বাইজি কন্যা - এর সকল পর্ব একসাথে

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১

তবুও কেন এই নারী’কে এখানে নিয়ে আসা হলো? ‘ প্রণয় চৌধুরী’র এহেন হুংকারে শারমিন বাইজির বক্ষে চেপে রাখা কন্যাটির সর্বাঙ্গ শিউরে ওঠলো কয়েক পল সময় নিয়ে নিজ বোধশক্তিও হারিয়ে ফেললো।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২

শারমিন বুঝতে পারে ঘুঙুরের প্রতি শাহিনুরের তীব্র আকর্ষণ রয়েছে। ঘুঙুরের আওয়াজে জেগে ওঠে শাহিনুরের সমস্ত ইন্দ্রিয়। তাই এই ঘুঙুর থেকে মেয়ে’কে যথাসম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা করে।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩

আমি ওকে খুব ভালোবেসেছি সখী। ও কেন আমাকে ধোঁকা দিলো, কেন আমাদের সন্তানটাকে নিঃশেষ করে দিলো। আমি ওর স্ত্রী’র মর্যাদা পাইনি কিন্তু ওর বাচ্চার মা’য়ের মর্যাদাটুকু ও কেন আমায় দিলো না?

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪

-‘ ও মা গো… মরে গেলাম আম্মা… আমি মরে গেলাম।’ বিস্মিত হয়ে সকলেই তাকালো বাইজি গৃহের দিকে। সাংঘাতিক আশঙ্কায় সর্বাঙ্গ কেঁপে ওঠলো প্রণয়ের।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫

বক্ষঃস্থলে শুরু হলো ঢিপঢিপ ঢিপঢিপ আওয়াজ। সম্মুখের গৌরবর্ণের সুশ্রী পুরুষ’টির দৃষ্টিজোড়া কতো মোলায়েম…

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৬

পাশ থেকে রঙ্গন কপাল এগিয়ে দিয়ে বললো, -‘ আম্মা আমি এক বছরের নামে বিদেশ চলে যাবো আমাকে একশটা চুমা দিন তাহলে। ‘

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৭

-‘ প্রেমের আবার নতুন পুরানোও হয়? ‘ -‘ কেন নয়? আমরা যেমন বহুবার হাসি তেমন বহুবার কাঁদিও৷ আমাদের জীবনে যেমন বহুবার হাসি আসে,বহুবার কান্না আসে, ঠিক তেমনি বহুবার প্রেমও আসে। ‘

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৮

-‘ সখী ভয় পাস না এই আপা’কে আমি চিনি। ‘ রোমানার হাসিটা বেশ চওড়া হয়ে গেলো,অবাকান্বিত কন্ঠে বললো, -‘ নুর! তুমি এখানে? আমি ভাবতেই পারিনি তোমার সাথে আবারও দেখা হবে। ‘

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৯

-‘ ভাবিজান, এ যাত্রায় ঐ বেশ্যার বাচ্চা বাঁইচা গেলো। কিন্তু চিন্তা করবেন না ওর সঙ্গে আমি জবরদাস্ত ফাইট করেই ছাড়বো। নারী’জাত কে কীভাবে শায়েস্তা করতে হয় তা এই পলাশ খুব ভালো করেই জানে।’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১০

নিজেই নিজেকে তাচ্ছিল্য করা…অদ্ভুত তাইনা? প্রণয় চৌধুরী মানুষটাই অদ্ভুত চরিত্রের।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১১

অতি আদরে শাহিনুর’কে নিজ বক্ষে চেপে ধরলো প্রণয়৷ দীর্ঘ একটি নিঃশ্বাস ত্যাগ করে হাঁটা ধরলো নির্দিষ্ট একটি স্থানের উদ্দেশ্যে।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১২

শাহিনুর চেয়ে আছে মা’য়ের দিকে। মা’য়ের মুখ দেখলে প্রাণটা জুড়িয়ে যায় তার। বক্ষঃস্থলে প্রশান্তি লাগে খুব৷

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১৩

বিয়ে হয়ে যায় আমার এবং শাহিনের। আমি হয়ে যাই কারো ঘরনি, কারো অর্ধাঙ্গিনী। বিয়ের অনুষ্ঠানে অলিওরের পরিবারের কাউকে দেখা যায়নি।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১৪

বাইজি গৃহের সর্বোচ্চ বৃহৎ কক্ষের রঙ্গমঞ্চে নৃত্য প্রদর্শন করছে বাইজি’রা৷ দু’ভাই ডিভানে আধশোয়া হয়ে প্রমত্তকর রস পান করছে। তাদের কামনীয় দৃষ্টিজোড়া নিবদ্ধ বাইজি’দের উন্মুক্ত কোমড়ের ভাঁজে ভাঁজে।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১৪ (শেষাংশ)

শাড়ি, গয়না পছন্দ করে তিনজন মিলে হাসাহাসি, রসিকতা করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো। অবশেষে রোমানা প্রণয়ের বউ হতে যাচ্ছে।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১৫

তাই ভোরবেলায়ই রোমানা চা’য়ের ছুঁতোয় পা বাড়ালো প্রণয়ের কক্ষে। রুদ্ধ দ্বারের সামনে দাঁড়িয়ে বারকয়েক ঢোক গিলে সাহস সঞ্চয় করে নিলো।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১৬

তোমরা আকাশ নিয়ে তর্ক শুরু করলে কেন? আকাশে চাঁদ, সূর্য, নক্ষত্র সবারই স্থান হয়। আকাশের হৃদয় বিশাল বুঝলে সে কাউকে নিরাশ করে না।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১৭

-‘ আমি আমার আম্মা’কে খুব ভালোবাসি বাঁশিওয়ালা। আমি আমার আম্মা’কে ঠকিয়ে খুব অন্যায় করছি৷ তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও বাঁশিওয়ালা,আমি তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু আমার আম্মা’কে আর ঠকাতে চাইনা।’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১৮

দু’হাতে নিজের চুল খামচে ধরে চিৎকার করে কথাগুলো বললো অঙ্গন। এ পর্যায়ে প্রণয় বিচলিত হয়ে প্রশ্ন করলো, -‘ তুই কাল নেশা করেছিলি? ‘

বাইজি কন্যা | পর্ব – ১৯

মুনতাহা জ্ঞান হারিয়েছে। জেবার স্বভাব সম্পর্কে সবাই অবগত তাই স্বাভাবিক ঘটনা ভেবেই সকলে এগিয়ে এলো।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২০

ক্রোধান্বিত কন্ঠে হুংকার ছড়লো, -‘ আব্বা…আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন! আমার উদ্দেশ্য সফল হতে যতো সময় লাগবে ততো হিংস্র হবো আমি, ঠিক ততোটাই নৃশংসরূপে সফলতা অর্জন করবো আমি হুহ।’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২১

একমাস পর – পাঁচফোড়ন গৃহে এখন চরম বিপর্যস্ত অবস্থা। রোজ নিয়ম করে কোলাহল শুনতে পাওয়া যায়

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২২

কৌশলে প্রণয় তার এবং নুরের মধ্যেকার সম্পর্ক জানতে চাচ্ছে, এর পেছনে সঠিক কারণ বোধগম্য হলো না রঙ্গনের৷ তবুও বড়ো ভাই এমন একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে উত্তর না দিয়েও উপায় নেই।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২৩

শাহিনুর সুদূরপ্রসারী এক ভাবনার অতল গহ্বরে তলিয়ে গেছে। আর শারমিন তার সর্বাঙ্গে দৃঢ়তা বজায় রেখে এক পা দু’পা করে এগিয়ে গেলো কক্ষের ভিতরে থাকা একটি কাঠের আলমারির সামনে।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২৪

তখনি বাইজি গৃহের ভৃত্য এসে জানিয়ে গেলো, প্রণয় চৌধুরী এসেছে এবং জরুরি তলব করেছে তাকে। বাইজি গৃহের প্রধান বৈঠকখানায় বসে আছে সে৷

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২৫

শুনতে পেলো শারমিনের গেঙানিও৷ ঘাড় কাত করে শারমিনের দিকে তাকালো। করুণ কন্ঠে বললো, -‘ তুমি আর আমি আরো কিছুকাল বাঁচতে পারতাম শারমিন। ‘ গোঙাতে গোঙাতেই শারমিন অলিওরের মুখে থুতু ফেললো। সঙ্গে সঙ্গে পলাশ শারমিনের গালে ঠাশিয়ে এক থাপ্পড় মারলো।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২৬

শারমিনের খোলা চুল মেঝেতে বিছিয়ে পড়ে আছে। চুলের ভাঁজে ভাঁজেও রক্তিম তরলে নিমজ্জিত। পরিহিত হলদে রঙের জর্জেট শাড়িটি দেখে বোঝার উপায় নেই তার রঙ হলুদ ছিলো!

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২৭

-‘ আজ এই জোৎস্নামাখা রাতটি স্মরণীয় হবে তোমার আমার মাখামাখি তে! ‘ শাহিনুরের কর্ণকুহরে পলাশ চৌধুরী’র বলা কুরুচিপূর্ণ বাক্য’টি বজ্রপাতের ন্যায় আঘাত করলো।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২৭ (শেষাংশ)

অর্ধন’গ্ন অবস্থায় শাহিনুর’কে দেখে থমকে গেলো প্রণয়। সহসা দৃষ্টিজোড়া সংযত করে নিলো৷ পেছনে মান্নাতের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। ইশারায় শাহিনুরের কাছে যেতে বললো তাকে। মান্নাত হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে গিয়ে শাহিনুর’কে ধরলো।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২৮

জন্মদাত্রী, শ্রদ্ধেয় আম্মা। এ জীবনে সেই মমতাময়ীর ছায়া আর পাওয়া হবে না,পরম স্নেহশীল হাতের স্পর্শটি আর মাথায় রাখবেনা। আশ্চর্যান্বিত হয়ে মুগ্ধ নয়নে আর মা’কে দেখা হবে না৷

বাইজি কন্যা | পর্ব – ২৯

-‘ মেয়েটা ভীষণ ক্ষুধার্ত, মেয়েটা ভীষণ তৃষ্ণার্ত। ওর খাবার প্রয়োজন, পানি প্রয়োজন, ঘুম প্রয়োজন, ভালোবাসা, আদর, স্নেহ সবটা প্রয়োজন। এসবের অভাবে মেয়েটা নুয়ে পড়ছে, ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে মেয়েটার দেহ,মন সবটা, সবটা!’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩০

-‘ ভয় কেন পাবো? ঘুম থেকে ওঠার পর পিপাসা লেগেছিলো। ‘ ভ্রু বাঁকিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রণয় বললো, -‘ তাই বুঝি… দ্যাটস লাইক এ্যা গুড গার্ল।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩১

সকালবেলা নাস্তা করার সময় বমি হয়েছে মুনতাহার। দুপুরবেলাও কিছু খেতে পারলো না৷ সবটা খেয়াল করলো শবনম। তারপর তার স্ত্রীরজের সময়কাল জেনে বিস্মিত হলো! গালে মৃদু থাপ্পড় দিয়ে বললো, -‘ হেগো মুন এতো বেখেয়ালি কেন তুমি ? শুভসংবাদ বুঝি এলো এবার। সে কোথায়?’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩২

ঘুমন্ত শাহিনুরকে পাঁজাকোল করে বিরতিহীন হেঁটে চলেছে প্রণয়। তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে বুকে মুখ গুঁজে তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়ছে মেয়েটা৷ প্রতিটি নিঃশ্বাস একদম প্রণয়ের বুকের মধ্যখানে গিয়ে ঠেকছে।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩২ (শেষাংশ)

শেষ রাত তখন। বাঁশির সুরে ঘুম ভেঙে গেলো শাহিনুরের। শোয়া থেকে সটান বসে পড়লো সে৷ তীব্র বেগে কিছুক্ষণ নিঃশ্বাস ছেড়ে পাশে তাকিয়ে উদাম শরীরে প্রণয়’কে দেখতে পেলো৷ লোকটা বেহায়ার মতো খালি গায়ে শুয়ে আছে ছিঃ! লজ্জিত হয়ে চোখ সরিয়ে নিলো সে৷ ভাবলো তাদের বাসর রাত ছিলো আজ। অথচ সে এই মানুষটার সঙ্গে এক বিছানায় শুঁতেও নারাজ ছিলো।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩৩ (দ্বিতীয় খন্ড শুরু)

সব ঘুমানোর পূর্বেই খুলে রেখেছে। কক্ষের ভিতরে ঝকঝকে আলো থাকায় নিজের হাত দু’টো চোখের সামনে মেলে ধরলো। দু’হাত মেহেদি’র রঙে রাঙানো।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩৪

বাচ্চা পেটে আসার পর থেকেই মুনতাহার মনে শুচিবায়ু রোগটি বাসা বেঁধেছে। সব কিছুতেই খুঁতখুঁতে ভাব। সব কিছুতেই সে আঁষটে গন্ধ পায়।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩৫

-‘এভাবে কেন নিয়ে এলেন আমায়?’ জড়তা হীন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে প্রশ্নটি করায় কিঞ্চিৎ অবাক হলো প্রণয়। বয়সের তুলনায় একটু বেশিই বড়ো বড়ো লাগছে শাহিনুর’কে৷ কথার মাঝে ভয় নেই, দৃষ্টিতে লজ্জা নেই।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩৬

-‘আপনি বড়ো সুন্দরী। কিন্তু আমার রোমানার চেয়ে একটু কম।’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩৭

অদ্ভুত এক শক্তি দুমড়ে মুচড়ে দেয় তার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব’কে। একই বিছানায় রাতের পর রাত কাটছে তাদের। বাড়ছে অনুভূতি। আজকাল এই অনুভূতি শাহিনুর’কেও বেশ জব্দ করেছে। বিপরীত লি/ঙ্গের প্রতি মানুষের আকর্ষণ থাকাটাই স্বাভাবিক।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩৮

হিডেন ক্যামেরা তেমনি একটি প্রযুক্তি। এটি গোপন আলোকচিত্রগ্রাহী যন্ত্র। এর সহায়তায় গোপনীয় ভাবে যেমন বিভিন্ন অন্যায়,অনৈতিক কাজ ধরে ফেলা যায়, তেমনি বিভিন্ন অন্যায় কাজ হাসিল করাও যায়।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৩৯

এমন নৃশংস খু/ন পলাশ ব্যতিত আর কে করতে পারে? এই একটি প্রশ্নই পাগল করে দিচ্ছে তাকে। এমন সময় প্রণয় এলো। তাকে দেখে আঁতকে ওঠল সে।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪০

চোখ খুলতেই রাশভারী পুরুষটিকে দেখে অধর কোণে হাসি ফুটে ওঠল। সে হাসির রেখা দীর্ঘস্থায়ী হলো না, নিমিষেই দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেরিয়ে গেল৷ ছলছল দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে মুখ উঁচিয়ে কপালে চুমু খেল।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪১

শুধু নির্লজ্জের মত ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদল আর বলল, -‘বিশ্বাস করেন বড়ো ভাবি, বিশ্বাস করেন নতুন ভাবি আমি কিছু করি নাই। আমারে ছাইড়া দেন আমনেগো পায়ে পইড়া কই, আমারে ছাইড়া দেন।’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪২

-‘যে পরিস্থিতি তৈরি হলে আপনার ছেলেকে আপনি সামলাতে পারবেন না। সে পরিস্থিতি’তে তার স্ত্রী সামলাতে পারবে এই ধারণা কেন হলো!’ সহসা তিনটে প্রাণই আতঙ্কিত হয়ে ওঠল।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪৩

গম্ভীরচিত্তেই ভারি নিঃশ্বাস ফেলে মৃদু পায়ে ঘরে এসে বিছানায় শুইয়ে দিল শাহিনুর’কে। শাহিনুর অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। প্রণয় একটি কথাও বলল না আর। পাশফিরে শুয়ে পড়ল৷ শাহিনুর হাত বাড়িয়ে তার পিঠ স্পর্শ করল।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪৪

মধ্যরাতে মেজো ভাই মাতাল অবস্থায় ঘরে ফিরলেন। এই নিয়ে আব্বা, আম্মার সাথে কথা কাটাকাটি হওয়ার পর আব্বা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪৫

মানুষ’কে বলা হয় আশরাফুল মাখলুকাত। যার অর্থ মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি বা সৃষ্টির সেরা৷ বইয়ের পাতায় এই দু’টো লাইন দেখে শাহিনুরের অধর কোণে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে ওঠল৷ মনটা একদম ভালো নেই তার।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪৬

পঁচিশ ঘন্টা সময় অতিবাহিত হয়ে গেল। প্রণয় নুর একে অপরের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। সবসময় প্রণয় নিজ থেকে শাহিনুরের রাগ, অভিমান ভাঙায়। কিন্তু এবার আর সে নিজে থেকে শাহিনুরের কাছে যায়নি।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪৭

প্রণয় এলো রাত এগারোটার পর৷ আসা মাত্রই এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি সামনে ধরল শাহিনুর। প্রণয় অবাক হয়ে প্রগাঢ় চাহনিতে তাকাল। প্রণয়ের সুগভীর দৃষ্টিজোড়ায় নম্র দৃষ্টি নিক্ষেপ করল শাহিনুর। ইশারায় পানির গ্লাস নিতে বলল৷

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪৮

ভোর রাতে খবর এলো জেবার বাবা আর নেই৷ এ যেন মরার ওপর খরার ঘা। খবর পাওয়ার পর দু’বার জ্ঞান হারিয়েছে জেবা৷ তাকে সামলাচ্ছে শবনম৷ পল্লব গেছে ড্রাইভার’কে ডেকে তুলতে।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪৮ (শেষাংশ)

পাঁচফোড়ন গৃহে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর ফলে দু’টো প্রাণ বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। ঘুম ভাঙলেই তারা যে নিজেদের এক নতুন পৃথিবীতে আবিষ্কার করবে, তা কী ঘুমানোর পূর্বে ঘুণাক্ষরেও টের পেয়েছিল?

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৪৯

ত্বরিতবেগে সাইকেলের পিছনে শাহিনুরকে বসিয়ে দিয়ে নিজেও ওঠে পড়ল। শ্বাসরুদ্ধকর কণ্ঠে বলল, -‘ শক্ত করে ধরে থাকবে আমাকে। একদম চুপ করে বসে থাকবে।’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫০ (তৃতীয় খণ্ড শুরু)

-‘ সুজন তুমি শায়লাকে নিয়ে এবার রুমে যাও। একটা বিছানা পাতাই আছে, তোমাদের আর বিছানার ব্যবস্থা করতে হবে না। বাকিসব ধীরে ধীরে করে নিও।’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫১

-‘ শুধু বউ হলে হয়তো দিতো। ‘ -‘ শুধু বউ নয়? ‘ -‘ যে নারী কোন পুরুষের হৃদয়ের রানি হওয়ার ক্ষমতা নিয়ে জন্মায় সে নারী শুধু বউ হবে কেন? সে তো আমার হৃদয়ের রানি।’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫২

সিগারেটে শেষ দু’টো টান দিতে দিতে সারিম পর্যবেক্ষণ করল সামনের সুশ্রী নারী মূর্তি’কে। কিঞ্চিৎ ত্বরান্বিত হয়ে সিগারেটের শেষ অংশটুকু মাটিতে ফেলে দিলো। ভাবুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে পা দিয়ে পিষেও ফেলল।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫৩

-‘ হাতের নাগাল থেকে যে অপরাধী পালিয়ে যায়, তাকে আর কোন উপায়ে ধরবে তোর সৈন্যদল?’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫৪

-‘ দাদা বড়ো বিপদে পড়ে গর্ভবতী বউ নিয়ে এই অচেনা জায়গায় এসে আশ্রয় নিয়েছি। সারাদিন অনাহারে বউয়ের প্রাণ যায় যায় অবস্থা। একমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতে পারবেন?’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫৫

যে নির্ভরতা বুড়ো,বুড়ি নিজের ছেলের কাছে চেয়েও পায়নি, সেটুকু প্রণয়, শাহিনুরের কাছে পেয়ে বড়োই শান্তি পেলেন। দু’হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রাণভরে দোয়াও করলেন ওদের জন্য।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫৬

আনমনেই হেসে ফেলল প্রণয়। কাঁধে চেপে রাখা গামছা দিয়ে ঘর্মাক্ত মুখমণ্ডল মুছলো। হাতে থাকা পলিথিনের ভেতরে গরু মাংসের তরকারির দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার হাঁটা ধরল।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫৭

চোখমুখের রঙ বিকৃত হয়ে গেল প্রেরণার। ভয়ে থরথর করে কাঁপতে শুরু করল মানুষ’টা। অঙ্গন অসহনীয় কণ্ঠে চিৎকার করে ওঠল। প্রেরণার ভয়ের মাত্রা দ্বিগুণ হয়ে ওঠল।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫৮

অন্যদিনের তুলনায় আজ দ্বারে করাঘাতের শব্দটি বেশিই কড়া ছিল। শাহিনুর ত্বরান্বিত হয়ে বদ্ধ দ্বার উন্মুক্ত করল। প্রিয়তম অর্ধাঙ্গের ক্লান্ত মুখমণ্ডল, চিন্তান্বিত দৃষ্টিজোড়া নজরে পড়তেই মিষ্টি করে হাসলো। তার সে মিষ্টি হাসি দেখে প্রণয়ের দেহ, মনে চলা দাবদাহের অনুভূতি’তে ভাটা পড়ল।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৫৯

সেদিন রাতে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি নিয়ে ভীষণ চিন্তিত ছিল প্রণয়। কয়েক রাত ঠিকভাবে ঘুমাতেও পারেনি৷ কিন্তু গত ক’দিন ধরে শাহিনুরের শরীর ভীষণ খারাপ।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৬০

-‘ আপনি কোথায় যাচ্ছেন? আমাকে রেখে যাবেন না। আমার খুব ভয় হচ্ছে।’ বুকচিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করল, -‘তোমরা কারা? আমাকে ছেড়ে দাও। আমার নুর অপেক্ষা করছে, আমাকে ফিরতে দাও।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৬১

-‘যার হাত ধরে পালিয়েছিলে আজ তাকে ছাড়াই এ গৃহে প্রবেশ করছো? আমার ছেলেটা তোমার কাছ থেকেও নিখোঁজ হয়ে গেল!’ নড়ে ওঠল শাহিনুর। বুকের ভিতর তীব্র কষ্টটা গাঢ় হয়ে ওঠল। অঙ্গন বলল, -‘আম্মা এসব কথা থাক।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৬২

নাতি স্বপ্ন’কে কোলে নিয়ে বসে ছিল প্রেরণা। দ্বারের বাইরে শাহিনুরের কণ্ঠ পেতেই চমকে ওঠল , -‘আম্মা ভেতরে আসব?’ স্বপ্ন’কে সখিনার কোলে দিয়ে নড়েচড়ে বসল প্রেরণা।বলল, -‘আসো আসো দাও দেখি আমার বুবু’কে আমার কোলে দাও।’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৬৩

-‘আমি মরে যাইনি ভাই। সৃষ্টিকর্তা আমাকে যে হালে রেখেছেন এতেই আমি সন্তুষ্ট। আমি কোন কৃত্রিমতা নিয়ে ওর কাছে ফিরতে চাই না। বরং সৃষ্টিকর্তা আমায় যেটুকু দান করেছেন সেটুকু নিয়েই বীরের মতো মাথা উঁচু করে যেতে চাই।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৬৪

খু’নের মাঝেও পার্থক্য রয়েছে।সকল খু’নই অপরাধমূলক নরহত্যা। কিন্তু সব অপরাধমূলক নরহত্যা খু’ন বলে বিবেচিত হয় না। দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৩০০ ধারা বিশ্লেষণ করলে খু’নের ক্ষেত্রেও কয়েকটি উপাদান পাওয়া যায়।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৬৫

-‘এই আপনার এই যাব এই আসব ডাক্তারসাহেব?’ প্রণয়ের চোয়ালজোড়া তীব্র কষ্টে ভারী হয়ে ওঠল। ছোট্ট করে নিশ্বাস ফেলে প্রণয়কে আপাদমস্তক দেখে পুনরায় শাহিনুর প্রশ্ন করল, -‘ওরা আমার এতবড়ো সর্বনাশ কেন করল ডাক্তারসাহেব?’

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৬৬

সকল ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরে মাজহারুল, মুনতাহাকে কঠিন শাস্তি দেওয়ার জন্য উন্মাদের মতো হয়ে গেল প্রেরণা। তাকে শান্ত করতে সকলেই ব্যর্থ হলো। সক্ষম হলো শুধু প্রণয়। বরাবরই জন্মদাত্রী’কে মানাতে বেশ পটু সে।

বাইজি কন্যা | পর্ব – ৬৭ (শেষ পর্ব)

কোন এক গভীর রজনীতে প্রথম দর্শনেই হৃদয় হরণ হয়েছিল ডক্টর প্রণয় চৌধুরীর। প্রচণ্ড শক্ত মন’টা অতিসন্তর্পণে চুরি করে নিয়েছিল মাত্র পঞ্চাদশী এক কিশোরী।

No more posts...