ত্রিধারে তরঙ্গলীলা

ত্রিধারে তরঙ্গলীলা
Story
91 Parts
15 reads

Chapters

পর্ব – ১
Mar 21, 2025 • 1 reads

বাচ্চাটি গোল গোল চোখে তাকিয়ে ছিল৷ দীর্ঘসময় তাকিয়ে থাকার পর তুলতুলে নরম দেহটি যেন ছটফটিয়ে ওঠল৷ সুহাস খেয়াল করছিল মিষ্টি মুখের মায়াবি বাচ্চাটি তাকে দেখছে। হঠাৎ শুনতে পেল আধো আধো কণ্ঠে বাচ্চাটি তাকে ডাকল, ‘ পাপাহ, পাপপাহ! ‘ সুহাস চমকাল। শিরশিরে অনুভূতি হলো দেহ জুড়ে৷ স্নায়ুতে চঞ্চলতা বাড়ল।

পর্ব – ২
Mar 21, 2025 • 0 reads

প্রচণ্ড সুশীল প্রকৃতির মেয়ে নামী। আর পাঁচটা মেয়ে রূপ, সৌন্দর্যের দিক দিয়ে তাকে পেছনে ফেলতে পারলেও গুণের দিকে পারবে না। এই মেয়েটি দারুণ মেধাবিনী। শুধু পুঁথিগত বিদ্যাতেই সে সীমাবদ্ধ নেই। বিজ্ঞানের ছাত্রী হলেও সাহিত্যের প্রতি রয়েছে নিবিড় ঝোঁক। পড়াশোনার ফাঁকে ঠিক সমরেশ, রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল, শরৎচন্দ্র ইত্যাদি বহু লেখকের বই পড়ে নেয়।

পর্ব – ৩
Mar 21, 2025 • 0 reads

বন্ধুদ্বয়ের সাথে কথোপকথনের সমাপ্তি ঘটেছে অনেকক্ষণ। নামীদের বাড়ির দোতলার বারান্দায় চনমনে চিত্তে বসে আছে সুহাস। ফোনের স্ক্রিনে মায়ের নাম্বার জ্বলজ্বল করছে। সে অশান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে। দু’বার কল করল মাকে। দু’বারই ফোন বন্ধ শোনাল। এরপর কিয়ৎকাল ভেবে কল করল ছোটো বোন সিমরানকে। তার ফোনও বন্ধ বলছে।

পর্ব – ৪
Mar 21, 2025 • 0 reads

ঘড়ির কাটা সকাল সাতটা পনেরো ছুঁয়েছে৷ এরই মধ্যে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া এসে পৌঁছাল সৌধরা। সৌধ ড্রাইভ করার ফাঁকে ফ্রন্ট মিররে দেখে নিল, বান্ধবী প্রাচী ঘুমাচ্ছে। পাশে বসে বই পড়ছে চৌকশ স্টুডেন্ট আইয়াজ। সৌধর মেজাজ খুব খারাপ হয়ে গেল। আইয়াজের উদ্দেশ্যে বিড়বিড়িয়ে বলল, ‘ এই শালা মনে হয় টয়লেটে বসে বসেও পড়ে!‘

পর্ব – ৫
Mar 21, 2025 • 0 reads

গাঢ় গোলাপি রঙের ঘাগরার সঙ্গে গাঢ় নীল লেডিস শার্ট পরিহিত নামী। শার্টের দুই হাতা কনুই পর্যন্ত গোটানো। গলায় ঝুলানো গোলাপি রঙের জর্জেট ওড়না। মুখশ্রীতে কোনো প্রসাধনী নেই। ঘন-কালো দিঘল রেশম চুলগুলো পেছন দিকে বেশ উঁচু করে বাঁধা। ছোট্ট কপালটা ছোটো-ছোটো চুলে ঢাকা। মুখে লেগে আছে স্নিগ্ধতা মেশানো মৃদু হাসি।

পর্ব – ৬
Mar 21, 2025 • 0 reads

সুহাসিনী, দ্বিপ্রহরের রৌদ্রোকজ্জ্বল এই ক্ষণে কাজল রঙে আবৃত তোমার মায়াবিষ্ট আঁখি যুগলেই কি হলো আমার মরণ? ‘ __সুহাস নামীর ব্যক্তিগত ডায়ারিতে স্থান পেল তাকে উদ্দেশ্য করে বলা সুহাসের প্রথম নৈসর্গিক বাক্যটি। একবার, দুবার, বার বার অসংখ্যবার বিড়বিড়িয়ে বাক্যটি আওড়াল নামী। নিজের ঘরে নাজুক মুখে বসে মুচকি মুচকি হাসছে সে।

পর্ব – ৭
Mar 21, 2025 • 0 reads

ভোরবেলা উদয়িনীর কল পেলেন সোহান খন্দকার। সিমরানের জ্বর হয়েছে। আরো একদিন কক্সবাজারে কাটানোর কথা থাকলেও মেয়ের ভয়াবহ জ্বর হওয়াতে ফিরে আসছে উদয়িনী৷ ভোর ছ’টায় রওনা দিয়েছে তারা। এখন বাজে ছ’টা পয়তাল্লিশ। স্ত্রীর ফোনকল পেয়ে সোহান খন্দকার ঘামতে শুরু করলেন। মেয়ের জ্বর নিয়ে সে দুশ্চিন্তা করছেন না। স্ত্রী এমবিবিএস ডক্টর।

পর্ব – ৮
Mar 21, 2025 • 1 reads

প্রায় এক ঘন্টা হতে চলল। মা, মেয়ে আর ছেলে দ্বার রুদ্ধ করেছে। সোহান খন্দকার একবার উপরে ওঠছেন। আরেকবার নিচে নামছেন৷ বসার ঘরে সোফার এক কোণে মাথা নিচু করে বসে নামী। তার পাশেই নিধি বসে৷ ক্ষণে ক্ষণে নামী যে ঘেমে ওঠছে টের পেল নিধি৷

পর্ব – ৯
Mar 21, 2025 • 1 reads

বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেনি। উদয়িনী পুরোপুরি তার স্বামীর প্রাক্তনের মেয়েকে ছেলের জীবন থেকে সরাতে পারেনি৷ কিন্তু ছেলেমেয়ে দু’টোর মাঝে তুলে দিয়েছে শক্তপোক্ত দেয়াল। যে দেয়ালের নাম ঘৃণা। সুহাস নামীকে ঘৃণা করে তার মায়ের জন্য। যে মেয়ের মা তার মায়ের জীবনের সব সুখ কেড়ে নিয়েছে সেই মায়ের মেয়েকে সে কেন সুখ দেবে?

পর্ব – ১০
Mar 21, 2025 • 0 reads

ক্লাস শেষ হলো বিকেল পাঁচটায়। সৌধর হাবভাব ভালো ঠেকেনি নিধির৷ একদম স্যারের পিছু পিছু বেরিয়েছে সে৷ কিন্তু বিপদ ঘটল অর্পণ স্যারকে দেখে। আটাশ বছর বয়সী যুবক অর্পণ। তাকে এই মেডিকেল কলেজের হার্টথ্রবও বলা হয়। যার প্রতি অন্যান্যদের মতো নিধিও দারুণ মোহিত। বর্তমানে স্টুডেন্ট’সদের মধ্যেও একজন হার্টথ্রব রয়েছে। যার নাম সৌধ চৌধুরী।

পর্ব – ১১
Mar 21, 2025 • 0 reads

নিজের ভেজা দুটো টিশার্ট ছাদে টাঙানো রশিতে মেলে দিল সুহাস। ভেজা চুলে হাত নেড়ে পানি ঝেড়ে গিয়ে দাঁড়াল ছাদের কার্ণিশ ঘেঁষে। সদ্য গোসল করা সুহাসকে বেশ স্নিগ্ধ লাগছে। তার লোমহীন ধবধবে ফরসা বুকটাও আকর্ষণীয়। পাশের বাড়ির ছাদে চৌদ্দ, পনেরো বছর বয়সী এক কিশোরী। কাপড় নাড়ার পাশাপাশি লক্ষ্য করছিল সুহাসকে৷

পর্ব – ১২
Mar 21, 2025 • 0 reads

বিকেল পাঁচটা বেজে ঊনত্রিশ মিনিট৷ ফোনের রিংটোনে সহসা ঘুম ছুটে গেল সৌধর। স্ক্রিনে ‘ নিধি ‘ নামটুকু দেখেই বুক ধক করে ওঠল। সেদিন অল্প কথা-কাটাকাটি হওয়াতে নিধি তার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিল। ওর রাগ ভাঙানোর সুযোগ হয়নি আর। রাগ না ভাঙাতেই মেয়েটা কল করেছে! বিশ্বাস করতে পারছিল না।

পর্ব – ১৩
Mar 21, 2025 • 0 reads

রান্না শেষে ঘেমে-নেয়ে একাকার নামী। এমতাবস্থায় খেতে বসা সম্ভব না। তাই সকলকে বলল, খেয়ে নিতে। সে গোসল সেরে খাবে। সৌধ বাঁধ সেধে বলল, ‘ এতক্ষণ যাবৎ পরিশ্রম করলে। আর তোমায় ছাড়া আমরা খেয়ে নিব? এ তো হয় না বোন। ‘ সৌধর মুখে বোন শব্দটি শুনে আপ্লুত হলো নামী।

পর্ব – ১৪
Mar 21, 2025 • 1 reads

প্রতি খুবই অবাক হলো সুহাস৷ সে তো এটা বলতে চায়নি। খেলার শর্ত মেনে নামীকে আই লাভ ইউ’ই বলতে চাচ্ছিল৷ তাহলে কী করে আই হেইট ইউ বলে ফেলল! ভালোবাসি বলতে গিয়ে ঘৃণা করি বলে ফেলল কেন? এসব ভাবনার ভীড়ে নামীর ঝাপসা চোখ, গাল বেয়ে পড়া অশ্রু নজর এড়াল না।

পর্ব – ১৫
Mar 21, 2025 • 1 reads

সুহাস নামীকে একঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা লক করে দিল নিধি৷ এরপর প্রলম্বিত নিঃশ্বাস ছেড়ে সৌধ, আইয়াজ আর ফারাহর সঙ্গে খুঁড়িয়ে নিচে চলে এলো। তাকে সাহায্য করল সৌধ। সুহাস, নামীর মধ্য স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। বদ্ধঘরে এবার দু’জন মা’রামারি করুক, কা’টাকা’টি করুক। বা প্রেম, ভালোবাসায় হাবুডুবু খাক। এটা সম্পূর্ণ ওদের ব্যাপার।

পর্ব – ১৬
Mar 21, 2025 • 0 reads

সুহাস, নামী এক সঙ্গে এক রাত বদ্ধ ঘরে থাকা মানে ভয়াবহ সুনামি ঘটবেই ঘটবে। এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী ছিল বন্ধুরা। কিন্তু সেই সুনামির পরিণাম যে সুহাসকে এভাবে বদলাতে শুরু করবে ভাবতে পারেনি ওরা। ভাবতে পারেনি স্বয়ং নামীও। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে সেদিনের পর সুহাস আর নামীর পেছনে লাগেনি৷

পর্ব – ১৭
Mar 21, 2025 • 0 reads

লিভিং রুম থেকে গিটারের শব্দ ভেসে আসছে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসা সিমরান সে শব্দ শুনেই লাফিয়ে ওঠে বলল, ‘ ও মাই গড! সৌধ ভাই গিটার বাজাচ্ছে! ‘ নামী ওর চুল আঁচড়ে দিচ্ছিল। আকস্মিক লাফিয়ে ওঠায় ভয় পেয়ে গেল সে। শুনেছিল সুহাস, সৌধ দুজনই দারুণ গিটার বাজাতে পারে। গানের গলাও অসাধারণ।

পর্ব – ১৮
Mar 21, 2025 • 0 reads

ঠোঁটের কোণা বেয়ে পড়া রক্ত টুকু তর্জনীতে মুছে নিল নামী৷ মুছে নিল গাল বেয়ে পড়া অশ্রুটুকুও৷ এরপর নিজেকে যথাসম্ভব শক্ত করে নিয়ে দৃঢ় গলায় বলল, ‘ মিসেস উদয়িনী, অনেক বলেছেন আপনি। এবার আপনার শোনার পালা। ‘ চমকে গেল উদয়িনী। হতভম্ব মুখে তাকিয়ে রইল নামীর বিধ্বস্ত মুখপানে।

পর্ব – ১৯
Mar 21, 2025 • 0 reads

সৌধর গাড়ি এসে থামল সদর হাসপাতালের সামনে। সুহাস ত্বরিত গাড়ি থেকে নেমে দৌড় লাগাল৷ সৌধ মুখে মাস্ক পরে অপেক্ষা করতে লাগল ওদের ফিরে আসার৷ সে নিজে আর নামল না৷ দেখা গেল কেউ চিনে ফেললে বাবা, ভাইকে জানিয়ে দেবে। আর তারা রাগারাগি করবে একা একা বের হওয়ায়।

পর্ব – ২০
Mar 21, 2025 • 0 reads

চোখের পলকেই অতিক্রান্ত হলো বিবাহিত ব্যাচেলর জীবনের কয়েকটা মাস। এই কয়েকমাসে অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটেছে। নামী, সুহাসের সম্পর্ক মোড় নিয়েছে বন্ধুত্বে। প্রত্যহ কাজের পাশাপাশি নিয়ম করে তিনবেলা খুনশুটিও চলে তাদের। ওদের এই বন্ধুত্ব, খুনশুটির আড়ালে রয়েছে প্রগাঢ় ভালোবাসা। যা ওরা টের না পেলেও টের পায় আশপাশে থাকা প্রত্যেকে।

পর্ব – ২১
Mar 21, 2025 • 0 reads

ঠিক বারোটা সময় নামীর ফোনে একটি ম্যাসেজ এলো, ‘ হ্যাপি ফার্স্ট মিটিং নামীদামি। ‘ বই থেকে মুখ তুলে ফোনের স্ক্রিনে তাকাতেই বুকের ভেতর ধড়াস করে ওঠল নামীর। এরপর আরো একটি ম্যাসেজ এসে হৃদয় নাড়িয়ে তুলল তার। ‘ মিসেস সুহাসিনী… হ্যাপি ফার্স্ট ওয়েডিং এনিভার্সারি।

পর্ব – ২২
Mar 21, 2025 • 1 reads

আজ সূর্যি মামার দেখা মেলেনি। আকাশে মেঘের ঘনঘটা। জানালা ঘেঁষে উদাস মুখে বসে আছে নামী। ঐ আকাশের সকল মেঘ যেন তার মুখে ভর করেছে আজ৷ দেখতে দেখতে তাদের জীবনে কেটে গেছে তিন বছর। পড়াশোনা, বন্ধুত্ব, প্রেম, ঘুরাফেরা, মান অভিমান সবই ছিল বছর জুড়ে। কোনোটাতেই এক রত্তি কমতি ছিল না।

পর্ব – ২৩
Mar 21, 2025 • 1 reads

ইদের ছুটি কাটাতে সবাই নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে গেছে। গতরাত দেড়টার দিকে সুহাস এসেছে নামীর কাছে। এই নিয়ে প্রচণ্ড রাগারাগি করেছে নামী। দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে প্রায় দু’ঘন্টা। সিমরানের থেকে খবর পেয়েছে সুহাস বাড়ি এসেছে বিকেলের দিকে। এরপর দু’ঘন্টা সময় বোন এবং মাকে দিয়েছে। উদয়িনীর সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে, মতের অমিলও অনেক।

পর্ব – ২৪
Mar 21, 2025 • 1 reads

বাইরে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে নিষ্পলক বৃষ্টি দেখছিল উদয়িনী। সোহানের নাম্বার নিয়েছে কিছুদিন আগে। অথচ ফোন বা টেক্সট কিছুই করা হয়নি। অপেক্ষার সমাপ্তি টানতে বাধ্য হলো সে। বুঝে ফেলল সোহান আজো আসবে না। তাই কল করল স্বামীর নাম্বারে। দু’বার রিং বাজতেই কল রিসিভ হলো।

পর্ব – ২৫
Mar 21, 2025 • 1 reads

সিমরান বেড়ে ওঠেছে একক পরিবারে। যেদিন থেকে সৌধদের যৌথ পরিবারের সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে সেদিন থেকে এই পরিবারের প্রতি আলাদা ভালোলাগা তৈরি হয়েছে। এ পরিবারের মানুষ গুলোও তাকে খুব আপন করে নিয়েছে। নিজের পরিবার বলতে বাবা, মা, ভাইকেই দেখেছে সে। বাবা, মাকে পেয়েছে খুব কম সময়। পরিবার কী? পরিবার কেমন হয় জানত না।

পর্ব – ২৬
Mar 21, 2025 • 1 reads

জগিংয়ে বেরিয়েছিল সৌধ৷ বাড়ি ফেরার সময় আকস্মিক তার কাঙ্ক্ষিত রমণীর দেখা মিলে। নিধি এসেছে! সাতসকালে প্রাণপ্রেয়সীর মুখ দর্শন। এক নিমিষে বক্ষঃস্থল চনমনে হয়ে ওঠল। চোখ, মুখে ছড়িয়ে পড়ল ভোরের স্নিগ্ধ জ্যোতি। ঝিমিয়ে পড়া হৃদয়টুকু সহসা তরঙ্গিত হলো। সীমাহীন বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইল কয়েক পল। ছোট্ট একটি লাগেজ হাতে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে নিধি।

পর্ব – ২৭
Mar 21, 2025 • 1 reads

মানুষের অল্প ব্যথা তীব্র হয় আপনজনের সান্নিধ্য পেলে। সিমরানেরও ঠিক তাই হলো। প্রথমে ভাই সুহাস পরে সৌধ। দু’জন পুরুষই তার ভীষণ আপন। সুহাস আপন এতে কোনো প্রশ্ন আসে না, সন্দেহও থাকে না৷ আর সৌধ তার মনের মানুষ। বাবা, ভাইয়ের পর যে পুরুষকে সে সবচেয়ে কাছের ভাবে৷ আপন দৃষ্টিতে দেখে।

পর্ব – ২৮
Mar 21, 2025 • 0 reads

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের জীবনের প্রথম প্রেম, প্রথম অনুভূতি জন্মায় ভুল মানুষকে কেন্দ্র করে। প্রেম কখনো ভুল হয় না, ভুল হয় না কাউকে ঘিরে হৃদয়ের তীব্র অনুভূতিতেও। ভুল হয় আসলে মানুষটা৷ তাই তো তীব্র আবেগ, দৃঢ় ভালোবাসাও ব্যর্থ হতে বাধ্য হয়। কাল বিয়ে। সবাই ঘুমোনোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কনে আজ ভীষণ ব্যস্ত।

পর্ব – ২৯
Mar 21, 2025 • 0 reads

কন্যা বিদায়ের পর নিজ ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিল সুজা চৌধুরী। এমন সময় বাড়ির কাজের লোকদের হট্টগোল শুনতে পেল। তানজিম চৌধুরী স্বামীর মাথা টেপা স্থগিত রেখে মাথায় কাপড় তুলে বেরিয়ে এলেন। বারান্দার রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে উঁচু গলায় বললেন, ‘ এই তোরা চুপ করবি? কর্তা বিশ্রাম নিচ্ছে।‘

পর্ব – ৩০
Mar 21, 2025 • 0 reads

বিয়ে বাড়ির আমেজ এক নিমেষে ধূলিসাৎ হয়ে গেল। বাড়ির পরিবেশ থমথমে। কাছের অতিথিবৃন্দের মধ্যে অনেকেই উপস্থিত আছে। তাই সুজা চৌধুরীর ব্যক্তিগত মিটিং রুমে নেয়া হলো সৌধ, নিধিকে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সৌধর মা আর দাদুনিকে রাখা হয়েছে৷ বন্ধুদের মধ্যে রাখা হলো শুধু সুহাস, আইয়াজকে। ছোটোবেলা থেকেই সৌধ ভীষণ শান্ত প্রকৃতির হলেও জেদটা মারাত্মক।

পর্ব – ৩১
Mar 21, 2025 • 0 reads

ভালোবাসা ভালো কিন্তু ভালোবাসায় অন্ধত্ব বোকামি। সৌধর মতো শক্ত ব্যক্তিত্বের পুরুষটাও দিনশেষে হেরে গেল। সত্যিই কি হারল? খাঁটি প্রণয়ে কি হার শব্দটি জড়ায় কখনো? নাকি এই হারটাই একদিন বিস্ময়কর জয়ে পরিণত হবে? সৌধ কি সত্যি হেরে যাওয়ার মতো ছেলে? দিনশেষে আসলে হারল কে?

পর্ব – ৩২
Mar 21, 2025 • 0 reads

প্রিয় মানুষের মৃত্যু শোকও একসময় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব৷ কিন্তু চোখের সামনে তাকে অন্যকারো হয়ে যাওয়ার শোক কাটানো অসম্ভব। এই শোক এতটাই দৃঢ় যে আজন্মকাল থেকে যায়। প্রকৃতির নিয়মে মানুষ হারালে হৃদয় ব্যথিত হয় ঠিকি কিন্তু প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে মানুষ হারালে তা হয় দুর্বিষহ যন্ত্রণার। কেটে গেছে তিন রাত তিন দিন।

পর্ব – ৩৩
Mar 21, 2025 • 0 reads

ঘুম পাগলী মেয়েটা হঠাৎ ঘুম বিমুখ হয়ে পড়েছে৷ রাত যত বাড়ে বুকের বা’পাশের চিনচিনে ব্যথাটুকু ততই তীব্র হয়৷ বক্ষঃস্থল জুড়ে আশ্চর্যজনক এক অশান্তি বইতে থাকে সর্বক্ষণ। যে অশান্তি তাকে না ঘুমোতে দেয় আর না প্রত্যাহিক জীবনের কোনো কাজে মন বসাতে দেয়। মন কেবল ক্ষণে ক্ষণে ডুকরে ওঠে, দীর্ঘশ্বাস ফেলে একটি আফসোসে।

পর্ব – ৩৪
Mar 21, 2025 • 0 reads

ইতঃপূর্বে ফারাহর যত বিয়ে এসেছে সব ফিরিয়ে দিয়েছে নজরুল মিঞা। কিন্তু এবার সরাসরি ফিরিয়ে দিতে অক্ষম। কারণ এবার তার সামনে চৌধুরী বাড়ির দুই ছেলে উপস্থিত। যার মধ্যে একজন অর্থাৎ সুলল চৌধুরী তুখোড় রাজনীতিবিদ। তাই নানারকম জটিলতা দেখাতে শুরু করলেন।

পর্ব – ৩৫
Mar 21, 2025 • 0 reads

সুগন্ধা পয়েন্টে তিনটে কাপল রুম ভাড়া করেছে সৌধ। যার দু’টিতে কাপল থাকলেও একটিতে সে একা থাকবে৷ বিষয়টা মজার নাকি আফসোসের? আফসোসের হওয়ার কথা থাকলেও মনের ওপর জোর প্রয়োগ করে মজার হিসেবেই নিল। বিলাসবহুল হোটেল রুমে বিরহ যন্ত্রণা বুকে পুষে কাটিয়ে দিল শেষরাত। সূর্যোদয়ের সময় গলায় ক্যামেরা ঝুলিয়ে বেরিয়ে পড়ল বিচের উদ্দেশ্যে।

পর্ব – ৩৬
Mar 21, 2025 • 0 reads

বাথরুম থেকে বেরিয়ে ডিভান ফাঁকা দেখল আইয়াজ। নিমেষে ভ্রূদ্বয় কুঁচকে বিছানায় তাকাল। ফারাহর অবস্থা একই৷ মেয়েটা এখনো বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। কুঁচকে যাওয়া ভ্রূদ্বয় ধীরেধীরে স্বাভাবিক করে নিল সে। নিশ্চয়ই কোনো জরুরি প্রয়োজনে সৌধ বেরিয়ে গেছে। ছোট্ট একটি নিঃশ্বাস ছেড়ে এগিয়ে গেল পোশাক বের করতে।

পর্ব – ৩৭
Mar 21, 2025 • 0 reads

মায়ের সঙ্গে রাগারাগি করে ফোন কেটে দিল সুহাস। তার রাগের মাত্রা দেখে নামীর বুকে ধুকপুক শুরু হলো। এতক্ষণ সুহাস কথা বলছিল আর সে পাশে বসে সমস্ত কথা শোনার এবং বোঝার চেষ্টা করছিল। যতটুকু বুঝল সিমরানকে আজ পাত্রপক্ষ দেখতে এসেছিল। এটা নিয়েই অশান্তি করেছে সিমরান। অশান্তির মাত্রা কতখানি টের পেল নামী।

পর্ব – ৩৮
Mar 21, 2025 • 0 reads

আজ সকালে সূর্যের দেখা মেলেনি। থেকে থেকে টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে৷ প্রকৃতি অবসাদগ্রস্ত। সেই অবসাদ গ্রাস করে নিয়েছে সিমরানকেও। দু’পায়ে এখনো ব্যান্ডেজ মেয়েটার। কান্নাকাটি করে ফর্সা মুখ লালচে বর্ণে পরিণত হয়েছে। চোখ দু’টোও ফুলে আছে ভীষণ। সময় সাতটা বেজে পঁয়ত্রিশ মিনিট৷ মেয়ের ঘুম ভেঙেছে, উদয়িনী টের পেয়েছে ব্লুটুথ স্পিকারে গান শুনে।

পর্ব – ৩৯
Mar 21, 2025 • 0 reads

গত কয়েকদিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। দিন নেই রাত নেই প্রকৃতি মুখরিত হয়ে আছে শ্রাবণ ধারায়। সুহাস, আইয়াজ গতকাল ঢাকায় ফিরেছে। ছুটি শেষ ওদের। ফারাহ আপাতত নামীর সঙ্গে নামীর বাসাতে থাকছে। একমাসের মধ্যে আইয়াজ তার পরিবারকে মানিয়ে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে ফারাহকে ঘরে তুলবে। আজ আইয়াজ আর সৌধর নাইট ডিউটি।

পর্ব – ৪০
Mar 21, 2025 • 0 reads

বছর পেরোয়নি একটাও৷ তবু যেন বহু বছরের তৃষ্ণা। ঠিক এমন করেই তাকিয়ে আছে সৌধ। যে তাকানোতে বাইরে থেকে প্রকাশ পাচ্ছে তীব্র ক্রোধ, অভিমান। অথচ ভেতরে আকুলতায় ভরা। ব্যাকুলতায় গাঁথা। পুরুষালি দেহের ভিতর থাকা ছোট্ট হৃদযন্ত্রটা ছটফট করছে ভীষণ। ক্রোধান্বিত দৃষ্টি দু’টো নির্মল হতে চাইছে ক্ষণে ক্ষণে।

পর্ব – ৪১
Mar 21, 2025 • 0 reads

কোনোমতে শরীরে টি-শার্ট জড়িয়ে নিচে নেমে এলো সৌধ৷ দেখতে পেল সুহাস, আইয়াজ আর প্রাচীর আতঙ্কিত মুখ। সুহাস ঢাকাতে ছিল, গতকাল সকালেই কথা হয়েছে ওর সঙ্গে। তাই আকস্মিক সুহাসের আগমন সন্দেহ তৈরি করল মনে। আইয়াজ আর ফারাহর গত মাসে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

পর্ব – ৪২
Mar 21, 2025 • 1 reads

সৌধর মা তানজিম চৌধুরী। সিমরানকে খুব ছোটো থেকে বড়ো হতে দেখেছে। সেদিনের সেই এক রত্তি মিষ্টি মেয়ে সিমরান। চোখের পলকে কতবড় হয়ে গেল৷ সচক্ষে দেখল, বাবা, মা, ভাইয়ের কাছে একরোখা, জেদি তকমা পাওয়া মেয়েটি আদর, ভালোবাসা, যত্ন পেলে কেমন মোমের মতো গলে যায়৷ মিলিয়ে যায় হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো।

পর্ব – ৪৩
Mar 21, 2025 • 0 reads

সেদিন কথোপকথন শেষ করে গভীর ভাবনায় পড়ে তানজিম চৌধুরী। এরপর বেশ তাড়াহুড়ো করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় সিমরানকে৷ কারণ সে সময় সৌধ, সুহাস ছাড়াও ওদের আরো বন্ধু, বান্ধবী বাড়িতে উপস্থিত ছিল। সিমরান চলে যায়। কেউই টের পায় না, জানতে পারে না সেদিন সিমরানের চৌধুরী বাড়িতে আসার খবর৷ এরপর স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করেন তানজিম চৌধুরী।

পর্ব – ৪৪
Mar 21, 2025 • 0 reads

গভীর রাত। ধরণিতল বৃষ্টিতে ভিজে চুপ চুপ। থেকে থেকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। সুহাস ঘুমোচ্ছে বেঘোরে। তার এক হাত নামীর কাঁধ আঁকড়ে, এক পা কোমরে তোলা। বউকে ঠিক কোলবালিশের ন্যায় আঁকড়ে ঘুমোচ্ছে সে৷ ক্ষণে ক্ষণে মুখের ভারিক্কি, উত্তপ্ত নিঃশ্বাস এসে ছুঁয়ে দিচ্ছে নামীর ঘাড়ে এবং কানে। সুহাস গভীর ঘুমে থাকলেও নামীর ঘুম গভীরতায় পৌঁছায়নি।

পর্ব – ৪৫
Mar 21, 2025 • 0 reads

সৌধ ভেবেছিল উদয়িনী আন্টির সাথে দেখা করবে। শেষ পর্যন্ত দেখা করা হলো না৷ আইয়াজের সাথে কথা হয়েছে ভোরবেলা। সে পরামর্শ দিল, উদয়িনী আন্টি নয় শুধু সিমরানের সঙ্গেই একান্তে কথা বলতে। এই বিয়েতে সুহাস রাজি নয়। রাজি নয় উদয়িনী আন্টিও। সুহাসের বিয়ে যেমন সোহান আংকেল নিজের সিদ্ধান্তে দিয়েছে।

পর্ব – ৪৬
Mar 21, 2025 • 0 reads

অন্ধকার আছে বলেই আলোর মর্ম বোঝা যায়৷ প্রকৃতির নিয়মেই রাত্রির আগমন ঘটে। তাই বলে কি মানবকূল বিচলিত হয়? নাহ, তারা অপেক্ষা করে প্রভাতের। তারা জানে সন্ধ্যায় যে সূর্য অস্ত যায়। সময়ের চাকা ঘুরে সে সূর্য উদিতও হবে। মানুষের জীবনে সুসময়, দুঃসময়, প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি ঠিক সূর্যাস্ত আর সর্যদয়ের মতোন। আজ দুঃখ পেয়েছ?

পর্ব – ৪৭
Mar 21, 2025 • 0 reads

প্রকৃতির যৌবন মাস চলছে। আকাশ, বাতাস, মাঠ, মাটি সর্বস্তরই নিজের যৌবন দ্বারা সুবাসিত করে রেখেছে শরৎরানি৷ আকর্ষিত মানব চিত্ত। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে শুভ্র আলোকরশ্মি আর স্নিগ্ধ আবহাওয়া। প্রকৃতির এই রূপকে ভীষণ ভালোবাসে নামী৷ তার সেই ভালোবাসায় মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিল সুহাস৷ জানালো, পরশু তারা রাঙামাটি বেড়াতে যাবে। শুধু তারাই নয় আইয়াজ, ফারাহও যাচ্ছে।

পর্ব – ৪৮
Mar 21, 2025 • 0 reads

মিসেস উদয়িনী ইজ নো মোড়! ডক্টর উদয়িনী আর নেই৷ দু’টো সন্তান আজ মাতৃহারা। সোহান খন্দকার বিপত্নীক হলেন৷ দুনিয়াতে নতুন প্রাণের আগমনে চারপাশ ঝলমলে হয়ে ওঠে৷ আপনজনেরা ছড়িয়ে দেয় উল্লাস। আনন্দে উদ্ভাসিত হয় সকলের মুখ। আর পুরোনো প্রাণ বিদায় নিলে চারপাশ মলিনতায় ছেয়ে যায়। আপনজনেরা হয় শোকাবহে স্তব্ধ। মুখাবয়বে ফুটে ওঠে বিষণ্ণতা।

পর্ব – ৪৯
Mar 21, 2025 • 0 reads

লোকমুখে একটি কথা প্রায়শই শুনত সুহাস৷ আজ মরলে কাল দু’দিন। নিঃসন্দেহে কথিত সেই বাক্যটি চিরন্তন সত্য। উদয়িনী নেই আজ একমাস দশদিন। এত গুলো দিন চলে গেল। মা নেই। বাড়ি ফিরে বোনের রুগ্ন দেহ আর শুষ্ক মুখ দেখে বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠল সুহাসের। দু’দিনের ছুটি। তাই ছুটে চলে এসেছে মায়ের স্বপ্নের বাড়িতে।

পর্ব – ৫০
Mar 21, 2025 • 0 reads

এক সময়ের প্লেবয় খ্যাত সুহাস এখন বিবাহিত। এ সম্পর্কে সবাই অবগত। রোমিও সুহাস এখন আর আগের মতো নেই৷ বিয়ের পর বদল ঘটেছে বিস্তর। আকস্মিক বদলে যাওয়া এই ছেলেটি যখন বহু বছর পর ইসমাকে ফোন করে। প্রচণ্ড অবাক হয় ইসমা। বিস্ময়াপন্ন হয়ে ফোন রিসিভ করে।

পর্ব – ৫১
Mar 21, 2025 • 0 reads

সংসার জীবন সম্পর্কে ধারণা কম সিমরানের। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার তিক্ত সম্পর্কে ধারণা বেশ৷ ছোটো থেকে বাবা মায়ের মধ্যে তিক্ততা দেখে বড়ো হয়েছে। ঝগড়া, বিবাধ করে কতকাল বাবা, মা একে অপরের মুখ দেখেনি হিসেব ছাড়া। তবে শেষদিকে এসবের অবসান ঘটেছিল। আফসোস একটাই সময়টা ছিল খুবই অল্প। দুঃখের দিনগুলো এত বেশি।

পর্ব – ৫২
Mar 21, 2025 • 0 reads

আগামীকাল শুক্রবার। সিমরানের এনগেজমেন্ট। অ্যাডভোকেড অণুজ সরকারের সঙ্গে। লোকটার গায়ের বর্ণ শ্যাম হলেও আকর্ষণীয় চেহেরা। ভীষণ সুদর্শন। সুহাস নিজে গিয়ে দেখা করেছে ছেলেটির সঙ্গে। প্রথম দেখা এবং আলাপচারিতায় চোখ, মন দুটোই কেড়েছে অণুজ। এক দুইদিনের পরিচয়ে মানুষ চেনা ভার৷ পারিবারিক বিয়ে অবশ্য অল্প পরিচয়েই হয়৷

পর্ব – ৫৩
Mar 21, 2025 • 0 reads

চোখের পলকে ভবিতব্য বদলে গেল৷ মনের বাইরে চলা পরিকল্পনা গুলো হেরে গেল মনের ভিতরে চলা পরিকল্পনার কাছে। যারা মনের বাইরে পরিকল্পনা করেছিল তারা জানে না, ভেতরের পরিকল্পনাকারীর চিন্তাশক্তির প্রখরতা। জানে না তার বিচার বিশ্লেষণ আর পাঁচ জন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। খুবই শান্ত একটি পরিবেশ চোখের পলকে অশান্ত হয়ে ওঠেছিল।

পর্ব – ৫৪
Mar 21, 2025 • 0 reads

গোধূলি বিকেল৷ দু’কাপ চা বানালো ফারাহ৷ সুহাসের ঘরের বেলকনিতে আইয়াজ, সুহাস বসে আছে নিশ্চুপ। চায়ের কাপ দু’টো নিয়ে সেখানেই উপস্থিত হলো সে৷ ভীষণ মাথা ধরেছে সুহাসের৷ আইয়াজের মুখটা এখনো হতভম্ব। চোখের পলকে কতকিছু ঘটে গেল৷ সে নীরব দর্শক হয়েও দোষের ভাগিদার। কেবলমাত্র বন্ধু সৌধর চোখে৷

পর্ব – ৫৫
Mar 21, 2025 • 1 reads

মোবাইল হাতে বসে আছে সিমরান৷ চাতক পাখির ন্যায় তাকিয়ে আছে সময়ের দিকে৷ আর মাত্র একঘন্টা। সৌধ ভাইয়ের ঊনত্রিশতম জন্মদিন। বুক ধুকপুক করছে। প্রতি বছরই এমন সময় পাড় করে সে৷ হৃৎপিণ্ডের অবস্থা নড়বড়ে হয়ে যায়। জন্মদিনের ছোট্ট একটা উইশ। বিনিময়ে সৌধর থেকে ছোট্ট একটি থ্যাংকস পায়।

পর্ব – ৫৬
Mar 21, 2025 • 0 reads

সময় গড়াল ঢালু রাস্তায় নিচের দিকে গড়িয়ে পড়ার মতো৷ বিয়ের ছুটিতে বাড়ি এসেছে সৌধ। একমাসের জন্য স্মৃতি আপু আর দুলাভাইও এসেছে৷ বড়ো ভাই সৌরভ এসেছে এক সপ্তাহ আগে। চৌধুরী বাড়িতে বিয়ে মানেই বিরাট ব্যাপার। একমাস আগে থেকেই তোরজোড় শুরু হয়৷ স্মৃতিসৌধ নামক আলিশান বাড়িটা আত্মীয়স্বজনে ভরে ওঠে।

পর্ব – ৫৭
Mar 21, 2025 • 0 reads

মনের ভেতর অদ্ভুত অশান্তি চলছে। কাউকে ভালো লাগছে না। কোনোকিছুতে মন বসছে না। ঘরের দরজা বন্ধ করে বিবশ মুখে বসে রইল সিমরান। একটু আগে তার কাছে সুহাস এসেছিল। ভীষণ ক্রুদ্ধ হয়ে প্রশ্ন করেছে, ‘ সৌধ ফোন করেছিল? ‘ সে জবাব দেয়, ‘ হ্যাঁ। ‘ ‘ কী বলল? ‘ ‘ সন্ধ্যায় বেরুবে।

পর্ব – ৫৮
Mar 21, 2025 • 0 reads

বন্ধু মহলের আড্ডা কিছুক্ষণ স্থগিত। সকলে উৎসুক নয়নে তাকিয়ে। খোলা দরজার সামনে কখন সৌধর হবু বউ এসে দাঁড়াবে। সেই প্রতীক্ষায় রয়েছে প্রত্যেকে। নিধির ভেতর অদ্ভুত অস্বস্তি চলছে। সে চাচ্ছে না এই অস্বস্তিতে ভুগতে। যথাসম্ভব নিজেকে স্থির রাখার চেষ্টা করছে। তবু মনটা নিয়ন্ত্রণে থাকতে চাইছে না৷ নিধির অস্বস্তি সর্বপ্রথম ধরা পড়ে আইয়াজের চোখে৷

পর্ব – ৫৯
Mar 21, 2025 • 0 reads

হসপিটাল কোয়াটার৷ নিজের ফ্ল্যাটের ড্রয়িংরুমে বসে আছে ডক্টর. অর্পণ শিকদার। অবসর সময় গুলো বই পড়ে কাটায় সে৷ বাবা হওয়ার পর থেকে বই পড়ার সময় হয়ে ওঠে না তেমন৷ অবসর পেলেই ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আজ ছেলে এবং ছেলের মা। কেউই বাসায় নেই। বেড়াতে গিয়েছে। সেও কর্মহীন। তাই বই নিয়ে বসেছে।

পর্ব – ৬০
Mar 21, 2025 • 0 reads

আজ সৌধ, সিমরানের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান। সকাল থেকে তোড়জোড় চলছে৷ দু পরিবারে আলাদা আলাদা আয়োজন। চৌধুরী বাড়ি থেকে সৌধর কিছু কাজিন এসেছে খন্দকার বাড়িতে৷ তারা সিমরানের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের ফটোশুট, ভিডিয়োশুট করতে ব্যস্ত। পছন্দের মানুষটাকে বর হিসেবে পেতে চলেছে সিমরান। চারপাশে সুখ, সুখ সুবাস৷ কত মানুষ, কত আনন্দ ঘিরে রয়েছে তাকে৷

পর্ব – ৬১
Mar 21, 2025 • 0 reads

ভোরের স্নিগ্ধ আলোকরশ্মি চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙে যায় নিধির৷ ক্ষণকাল ব্যয় করে মস্তিষ্ক সজাগ করে। পাশে তাকিয়ে দেখে অর্পণ ঘুমিয়ে৷ বুকের মাঝে অনিরূপকে আগলে নিয়ে। নিষ্পাপ শিশুটি বাবার বক্ষদেশে কী নির্ভার, প্রশান্তিময় ঘুম ঘুমাচ্ছে৷ দৃষ্টিজোড়ায় মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে। স্মিত হেসে মুগ্ধ দৃষ্টিদ্বয় ফিরিয়ে নেয় নিধি৷ ত্বরিত খোলা চুলে হাত চালায়।

পর্ব – ৬২
Mar 21, 2025 • 0 reads

‘ বর এসেছে, বর এসেছে। ‘ চারিদিকে এহেন বাক্যে উচ্চরোল ভেসে এলো। ধক করে ওঠল তীব্র কষ্টে জর্জরিত কনের বুকখানি। তাকে ঘিরে রয়েছে সকলে। প্রাচী, ফারাহ আর কাজিনরা গেছে বরের গেট ধরতে৷ এমপি পুত্র, তার ওপর পেশায় একজন ডক্টর। কনে পক্ষের দাবি দেড় লাখ টাকা। তর্কবিতর্ক শেষে ছাড় দিতে পারে৷

পর্ব – ৬৩
Mar 21, 2025 • 0 reads

কন্যাকে পাত্রস্থ করার পর বিদায়বেলা।হৃদয়বিদারক এক মুহুর্ত। প্রতিটি নারীর জীবনে এ মুহুর্তটি অত্যন্ত মর্মভেদী৷ সোহান খন্দকার একহাতে সৌধর হাত ধরে আছে। অপর হাতে সিমরানের হাত৷ নিজের আবেগ, মায়া, ভালোবাসা, স্নেহ সমস্ত কিছু বুকের ভেতর চাপা দিয়ে ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করল সে।

পর্ব – ৬৪
Mar 21, 2025 • 0 reads

নিধি চমৎকার একটি মেয়ে৷ প্রবল আত্মমর্যাদা সম্পন্ন একজন নারী৷ ওর সম্পর্কে বিয়ের আগে এমনই ধারণা ছিল অর্পণের৷ বিয়ের পর সেই ধারণায় চিড় ধরতে শুরু করলেও ধারণাটি পুরোপুরি মিথ্যে প্রমাণিত হয়নি৷ কিছু ভুল, মানসিক দ্বন্দ্ব মেয়েটাকে গুলিয়ে ফেলেছিল৷ আঘাত এনেছিল ব্যক্তিত্বে৷ যা নিয়ে সংশয়ে ছিল অর্পণ। আজ সে সংশয় পুরোপুরি কেটে গেছে৷

পর্ব – ৬৫
Mar 21, 2025 • 0 reads

ভোর রাত থেকে ঝুম বৃষ্টি। আজ সারাটা দিন বৃষ্টির জলে ভেজা৷ এই বৃষ্টিস্নাত পরিবেশেই সম্পন্ন হলো সৌধ, সিনুর বউভাতের আনুষ্ঠান৷ অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শেষে সিমরানকে তার ঘরে নিয়ে আসা হয়েছে। ভারি পোশাক ছেড়ে হালকা পোশাকে তৈরি হতে বলেছে সবাই৷ সৌধ আত্মীয়, স্বজন বন্ধু, বান্ধবীদের সঙ্গে গল্পে ব্যস্ত।

পর্ব – ৬৬
Mar 21, 2025 • 0 reads

বৃষ্টি থেমেছে। জানালার থাই গ্লাসে বৃষ্টিফোঁটাদের চিহ্ন রয়ে গেছে। সেদিকে নির্নিমেষে তাকিয়ে অজস্র চিন্তায় নিমজ্জিত সিমরান। এ পৃথিবীতে আগত সবকিছুই বিদায়বেলা চিহ্ন রেখে যায়। পৃথিবীতে বৃষ্টি নেমেছিল। সে বৃষ্টি থেমেও গেছে। রেখে গেছে জানালার থাই গ্লাসে চিহ্ন। ঠিক তেমনি নামী এসেছিল সুহাসের জীবনে। চলেও গেছে। চিহ্ন হিসেবে রেখে গেছে এক গুচ্ছ ভালোবাসাময় স্মৃতি।

পর্ব – ৬৭
Mar 21, 2025 • 0 reads

দীর্ঘদিন পর সৌধর কল পায় নিধি৷ যে ছেলেটা এক সময় তার সঙ্গে প্রাণখুলে কথা বলত৷ আজ সে যেন প্রাণ বেঁধে উচ্চারণ করল এক একটা শব্দ। একদিন যার কণ্ঠস্বরের প্রগাঢ় নমনীয়তার স্পর্শ সে পেয়েছে। আজ তার প্রকট রুক্ষতা পেয়ে মনটা কেমন বিষণ্ন হয়ে গেল। স্পষ্টভাষী সৌধ কণ্ঠে কাঠিন্য ধরে বলল, ‘ হ্যালো নিধি? ‘

পর্ব – ৬৮
Mar 21, 2025 • 0 reads

পরিস্থিতি গুমোট। রক্তচক্ষুতে তাকিয়ে সৌধ৷ ওর দৃঢ় চোয়াল আরো বেশি দৃঢ় হলো। পেশিবহুল দু’টো হাত চনমনে। যা তীব্র কষ্টে মুঠোবন্দি করল৷ ফুলে ফেঁপে ওঠল হাতের প্রতিটি নিল রগ৷ ঝুমায়নার দেহশ্রী কেঁপে ওঠল এ দৃশ্য দেখে। তীব্র ভয়ে সংকীর্ণ হয়ে গেল মুখশ্রী। অনুভব করল কণ্ঠনালী নীরস হয়ে আসছে। সৌধ সম্পর্কে কম ধারণা নেই ঝুমায়নার।

পর্ব – ৬৯
Mar 21, 2025 • 0 reads

আরো একটি নির্ঘুম রাত৷ এ কী বীভৎসতা? এ কোন দহনে পুড়াচ্ছে নামীদামি? সুহাস কী সইতে পারে তার সুহাসিনীর পাষণ্ডতা? পারে না তো… তাই তো তীব্র যন্ত্রণা বুকে পুষে দু’রাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিল। গোটা একটা রাত কেটে গেল প্রিয়জন হারানোর শোকে।

পর্ব – ৭০
Mar 21, 2025 • 0 reads

একটি একটি করে দিন গড়াচ্ছে। পূর্বের চেয়েও অধিক অস্থির হয়ে ওঠছে সুহাস। প্রতিনিয়ত তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে নামীর সাথে কাটানো এক একটা মুহুর্ত। রাত গভীর হলে যখনি দু’চোখের পাতা এক হয় দুঃস্বপ্নেরা ছিন্নভিন্ন করে দেয় হৃদয়। নির্ঘুম বা দুঃস্বপ্ন দু’টোর একটিকে নিয়েই প্রতিটি রাত পার করছে সে। যেন এক রাতজাগা পাখি৷

পর্ব – ৭১
Mar 21, 2025 • 0 reads

কেউ নতুন প্রণয়ানুভূতিতে সিক্ত৷ কেউ বিরহে নিবৃত্ত। সব ভুল চুকিয়ে কেউ ব্যস্ত সঠিক পথে চলতে। আবার কেউ পেশাগত ও সাংসারিক জটিলতার সমাধান খুঁজতে ব্যস্ত৷ এমনই ভাবে কেটে গেল কয়েকটি মাস। আইয়াজ, ফারাহর জীবনে বহুমুখী সমস্যা এসেছে। আবার একটু সময় লাগলেও সক্ষম হয়েছে সমস্যা গুলোর সমাধান দিতে।

পর্ব – ৭২
Mar 21, 2025 • 0 reads

উত্তরে হাওয়া নিয়ে আসছে শীতকাল৷ প্রকৃতি জুড়ে হিমহিম ঠান্ডা গায়ে শিহরণ জাগিয়ে তোলে। সেই শিহরণ আজ দ্বিগুণ হলো, প্রণয় পুরুষটির প্রগাঢ় আর উষ্ণ আলিঙ্গনে। যে আলিঙ্গনে অন্তঃকরণ শত সহস্রবার প্রার্থনা করে, সময়টা থেমে যাক। এই নিরাপদ বুকটায় কেটে যাক যুগের পর যুগ। শেষতক এই বুকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে বিদায় নিক পৃথিবী ছেড়ে।

পর্ব – ৭৩
Mar 21, 2025 • 0 reads

কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর৷ অর্ধাঙ্গিনীকে নিয়ে পরিপাটি হয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ল সৌধ। ড্রাইভিং সিটে বসেছে সে। পাশে সিমরান৷ সৌধর চোখে স্টাইলিশ সানগ্লাস। পরনে ধূসর বর্ণের শার্ট, কালো প্যান্ট এবং শার্টের ওপর কালো রঙের কোটি ব্লেজার। সেই কিশোরী বয়স থেকে সৌধর স্মার্টনেস, গেটআপ আর ব্যক্তিত্বে ভীষণ দুর্বল সিমরান৷

পর্ব – ৭৪
Mar 21, 2025 • 0 reads

” বাহির বলে দূরে থাকুক, ভিতর বলে আসুক না। ভিতর বলে দূরে থাকুক , বাহিরে বলে আসুক না। ঢেউ জানা এক নদীর কাছে, গভীর কিছু শেখার আছে। সেই নদীতে নৌকো ভাসাই, ভাসাই করে ভাসাই না। না ডুবাই না ভাসাই, না ভাসাই না ডুবাই জল ডাকে, আগুনও টানে আমি পড়ি মধ্যিখানে।

পর্ব – ৭৫
Mar 21, 2025 • 0 reads

ধবধবে সাদা রঙে ঘেরা একটি আলিশান বাড়ি। চারপাশের ভূমি গাঢ় সবুজ, কৃত্রিম ঘাসে সজ্জিত। গাড়ির ভেতর থেকে এ পর্যন্ত দেখে ধীরেসুস্থে নেমে দাঁড়াল সৌধ। সুহাসকে ইশারা করল চটজলদি বেরুতে। বুকের ভেতর হাতুড়ি পেটাচ্ছে সুহাসের। উত্তেজনায় তলপেট মুচড়ে, মুচড়ে ওঠছে। চোখ, মুখের অবস্থা নাজেহাল। কণ্ঠনালি ক্ষণে ক্ষণে নীরস হচ্ছে।

পর্ব – ৭৬
Mar 21, 2025 • 0 reads

মুখোমুখি সৌধ, নামী৷ বদ্ধ রুমে তারা দু’জন ব্যতীত আর কেউ নেই। নামীর মুখশ্রীতে নোনাপানি শুকিয়ে চামড়া টানটান হয়ে আছে৷ সুক্ষ্ম চোখে তাকিয়ে সৌধ বুঝে ফেলল মেয়েটা কেঁদেছে। নামীর মতো মেয়েরা গোপনেই কাঁদে। লোক সম্মুখে কেঁদে, নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করার মতো মেয়ে নামীরা হয় না।

পর্ব – ৭৭
Mar 21, 2025 • 0 reads

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসকে বলা হয় প্রেমের শহর। এ শহরে ল্যালা নামক এক প্রণয়ীর বাস। বয়স বত্রিশ। সুন্দরী, বোকা, স্মার্ট শ্বেতাঙ্গ রমণী সে। বাবা, মা কেউ বেঁচে নেই৷ দু’বার বৈবাহিক সম্পর্কে জড়িয়েছিল। দূর্ভাগ্যবশত সম্পর্কগুলো টেকেনি। বর্তমানে সিঙ্গেল জীবনযাপন করছে৷ বাবা, মায়ের বিজনেস বড়ো ভাই আর বোন দেখে। সে তার ছন্নছাড়া জীবনটুকু নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত৷

পর্ব – ৭৮
Mar 21, 2025 • 0 reads

ডিসেম্বরের সূচনা৷ হিমশীতল পরিবেশ। ধরণিতলে সূর্যরশ্মি পড়েনি আজ৷ মনকেমন করা একটা সকাল। অলস দুপুর আর ম্রিয়মাণ বিকেল। রাতটা পিপাসিত। পিপাসিতা রমণীটি বসে আছে আয়নার সামনে। নিজের রূপ, ঐশ্বর্য দৃষ্টিপাত করে ভেঙচি কাটছে বারংবার। কারণ খুবই হৃদয়স্পর্শী। সুন্দরী তরুণিমার তরুণকুমার ধরাছোঁয়ার বাইরে। চঞ্চলা মন, উষ্ণ, নরম দেহ হাপিত্যেশ করে।

পর্ব – ৭৯
Mar 21, 2025 • 2 reads

জেনেভাতে সকাল দশটা। হসপিটাল থেকে সুহৃদকে নিয়ে বাসায় ফিরল নামী৷ সঙ্গে অ্যালেন। সুহাস ফিরে গেছে হোটেলে। লম্বা একটি শাওয়ার নিয়ে চটজলদি ছেলের কাছে ফিরবে। এদিকে সৌধর মন বিচলিত হয়ে আছে খুব৷ পরশু রাতে দুঃস্বপ্ন দেখেছিল সে৷ সিমরানকে নিয়ে। তীব্র জ্বরে বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে সিমরান। সুশ্রী মুখটা বিবর্ণা।

পর্ব – ৮০
Mar 21, 2025 • 0 reads

মুরুব্বিরা বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে খুব বেশি মিল, মহব্বত থাকলে তাদের মধ্যে একজন যদি আল্লাহর ডাকে পরপারে চলে যায়। তাহলে অপরজনের স্থায়িত্বও এই পৃথিবীতে খুব বেশি দীর্ঘ হয় না। এমনটা তারা বলেন, তাদের অভিজ্ঞতা থেকে। উদয়িনী চলে গেছে আজ দেড় বছর। আজ আকস্মিকভাবে সোহান খন্দকারও পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করল।

পর্ব – ৮১
Mar 21, 2025 • 0 reads

সুজা চৌধুরী অফিস ঘরে। আকস্মিক খবরটা শুনে অত্যন্ত ব্যথিত হলেন। ছোটো ভাইকে আগে পাঠিয়ে নিজেকে তৈরি করলেন ঝটপট৷ এরপর বডিগার্ড নিয়ে গাড়িতে চড়ে ফোন করলেন স্ত্রীকে। আদেশ দিলেন, ‘ ড্রাইভার রেডি। ছোটো বউমাকে নিয়ে চটজলদি বেরিয়ে পড়ো। ‘ তানজিম চৌধুরী বোরখা পড়ে অপেক্ষা করছিলেন।

পর্ব – ৮২
Mar 21, 2025 • 0 reads

হসপিটালে সিমরানকে রাখা হলো তিনদিন। চব্বিশ ঘন্টা অক্সিজেন চলে। এরপর স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। কারো সাথে কথা বলে না সে। নিশ্চুপ তাকিয়ে থাকে। মাঝেমাঝে দৃষ্টিজোড়া চঞ্চল হয়ে উঠে। চারপাশে তাকিয়ে কী যেন খুঁজে। পরোক্ষণেই উতলা মন হতাশ হয়। মুখশ্রী স্থবির হয়ে যায়। তানজিম চৌধুরী আর নিধি সর্বক্ষণ পাশে আছে ওর।

পর্ব – ৮৩
Mar 21, 2025 • 0 reads

লিভিং রুমে মামা, মামি আর নানুমনি বসে ছিল। সদর দরজা পেরিয়ে সেখানে উপস্থিত হলো সৌধ, সুহাস, নামী। সৌধ সবাইকে সালাম দিয়ে যতটুকু সম্ভব কথাবার্তা বলল। এরপর চলে গেল সিমরানের কাছে। সুহাস নিশ্চল দেহে ঠাঁই দাঁড়িয়ে। পাশে বাচ্চা কোলে নামী৷ দৃষ্টি ছলছল, মুখশ্রী বিমর্ষ। তীব্র আলোড়ন হৃদয়ে। নিজেকে প্রাণপনে শক্ত রাখার চেষ্টা করল নামী।

পর্ব – ৮৪
Mar 21, 2025 • 0 reads

বাবা, মা হারিয়ে যে তীব্র ধাক্কা খেয়েছে। সে ধাক্কা সহ্য করতে পারছে না সিমরান। তাই এমন একটি সিদ্ধান্ত। অবুঝ আর অতি-আবেগি সিদ্ধান্ত। এ পৃথিবীতে তাকে বাবা, মা’ই নিয়ে এসেছে। অথচ তাদের দু’জনের কেউই আজ বেঁচে নেই। তাদের ভাই, বোনকে ছেড়ে চলে গেছে চিরতরে। আর কখনো ফিরে আসবে না।

পর্ব – ৮৫
Mar 21, 2025 • 0 reads

মানুষের চারপাশ ঘিরে একটি বৃত্ত থাকে। যা কখনো জটিল। কখনো আবার খুব সহজ আর সুন্দর। ছোট্ট একটি জীবন। যার উত্থানপতন ঘটে বিস্তর। এসব মেনে নিয়েই জীবনের পথে অগ্রসর হতে হয়৷ জীবনের নিয়ম এটাই৷ দুপুরের আগমুহূর্তে আইয়াজ, ফারাহ এসে পৌঁছাল। ছ’মাসের উঁচু পেট নিয়ে ফারাহকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখে প্রায় ছুটে এলো নামী৷

পর্ব – ৮৬
Mar 21, 2025 • 0 reads

ঠিক যেন সন্ধ্যাদ্বীপ জ্বলছে৷ পাশাপাশি বসে আছে সৌধ, নিধি৷ নিধির গায়ে কাশ্মীরি শাল জড়ানো। হাত দু’টো হিম ধরে যাচ্ছিল বলে আগুনের তাপ নিল। সৌধর পরনে জিন্স প্যান্ট আর চকোলেট কালার ফুল স্লিভ টি-শার্ট। দৃষ্টি নত। ওরা কেউ একে অপরের দিকে তাকিয়ে নেই। নিধির দৃষ্টি সম্মুখে পুড়তে থাকা কাঠগুলোতে। সৌধর দৃষ্টি নত।

পর্ব – ৮৭
Mar 21, 2025 • 0 reads

রাত গভীর হচ্ছে। একে-অপরকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে ওরা৷ গভীর রাত। সুখসুখ তন্দ্রায় যেন বিমোহিত একাত্মায় দুই শরীর৷ শ্রান্তিহর সৌধর বুকে মুখ লুকিয়ে সিমরান৷ ধীরেধীরে খিদের ভাব হয়। পেটটা চুঁইচুঁই করে৷ ঘুম ছুটে যায় আকস্মিক। সুঠামদেহী পুরুষটি তার বলিষ্ঠ একজোড়া হাত দিয়ে বউকে গভীর বন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। ঘুমাচ্ছে বেঘোরে।

পর্ব – ৮৮
Mar 21, 2025 • 0 reads

ভয়ে বুক ঢিপঢিপ করছে নামীর। নিজেকে চোর চোর লাগছে। চোরেরা কীভাবে চুরি করে? ঠিক কতখানি সাহস, কত বড়ো বুকের পাটা থাকলে চোরেরা চুরি করতে পারে? ভেবেই শরীর ঘেমে উঠল। চুরি করে সামান্য বরের পিছু নিয়েছে। এতেই তার অবস্থা যাচ্ছেতাই। হঠাৎ ভ্রু কুঁচকে গেল। সুহাস তো বাবা, মায়ের ঘরে যাচ্ছে!

পর্ব – ৮৯
Mar 21, 2025 • 0 reads

ছুটির দিনে একটি অঘটন ঘটিয়েছে অর্পণ স্যার। সাপ্তাহিক ছুটিতে মজার মজার রেসিপি তৈরি করে নিধি। আজও করছিল। অতীতে মেয়েটা মোটেই রান্নাবান্নায় পটু ছিল না। বিয়ের পর শাশুড়ি আর স্বামীর কাছেই শিখেছে। আর এখন তো তাদের থেকেও বেশি দক্ষ হয়ে গেছে সে। তার হাতের রান্না ছাড়া পেটে খিদে মেটে না অর্পণ স্যারের।

পর্ব – ৯০
Mar 21, 2025 • 0 reads

সুখ, দুঃখ, প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি মিলিয়ে বিবাহিত জীবনের অনেকগুলো দিন পেরিয়ে গেছে। সুহাস, নামীর বিয়ের বয়স আট বছর। আইয়াজ, ফারাহর চার। সৌধ, সিমরানের দু’বছর পূর্ণ হবে আগামী সপ্তাহে। ওদের বন্ধুমহলের সকলেই সফল। ক্যারিয়ার, সংসার নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। একজন যাও বাকি ছিল তারও বিয়ের সানাই বাজতে চলেছে।

আইয়াজ, ফারাহর বাচ্চা দুটো খুবই শান্ত প্রকৃতির হয়েছে। ভাগ্যিস ওরা শান্ত। নয়তো জমজ দুটো সামলাতে হিমশিম খেতো ফারাহ। বিছানায় দুই ভাইকে বসিয়ে তৈরি হচ্ছে আইয়াজ, ফারাহ। বাচ্চারা খেলনা দিয়ে খেলায় মগ্ন।