনের বেশ ভালোই লাগছে রিমির মত সুন্দরি মেয়েকে তার পাশে পেয়ে।রিমির কেন যেন বেশ লজ্জা লাগছে।

অরিএান গাড়ি চালাছে আর বিরক্তি নিয়ে ওয়াসেনাত আর রিমনকে দেখছে।তাদের কথা শুনে মনে হচ্ছে কত বছর পরে হারানো ভাইকে খুজে পেয়েছে।অরিএানের তো মন চাচ্ছে আবার হারানো ভাইকে হারিয়ে ফেলতে যাতে ওয়াসেনাত তার পাশে থাকা কালীন বিজ্ঞপ্তিপ্রচার করে বা মাইক নামিয়েও যাতে খুজে না পায়।অরিএান ওয়াসেনাতকে তার পাশে বসিয়েও নিজের প্রতি কনসেন্ট্রেশন আনতে পারলো না।কারন ওয়াসেনাত পিছনে ঘুড়ে রিমনের সাথে পকপক করেই চলেছে।অরিএান এবার ওয়াসেনাতের ডান হাত নিজের বাম হাত দিয়ে চেপে ধরে।আকর্ষীক ভাবে ব্যাপারটা ঘটেছে বলে ওয়াসেনাত চমক প্রদান দৃষ্টি নিক্ষপ করে।অরিএান বাকা হেসে সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। ওয়াসেনাত অরিএানের দিকে চোখ ছোটোছোটো করে তাকিয়ে ভাবছে। তার ভাব দেখে মনে হচ্ছে গাড়ি রেইস চলছে তাই অতি সুক্ষ ভাবে সামনে তাকিয়ে আছে।ওয়াসেনাত হাতটাকে কিছুক্ষণ মচরামুচরি করে থেমে যায় আর মাথাটা পিছনে শিটের সাথে এলিয়ে দেয়।

বেশ কিছুক্ষণ পরে তারা যমুনাপিউচার পার্কের সামনে এসে গাড়ি থামায়।ওয়াসেনাত প্রথমেই এত স্পেনসিভ শপিং মল দেখে একটু দাঁড়িয়ে পরে।এখান থেকে কিছু কিনা মানে প্রচুর টাকা।ওয়াসেনাতকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অরিএান পিছনে এসে বলে উঠে…..
__কি হল চল
__এখান থেকেই শপিং করবেন??
__হুম কেন তোমার ভালোলাগছে না??আচ্ছা তাহলে বিদেশি ডিজাইনার দিয়ে বানা বা?? লাইক পাকিস্তান। ওদের লেহেঙ্গার ডিজাইন বেস্ট হয় তা নাহে ইন্ডিয়া??কি বল নাকি….
__আরে না না তেমন কিছু না আসলে
__আসলে কি??
__কিছু না চলেন

লামিয়ার বিয়ের শপিংও করা হবে তাই তার সেই কেবলাকান্ত মানে জামাইও এসেছে।লামিয়া আর তার মা তো জামা কাপড় কিনতে ব্যস্ত। লামিয়ার জামাই ওয়াসেনাতের দিকে দুই একবার তাকাতেই অরিএানকে দেখে আর তাকালো না।সে যানে অরিএান কি জিনিস।রিমিও নিজের জন্য শপিং করছে। আর রিমন তার পিছনে পিছনে ঘুরছে।ঘুরছে বললে ভুল হবে দুজনেই মোটা মুটি গল্প প্লাস ঝগড়া করছে।ওয়াসেনাত চুপটি করে তার মার হাত ধরে বসে আছে।অরিএান একটা বিশাল লং এন্ড গোর্জিয়াস কাজ করা খইরি লেহেঙ্গা নিয়ে ওয়াসেনাতের সামনে হাজির হয়। লেহেঙ্গাটা দুজন লোক নিজেদের হাতে ধরে আছে।তাক লাগানো টাইপের লেহেঙ্গা। একটা লোক বলে উঠে……
__ম্যাম শুধু আপনার জন্যেই অডার করে তৈরি করা হয়েছে বেস্ট ডিজাইনা দিয়ে।আপনি একটু পড়ে দেখেন আসলে হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য?তবে সবার সামনে আসতে হবে না।শুধু ডিজাইনার মারিয়া আপনাকে দেখবে তাই ওই রুমে চলে যান।(একটা রুম দেখিয়ে)

ওয়াসেনাত একা যেতে চাচ্ছিল না তাই রিমি সহকারে পাঠানো হয়।অরিএান এই প্রথম ওয়াসেনাতের মায়ের পাশে বসে কথা বলবে বলে ঠিক করে।কিন্তু কি বলবে খুজে পাচ্ছে না তাই ইতস্তত হয়ে বসে আছে।ওয়াসেনাতের মা বলে উঠে……..
__ওয়াসেনাত কি একা গেছে বাবা??
__না আন্টি রিমিও গেছে।আপনার কিছু লাগলে আমাকে বলবেন।আমি এনে দিবো।আমি আপনার পাশেই আছি।
__তুমি আমাকে আন্টি কেন বলছ??
__তাহলে কি ডাকবো??আসলে বুঝতে পারছি না।(একটু অবাক হয়ে বলে উঠে)
__কেন যানো না শাশুড়ি তো মায়ের মত হয় তো তুমিও আমাকে মা ডাকবে।
__সরি আন্টি আমি ওই ওয়াড পছন্দ করি না।তাই ওই নামে ডাতে পারবো না।(চোখমুখ লাল করে বলে উঠে)
__আচ্ছা বলতে হবে না।তোমার হাতটা একটু দিবা। আসলে আমি একটু ওয়াসরুমে যাবো।হাটঁতে পারবো না এভাবে। জায়গাটা অপরিচিত তাই আর কি।
__আচ্ছা আচ্ছা আমি দিচ্ছে এই নিন(হাত বাড়িয়ে দিয়ে)

অরিএান খুব যত্নে ওয়াসেনাতের মাকে নিয়ে যায়।ওয়াসেনাতের মা অবাক হয় এমন আচরণে কারন যে মা বলে ডাকতেই চায় না সে কিভাবে মায়ের মত যত্নে তাকে হাটাঁছে।অরিএানের কাছে এক অন্যরকম ফিলিংস হচ্ছে। কেন যেন তার মনে হচ্ছে সে নিজের মাকেই এভাবে নিয়ে যাচ্ছে।এ জেন এক অদ্ভুত অনুভূতি। যা সে বলে বুঝাতে পারবে না।মায়েদের কোমল হাতের ছোঁয়া কি এমনই হয়??হয় তো।তার তো এটা সম্পর্কে অভিজ্ঞা নেই। যা কিছু ছিল তাও সে ভুলে গেছে।

__মি.অরিএান আমি ভেবেছি আপনার বউ সুন্দর হবে কিন্তু এটা জানতাম না যে সে আসলেই হুর…

মারিয়ার কথা শুনে অরিএান মুচকি হাসলো।সে জানেই তার বউ সদ্ধ ফোটা সাদা গোলাপের মত।তার আর কি বলার আছে।মারিয়া আবার বলে উঠে……
__আপনি ভাবতেও পারবেন না লেহেঙ্গা টাতে ওনাকে কেমন লেগেছে??আপনার কপাল ভালো বুঝলেন.. আমি ছেলে হইনি তা না হলে আমি এখন এই মুহুর্তে ওকে ভাগিয়ে নিয়ে জেতাম।
__আল্লাহ আসলেই রহমত করেছে।আর লেহেঙ্গাটা সুন্দর ছিল।
__thanks

অরিএান ওয়াসেনাতের জন্য শাড়ি আর শাড়ি কিনে ভড়িয়ে ফেলেছে।কিছু শাড়ি সে লামিয়া, রিমি,ওয়াসেনাতের মা আর ফুফিকেও কিনে দিয়েছে।ওয়াসেনাত অনেক মানা করেছে তবে কে শুনে কার কথা।জুয়েলারির দোকানও প্রায়ই খালি করে দিয়েছে অরিএান। সবাইকেই কিনে দিয়েছে সে এমনকি লামিয়ার বিয়ের শপিংও সে করে দিয়েছে।তারা খুশি হলেও মনে মনে জ্বলছে তাই ওয়াসেনাতের মাকে বলে উঠে…….
__তোর মেয়ের কিন্তু কপাল ভালো।তা না হলে এত সুন্দর আর বড়লোক ছেলে পটায় কেমনে??
__আপা আপনি কিন্তু ভুল বলছেন ও পাটায় নাই আল্লাহই ওদেরকে একজনের জন্যে আর একজনকে বানিয়েছে।
__ওও তাই নাকি আমি তো যানি এবং দেখেছি তোর মেয়ে কেমন কেঁদে কেটে ওই ছেলের মন গলিয়ে বিয়ে করেছে।ভালো ছেলে বলেই বিয়ে করছে।তা না হলে মুখ দেখাতি কেমনে আল্লাহ মালুম…
__আপা চুপ করবেন(রাগি গলায় বলে উঠে)

ওয়াসেনাত সবই শুনেছে সাথে অরিএানও।ওয়াসেনাত মন খারাপ করে শপিং মলের এক পাশে চলে যায়।আবার কি মনে করে ফিরে এসে দেখে অরিএান কিভাবে তার ফুফুর বারোটা বাজিয়েছে।
__আপনি বড় বলে ভাববেন না আপনার এমন নিচ চিন্তার কথা শুনে আমি কিছু বলবো না।আমার বউকে যে কেউ কিছু বললে আমি সজ্জ করবো এটা ভাবা বোকামি। ও আমার বউ আর যেভাবেই বিয়ে হোক না কেন ভালোবাসি ওকে। আপনার ফালতু কথা শুনে ও বা ওর পরিবার কষ্ট পেলে ছেড়ে দিবো ভাববেন না।

__হেই ওয়াসু এখানে কি করছ??
__কাবাডি খেলছি কেন খেলবেন??
__কোথাই কাবাডি খেলছ আমি তো দেখছি তুমি বসে আছ।
__দেখলে আবার জিগ্যেস করার মনে কি??
__কিছু না। চল
__সবাইকে পাঠয়ে দিয়ে এখন কোথায় যাবো??সবাই তো চলে গেছে।
__সবাই গেছে তো কি হয়েছে আজ আমরা সারা বিকেল ঘুড়বো।তুমি চাইলে প্রেমও করবো(চোখ মেরে)
__প্রেম তো আর হবে না এবার হবে শুধু ভালোবাসা (বলেই মুচকি হেসে হাটাঁ ধরে)

ওয়াসেনাতের মুখে এমন কথা শুনে অরিএান খানিক সময় থমকে দাড়িয়ে যায়।তারপর ওয়াসেনাতকে সামনে যেতে দেখে অরিএান দেয় এক দৌড়।
__কি বলেছিলে তখন আবার বলবে?
__আমি আবার কি বললাম
__প্রেমের কথা বলে ছিলে??ভুলে গেলে নাকি??
__হুম।চলেন আজ রিকশা করে ঘুড়ে বেড়াই।বেশ রোম্যান্টিক ওয়েদার।কি বলেন ভিজা রাস্তা। ঝিড়িঝিড়ি বাতাস। পাখির কলা হল।আর আর হালকা বৃষ্টি।

অরিএান তাকিয়ে আছে।তার কাছে কিছু স্বপ্ন বাক্য ভেসে আসছে।কানের কাছে সেই বাক্য বেজেই চলেছে।ইশশশ কি মধুর বাক্য।ভাবা যায়!!না ভাবা যায় না এই বাক্য ভাবলেই হবে না শুনতেও হবে।তাই অরিএান বলে উঠে…..
__গাড়ি থাকতে রিকশা কেন???
__জনাব হুমায়ন আহমেদ বলেছেন…….
রিকশায় বসলে একটা রাজকীয় ভাব আসে.. উপড়ি তাকালেই খোলা আকাশ
সেই ফিলিংস। আমার খুব প্রিয় একটা যানবাহন।কেমন যানি আকাশ ছুঁই টাইপের ব্যাপার।চলেন একটু ছুঁয়ে দেখার চেস্টা করি।কি বলেন??(ভ্রু উঁচু করে বলে উঠে)
__চল।

অরিএান জীবনে প্রথম রিকশায় উঠেছে। প্রথম ফিলিংস টাই সেই কারন তার উপড়ে আকাশ পাশে প্রিয়সি…আশেপাশে এক মধুর বাতাস….ছিলমিল বৃষ্টির বর্ষণ তো আছেই।অরিএান তাকিয়ে আছে ওয়াসেনাতের দিকে আর ওয়াসেনাত মাথা উপড়ে তুলে বৃষ্টির ফোটা উপভোগ করছে।হঠাৎ ওয়াসেনাত অরিএানের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে…..
__রাজকীয় ভাব পাচ্ছেন??
__অনেক। নিজেকে তো রাজাই মনে হচ্ছে। তোমার প্রিয় লেখন কি ওনি…
__কে হুমায়ন আহমেদ??আমার প্রিয় বলতে তেমন কিছু নেই তবে বেশ ভালো লাগে।
__কেন নেই??
__সব সুন্দর জিনিসই ভালোলাগে।বিশেষ করে ভালোবাসা মিশ্রিত জিনিস…যেমন এখন আপনাকে(একদৃষ্টিতে অরিএানের চোখের দিকে তাকিয়ে)

অরিএান বেশ ঝাটকা খাচ্ছে হল টাকি মেয়েটার??যদিও তার শুনতে মধুর লাগছে তবুও সে অবাক। ওয়াসেনাত বলে উঠে……..
__ভালোবাসার আভিরভাব ভালোলাগা থেকে হলেও কিন্তু তা কিন্তু ভালো লাগ না।ভালোলাগা তো কিছু দিন পরে শেষ হয়ে যায় কিন্তু মনের সুপ্ত অনুভুতিই ভালোবাসার জন্ম দিতে পারে যানেন??
__না আজই জানলাম।
__ভালো।তবে এত ভালো কেন বাসেন বলবেন?? নাকি তাও জানেন না..

অরিএান এবার শুধু তাকিয়ে আছে।মেয়েটা হঠাৎ এমন প্রশ্ন কেন করছে।ওয়াসেনাত আবার বলে উঠে…..
__কি হল বলেন??
__এটাও জানি না। শুধু যানি ভালোবাসি কিন্তু কেন কিভাবে তা যানি না।
__কিন্তু আমি জানি। আমি কেন ভালোবাসি!!
__কাকে(প্রচণ্ড ভয়াত্নক কন্ঠে বলে উঠে)
__যদি বলি এক সবুজ চোখের শীতল চাহনিকে।
__তুমি আআআআমায়য় ভালোবাস(কিছুটা হকচোটিয়ে বলে উঠে। মুখে তার আতঙ্ক। চোখে প্রবল আকাঙ্ক্ষা। কান তার বিচলিত। অন্যরকম এক ভালোলাগার কথা শুনার অপেক্ষায় আছে)
__না তো আপনাকে কেন ভালোবাসতে যাবো।যাকে বাসি সে এক স্বপ্ন কুমার সবুজ চোখে তার প্রবল আকাঙ্ক্ষা, কানে তার অপেক্ষা চোখে মুখে আতঙ্ক। তবে তাকে কিন্তু এখন বলবো না কেন তাকে ভালোবাসি। সময় হলেই বলবো…

অরিএান কিছু বললো না।শুধু তাকিয়ে রইল।তবে তার মনে শীতল হওয়া এখনও বইছে।ঠোঁটে হাসিও ঝুলে আছে।মুখের আতঙ্কও কেটেছে কিন্তু কান এখনও অপেক্ষায় আছে।সেই হৃদয় মোহনিত করা কথাটা শুনার জন্যে…..সেই ভালোবাসি শুনার অপেক্ষায় আছে…………… 🍁

চলবে………………🍁

ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন………….🍁গল্পটা কিন্তু পাথরের বুকে ফুল নাকি ফুলের বুকে পাথর।সো এখানে অরিএানের ভালোবাসাই বেশি প্রকাশিত।আর ওয়াসেনাতকে টাইম তো দেন ভালোবাসাটা বুঝানের।তবেইত সে অরিএানকে কেমন ভালোবাসে তার প্রমান দিবে।

SHARE:

Logo Light

হারিয়ে যান গল্পের দুনিয়ায়

Useful links

2024 © Golpo Hub. All rights reserved.