আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে

আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে
Story
78 Parts
2.4k reads
Tags:

Chapters

পর্ব - ১
Jul 23, 2025 • 171 reads • 0 comments

যৌথ পরিবারগুলোর সবচেয়ে আনন্দময় সময় হলো সন্ধ্যাবেলা। বাড়ির সকলে মিলে হৈচৈ করে বিকালের নাস্তা খাওয়া,একটু টিভি দেখা, খেলাধুলা করা,আড্ডা দেয়া৷ সমস্যা শুধু বড় ভাই, তানভির সবসময় মেঘকে চোখে চোখে রাখে৷ কি করছে,কি না করছে, কখন খাচ্ছে, পড়াশোনা করছে কি না এসবকিছু দেখায় যেনো তার একমাত্র কাজ। কিন্তু মীম আর আদিকে কোনোদিন একটা ধ*মক পর্যন্ত দেয় নি তানভির। এ কেমন দুমুখো ব্যবহার। তানভির যতক্ষণ বাসার বাহিরে থাকে মেঘ ততক্ষণ মুক্ত,স্বাধীন ।

পর্ব - ২
Jul 23, 2025 • 66 reads • 0 comments

রাত ৯ টায় বাড়িতে ঢুকে আবির আর তানভির। খাবার টেবিলে খেতে বসেছেন ৩ ভাই আর আদি। মীম, মেঘ কেউ নেই। রান্নাঘরে তিন ঝা খাবার রেডি করছেন। বিকেলে আবির সাদা শার্ট পরে বেরিয়েছিল। সাদা শার্টের ২-৩ জায়গায় একটু একটু রক্ত লেগে আছে আর আবিরের হাতে ৩ টা ওয়ানটাইম ব্যান্ডেজ লাগানো, নজরে পরে ইকবাল খানের। ‘কিরে আবির,তোর হাতে কি হয়েছে? শার্টেই বা দাগ কিসের?’

পর্ব - ৩
Jul 23, 2025 • 49 reads • 0 comments

তারপর বোনকে টানতে টানতে বাড়িতে নিয়ে আসে, একটাবার বোনের দিকে তাকিয়েও দেখে নি। দুগালে আবিরের ৫ আঙুলের দাগ বসে গেছিলো। সেইযে থা*প্পড় দিয়েছিল মেঘ এক সপ্তাহ জ্ব*রে পরে ছিল। মেঘ ছোট বেলা থেকেই খুব অ*ভিমা*নী ছিল। ছোট্ট মেয়েটা এই থা*প্পড়ের ভ*য়ে আর আ*তঙ্কে আর কখনো আবিরের দিকে চো*খ তুলে তাকায় নি, কথা বলা তো দূরের বিষয়, আবির বাসায় থাকাকালীন রুম থেকে বের ই হয় নি মেঘবালিকা ।

পর্ব - ৪
Jul 23, 2025 • 41 reads • 0 comments

‘একটু পর 14 pro max কিনতে যাচ্ছিস,যাকে তার ভাই একটা আধা ভা*ঙা ফোন দিয়েছে ব্যবহারের জন্য, দিনে ১০০ বার বন্ধ হয়ে যায়, তার হাতে নাকি iPhone. তুই কি ঘুম থেকে স্বপ্ন দেখে উঠলি নাকি?’ মেঘের উৎফুল্ল মে*জাজ আচমকাই বি*গড়ে গেলো, অভিমানী স্বরে বললো, ‘কাল আবির ভাই আসছেন বিদেশ থেকে ওনিই নিয়ে আসছেন আমার জন্য।’

পর্ব - ৫
Jul 23, 2025 • 35 reads • 0 comments

টালমাটাল মেয়েটার বাহু ধরে সোজা দাঁড় করিয়ে দিলো আবির, জ্ঞান হারাতে হারাতেও যেন হারায় নি মেঘ, আবিরের চাউনীতে তীক্ষ্ণতা গম্ভীর কন্ঠে বললো, ‘তুই কি পুষ্টিহীনতায় ভুগছিস? অবশ্য ভুগবি নাই বা কেন, খাবার প্লেটে আঙুল ঘুরালে কি আর শরীরে পুষ্টি হবে!’ প্রথমে গম্ভীর কন্ঠে বললেও শেষটা যেনো মজার ছলেই বললো।

পর্ব - ৬
Jul 23, 2025 • 28 reads • 0 comments

মেঘ বরাবর ই খুব অভিমানি। অল্পতেই কান্না করে দেয়।। রাত ১০ টা বেজে গেছে এখনও মুখ ফুলিয়ে রুমে বসে আছে মেয়েটা৷ সারাদিন খাওয়া নেই। তড়িঘড়ি করে তানভির বাড়িতে ঢুকে৷ এসেই মাকে জিজ্ঞেস করে, “মেঘ খেয়েছে?” হালিমা খান সহসা উত্তর দিলেন, ” সন্ধ্যার পর থেকে এত ডাকছি দরজায় তো খোলছে না।”

পর্ব - ৭
Jul 23, 2025 • 31 reads • 0 comments

তানভির আর কথা বাড়ালো না তড়িৎগতিতে ছুটে গেলো বোনের দরজার সামনে, প্রথমে আস্তে করে ডাকলো৷ মেঘের সারা নেই, আচমকা চোয়াল শক্ত করে একপ্রকার চিৎকার দিলো, ‘মেঘ তুই এই মুহুর্তে দরজা না খুললে তোর কপালে শ*নি আছে বলে দিলাম।’ মেঘ শুয়া থেকে এক লাফে উঠে বসলো। কয়েক সেকেন্ডে দৌড়ে গিয়ে দরজা টা খুললো। চোখ তুলে তাকানোর সাহস নেই ভাইয়ের দিকে। আজ পর্যন্ত তানভির মেঘের গায়ে হাত তুলে নি শুধু ধ*মক ই দেয়৷

পর্ব - ৮
Jul 23, 2025 • 37 reads • 0 comments

নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলো মেঘ, “” এই গান কাকে উদ্দেশ্য করে গাইছেন ওনি? আমাকে নিয়ে নয়তো? এটুকু বলতেই মুখে হাসি ফুটে উঠলো মেঘের, তৎক্ষনাৎ মনে হলো ওনি আমাকে নিয়ে কেনো গান গাইবেন, আমি কে! তানভির ভাই তো সেদিন বললো আবির ভাইয়ের জীবনে কেউ আছে তাহলে কি তার কথা ভেবেই গাইতেছেন? সঙ্গে সঙ্গে হাসি গায়েব হয়ে গেলো মেঘের৷ নিস্তব্ধ আঁখিতে তাকিয়ে আছে সে, বুকের বা পাশে হালকা ব্যথা অনুভব হলো, ওনার মনে সত্যি অনেক দুঃখ না হয় এমন গান কেউ গায়..!!””

পর্ব - ৯
Jul 23, 2025 • 30 reads • 0 comments

“এতবছর তো খুব পা*লায় বেড়াইছিস! এখন দেখবো কতটা পা*লাতে পারিস তুই।” আবির ভাইয়ের ঠান্ডা হুম*কিতে কেঁপে উঠলো অষ্টাদশী। এই কথা শুনামাত্র মেঘের শরীরে হাই ভোল্টেজের ঝাঁকুনি দিলো। মেঘের বক্ষস্পন্দন জোড়ালো হলো। আবির ভাই সরু নেত্রে তাকিয়ে আছে অষ্টাদশীর পানে, হয়তো মেঘের টাল*মাটাল অবস্থা বুঝতে পেরে সরে গেলো সামনে থেকে৷

পর্ব - ১০
Jul 23, 2025 • 28 reads • 0 comments

সিঁড়ি দিয়ে নামছে, আবির এক পলক তাকাতেই স্তব্ধ হয়ে রইলো, মেয়েটা এমনিতেই অনেক ফর্সা,তারমধ্যে কালো জামা পরাতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে, সাথে চুল গুলো ছাড়া থাকাতে মায়াবন বিহারির মতো লাগছে অষ্টাদশীকে।। আবির চোখ সরাতে পারছে না,অবিচলিত আঁখিতে তাকিয়ে আছে অষ্টাদশীর পানে, হঠাৎ তানভির ডেকে উঠলো

পর্ব - ১১
Jul 23, 2025 • 34 reads • 0 comments

সারাদিন কেটে গেলো, মেঘ নিজের মতো কোচিং, টিউশন শেষ করে আসছে৷ মীম, আদি স্কুল থেকে ফিরেছে। আবির ৮ টায় বাসায় ফিরেছে। ততক্ষণে জান্নাত আপু পড়িয়ে চলে গেছেন। মেঘ বই খাতা নিয়ে নিজের রুমে চলে গেছে। রাত ১০ টার দিকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যাবে আবির। রুমে গিয়ে শাওয়ার শেষ করে, একেবারে রেডি হয়ে রুম থেকে বের হলো আবির। মেঘের রুমের দরজার সামনে এসে থামলো

পর্ব - ১২
Jul 23, 2025 • 33 reads • 0 comments

মেঘ বিস্ময়কর চোখে তাকিয়ে দেখছে সবগুলো জিনিস, প্রিয়মানুষের নাম অথবা প্রিয়জনের কন্ঠ যেখানে আকাশ সম মন খারাপ দূর করতে সক্ষম সেখানে তার দেয়া সামান্যতম উপহারও অমূল্য সম্পদ । আবির ভাই যে তার কথা ভেবে আলাদা ভাবে জিনিস গুলো এনেছেন এতেই যেনো অষ্টাদশী খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেছে।। একটা মুক্তার মালা গলায় পরলো, দুহাতে দুটা ব্রেসলেট, কানেও দুল পরলো এক সেট। ঠোঁটে হালকা গোলাপি কালার লিপস্টিকও দিয়েছে।

পর্ব - ১৩
Jul 23, 2025 • 34 reads • 0 comments

মেঘের হাতপা কাঁপতে শুরু করেছে। আর কিছু বলার সাহস করলো না। চুপচাপ চেয়ার টেনে বসে পরলো। আবিরও এবার টেবিল ঘুরে নিজের চেয়ার টেনে বসলো। মেঘ মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে৷ আবির একবার মেঘের দিকে তাকাচ্ছে আবার ঘাড় ঘুরিয়ে রান্নাঘরে দেখছে।

পর্ব - ১৪
Jul 23, 2025 • 29 reads • 0 comments

অষ্টাদশী গালে হাত রেখে কাঁপা-কাঁপা কন্ঠে বললো, “আপনি বাসায় না ফিরলে আমার ঘুম আসে না! ” কথাটা বলেই দুচোখ বন্ধ করে, কপাল কুঁচকে দাঁতে দাঁত চেপে ধরলো মেঘ। আবির প্রশস্ত নেত্রে চাইলো অষ্টাদশী দিকে। মেঘের হালচাল দেখে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে।

পর্ব - ১৫
Jul 23, 2025 • 31 reads • 0 comments

“দরকার হলে তোর জন্য আরও দুজন হেল্পিং হ্যান্ড রাখবো। তারপরও তোকে যেনো আগামী ৩ মাস রান্নাঘরে পা দিতে না দেখি। ” কথা শেষ হওয়া মাত্রই হাতে কফির কাপ নিয়ে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো। মেঘ মানব মুর্তির ন্যায় চেয়ারে বসে রইলো ।

পর্ব - ১৬
Jul 23, 2025 • 30 reads • 0 comments

বাইক স্টার্ট দিলো থামালো এসে একটা ফুচকার দোকানের সামনে। মেঘ নেমে সাইডে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আবির বাইক থেকে নেমে হেলমেট খুলতেই, দূর থেকে রাকিব দৌড়ে এসে ঝাপটে ধরে আবিরকে। আকস্মিক ঘটনায় কিছুটা নড়ে উঠে আবির৷

পর্ব - ১৭
Jul 23, 2025 • 29 reads • 0 comments

মেঘ বশিভূ*ত চোখে চেয়ে আছে আবির ভাইয়ের দিকে৷ আবিরও এবার সরাসরি চোখ রাখে মেঘের চোখে মুখে৷ দু’ফোটা অশ্রুর দাগ হয়ে গেছে , সম্পূর্ণ গাল টকটকে লাল হয়ে আছে, গালের মাঝে একটা গাঢ় কালো রঙের তিল জ্বলজ্বল করছে। আবিরের দূর্বোধ্য দৃষ্টি দেখে, নিজের দৃষ্টি সংযত করলো মেঘ।

পর্ব - ১৮
Jul 23, 2025 • 27 reads • 0 comments

যেই আবির ভাইয়ের থাপ্পড়ের ভয়ে গত একটা মাস আবির ভাইয়ের চোখে চোখ রেখে কথা বলে নি, আবির ভাই যা বলেছে চুপচাপ মেনে নিয়েছে, নিজের রাগ, জেদ আর অভিমান আবির ভাইয়ের পদতলে চাপা দিয়ে দিয়েছিলো। সেই আবির ভাই কি না ১ মাস হওয়ার আগেই তাকে থাপ্প*ড় মা*রলো। তাও আবার কোথাকার কোন মেয়ের জন্য! এত শক্তপোক্ত চড়ে এখনও মুখের বাম পাশে ব্যথা করছে মেঘের।

পর্ব - ১৯
Jul 23, 2025 • 28 reads • 0 comments

মেঘের পাশে বসে কপালে হাত রাখলো । থার্মোমিটার এনে জ্বর মাপলো ১০০°C+ তাপমাত্রা । মেঘ জ্বরে কাঁপতেছে। তানভির ছুটে গিয়ে নিজের রুমের কেবিনেট থেকে আর একটা কম্বল এনে বোনের গায়ে ছড়িয়ে দিলো৷ তারপর একটা ছোট রুমাল ভিজিয়ে কিছুক্ষণ জলপট্টি দিলো। হালিমা খান এখনও ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছেন।

পর্ব - ২০
Jul 23, 2025 • 28 reads • 0 comments

আবিরের মুখমন্ডল অন্ধকার হয়ে আছে। হাতের ব্য*থা সাথে দীর্ঘ সময় বৃষ্টিতে ভেজার ফলে এই দশা হয়েছে।। ইকবাল খান সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার কে কল দিয়েছেন। ঘন্টাখানেক পর পরিস্থিতি শান্ত হলো। আবিরকে ব্যথার ঔষধ খাওয়ানো হয়েছে। মালিহা খান ছেলের মাথায় জলপট্টি দিতে ব্যস্ত হলো। হালিমা খান বেড়িয়ে মেঘের রুমে গেলেন ততক্ষণে মেঘের ঘুম ভে*ঙে গেছে। হালিমা খানের থমথমে চেহারা দেখে মেঘ শঙ্কিত হলো, উদ্বিগ্ন কন্ঠে শুধালো

পর্ব - ২১
Jul 24, 2025 • 28 reads • 0 comments

সোমবার সকাল সকাল আবির একেবারে পরিপাটি হয়ে রুম থেকে বের হয়ে মেঘের রুমে ঢুকলো। ফিটফাট, সুদর্শন আবির ভাইকে দেখে মেঘের বুকের ভেতর ধুকপুক শুরু হয়ে যাচ্ছে। মেঘ বিপুল চোখে তাকিয়ে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করছে, “ওনাকে এত ভাল্লাগে কেন ? দেখলেই যেনো মনটা শান্তিতে ভরে যায়।” আবির মেঘের কাছাকাছি এসে মোলায়েম কন্ঠে শুধালো, “বসতে পারি?”

পর্ব - ২২
Jul 24, 2025 • 31 reads • 0 comments

সকালে মেঘকে ঝেড়ে অফিসে যাওয়ার পর থেকেই আবিরের মন ছটফট করছিলো। কোনোভাবেই কাজে মন দিতে পারছিলো না। বাধ্য হয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে জ্যাম পেরিয়ে অষ্টাদশীর পছন্দের রেস্টুরেন্ট থেকে কাচ্চি নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিয়েছিল। মেঘ স্পেশাল কিছু রেস্টুরেন্ট ব্যতিত অন্য কোথাও থেকে কাচ্চি খায় না। গত সপ্তাহে আবিরের কাজের ব্যস্ততার ফলে সেই রেস্টুরেন্ট থেকে কাচ্চি নিয়ে খাওয়ানোর সময় সুযোগ হয়ে উঠে নি। তাই আজ সব কাজ ফেলে বেড়িয়েছিল।

পর্ব - ২৩
Jul 24, 2025 • 29 reads • 0 comments

“কিছু একটা তো অবশ্যই হয়েছে। আমি তোর বেস্টফ্রেন্ড এটা ভুলে যাইস না। এখন বল কি হয়ছে? মেঘ কিছু করেছে?” ক্রো*ধে আবিরের নাকের ডগা ফুলে আছে, নয়ন জোড়া এখনও র*ক্ত বর্ণ হয়ে আছে। বক্ষস্থলে থাকা হৃদপিণ্ডটা যেন দ্বিকবিদিক ছুটে বেড়াচ্ছে। আবির দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কঠিন স্বরে বললো, “আমি ওর জীবনে কা*টার ন্যায়। আবির নামক কা*টা টা ওর জীবনে না থাকলে ও হয়তো অনেক বেশি হ্যাপি থাকতো। ”

পর্ব - ২৪
Jul 24, 2025 • 22 reads • 0 comments

ঘন্টাদুয়েক পর মেঘ রুমে বসে ইয়ারফোন দিয়ে গান শুনছিলো। এরমধ্যে আবির বাসায় এসেছে। গানের সাউন্ডে বাইকের শব্দও শুনেনি মেঘ। আবির মীমকে দু প্যাকেট দিয়ে বাকি একটা কাচ্চির প্যাকেট নিয়ে মেঘের রুমে গেলো। হঠাৎ আবির ভাইকে দেখে মেঘ ভূ*ত দেখার মতো চমকে উঠে কান থেকে ইয়ারফোন খুলে ফেললো। আবির কাচ্চির প্যাকেট মেঘকে দিয়ে শক্ত কন্ঠে বললো, “তোর ফোনটা দে।”

পর্ব - ২৫
Jul 24, 2025 • 33 reads • 0 comments

“আমার সামনে ঢং করো না ভাইয়া। আমায় বাইকে উঠাতে হবে বলে একা একা বাইক কিনে নিয়ে গেছো। মীম, আদিকে বাইকে ঘুরাবা দূরের কথা আমায় বাইক ছুঁতে ই দাও নি। বনুরে নিয়ে সর্বপ্রথম বাইকে ঘুরছো। বনুরে নিয়ে ঘুরার কয়েকদিন পরে আমারে তোমার বাইকে প্রথম উঠতে দিছো। কি ভাবছো? আমি জানি না? তুমি যেদিন প্রথম বনুরে নিয়া ঘুরছো সেদিন ই আমার বন্ধু আমায় বলছে। ” আবির নিঃশব্দে হেসে বলছে,

পর্ব - ২৬
Jul 24, 2025 • 35 reads • 0 comments

“এই গোধূলি আলোতে আপনার হাতে হাত রেখে বৃষ্টিতে ভিজতে চাই। বৃষ্টির প্রতিটা ফোঁটাকে চিৎকার করে বলতে চাই, এই মানুষটাকে আমি বড্ড বেশি ভালোবাসি। আমার কল্পনার জগতে আবির ভাই শুধুই আমার। ” আবির কপাল কুঁচকে তাকিয়ে থেকেই শক্ত কন্ঠে বললো,

পর্ব - ২৭
Jul 24, 2025 • 35 reads • 0 comments

আগামী মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন টেস্ট। তার কিছুদিন পর মেডিকেল পরীক্ষা। কোচিং এর ক্লাস শেষ, এখন শুধু মডেল টেস্ট পরীক্ষা চলছে। ১০ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত কোচিং এর পরীক্ষা হয়, পরীক্ষার পড়া, জান্নাত আপুর পড়া তার সাথে নিজস্ব পড়ার চাপ তো রয়েছেই। তবে সবকিছুর মাঝেও আবির ভাই যেনো মেঘের সমস্ত পৃথিবী ঘিরে রয়েছে। সকাল আর রাতে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আবিরকে দেখা এখন মেঘের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। শুক্রবারটা শুধু ব্যতিক্রম।

পর্ব - ২৮
Jul 24, 2025 • 30 reads • 0 comments

“কিছুদিন যাবৎ কয়েকটা ছেলে কোচিং এর সামনে দাঁড়িয়ে থাকে, সি*গারে*ট খাই আরও কি কি খায় আর মেয়েদেরকে উ*ল্টা*পা*ল্টা কথা বলে। অনেক স্টুডেন্ট একসাথে বের হয় তাই কোচিং এর সামনে দাঁড়ানো যায় না। এজন্য আমি আর বন্যা প্রতিদিন বের হয়ে একটু সাইডে দাঁড়ায়। আমাদের গাড়ি আসলে আমি চলে যায়। বন্যাও চলে যায়। কিন্তু বন্যা জ্বর-সর্দি এজন্য গতদিন আসে নি, আজও আসতে পারে নি। কোচিং থেকে বের হয়ে আমি অন্যান্য দিনের মতোই সাইডে দাঁড়িয়ে ড্রাইভার আংকেলকে কল দিচ্ছিলাম।

পর্ব - ২৯
Jul 24, 2025 • 33 reads • 0 comments

এটুকু ভেবেই মেঘ থেমে গেলো।চোখ টলমল করছে, ঠোঁট কাঁপছে। আবির মায়ের দিকে তাকিয়ে ভারী কন্ঠে অকস্মাৎ বলে উঠল, “একটা মেয়ে এই বাড়িতে পড়াতে আসছে। আর তোমরা কি সব ভাবছো। তাছাড়া আমি এখন বিয়ে করবো না। এই টপিকে আর কথা বলো না।”

পর্ব - ৩০
Jul 24, 2025 • 30 reads • 0 comments

অষ্টাদশীর হৃদয়ের কম্পন তীব্র হতে শুরু করেছে। কল রিং হচ্ছে, কয়েক মুহুর্তেই রিসিভ হলো । সঙ্গে সঙ্গে মেঘ কাঁপাকাঁপা গলায় সালাম দিল, একই সময় ওপাশ থেকে একটা মেয়ের কন্ঠ স্বর ভেসে আসছে। সালাম আর ওপাশের মেয়েলি কন্ঠের বলা কথাটা একসাথে হওয়ায় মেঘ কথাটা বুঝতে পারে নি।

পর্ব - ৩১
Jul 24, 2025 • 33 reads • 0 comments

মেঘ দিন গুনছে, আর মাত্র তিনদিন বাকি। কিভাবে কি করবে এসব ভাবতে ভাবতে রেজাল্টের চিন্তা মাথা থেকে চলে গেছে। তারপর কখন যে ঘুমিয়ে পরেছে কে জানে! কিছুক্ষণের মধ্যে মালিহা খান আর আলী আহমদ খান বাসায় ফিরেছেন। মেঘের মন খারাপ শুনে দেখতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু মেঘ ঘুমাচ্ছে দেখে ডাকেন নি৷ ছোট বেলা থেকেই মেঘের ঘুম অনেক গভীর আর ঘুমের মধ্যে মেঘকে ডাকলে মাথা ব্যথা করে। তাই সচরাচর কেউ ই ডাকে না।

পর্ব - ৩২
Jul 24, 2025 • 28 reads • 0 comments

আবির বুঝতে পারছে মেঘের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। আবিরের হাতে থাকা হাতটা খুব জোরে কাঁপছে। অষ্টাদশীর সম্পূর্ণ দেহ তীব্রভাবে কম্পিত হচ্ছে। আবির আপাদমস্তক দেখলো একবার৷ আবির মেঘের হাতটা ছেড়ে দু পা পিছিয়ে গেলো। আবির দূরে সরাতে মেঘ যেনো হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে রুম থেকে ছুটে পালালো। আবিরও দরজা পর্যন্ত এগিয়ে গেলো। ততক্ষণে মেঘ নিজের রুমে চলে গেছে। আবির বিছানায় বসে ফুলগুলো হাতে নিয়ে গন্ধ শুঁকে দীর্ঘ চুমু এঁকে দিল। হাত ধৌয়ে এসে ধীরে ধীরে সবগুলো গিফট খুলে দেখলো।

পর্ব - ৩৩
Jul 24, 2025 • 28 reads • 0 comments

ফুপ্পি যখন ভার্সিটিতে পড়াশোনা করতো তখন ফুপ্পির একজনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পুরো ঘটনা আমি জানি না, তবে বাসায় বিষয় টা জানাজানি হয়ে গেছিল। তখন আমার আম্মু নতুন বউ, বছরখানেক হবে আম্মুর বিয়ে হয়ছে। তোর আম্মুর তখনও বিয়েই হয় নি। ফুপ্পির এই ঘটনা জানার পর আব্বু আর চাচ্চু ফুপ্পিকে মে*রে,একটা রুমে ৩ মাস দরজা বন্ধ করে আটকে রাখছিল। তখন দাদু বেঁচে ছিলেন,তবে অসুস্থ ছিলেন, কথাও বলতে পারতেন না। আম্মু দাদুর যত্ন করতো আবার, ফুপ্পির দেখাশোনাও করত।

পর্ব - ৩৪
Jul 24, 2025 • 40 reads • 0 comments

কথা শেষ করে মেঘকে নিয়ে বাড়ি ফিরছে আবির। মেঘের মনে আজ কোনো অনুভূতি নেই। এইযে এতদিন জান্নাত আপুকে নিয়ে এত দুশ্চিন্তা করল৷ সেই জান্নাত আপু সম্পর্কে তার ভাবি হয়ে গেছে। বাড়ির রহস্য না জানলে, আজ মেঘ আবিরকে নিজের মনের কথা বলেই দিত। কিন্তু তার বাড়ির মানুষ যে ভালোবাসার জা*তশ*ত্রু। তারা তো কোনোদিন মানবে না। আবির ভাইয়ের প্রতি যে সে অসম্ভব দূর্বল। আবির ভাইকে এই জীবনে কি আদোঃ পাবে?

পর্ব - ৩৫
Jul 24, 2025 • 31 reads • 0 comments

আবির চুলা বন্ধ করে, ঝড়ের বেগে টুথপেষ্ট নিয়ে আসছে। হাঁটু গেড়ে বসে আলতো করে হাতে আর পায়ে পেস্ট লাগিয়ে দিচ্ছে। কয়েক মুহুর্তের মধ্যেই আবিরের শরীর ঘেমে একাকার অবস্থা। রক্তাভ দুচোখ মেঘের হাতে পায়ে নিবদ্ধ। বুকের ভেতর হৃদপিণ্ডটা অবিরাম কাঁপছে। মেঘের হাতে পায়ে পেস্ট লাগিয়ে ফুঁ দিয়ে দিচ্ছে। মেঘ কেঁদেই যাচ্ছে, তবে এই ক্রন্দন শব্দহীন।

পর্ব - ৩৬
Jul 24, 2025 • 28 reads • 0 comments

মেঘ বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ফোনে আবিরের ছবি দেখায় ব্যস্ত। প্রতিটা ছবিতেই আবির ভাইকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। এত সুদর্শন কোনো পুরুষ হতে পারে, এটা আবির ভাইকে না দেখলে মেঘের বিশ্বাস ই হতো না। আবির ভাইয়ের বলা প্রতিটা কথায় অষ্টাদশীর হৃদয়ে দোলা দিচ্ছে। এই কয়েকমাসে আবির ভাই অষ্টাদশীর পুরো পৃথিবী দখল করে ফেলেছে।এতগুলো ছবি দেখলো কিন্তু একটা ছবিতেও হাসির ছিটেফোঁটা নেই। অথচ ঐ মানুষটা নিজেও জানে না, ওনার হাসিটা অষ্টাদশীর অতীব প্রিয়।

পর্ব - ৩৭
Jul 24, 2025 • 35 reads • 0 comments

মেঘ যে মনে মনে তাই চাইছিল এটা তো আর তারা জানে না। আবির ভাই গাড়ি চালাবে আর মেঘ পিছনে বসবে তা হতেই পারে না। গতকাল রাত থেকেই প্ল্যান করে রেখেছে যেভাবেই হোক তাকে সামনে বসতেই হবে৷ মেঘ মিটিমিটি হেসে গাড়িতে উঠেছে। আবির এতক্ষণ বেখেয়ালি থাকলেও পুরো ঘটনায় সে মনোযোগ দিয়ে শুনেছে। গাড়ির জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে মুচকি হাসল। আবির চাইলেই সবার মধ্যে মেঘকে সামনে বসতে বলতে পারতো না। মেঘ যে নিজে থেকে আবিরের পাশে বসার চেষ্টা করেছে এতেই আবিরের মন প্রশান্তিতে ভরে গেছে।

পর্ব - ৩৮
Jul 24, 2025 • 35 reads • 0 comments

মেঘ মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনলো। আবির মেঘের হাত ছেড়ে স্বাভাবিক কন্ঠে বলল, “আমাদের আশেপাশে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যেগুলো দেখেও না দেখার মতো করে চলতে হয়। যদি আমরা সেগুলোকে পাত্তা দেয়, তাহলে আমাদের জীবন ধ্বংস। অনিশ্চিত জীবনে যতদিন বাঁচবি, ততদিন নিজেকে নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করবি। আমি নিচে যাচ্ছি, ১০ মিনিটের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসবি।”

পর্ব - ৩৯
Jul 24, 2025 • 26 reads • 0 comments

আবির, সাকিব, সাকিবের কয়েকটা বন্ধু সবাই মিলে বরযাত্রীদের খাবার পরিবেশন করছে। তানভিরও চেয়েছিল, কিন্তু মামারা রাজি হোন নি।আবির ওনাদের বোনের ছেলে, আবিরের প্রতি যতটুকু অধিকারবোধ আছে তানভিরের প্রতি ততটুকু নেই। তাই তানভিরকে ওনারা মেহমানের মতোই যত্ন করছে। কোনো প্রকার দায়িত্ব দিচ্ছেন না। মীম রুম থেকে মেঘকে নিয়ে নামছে। আত্মীয় আর বরযাত্রীদের ভিড়ে উঠোনে পা রাখার জায়গা নেই। দিশা, মীম, মেঘ আরও কয়েকজন কাজিন নতুন জামাই এর সঙ্গে দেখা করতে স্টেজে গেল।

পর্ব - ৪০
Jul 24, 2025 • 39 reads • 0 comments

ফুল দিয়ে সজ্জিত এক সাদা রঙের প্রাইভেট কার ধীর গতিতে যাত্রা শুরু করেছে। গাড়ি চলছে ধীর গতিতে, মাইশা কেঁদেই যাচ্ছে, একপাশে দিশা অপর পাশে মাইশার হাসব্যান্ড। বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের কান্নার শব্দ, মাইশার বিদায়ের পর আত্মীয়দের ভিড় ঠেলে সেই যে মালা রুমে ঢুকেছে, রুম থেকে আর বের হয় নি। মেঘ বিকেল থেকেই মায়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরছে। মাইশা আপুর কান্না দেখে নিজের অজান্তেই মেঘের চোখ বেয়ে অনর্গল জল পরছিল, মায়ের আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে আঁচল ভিজিয়ে ফেলেছে।

পর্ব - ৪১
Jul 24, 2025 • 24 reads • 0 comments

তানভির গলা খাঁকারি দিয়ে ঢোক গিলল। নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতেই মূলত এমনটা করা। রক্তচক্ষু ঢাকতে পকেটে রাখা সানগ্লাসটা চোখে দিয়েই বন্যার দিকে তাকালো। বন্যা মাথানিচু করে শান্ত মেয়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে, বাহিরে শান্ত থাকলেও তার মনের ঝড় চলছে। এই ঝড় প্রবল রাগের কারণে সৃষ্টি হয়েছে। ভার্সিটিতে উঠে জীবনে প্রথমবারের মতো দুটা ছেলে বন্ধু হয়েছে৷ কয়েকমাসের বন্ধুত্বেই তামিম এভাবে প্রপোজাল দিয়ে দিল। যতবার মনে পড়ছে ততবার রাগে বন্যার নাক ফুলে উঠছে।

পর্ব - ৪২
Jul 24, 2025 • 26 reads • 0 comments

শেষ পর্যন্ত মেঘও মন স্থির করেছে সে বাড়ি ছেড়ে চলে আসবে। ভার্সিটি কোচিং করার সময় একবার মন স্থির করেছিল, ভার্সিটিতে চান্স পেলে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে৷ কিন্তু আবির ভাইয়ের আবেগে জরিয়ে এতদিন বাড়ি ছাড়ার ইচ্ছে হয় নি। তবে ইদানীং আবির ভাইয়ের আচরণ প্রতিনিয়ত মেঘকে কষ্ট দিচ্ছে। গতকালের বলা কথাটাতে মেঘ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে পরেছে। এমতাবস্থায় তার পক্ষে একই বাড়িতে আবিরের মুখোমুখি চলাফেরা করা কোনোভাবেই সম্ভব না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে সত্যি হোস্টেলে চলে আসবে।

পর্ব - ৪৩
Jul 24, 2025 • 31 reads • 0 comments

এরমধ্যে মালিহা খান নাস্তা নিয়ে আসছেন। পাশের সোফায় বসে জান্নাত কে ভালোভাবে পরখ করছেন। ওনার সেই অনেকদিনের ইচ্ছে জান্নাতকে ছেলের বউ বানাবেন৷ আলী আহমদ খানকে বলেওছেন। ওনি তেমন সারাশব্দ করছেন না৷ ওনি আবিরকে একটু সময় দিতে চাচ্ছেন ব্যবসায় ঠিকমতো মনোযোগ দিলেই বিয়ে করাবেন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জান্নাতের নাস্তা খাওয়ার এক ফাঁকে আলী আহমদ খান বাসায় ঢুকলেন। জান্নাতের সাথে টুকিটাকি কথা বলে নিজের রুমে চলে গেছেন৷ জান্নাতও খানিকক্ষণ বসে মেঘের রুমে ঘুরে আড্ডা দিয়ে বেড়িয়ে গেছে।

পর্ব - ৪৪
Jul 24, 2025 • 32 reads • 0 comments

ফুচকা খেয়ে শেষ করে আবিরের সঙ্গে ফুপ্পির বাসায় আসছে। ফুপ্পি মেঘকে দেখে ভীষণ খুশি হয়েছেন। সেই সঙ্গে বাসার সকলেই খুশি হয়েছে। আবির মেঘকে দূরে সরিয়ে রাখে বলে আবিরকে সবাই সবসময় বকা দেয়। ফুপ্পি তো বকেন, উল্টাপাল্টা কথা বললে মাঝে মাঝে গাট্টাও দেন৷ মেঘ ফুপ্পিকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিয়ছেে। মেঘের কান্না দেখে ফুপ্পিও কাদঁছেন। মেয়ে মানুষের মায়া একটু বেশিই থাকে। ফুপ্পির কথা মেঘ যেদিন শুনেছে তার পর থেকে প্রতিরাতেই ফু্প্পির কথা মনে করে মন খারাপ করে, কখনও কখনও কান্নাও করে।

পর্ব - ৪৫
Jul 24, 2025 • 35 reads • 0 comments

“ভাইয়া, তুমি বনুকে নিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনে যাও আমি সবার জন্য খাবার নিয়ে আসছি।” মীম আর আদিও তানভিরের কাছেই রয়ে গেছে। আবির দুটা টিকেট কেটে মেঘকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো। এ যেন গাছের সাম্রাজ্যে ঢুকে পরেছে। চারপাশে শুধু সবুজ আর সবুজ। প্রায় ৮৪ হেক্টর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই উদ্ভিদের সাম্রাজ্য। মেঘ আবিরের পিছুপিছু হাঁটছে আর চারপাশের পরিবেশ দেখছে। হঠাৎ কি মনে করে মেঘ হাঁটার গতি বাড়িয়ে আবিরের পাশাপাশি এগিয়ে গেল।৷ আবিরের সাথে তাল মেলানোর চেষ্টা করছে।

পর্ব - ৪৬
Jul 24, 2025 • 25 reads • 0 comments

আবির একটা চেয়ার এনে বিছানার পাশে বসে আব্বুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে মেঘ বিছানার অপর পাশে বসে বড় আম্মুর মাথায় ম্যাসেজ করে দিচ্ছে। মালিহা খানকে ঘুমের ঔষধ খাওয়ানো হয়েছে তাই কিছুই টের পান নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই আলী আহমদ খান ঘুমিয়ে পরেছেন। আবির তখনও মাথায় কাছেই বসে আছে৷ আচমকা আবিরের নজর পরে মেঘের দিকে৷ ছোট ছোট দুটা হাতে কত সুন্দর ভাবে চুলে ম্যাসেজ করে দিচ্ছে! আবিরের দৃষ্টি স্থির হলো, বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে হিসেবে বাবা মাকে দেখে রাখার দায়িত্ব আবিরের৷

পর্ব - ৪৭
Jul 24, 2025 • 23 reads • 0 comments

আবিরের কন্ঠে গান শুনে তানভির আশ্চর্য নয়নে তাকিয়ে আছে। তানভিরের বাইকের গতি কমে গেছে। তানভির ভাবছিল আবির রাগ করবে অথচ আবিরও গান গাইছে। তৎক্ষনাৎ তানভির নিজের হেলমেট ও খুলে ফেলছে। বাইকের স্প্রীড বাড়িয়ে আবারও আবিরের সমান্তরালে গিয়ে আবিরের সমস্বরে গান ধরলো। অনেক টা পথ দু ভাই একের পর এক গান গাইতে গাইতে অবশেষে তানভিরের নানাবাড়ি পর্যন্ত চলে আসছে। বাইকের শব্দে মেঘ সহ বাকি কাজিনরাও বাড়ির ভেতর থেকে দৌড়ে বেড়িয়ে আসছে।

পর্ব - ৪৮
Jul 24, 2025 • 22 reads • 0 comments

আবিরের আপনি সম্বোধনে বন্যা কপাল কুঁচকালো৷ বন্যা যতবার আবিরকে দেখেছে ততবারই মেঘকে তুই বলে সম্বোধন করতে শুনেছে। আজ হঠাৎ আপনি বলছে! বন্যা ভুল শুনলো কি না তাই ভাবছে! মেঘ বান্ধবীদের থেকে বিদায় নিয়ে উঠলো। তানভির মেঘের গিফটগুলো নিয়ে সামনে এগিয়ে গেছে। তানভিরের কিছুটা পিছনেই আবির, আবিরের থেকে একটু দূরে মেঘ, মেঘের পেছনে বন্যারা, সবশেষে তামিম আর মিনহাজ। রেস্টুরেন্টের দরজার কাছাকাছি যেতেই মেঘের গাউন থেকে বের হওয়া সুতার সঙ্গে জুতার স্টোন আঁটকে গেছে।

পর্ব - ৪৯
Jul 24, 2025 • 22 reads • 0 comments

মিনহাজ ধীর স্থির কন্ঠে সবটা প্ল্যান বলেছে। মিষ্টিরা বলার সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেছে। মিষ্টিদের উত্তেজনা দেখে মেঘও মোটামুটি রাজি হয়েছে । কিন্তু বন্যা কোনো ভাবেই রাজি হচ্ছে না। মেঘকে বুঝানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু মিষ্টি, মিনহাজ আর তামিমের কথা শুনতে শুনতে বন্যার কথা মেঘ পাত্তায় দিচ্ছে না৷ রাতে খাবার টেবিলে বড়দের খাওয়া শেষে আবির, তানভির, মীম, মেঘ বসে খাবার খাচ্ছিল।

পর্ব - ৫০
Jul 24, 2025 • 23 reads • 0 comments

বন্যার কল কেটেই মেঘ আবিরের নাম্বার বের করল। ভয়ে বুক কাঁপছে অবিরাম। ৫ মিনিট অপেক্ষার পর বুকে সাহস নিয়ে আবিরের নাম্বারে ডায়াল করল। আবিরের ফোন বন্ধ পেয়ে আঁতকে উঠলো মেঘ। বার বার কল দিতে লাগলো। ভয় আর দুশ্চিন্তা তিনগুণ বেড়ে গেছে। রাকিব, রাসেল, তানভির এদিকে মেঘ সবার একাধারে কল দেয়ার কারণে একবার নেটওয়ার্ক বিজি বলছে আবার বন্ধ বলছে। মেঘ আজ পর্যন্ত যতবার আবিরকে কল দিয়েছে কোনো সময় ফোন বন্ধ পায় নি আজই প্রথম আবিরের ফোন বন্ধ। মেঘ রাগের চোটে কান্না শুরু করে দিয়েছে।

পর্ব - ৫১
Jul 24, 2025 • 28 reads • 0 comments

তানভির মেঘকে ডেকে নিয়ে আসছে। মেঘ নাকের ডগা পর্যন্ত ওড়না টেনে রেখেছে৷ মেঘ রুমে আসতেই আবির আড়চোখে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে । কিন্তু মেঘের দৃষ্টি নিচের দিকে। ঘুরে এসে কোনোরকমে আবিরের পায়ের কাছে মাথা নিচু করে বসলো। তানভির আর রাকিব নাস্তা আনতে বেড়িয়ে গেছে। রুমে শুধু আবির আর মেঘ। আবির এক দৃষ্টিতে মেঘকে দেখছে। পাতলা ওড়নার আড়ালে মেঘের কুন্ঠ অভিমুখে আবির নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে আছে। তৎক্ষনাৎ রুমে আলী আহমদ খান সহ মালিহা খান এবং হালিমা খান ঢুকলেন।

পর্ব - ৫২
Jul 24, 2025 • 30 reads • 0 comments

পাথুরে মানবের ন্যায় আলী আহমদ খান বিছানার এক পাশে বসে আছেন৷ মোজাম্মেল খান ব্যতীত দরজার সামনে দাঁড়ানো প্রতিটা মানুষের চোখ টলমল করছে। মেঘ কাতর বদনে ফুপ্পির দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল, মেঘের বুকের ভেতর অসহনীয় যন্ত্রনা হচ্ছে, হৃদয় খুঁড়ে আসা আর্তনাদ গুলো অবিক্ষিপ্ত গতিতে দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে পরছে। ক্ষণিকের জন্য মেঘ নিজেকে ফুপ্পির জায়গায় কল্পনা করতেই মেঘের চারপাশ অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। দাঁড়িয়ে থাকার সর্বশক্তি মুহুর্তেই বিলীন হয়ে গেছে। মেঘ দ্রুত স্থান ত্যাগ করলো।

পর্ব - ৫৩
Jul 24, 2025 • 22 reads • 0 comments

” আবির ভাই, আপনি আমার প্রাণচঁচল্যের একমাত্র শখের পুরুষ, আমার হৃদয়ের একান্ত ব্যাকুলতা। চিত্তচাঁচল্য নয় বরং আমি আপনার প্রণয়ের পরিণীতা হতে চাই৷” মেঘের কান্না জড়িত কন্ঠে বলা একেকটা কথা শুনে আবিরের হৃদস্পন্দন কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ইচ্ছে করছে সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে কাদম্বিনীর দুচোখের পানি মুখে, মায়াবী দুচোখে চোখ রেখে অনুরক্ত কন্ঠে বলতে, “মাহদিবা খান মেঘ, আপনিও আমার অস্তিত্বে নিবদ্ধ একমাত্র শখের নারী, আমার আত্মাকে প্রশান্ত করার অনন্য পন্থা।

পর্ব - ৫৪
Jul 24, 2025 • 20 reads • 0 comments

মেঘ একদৃষ্টিতে আবিরের দিকে তাকিয়ে উপর নিচ মাথা নাড়লো। অনুমতি ছাড়া একা শপিং এ যাওয়া অসম্ভব বিষয় এটা তাদের অজানা নয়, তবুও চেষ্টা করে দেখছিল, যদি অনুমতি পেয়ে যায়। আবির আগের ভাবমূর্তি বজায় রেখে দাঁড়িয়ে আছে, মেঘ আর মীম তাড়াহুড়ো করে নিজেদের রুমে চলে গেছে। হালিমা খান আর আকলিমা খানের সঙ্গে মীম আর মেঘ শপিং এ গেছে। মেঘ আর মীম সুযোগ বুঝে আবিরের জন্য ২-৩ টা সাদা টিশার্ট, আর দুজনের জন্য ৩ টা পাঞ্জাবি কিনে নিয়ে আসছে। মেঘরা বাসায় ফিরতেই তানভির ভার্সিটির পোগ্রামের কথা বলেছে৷ আবিরও সেখানেই উপস্থিত ছিল৷

পর্ব - ৫৫
Jul 24, 2025 • 19 reads • 0 comments

আবিরের গাড়িতে বসে একবার পেছনে দেখে নিল। তানভির পাশের সীটে গিয়ে বসেছে, তার দৃষ্টি কোথায় কে জানে। আবির অতি সতর্কতার সহিত গাড়ি চালাচ্ছে। পেছনে মীম, মেঘ আর বন্যা নিজেদের মধ্যে গল্প করতে ব্যস্ত, মাঝে মাঝে আদিও তাতে সঙ্গ দিচ্ছে। সবাই ঘন্টাদুয়েক ঘুরাঘুরি করেছে, এই ফাঁকে মেঘ বন্যাকেও বেশ কিছু ছবি তুলে দিয়েছে। ঘুরাঘরি শেষে বন্যাদের বাসায় যাওয়ার সময় মেঘ বন্যার ছবি দেখে একটা ছবি সিলেক্ট করে দিল ফে*সবুকে পোস্ট করার জন্য। বন্যা আর মেঘ আস্তেধীরে কথা বললেও আবির সে কথা শুনে ফেলেছে।

পর্ব - ৫৬
Jul 24, 2025 • 17 reads • 0 comments

আবির কোনো উত্তর না দিয়ে বেড়িয়ে গেছে। আবিরের এমন আচরণে মেঘের বড্ড অভিমান হলো। আবির বেড়িয়ে যেতেই জান্নাত, আইরিন, মীম একে একে ডেকে গেছে কিন্তু মেঘকে এক চুলও নাড়াতে পারে নি। আবির বাসা থেকে বেড়িয়ে কোথায় যেন চলে গেছে, রাকিব ফোনের পর ফোন দিচ্ছে। আগামীকাল রাকিবের বিয়ে কোথায় একটু আনন্দ করবে, কিন্তু বন্ধুর জন্য তারও উপায় নেই। এক ঘন্টা পেরিয়ে যাচ্ছে আবির ফোন ধরছে না, বাসায়ও ফিরছে না। রাকিব, আসিফ, তানভির একের পর এক কল দিয়েই যাচ্ছে। কারো কল ই রিসিভ করছে না আবির।

পর্ব - ৫৭
Jul 24, 2025 • 19 reads • 0 comments

মোজাম্মেল খান কিছু বলতে চেয়েও থেমে গেলেন৷ পাশ কাটিয়ে নামাজের জন্য চলে গেছেন। আবির,তানভির নিজেদের রুমে চলে গেছে। মেঘ আম্মু, বড় আম্মু, কাকিয়া, মীম, আদিকে ডেকে এনে আবিরের গাড়ি দেখাচ্ছে। বিকেল বেলা গাড়িটা দেখে মেঘের সত্যি খুব রাগ হয়েছিল। তবে এখন আর সেই রাগ টা নেই। ঈদের দিনের মতো এত সুন্দর একটা দিনেও যেখানে আব্বু আর বড় আব্বু টাকার হিসেব চাইতে পারে সেখানে আবির ভাইয়ের গাড়ি কিনে নিজের অবস্থান প্রমাণ করাটা দোষের কিছু না। আবিরের জন্য এখন অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে।

পর্ব - ৫৮
Jul 24, 2025 • 22 reads • 0 comments

তানভিরকে কল দিতে দিতে আবির দ্রুত অফিস থেকে বেড়িয়ে গেছে। রাকিব, রাসেল কারো সাথেই দেখা হয় নি। এদিকে মেঘ বিছানায় হেলান দিয়ে বসে, আশেপাশে আম্মু, বড় আম্মু, কাকিয়া সবাই মেঘকে বুঝাচ্ছে, রেডি হতে বলছে। মেঘের সেসবে মনোযোগ নেই, আজ মেঘের চোখে এক ফোঁটা পানিও নেই। সেদিন প্রথমবারের মতো কেউ বা কারা দেখতে আসবে কথাটা শুনে মেঘ নিজেকে শান্ত রাখতে পারে নি তারউপর আবিরের উদাসীনতা মেঘকে আরও বেশি কাঁদিয়েছিল৷ কিন্তু রাতের বেলা আবিরের কথা শুনে মেঘ সবটায় বুঝেছিল আর নিজেই নিজেকে বকেওছিল।

পর্ব - ৫৯
Jul 24, 2025 • 15 reads • 0 comments

আবির ঢোক গিলে মুখ তুলে মেঘের অভিমুখে চাইলো। আবিরের চোখ মুখের ধরণ অত্যন্ত গুরুগম্ভীর, চেহারায় বিন্দুমাত্র লাবন্য নেই। মেঘের তুষারের মতন ঠান্ডা দুহাত আবির অতর্কিতেই নিজের গালে রাখলো, সহসা আবিরের চওড়া দুহাত দিয়ে মেঘের ছোট ছোট হাতকে সম্পূর্ণ ঢেকে ফেলেছে। আবিরের গালের খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি সেই সাথে গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া নোনাজলের স্পর্শে মেঘের সর্বাঙ্গে শীতল হাওয়া বইছে। প্রণয়ের পূর্ণতা পাওয়ার শাণিত আক্ষেপে যে ধ্বংসের খেলায় নেমেছিল সেই ধ্বংসলীলা প্রতিনিয়ত ব*ধ করছে মেঘের নিষ্কলুষ হৃদয়কে।

পর্ব - ৬০
Jul 24, 2025 • 18 reads • 0 comments

মেঘ কল কেটে দিয়েছে। রাতে কারো খাওয়াদাওয়া নেই। যে যার মতো আবিরকে কল দিচ্ছে, পরিচিত সবার সাথে বার বার যোগাযোগ করেছে কিন্তু কেউ কিছুই জানে না। বন্যা রাতে আবারও কল দিয়ে খোঁজ নিয়েছে। দু’দিন কেটে গেছে, আবির এখনও বাসায় ফিরে নি৷ দুদিন ধরে কোনো অফিসেও যাচ্ছে না। আলী আহমদ খান, মোজাম্মেল খান, ইকবাল খান নিজেদের মতো খোঁজখবর নিয়েই যাচ্ছেন কিন্তু আশানুরূপ ফলাফল পাচ্ছেন না। আজ বিকেলে বন্যা মেঘদের বাসায় আসছে।

পর্ব - ৬১
Jul 24, 2025 • 27 reads • 0 comments

মালিহা খান রেগেমেগে রুম থেকে বেড়িয়ে গেছেন।খান বাড়ির মানুষদের মন বুঝা দুষ্কর, এই ভালো এই খারাপ। মালিহা খান আবিরের পছন্দ মতো খাবার রান্না করতে ব্যস্ত। মেঘ সোফায় বসে আছে, সামনে টিভি চলছে তবে মেঘের নজর মেইন গেইটে। অনেকক্ষণ পর আবির বাসায় আসছে। আবিরকে দেখেই মেঘ টিভি বন্ধ করে উঠে দাঁড়িয়েছে। মালিহা খান রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে আসছেন। আবির আম্মুর সাথে কথা বলার ফাঁকে মেঘকেও এক পলক দেখে নিলো। মেঘও নিরেট দৃষ্টিতে আবিরকে পরখ করছে৷ এই এক সপ্তাহেই আবিরের মুখটা শুকিয়ে গেছে, চোখগুলো ফুলা ফুলা।

পর্ব - ৬২
Jul 24, 2025 • 17 reads • 0 comments

মেঘের গগন বিদায়ী কান্নায় প্রকৃতি স্তব্ধ হয়ে গেছে, ছাদে বয়ে যাওয়া হিমশীতল হাওয়াও থেমে গেছে। পূর্ণিমার চাঁদে আলোকিত ছাদে আবির আর মেঘ ব্যতীত কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব নেই। ধীরে ধীরে মেঘের কান্নার মাত্রা বেড়েই চলেছে। আবিরের গলা দিয়েও কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না, মেঘকে সান্ত্বনা দেয়ার মতো কোনো ভাষাও খোঁজে পাচ্ছে না। কয়েক মুহুর্ত নিস্তব্ধ থেকে আবির আচমকা নিজের একহাত মেঘের কোমরের কিছুটা উপরে, আরেক হাতে পিঠ বরাবর রেখে মেঘকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।

পর্ব - ৬৩
Jul 24, 2025 • 16 reads • 0 comments

আবির নড়েচড়ে পায়ের উপর পা তুলে বসে মেঘকে কাছে টেনে আবিরের উরুতে শুইয়ে দিয়েছে। আকস্মিক ঘটনায় মেঘের সর্বাঙ্গ শিহরিত হচ্ছে, বুকের ভেতরের টালমাটাল অবস্থা সামলাতে বারংবার ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। আচমকা আবিরের সংস্পর্শ মেঘকে নাজেহাল করে তুলছে তবে আবিরের সেদিকে বিশেষ মনোযোগ নেই। আবির ব্যস্ত মেঘের লম্বা চুল সামলাতে। মেঘের বুকের বা পাশের হৃদপিণ্ডের কম্পন বাহির থেকে শুনা যাচ্ছে, লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে চোখ ই খুলতে পারছে না। সেই সঙ্গে শরীরের দূর্বলতার জন্য উঠার চেষ্টাও করতে পারছে না।

পর্ব - ৬৪
Jul 24, 2025 • 16 reads • 0 comments

তবে আজ রান্না মেঘ করবে, ওনি কেবল মেঘকে সাহায্য করবেন। এরমধ্যে হালিমা খান তানভিরকে কল দিয়ে জানিয়েছে। আলী আহমদ খান নিজেই ফ্রিজ থেকে চিংড়ি মাছ, দুধ সহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বের করছেন। এদিকে ভয়ে মেঘের হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। আলী আহমদ খান মানেই আতঙ্ক, আব্বুর থেকেও মেঘ বড় আব্বুকে বেশি ভয় পায়। রান্নায় গন্ডগোল করলে আজ মেঘের খবর ই আছে, এই ভয়ে বার বার ঢোক গিলছে। কিছুক্ষণের মধ্যে তানভির আসছে। হালিমা খান, মালিহা খান দূরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মেঘদের কর্মকাণ্ড দেখছেন।

পর্ব - ৬৫
Jul 24, 2025 • 21 reads • 0 comments

বন্যা ভ্রু গুটিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। মনে মনে তানভিরকে অল্পস্বল্প বকেও নিলো। মেঘ আর তার ভাইয়ের স্বভাবে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। দুজনই বেশ অভিমানী, মেঘ মেয়ে বলে অভিমান টা একটু বেশিই প্রকাশ পায়। ঝালমুড়ি হাতে দুজনেই পাশাপাশি দুটা চেয়ারে বসা। এক প্লেট ফুচকা আর একটা চটপটিও অর্ডারও দিয়েছে। তানভির ঠান্ডা কন্ঠে শুধালো, “হঠাৎ আমাকে ট্রিট দেয়ার কারণ কি?”

পর্ব - ৬৬
Jul 24, 2025 • 21 reads • 0 comments

মাস খানেক কেটে গেছে। তানভিরের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা চলছে। আজও পরীক্ষা আছে তাই সময়মতো পরীক্ষা দিতে গেছে। মীমরা কেউ বাসায় নেই। সারাদিন একা একা কিছুই ভালো লাগছে না মেঘের। আবিরের সঙ্গে দুপুরেই কথা হয়েছে, একটু পর মিটিং আছে বলে ঠিকমতো কথাও বলতে পারে নি। মেঘ ফোন হাতে নিয়ে নিচে যাচ্ছিলো, তানভিরের রুম পর্যন্ত এসে হঠাৎ ই থেমে গেছে। রুমের দরজাটা খোলা৷ মেঘ দরজা থেকে রুমে উঁকি দিতেই দেখল, রুম এলোমেলো হয়ে আছে।

পর্ব - ৬৭
Jul 24, 2025 • 23 reads • 0 comments

পারিবারিক ও ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে একসময় রাজনীতি ছেড়ে, গ্রামের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে ঢাকায় চলে আসেন৷ হয়তো বাবার রক্তের টানে কলেজ জীবনে আবিরও টুকটাক রাজনীতিতে জড়িয়েছিল তবে পুরোপুরি জড়ানোর আগেই কলেজের এক স্যার আবিরকে বুঝিয়ে রাজনীতির চিন্তা ছাড়িয়ে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী করেন। আব্বু আর স্যারের কথা মেনে আবিরও রাজনীতি নিয়ে তেমন ভাবে নি। কিন্তু তানভির আবিরের মতো না, ঐ মেয়ের কারণে বাসায় যখন ঝামেলা হয়েছিল তখন ২-৩ নেতা আলী আহমদ খান ও মোজাম্মেল খানকে বাজে কথা বলেছিলেন।

পর্ব - ৬৮
Jul 24, 2025 • 30 reads • 0 comments

বন্যা মলিন হাসলো সাথে বাকিরাও। হঠাৎ মেঘের নজর পড়ে কিছুটা দূরে দাঁড়ানো এক ছেলের দিকে। লম্বাচওড়া ছেলেটার দুহাত পেছনে হাতে বেশ কিছু ফুল৷ দেখেই বুঝা যাচ্ছে কাউকে প্রপোজ করতে এসেছে। কিন্তু আশেপাশে কোনো মেয়ে নেই। মেঘ স্থির দৃষ্টিতে ছেলেটার হাতের ফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে। বেশ কিছুক্ষণ পর শাড়ি পড়া এক মেয়ে আসলো, বেশ সুন্দর করে সেজেগুজে এসেছে। মেয়েটা এসে ছেলেটার সামনে দাঁড়াতেই ছেলেটা হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো। পেছন থেকে ফুল গুলো বের কয়ে মেয়েটার সামনে ধরলো।

পর্ব - ৬৯
Jul 24, 2025 • 25 reads • 0 comments

আবির বাসায় ফিরেছে তিনদিন হলো। মোজাম্মেল খান এখনও বাসায় ফিরেন নি। আজ শুক্রবার হওয়ায় তানভির, আবির দু’জনেই বাসায়। গত ৫ মাসে মেঘের সাথে কথা বলতে বলতে বৃহস্পতিবারের রাত জাগার অভ্যাস টা একদম কেটে গেছে। আবির সকালের নাস্তা করে সেই যে রুমে গেছে, আর বের হওয়ার নাম নেই৷ বাড়িতে আসার পর থেকে মেঘের সাথে কথাও কমে এসেছে। চোখের ইশারায় টুকটাক দুষ্টামি করলেও মুখে কিছুই প্রকাশ করে না। ১১ টার দিকে মেঘ আবিরের রুমের সামনে আসছে। আবির দুচোখ বন্ধ চুপচাপ শুয়ে আছে।

পর্ব - ৭০
Jul 24, 2025 • 20 reads • 0 comments

আবির কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ খেয়ে নিল। খেতে খেতে তানভিরকে কল দিয়ে কথা বলে নিয়েছে। মিরাজকে আগেই বলেছিল আবির শার্ট আর প্যান্ট নিয়ে আসার জন্য। আবির পাঞ্জাবি, পায়জামা পাল্টে শার্ট প্যান্ট পড়ে মিরাজদের থেকে বিদায় নিয়ে রওনা দিল। আজ মিরাজরা এখানেই থাকবে আগামীকাল তানভির এসে সবকিছু গুছিয়ে রেখে যাবে। যাওয়ার আগে মেঘ হলুদ আর সাদা সবগুলো গোলাপ একসঙ্গে শপিং ব্যাগে করে নিয়ে গেছে৷ আসার সময় সময় কিছুটা দূরত্ব থাকলেও এখন বাইকে বসেই মেঘ পেছন থেকে আবিরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে৷

পর্ব - ৭১
Jul 24, 2025 • 24 reads • 0 comments

তানভির সকাল সকাল উঠে ফ্রেশ হয়েই “Sparrow’s Dreamhouse” এর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। গতকাল আবিররা যা কিছু অগোছালো রেখে আসছিল সব গুছাতে হবে, বাসা পরিষ্কার করাতে হবে তাছাড়া বাসার কিছু কাজও বাকি ছিল সেগুলোও করাতে হবে। কাজ শেষ করতে কমপক্ষে ১২-১ টা বেজে যাবে। এদিকে বন্যা ক্লাসে একা একা ঝিমাচ্ছে। মিষ্টি, সাদিয়া, মেঘ কেউ ই আজ ক্লাসে আসে নি তাই খুব বোরিং লাগছে। মিনহাজদের সাথে কথা বলতেও ইচ্ছে করছে না। ক্লাস শেষে সবার আগে বের হয়ে কিছুদূর এগোতেই একটা ছেলেকে দেখলো।

পর্ব - ৭২
Jul 24, 2025 • 22 reads • 0 comments

রাজকন্যার প্রতি মনোভাব বদলাতে শুরু করলো সেই সাথে বাড়তে লাগলো আতঙ্ক। কারণ রাজপুত্রের বাসায় তখন ছোট আরেকটা বোন ছিল যার বয়স ২ কি ৩ । রাজকন্যার এই হিংসুটে মনোভাবের জন্য সবসময় আতঙ্কে থাকতো রাজপুত্র। রাজপুত্রকে কারো সাথে মিশতে দিতে না চাওয়া, কোমল মনের আকুতি, রাজপুত্রের প্রতি তীব্র অধিকারবোধ সবেতেই ভীত হতো রাজপুত্র। সামনে ঈদ ঘনিয়ে আসছিলো, প্রতি বছরের মতো মেহেদী দেয়ার গুরু দায়িত্ব তার উপর ই পড়তো।

পর্ব - ৭৩
Jul 24, 2025 • 20 reads • 0 comments

মেঘ ক্যাপশন পড়ে ৫ মিনিটের জন্য নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। ৫ মিনিট পর মনোযোগ দিয়ে ছবিগুলো দেখতে লাগল। গতকাল পার্লার থেকে সেজে যাওয়ার পর থেকে নিজেকে কেমন লাগছে সেটা দেখার সুযোগ ই পায় নি, বিয়ের ছবি পর্যন্ত দেখে নি তবে কয়েক ঘন্টায় আবিরের মুখ থেকে হাজারখানেক প্রশংসা সহ আবিরের দুর্বৃত্ত কথা শুনতে হয়েছে। সুযোগ পেলেই মেঘের কানের কাছে ফিসফিস করে নিজের অব্যক্ত অনুভূতি জাহির করেছে আর মেঘ শুধু আবিরের পাগলামিই দেখে গেছে। এমনকি কবুল বলার সময় আবিরের অস্থিরতা দেখে মেঘ নির্বাক ছিল, নিষ্পলক চোখে কেবল তাকিয়েই ছিল।

পর্ব - ৭৪
Jul 24, 2025 • 21 reads • 0 comments

তখন ভয়ে ভয়ে সব সত্যি স্বীকার করেছে। তোমরা এখন কি অবাক হচ্ছো আমি তানভিরের কথা শুনে তখন হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। আমার ছেলের আস্পর্ধার কথা শুনে নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম৷ ঐ পরিস্থিতিতে রাগ দেখানোর অবস্থাও ছিল না। তানভিরের সাথে হুটহাট সিদ্ধান্ত নিয়ে আবিরকে রাজশাহী পাঠালাম, কারণ ও বাসায় থাকলে পরিস্থিতি আরও বেশি খারাপ হয়ে যেত। আবিরকে পাঠিয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমিনার বাসায় গেলাম। আমিনাকে আবিরের কথা জানানোর পর সে উঠে বলে, সে সবকিছু আগে থেকেই জানে।

পর্ব - ৭৫
Jul 24, 2025 • 23 reads • 0 comments

বন্যা সারাদিন যাবৎ মন খারাপ করে বসে আছে। দুশ্চিন্তায় খায়ও নি কিছু। মেঘের আবদার আর নিজের আবেগের বশবর্তী হয়ে তানভিরের প্রতি না চাইতেও খুব বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিল। মেঘদের বাসার পরিস্থিতি দেখে সেই আবেগ এখন আতঙ্কে রূপ নিয়েছে। ইদানীং মেঘের ব্যস্ততার কারণে তানভিরের বিষয়ে বন্যার সাথে তেমন কথাও হয় নি। তানভিরের রাজনীতি ছাড়া, চাকরির প্রস্তুতি বিষয়ক কোনো কথায় বন্যা জানে না। বন্যা তানভিরকে মুখ ফুটে সরাসরি চাকরির কথা বলতেও পারছে না আবার নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণও করতে পারছে না।

পর্ব - ৭৬
Jul 24, 2025 • 34 reads • 0 comments

(রোমান্টিক এলার্ট) আবির নিঃশব্দে হেসে মেঘের কাঁধের উপর আলতোভাবে হাত রেখে মোলায়েম কন্ঠে বলল, " হ্যাঁ আছে তো, এইযে আমার সামনে। আগে আবিরের নাম শুনলেই যার বুকে তোলপাড় চলতো ৷ আবিরকে দেখার জন্য রাতের পর রাত ব্যালকনিতে অপেক্ষা করতো, না খেয়ে বসে থাকতো। সময়ে অসময়ে আবিরকে দেখার জন্য কারণ ছাড়ায় আশেপাশে ঘুরঘুর করতো। অভিমানে গাল ফুলাতো, সেই অভিমান ভুলে আবারও আবিরের প্রণয়ে আসক্ত হতো।

পর্ব - ৭৭
Jul 24, 2025 • 35 reads • 0 comments

আরিফকে ইচ্ছেকৃত খোঁচানো টা মীমের স্বভাব, আজও তেমন কিছু করেছে কি না সেটা বুঝতেই মেঘ কিছুটা ঝুঁকে মীমকে দেখে নিল। মীম তখনও রিদের সাথে গল্পে মেতে আছে। মেঘ স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে খাওয়ায় মনোযোগ দিল। আবিরও বেশ মনোযোগ দিয়ে খাচ্ছে, একেকটা আইটেম চেক করছে ভালো লাগলে মেঘকে দিচ্ছে আর ভালো না লাগলে আগেই দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আজ সবাই সেন্ট মার্টিন যাবে তাই খাওয়াদাওয়া শেষ করেই যে যার মতো রেডি হতে চলে গেছে।

মীম কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে, আরিফ চলে গেছে। মীম ড্রেসিং টেবিলের আয়নার দিকে তাকালো, লজ্জা আর কুন্ঠায় মীমের উজ্জ্বল ধৃষ্টতা আরও বেশি ঝলমল করে উঠল। আরিফকে নিয়ে কখনো সেভাবে কিছু ভাবে নি মীম, দু'জনের সম্পর্কটাও খুব বেশি মধুর নয়। এ বেলায় দুটা ভালো কথা বললে ও বেলাতেই ঝগড়া লেগে যায়। তাই আরিফের এই হঠাৎ পরিবর্তন মীমের কাছে অস্বাভাবিক লাগছে। মীম দু’জোড়া চুড়ি হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ দেখে আবারও রেখে দিল। প্রায় ৪ টার দিকে আবির তানভিরকে নিয়ে বন্যাদের বাসার সামনে আসছে৷