অঙ্গনে হৃদরঙ্গন - এর সকল পর্ব একসাথে

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১

মাঝরাত, প্রকৃতিতে ছড়িয়ে আছে ঘন অন্ধকার। সাথে হালকা কুয়াশা, ডেকে আনছে শীতের আভাস। তবে আকাশটা ঝকঝকে। জোছনা নেই তবুও উজ্জলতা বিদ্যমান। সময়টা দুই’টার কাছাকাছি। সাদাফ বিরতিহীন পা ফেলে হাটছে। হাতে সিগারেট, কখনো বাতাসের সংঘর্ষে জ্বলে যাচ্ছে, কখনো বা মুখে টেনে জ্বালিয়ে শূন্যে ধোঁয়া ছাড়ছে।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ২

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ২

হাতমুখ ধুয়ে সাদাফ ঘরে এসে দেখলো মশারির এক কোণা খুলে মেয়েটিকে বসতে দিয়েছে নুরু মিয়া। আর সে বসেছে একসাথে করে রাখা প্লাস্টিকের ডবল চেয়ারে। গামছায় হাত মুখ মুছতে মুছতে সে বললো, “কত এনেছো?” “যা পাওনা আছো, তার চেয়েও বেশি।” “বেশির দরকার নেই। ন্যায্যটুকু হলেই চলে। দাও…” নুরু

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৩

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৩

কাপড়ের ব্যাগের এক কোণে পলিথিনে মোড়ানো দুইটা রুটি আছে। এখানে আসার পথে তিনটা কিনেছিলো, একটা খাওয়া হয়েছে দুইটা রয়ে গেছে। পঞ্চাশ টাকা বাঁচিয়ে সেখান থেকে একটা রুটি দিয়েই নাস্তা সেড়ে নেওয়ার কথা ভাবলো। পানি পানের জন্য খালি বোতলটা নিয়ে বাথরুমে গেলো।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৪

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৪

নাস্তা করে বের হয়ে দাবা ঘরের দিকে যাচ্ছিলো সাদাফ। পথে চায়ের দোকান থেকে ডাকলো রাজীব সরকার। তার গ্রামের বাড়ির একটা মামলার কথা জানিয়েছিলো দু’সপ্তাহ আগে। শহুরে কোনো পার্টির কাছে ভালো দামে বিক্রি করতে চান তিনি। সাদাফকে বলেছে একটা ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৫

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৫

“কি কাজ?” “আমার সাথে একটু শপিংমলে যেতে পারবেন?” “শপিংমলে আমার কি কাজ?” “গেলেই তো দেখবেন। আপনার সময় হবে কি না সেটা বলেন।” “কোন মলে?” দিশা রিকশায় একপাশে চেপে বসতে বসতে বললো, “রূপসা টাওয়ারে।” সাদাফ বিনা সংকোচে, বিনা দ্বিধায় রিকশায় উঠে বসলো।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৬

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৬

“কে? কে এখানে?” কোনো সাড়া নেই। কয়েক সেকেন্ড পর বাথরুমের দরজার শব্দ হলে কিছুটা নিশ্চিত হয়ে দরজা খুললো। কারণ চোর ডাকাত হলে তো আর বাথরুমে আসবে না। পরক্ষণে সাদাফকে বাথরুমে হাতমুখ ধুতে দেখে সে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো এবং বললো, “খাবার আপনার ঘরে…” “হুম? আমি এখন খাবো না।”

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৭

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৭

সাদাফ খাটের একপাশে বসে আছে। দিশা তার ঠিক সামনেই, রুমের ফাঁকা জায়গাটার মাঝামাঝিতে দাঁড়িয়ে বললো, “আমি ভাবতেও পারিনি আজ আপনি আসবেন। তবে খুশি হয়েছি বেশ। হঠাৎ কি কারণে এসেছেন জানতে পারি? না মানে বাবার কাছেই এসেছেন নাকি আমার বিয়ের উদ্দেশ্যে আসা?” “আপনার বাবার কাছে এসেছি।” “ওহ্।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৮

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৮

পরদিন সকালে তাকে বেতন দেওয়া হলো চার হাজার টাকা। থাকার জায়গা, খাওয়াদাওয়ার পরও চার হাজার টাকা পেয়ে ভীষণ খুশি শ্রাবণ। সে বুঝতে পারছে, এখন সাদাফের কাছে বোধহয় ভালো টাকা আছে তাইতো এতো দিলো। সাদাফ বেরিয়ে যাওয়ার পর শ্রাবণও বের হলো বাজারের উদ্দেশ্যে। এদিকের পথঘাট তার অচেনা।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৯

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ৯

এতোক্ষণ চিন্তায় চিন্তায় সময় কাটিয়ে অবশেষে দুপুরে ভাত খাওয়ার জন্য ডাকলো শ্রাবণ। কয়েকবার দরজায় টোকা দেওয়ার পর সাদাফ সাড়া দিয়েছে। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বললো, “কে?” “আমি, শ্রাবণ। ভাত খাবেন না? বিকেল হয়ে যাচ্ছে যে।” “খাবো না।” “সকালেও খেলেন না ঠিকমতো, এখনো না খেয়ে এভাবে কতক্ষণ থাকবেন!”

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১০

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১০

সাদাফ রেগে প্লেট রেখে নেমে গেলো বিছানা থেকে। চোখ মুখ যেন লাল হয়ে এসেছে তার। শ্রাবণ হুট করে হাত ধরে ফেললো এবং বললো, “কোথায় যাচ্ছেন, ভাত খেয়ে যান।” সাদাফের যেন এদিকে কোনো ধ্যানই নেই। সে হাত হেচকা টানে ছাড়িয়ে নিয়ে খালি পায়ে বেরিয়ে গেলো।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১১

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১১

হসপিটাল থেকে ফেরার পথে সারাটা পথ মনের সাথে আলাপ করেছে সে। যে মেয়েটা তার যত্ন নিতে ব্যস্ত ছিলো দিনের পর দিন, তাকে সে কিভাবে এতোটা আঘাত করতে পারলো! তার সকল কাজ অনায়াসে করে দিতো মেয়েটা, আর তাকেই কি না সে এতোটা মেরেছে!

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১২

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১২

হুজুর ও সাথের লোকটা মিষ্টিমুখ করেই বিদায় নিয়েছে। শ্রাবণ নিজের রুমে এসে শাড়িটা খুলে দেখছে। ভীষণ পছন্দ হয়েছে তার। ইচ্ছে করছে পরে ফেলতে। কিন্তু লজ্জা লাগছে পরতে। ভাবতেই পারেনি তারও একদিন সংসার সাজবে, একটা মনের মানুষ হবে, কারো স্ত্রী হওয়ার পরিচয় জন্মাবে!

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৩

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৩

সন্ধ্যার পর সাদাফ বাড়ি ফিরলে শ্রাবণ তাকে খেতে দিলো। সব মাছের তরকারি দেখে বললো, “আজ এতো মাছ কেন?” “ওদের ফ্রিজে রেখেছিলাম কিছু। সব নিয়ে এসেছি। এরপর থেকে অল্প পরিমাণে ছোট ছোট মাছ আনবেন। অন্যের ফ্রিজে রেখে খাওয়া যায় না।” “কে বলেছিলো অন্যের ফ্রিজে রাখতে?”

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৪

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৪

তিনদিন পর, সকালের রান্নাবান্না শেষ করে ঘর ঝাড়ু দিয়ে দরজার সামনে বসে ময়লা তুলছিলো শ্রাবণ। হঠাৎ এক বোরকা পরনে মহিলা এসে তার দরজার সম্মুখে দাঁড়িয়ে বললো, “কি ব্যাপার? যাও না কেন তুমি?” নেকাবে ডাকা মুখ, চোখে চশমা, হাতে মোজা, পায়ে মোজা দেখে শ্রাবণ কিছুটা থতমত খেয়ে গিয়েছিলো।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৫

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৫

খাবার চেয়েছে সেই কখন, শ্রাবণ নিজেকে সামলে নিয়ে একটু দেরি করেই গেছে খাবার নিয়ে। সাদাফের একার খাবার দেখে বললো, “তোমার খাবার কোথায়?” বিনা ভাবনায় থতমত খেয়ে শ্রাবণের মুখ ফসকে বেরিয়ে এলো, “আমি খেয়েছি।” “এতো আগেই খেয়ে নিয়েছো? ঘুমানোর আগে আবার খেয়ো।”

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৬

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৬

পুরোটা পথেই জোড়াজুড়ি চলেছে। একটা লোকও কি দেখলো না তাকে, এলো না কেউ বাঁচাতে? এ কেমন পথ! ঠেলে ধাক্কিয়ে নিয়ে তাকে আসা হলো কোনো এক ঘরে। তাদের মধ্যে একজন বললো, “ভাই, এই হালী অস্ত্র পাচার করতে দেইখা ফেলছে। এর কি করা যায়?”

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৭

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৭

নুরু মিয়া তো চলে গেলো, কিন্তু মন থেকে ভয় দূর হলো না শ্রাবণের। সে কি আবার আসবে? সাদাফ বাসায় না থাকলে যদি তুলেও নিয়ে যায় তবুও কি সে কিছু করতে পারবে? ইদানীং ভয় তার পিছুই ছাড়ে না। একটা না একটা ভয় লেগেই আছে তার পিছু।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৮

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৮

গত সপ্তাহে তিনটা কাজ একসাথে নিয়েছে হাতে। আর তাই সপ্তাহের পুরোটা সময়ই কাজের পেছনে ছুটতে দেখা গেছে তাকে। সকালে নাস্তা করে বের হয়, দুপুরে আশেপাশে থাকলে বাড়ি ফিরে। আর নাহয় রাতে তার দেখা পাওয়া যায়। ক্লান্ত বেশে ফিরে ঘুমে পাড়ি জমায়।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৯

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ১৯

শ্রাবণকে ডিসপেনসারিতে বসিয়ে চলে গেলো সাদাফ। কখনো দৌড়ে, কখনো দ্রুত বেগে হেটে অতিক্রম করছে পথ। মোটা রাস্তায় এসে সিএনজিতে উঠে গেলো। কিন্তু নেমে গেলো হায়দারের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই। সামনে ভীড়, সারি সারি দেখা যাচ্ছে পুলিশের গাড়ি। সাদাফ দূরে দাঁড়িয়ে থেকেই ব্যাপারটা বুঝতে চেষ্টা করলো।

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ২০ | সর্বশেষ পর্ব

অঙ্গনে হৃদরঙ্গন | পর্ব – ২০ | সর্বশেষ পর্ব

পরবর্তী দিনগুলো ভালোই কাটছিলো। ছোটখাটো সংসারের ছোট ছোট প্রয়োজন ভালোভাবেই মেটাতে সক্ষম হচ্ছে সাদাফ। হায়দারের ঘটনার পর থেকে আর অস্ত্রসস্ত্র কিংবা পোটলা পুটলি নিয়ে ঘরে ফিরে না সে। জমিজমার কাজকর্মে একটু বেশি মনযোগী হয়েছে আগের থেকে। আগে মন চাইলে কাজ ধরতো, মন না চাইলে ফিরিয়ে দিতো।

Logo Light

হারিয়ে যান গল্পের দুনিয়ায়

Useful links

2024 © Golpo Hub. All rights reserved.