পাথরের বুকে ফুল

ও হ্যালো মি.আপনাকে নাম জিগ্যেস করেছি।আর আপনি এমন একটা ভাব দেখাচ্ছেন মনে হয় আমি বলেছি সৌরজগৎ তে কত হাজার নক্ষত্র আছে বলেন??নিজের নাম বলতে এত সময় লাগার কি আছে।আরে আমি তো খোলিল স্যার না যে আপনাকে কিছুক্ষণ আগে এক থাপ্পড়ে আপনার নাম ভুলিয়ে দিয়েছি।আর এখন জিগ্যেস করছি দেখে আপনি পাড়ছেন না।এমন কেবলার মত তাকিয়ে আছেন কা?? why??🤨🤨

অরিএান এখনও তাকিয়ে আছে।সে ভাবছে যদি ওয়াসেনাত তার নাম যেনে যায় তবে কি তার সাথে আর এখন কার মত মিশবে না!!না এমন টা ভাবতেই কেমন যেনো অজানা ভয় তাকে গ্রস করছে। না সে বলবে না তার নাম।বলবে না।কিছুতেই না।আচ্ছা তাহলে কি বলবে।🥺কিছুই মাথায় আসছে না।হুট করে সে বলে বসে…………
__আমার নাম নাই।
__ what আপনার নাম নাই। এটা আবার কেমন নাম😮😮
__আরে আমার কোন নাম নাই।তুমি চাইলে একটা নাম দিতে পারো।
__আমি আপনার কি নাম দিমু🤔🤔
__যা খুশি।
__যা খুশি এটা আবার কেমন নাম🙄🙄
__আরে তোমার যা খুশি দেও
__মি.আকড়ু😁😁আপনার নাম মি.আকড়ু।হিহিহি কেমন হল
__ what এটা আবার কেমন নাম।😡😡
__আরে রাগেন কা। আপনি যেমন। আপনার নামও তেমন দিলাম।বুঝলেন না তো।আচ্ছা বুঝিয়ে বলি।এই দুইদিনে আমি আপনাকে এক বারও হাসতে দেখি নাই।কেমন যেনো আকড়ু আকড়ু ভাব আপনার মধ্যে তাই এই নাম দিয়েছি😁😁😁😁তবে চিন্তা করবেন না।আমার আবার নিক নেইম চেন্জ করার অভ্যাস আছে😁😁😁(বলেই খিলখিল করে হেসে উঠে)

অরিএানতো এতেই ফিট। আর কি লাগে এবার যদি ওয়াসেনাত অরিএানকে পৃথিবীর সব চাইতে বাজে নাম দিয়েও এভাবে খিলখিল করে হেসে উঠে।অরিএান এতেও কিছু মনে করবে না।তার কাছে এখন পৃথিবী সব চাইতে দামি জিনিস এই হাসি।ওয়াসেনাতের প্রশ্ন অরিএানের ঘোর কাটে………..
__মি.আকড়ু আপনি কি ওই পরিএানের অফিসে জব করেন?????

অরিএান কিছুক্ষণ হাবার মত তাকিয়ে থেকে মাথা নাড়িয়ে জবাব দিল।হুম।ওয়াসেনাত কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে…………..
__ওই গরু পরিএানের অফিসে আপনারা কি ভাবে কাজ করেন আল্লাহ যানে। যেমন ফালতু অফিস তেমন তার বস।হুহহ(ভেংচি কেঁটে)

অরিএান কি বলবে বুঝতে পাড়ছে না।পৃথিবীর মধ্যে মনে হয় ওই একমাএ ব্যক্তি যে কিনা নিজের বদনামি নিজে সাধরে গ্রহন করছে।😁😁বেচারা অরিএান বাবু😂😂🤣🤣।অরিএানের মনে এখন এটা প্রশ্ন কেনো ওয়াসেনাত তাকে এত অপছন্দ করে।তাই প্রশ্নটা করেই বসলো……………
__তুমি আমাকে😝 না মানে আমাদের বস অরিএানকে এত অপছন্দ কর কেন।সে কি তোমার কোন ক্ষতি করেছে??
__আর বলিয়েন না।শালার জন্যে আমরা আব্বুর কাছ থেকে এত দূরে থাকি।
__মানে(চিৎকার করে)
__আরে চিৎকার করেন কা।বলতাছি তো।আসলে আমার আব্বু খান গ্রুপে জব করে।আব্বু আগে আমাদের সাথে ঢাকায় থাকতো কিন্তু এই অরিএান এসে তাকে সিলেট পুস্টিং দিয়েছে।আব্বু অনেক বার চেস্ট করেছে আসতে but হালা আসতে দেয় না।এটা হচ্ছে প্রধান এবং মূখ্য কারন।

অরিএান হা করে তাকিয়ে আছে।আসলে সে এমন কিছুই করে নাই আর এইসব বদলির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ব্রান্চ ম্যানেজারা নেয়।সে এসব ছোটখাটো ব্যাপার ভেবে কখনো এদিকে নজর দেয় না।আর ওয়াসেনাতের বাবা তার কোম্পানিতে চাকরি করে এটা ভেবেও সে কিছুটা অবাক হয়।আসলে তার দেশবিদেশ মিলে যত কোম্পানি রয়েছ সব জায়গায় কম করেও ৪-৫লাখ লোক কাজ করে এতো স্টাফদের খবর রাখা সহজ না।তবে ওয়াসেনাতের ধারনা সেই দোষি।অরিএান বলে উঠে…………..
__তোমার বাবার নাম কি??
__তা যেনে আপনি কি করবেন??
__না আসলে তোমার পরিবারের সম্পর্কে আমি তেমন কিছুই যানি না তাই বলছিলাম আরকি।
__ও আচ্ছা। আমার নাম ওয়াসেনাত বিনতে তানবির,আব্বুর নাম মোতানবির,আম্মুুুুর নাম মাদিয়া ইসলাম,আর দুই ভাইয়ের নাম আলিফ বিন তানবির,আসিফ বিন তানবির। এবার আপনার পরিবারের সম্পর্কে বলেন🤗🤗

ওয়াসেনাতের প্রশ্নে অরিএান চমকে উঠে।তার মুখ সাদা থেকে লালে রুপ নিতে শুরু করে।সবুজ চোখগুলো লাল রং ধারন করে।ওয়াসেনাত এটা দেখে কিছুটা ভয় পয়ে যায়।অরিএান তার চোখ মুখ শক্ত করে বলে উঠে…………….
__শুধু দাদাজান আছে।তিনি আমেরিকা থাকে।(নিচের দিকে তাকিয়ে)
__ওও আর আপনার বাবা, মা। (কথাটা বলেই জিব কাটে।আসলে সে বলতে চায় নাই।মুখ ফুসকে চলে এসেছে)
__মারা গেছে। তার মারা গেছে।(চিৎকার করে)

ওয়াসেনাত অরিএান এমন রুপ দেখে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গেছে।ওয়াসেনাত এক প্রকার ভয়ে কাপঁছে। এত রেগে কথা বলতে সে কখনো কারোকে দেখে নাই।অরিএান নিজেকে সামলাতে পারছে না তাই নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।অনেক সময় হয়ে গেছে অরিএান কোনো কথা বলছে না।তাই ওয়াসেনাত বলে উঠে…………….
__আমমমমাদেরর যাওওওয়া উচিতত।(হালকা কাপাঁ গলায়)

অরিএান ওয়াসেনাতের এমন voice শুনে নিজেকে ঠিক করে ওয়াসেনাতকে বলে উঠে………
__sorry আসলে। আ….
__থাক বলতে হবে না।সমস্যা নেই।বাবা মা সবার কাছে অতি প্রিয়জন। তাই তাদের ব্যাপারে মৃত্যুটা আসলেই কষ্টের।আরে আমার এক স্যার ছিল।তিনি এক অদ্ভুত মানুষ ছিলেন।যানেন আমরা তাকে কি বলে ডাকতাম??আচ্ছা না বললে কিভাবে যানবেন😁।আমরা তাকে গদু ডাকতাম।আরে অনি যেমন স্টংগ ছিলেন তেমন উড়াধুনা মাইর দিতেন।তার ধারনা মতে মরতে তো সবাই কেই হবে তাইলে এত কান্না কাটির কি আছে।অবাক হওয়ার বিষয় ওনার বাবা মারা গেছে যখন তখন ওনি একটুও কাঁদে নাই।তাই মন খারাপ করার কিছু নাই।একদিন আপনাকে আমাকে সবাইকে যেতে হবে।আচ্ছা চলেন আমরা একটু হাটি।আপনার জুতা খুলেন।(নিজেরটা খুলতে খুলতে বলে)
__জুতা কেনো।(অবাক হয়ে)
__আমি বলেছি তাই।

অরিএানের খুব অনইজি লাগছে।সে কখনো জুতা খুলে হাটে নাই।হোটেলে হোক বা বাইরে সব জায়গায় সে জুতা পড়ে ঘুড়ে।অরিএান হা করে ওয়াসেনাতের ধবধবে সাদা পায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।আসলে এই প্রথম সে কোনো মেয়ের পা এত আগ্রহ নিয়ে দেখছে।কোনো মেয়ের পা এত সুন্দর হতে পাড়ে এটা তার যানা ছিলনা।সে এক নজরে তাকিয়ে আছে।তাই ওয়াসেনাত বলে উঠে……
__আরে আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে বলিনি।জুতা খুলতে বলেছি।(চিৎকার করে)
__খুলছি তো চিৎকার কোরছ কেনো।

অরিএান নিজের জুতা খুলছে।আর ওয়াসেনাত অরিএানকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে।ছেলেটার মনে অনেক কষ্ট জোমে আছে।কিন্তু কি কষ্ট বা কষ্টের উৎস কি তা ওয়াসেনাতের যানা নেই।তবে সে অরিএানের চোখে লুকিয়ে থাকা কিছু একটা দেখেছে তাই তো এত কথা বলে তার মন ভুলাতে চেয়েছে।আর এখন তার মন ভালো করার জন্যে নতুন ফন্দি আঁটছে।কেনো যেনো প্রথম দেখাই অরিএানের মনের আতর্নাদগুলো তার মনকে ছুঁয়েছে।তাই তো যে মেয়ে তার পরিচিত ছেলেদের সাথেই কথা বলে না।সে কিনা অপরিচিত ছেলের সাথে ঘুড়ছে?? ব্যাপারটা অদ্ভুত শুধু অদ্ভুত না বিষণ রকমের অদ্ভুত তবে কেনো যেনো এই অদ্ভুত ব্যাপারে ওয়াসেনাতের তেমন interest নাই। সে এই রহস্যময় মানুষটাকে যানতে যায়।অরিএানের ডাকে ওয়াসেনাত তার দিকে তাকায়………
__জুতা খোলা শেষ।এবার বলেন কি করবো মায়ারানী?(হালকা ঠোঁট বাকিয়ে)
__ওই আমার নাম ওয়াসেনাত নট মায়ারানী।😡😡
__হুম হুম বুঝলাম এবার বল কি করবো।জুতা তো খোলালে(পায়ের দিকে দেখিয়ে)

ওয়াসেনাত অবাক চোখে অরিএানের পা দেখছে।ছেলেটার সব কিছু অসাধারণ সুন্দর। আল্লাহ এত নিখুঁত মানুষ বানায়!! সবই সম্ভব আল্লাহর দুনিয়া বলে কথা।হালকা হেসে বলে উঠে……..
__আপনি কিন্তু অসম্ভব সুন্দর। তবে সুন্দর জিনিসে ভেজাল বেশি যানেন??

অরিএান কিছু বলল না। কারন তার মাঝে যে কত ভেজাল আছে সে এটা খুব ভালো করেই যানে।তবে ওয়াসেনাতো অনেক সুন্দর তবে তার জীবন চক্র ঘুড়ে তো সে কোনো ভেজাল খুঁজে পায় নায়।আসলে প্রবাদ গুলো মাঝে মাঝে কিছু ব্যাপারে কাজ করেনা।
__চলেন এবার ঘাসের বুকে হাটি।(ওয়াসেনাত পা বাড়াতে বাড়াতে বলে উঠে)

অরিএান একদৃষ্টিতে তার সামনের নীলাভ চোখের সবুজ ফেড়িপরীকে দেখছে।রোদের আলোয় কি অপরূপ সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে।অরিএানের এখন ওয়াসেনাতকে কাঁটা পেয়াঁরা মনে হচ্ছে চারপাশে সবুজ আর মাঝখানে সাদার সাথে হালকা লালের মিশ্রণের মুখশ্রী। ঠিক যেনো একটা কাটা পেয়াঁরা।অরিএানের এখন ওয়াসেনাতের লাল লাল গালে কামড় বসাতে ইচ্ছে করছে।ইদানীং অরিএান নিজের ইচ্ছে গুলোর কথা ভেবে অবাক হয়।আগে তো তার এমন ইচ্ছে ছিলনা।তবে যখন থেকে এই মেয়ে তার অভিশপ্ত জীবনে এসেছে তবে থেকে তা পাপ মুক্ত অভিশাপ মুক্ত মনে হচ্ছে। কেনো?? এর উওর প্রতিনিয়ত খুঁজে বেড়াচ্ছে অরিএান তবে মিলছেনা।আবার সে ভাবে খুঁজে কি হবে বেশ তো আছে।

ওয়াসেনাত আকাশের দিকে তাকিয়ে হাটছে।আর অরিএান ওয়াসেনাতের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে।খালি পায়ে হাটতে যে এত ভালো লাগে এটা অরিএানের যানা ছিলনা।কেমন যেনো সম্পূর্ণ শরীরে শীতলতা বিরাজ করছে।সে ভাবছে এই মেয়ে তাকে কত কিছুই না জানিয়েছে।দুদিনেই তার জীবনটা বদলে দিয়েছে।

হঠাৎ ওয়াসেনাত নিচে বসে ঘাস আর কিছু হলুদ ফুল যোগাড় করে অরিএানে সামনে এসে দাড়ায়।তারপর আবার কি যেনো ভেবে মন খারাপ করে চলে যেতে চায়।অরিএান তার হাত ধরে বলে উঠে……
__কি হয়েছে??
__আপনার শার্টে পকেট নাই কেন।কচু ভাল লাগেনা।
__থাকলে কি হতো শুনি??
__এই ফুল আর ঘাস গুলো একসাথে মুড়িয়ে সুন্দর ছোটো তোড়া বানিয়ে আপনার পকেটে গুজঁতে পারতাম।

অরিএান হা করে তাকিয়ে আছে।সে কি বলবে বুঝতে পাড়ছে না।এরি মাঝে ওয়াসেনাত চিৎকার করে বলে উঠে……….
__পেয়েছি
__কি??
__গাঁথার উপায়।মানে এগুলো লাগানের উপায় পেয়েছি।

বলেই নিজের হিজাব থেকে একটা পিন নিয়ে পায়ের আঙুলের উপড় ভর দিয়ে দাড়িয়ে অরিএানের বুকের বা পাশে হাত রাখে।অরিএান অবাকের উপড় অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।তার হার্টবিড দ্রুত গতিতে চলছে।নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।এমন তো আগে হয় নায়।কেনো যেনো মনে হচ্ছে তার ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে কেউ তার কোমল হাতের শীতল পরশ দিচ্ছে। যা তার মনকে উথালপাতাল করে তুলছে।

ওয়াসেনাত অতি যত্নের সাথে অরিএানের শার্টের বা পাশে বুকের উপড় ঘাস আর ফুলের সংমিশ্রণে তৈরি সুন্দর জিনিসটি লাগিয়ে দেয়।এবার একটু সরে এসে দেখতে থাকে কেমন লাগছে।আসলেই চমৎকার লাগছে।সাদা শার্টের উপড় সবুজ আর হলুদের প্রকৃতিক ছোঁয়া।অরিএান এখনো স্টেচুর মত দাড়িয়ে আছে।ওয়াসেনাতের হালকা ধাক্কায় তার হুশ আশে। এবার ওয়াসেনাত বলে উঠে………
__সুন্দর লাগছে।চলেন এবার যাওয়া যাক।

যাওয়ার কথা শুনে অরিএানের চকচক করা মুখটা মলিন হয়ে এলো।আসলে সে ওয়াসেনাতকে ছেড়ে যেতে যায় না।তবুও যেতে হবে। তাই তারা আবার হাটা শুরু করলো।আজকের দিন অরিএানের জীবনে বেস্ট দিন ছিল।গাড়ির সামনে এসে দরজা খুলে দিল।ওয়াসেনাত উঠে বসে পরে।অরিএানও ড্রইবিং সিটে বসে পড়ে ওয়াসেনাত বেলুন গুলো গাড়ির পিছনের সিটে রেখে দেয়।চারিপাশে আযানের ধ্বনি ভেসে আসছে।ওয়াসেনাত হঠাৎ বলে উঠে…………..
__গাড়ি থামান।
__কেনো?
__আযান দিচ্ছে। আর সামনে মসজিদ আছে।যান আপনি নামাজ পড়ে আসেন।আমি বাসায় পড়বো।আপনি যান আমি অপেক্ষা করবো।

অরিএান পড়েছে মহা বিপদে। নামাজের সব নিয়ম সে যানে।তবে বড় হওয়ার পড়ে সে কখনো নামাজ পড়ে নাই। সারাদিন অফিস, মডেলিং, পার্টি ইত্যাদি আজেবাজে জিনিস নিয়েই বিজি ছিল।আর এখন ওয়াসেনাত বলছে।তাকে নামাজ পড়তে যেতে। সে ভাবছে এখন কি করবে।এর মাঝেই ওয়াসেনাত বলে বসে………
__কি হল যাচ্ছেন না কেনো।
__হুম যাচ্ছি তুমি বসে থাক।গাড়ি থেকে বাহিরে আসবা না।
__ok

অরিএানের কাছে আর উপাই নাই। আল্লাহর ডাকে এবার তাকে সাড়া দিতেই হবে।তাই নামাজ পড়তে চলে গেল।আজ অনেক বছর পড়ে নামাজ পড়ে অরিএানের মনে এক অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করছে।ওয়াসেনাত গাড়িতেই ঘুমিয়ে গেছে।অরিএান এটা দেখে খানিকটা অবাক হলেও খুশি হলো কারন নামাজ পড়ার জন্যে আল্লাহ তাকে পুরুষ্কার হিসেবে ওয়াসেনাতের ঘুমন্ত মুখ দেখার সুযুগ করে দিয়েছে।বাকি পথ ওয়াসেনাতের মুখ দেখে আর ড্রইবিং করেই কেটে যায়।ওয়াসেনাতের বাসার সামনে আসতেই অরিএানের কেমন যেনো শূন্যতা ফিল হচ্ছে যা কাল রাতে হয়েছিল।সে অনেক্ষন ওয়াসেনাতের দিকে তাকিয়ে ছিল।তারপর ওয়াসেনাতকে ডাকতেই উঠে বসে তারপর বেলুনগুলো নিয়ে নেমে যায় আর যাওয়ার আগে বলে উঠে………….
__thanku☺ আইসক্রিমের জন্যে😋(হেসে হেসে)

অরিএান শুধু তাকিয়ে ছিল।কিছু বলে নাই।ওয়াসেনাত গেটের ভিতরে চলে গেলে অরিএান হোটেলে চলে আশে।

হোটেলে ডুকতেই সবাই তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে দেখে মনে হয় এলিয়েন দেখছে।রিমন দৌড়ে এসে বলে উঠে……
__ভাই কই ছিলি তুই।আমি তো চিন্তা ক…….

আর বলতে পাড়লো না অরিএানের পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে সাথে সাথে চিৎপটাং মানে সেন্সলেস। 😂😂🤣🤣অরিএান অবাক হলো না।কারন হোটেলের নিচে বড় আয়নায় নিজেকে দেখে সে নিজেই অবাক হয়েছে। মেয়েটা তাকে সম্পূর্ণ চেন্জ করে দিয়েছে।এটা ভেবে হালকা হাসলো।হোটেলের স্টাফ,অরিএানের বডি গার্ডস সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। তাদেরও সেন্সলেস হতে ইচ্ছে করছে।তবে যদি তারা এমন করে তবে হোটেলের একমাএ মালিক মানে অরিএান খান তাদের চাকরি নট করে দিবে।

ওয়াসেনাত বাসায় গিয়ে তার মাকে সব খুলে বলে।তার মা প্রথমে চিন্তিত হলেও পড়ে বুঝতে ভাবে ছেলেটা খারাপ না।তা না হলে কত কিছুই করতে পার তো।ওয়াসেনাতের মা বাবা তাকে নিজের মত চলতে দেয়।তারা তাদের মেয়েকে এমন ভাবে গড়ে তুলেছে যে তাদের নিজের মেয়ের উপড় আস্থা আছে।তারা যানে ওয়াসেনাত খারাপ পথে চলার মত মেয়ে না।ওয়াসেনাত খাওয়াদাওয়া করে নিজের রুমে চলে যায়।আজ খেতে খেতে দেড়ি হয়ে গেছে।তারউপড় আজ বাচ্চাদেরকে পড়াতে যেতে হবে।তাই একটু বিশ্রাম নিচ্ছে।

রিমনের মাথায় এক বলতি পানি ডেলে দেয় অরিএান। সাথে সাথে রিমন লাফিয়ে উঠে বলে……..
__ভাই তোর এত পরিবর্ত দেখে আমি পাগল হয়ে যাবো।
__পাগল হতে হবে না।তাড়াতাড়ি তানবির নামের স্টাফকে সিলেট থেকে ঢাকায় টান্সপার করার ব্যাবস্থা কর।
__কেনো??(অবাক হয়ে)
__বেশি কথা পছন্দ না।যানিস তো
__হুম। কেনো ভাই ওই মেয়ে যে ননস্টপ বকবক করে তারটা কেমনে পছন্দ হয়।(বিড়বিড় করে)
__কিছু বললি
__না না কিছু না।
__তা হলে যা চেন্স করে আয়।খাবো একসাথে।
__একসাথে (হাবার মত তাকিয়ে)
__হুম

রিমন সেন্সলেস হতে হতে টাইয়াড তাই আর নিতে পাড়ছে না।সে বোকার মত অরিএানের কথা মত খাবার খায় তার সাথে।

অরিএান রুমে এসে নিজেকে আয়নায় দেখছে আর ভাবছে ওয়াসেনাতের কথা।হঠাৎ মনে পড়ে যায় ওয়াসেনাত তার বুকের বা পাশে হাত দিয়েছিল। অনমনেই তার হাত তার বুকে চলে যায়।তারপর ফুল, ঘাস,আর পিনটা খুব যতনে নিজের কাছে রেখে দেয়।তারপর রেডি হয়ে অফিসের কিছু কাজ করে নেয়।আজ আবার তার মিটিং আছে৫টা বজে।তাই ল্যাপটপে কাজ করে মিনিংয়ে চলে যায়।

ওয়াসেনাত বাচ্চাদের পড়িয়ে বাসায় এসে না খেয়ে ঘুমিয়ে যায়।তার মা হাতরাতে হাতরাতে তার রুমে এসে খাটে বসে পড়ে।তারপর ওয়াসেনাতকে কিছুক্ষণ ডাকে।মায়ের ডাকে সে হালকা নড়েচড়ে মায়ের কোলে মাথা রাখে।এটা হল পৃথিবীর সব চাইতে শান্তির স্থান।তার মা হালকা হেসে মাথায় হাত বুলায়।কতদিন মেয়েটার মুখটা দেখে না।ভেবেই তার চোখ ভিজে আসে।আবার তা শাড়ির আঁছোল দিয়ে মুছে নেয়।

মিটিং শেষ করে আসার সময় অরিএানের সাথে মাদৌলির দেখা হয়।অরিএান পাশ কাটিয়ে চলে যেত নেয়। সাথে সাথে মাদৌলি বলে উঠে…………..
__পাথরের বুকে কি ফুল হয়(তাচ্ছিল্যের সুরে)

অরিএান কোনো কথা বলে নাই।সে এই মেয়ের সাথে কথা বলতে চায় না।যে মেয়ে নিজের সব চাইতে মুল্যবান জিনিস সহজেই দান করতে পারে সে মেয়ে কেমন তা অরিএানের যানা।হ্যাঁ সে মেয়েদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতো তবে মেয়েগুলো নিজে তার কাছে আসে। সে কাউকে নিয়ে আসে না।

অরিএান নিজের সাদা শার্ট জড়িয়ে শুয়ে আছে। সাথে একটা লাল শাড়ি।সাদা শার্টে ওয়াসেনাতের ছোঁয়া আছে।আর লাল শাড়ি তার অতিতের ছোঁয়া। এক ছোঁয়া তার জীবনকে বদলে দিচ্ছে আর অন্য ছোঁয়া তাকে তার মনের দিক থেকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এক ছোঁয়া তার মনকে পাথরের রুপ দিয়েছে আর অন্যটা তার মনকে কি রুপ দিতে চাচ্ছে তা তার অজানা। লাল শাড়িটা ছুড়ে নিচে ফেলে দিয়ে শার্ট জড়িয়ে শান্তির নিঃশ্বাস নেয়।রিমনকে অরিএান বলে দেয় তার রুমে যাতে আর কোনো মেয়েকে না পাঠায়।সে তার শান্তি অন্য জায়গায় খুঁজে পেয়েছে…………
🍁
…..চলবে….💘

🍂🍁যাদের পছন্দনা এড়িয়ে চলুন।আর ভুল গুলো মহান আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন🍁🍂

SHARE:

Logo Light

হারিয়ে যান গল্পের দুনিয়ায়

Useful links

2024 © Golpo Hub. All rights reserved.