মধ্যরাত্রে সূর্যোদয়
ভালোবাসার মানুষটিকে হারিয়ে, শুচিস্মিতা এখন এক বন্দিনী রাজকন্যে। যে পরিবার একদিন তাদের আলাদা করে দিয়েছিল, আজ তারাই তাকে এক নতুন জীবনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, সাজিয়ে দিচ্ছে বিয়ের পিঁড়িতে। সমাজের কঠিন নিয়মের কাছে হেরে যাওয়া এক মন কি পারবে নতুন করে বাঁচতে, নাকি অতীতের স্মৃতি বুকে নিয়ে সে এক জীবন্ত পাথর মূর্তি হয়েই থেকে যাবে?
বন্দিনী রাজকন্যে
ভালোবাসার মানুষটিকে হারিয়ে, শুচিস্মিতা এক নতুন পরিচয়ে কলেজে পা রাখে। কড়া শাসনের অদৃশ্য কারাগারে থেকেও তার মন পড়ে থাকে অতীতের সেই নিষিদ্ধ রাজপ্রাসাদে। এই প্রাণহীন মূর্তি কি পারবে নতুন জীবনের স্রোতে গা ভাসাতে, নাকি অতীতের স্মৃতিই হয়ে উঠবে তার একমাত্র সঙ্গী?
বিশ্বাসভঙ্গের ছায়া
কলেজে নতুন বন্ধুত্ব মিতার জীবনে কিছুটা স্বস্তি আনলেও, এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা সেই সম্পর্কে ফাটল ধরায়। অন্যদিকে, অতীতের এক নিষ্ঠুর মিথ্যা প্রকাশ পায়, যা তার শেষ আশাটুকুও কেড়ে নেয়। যখন কাছের বন্ধুরাও অচেনা হয়ে যায়, তখন সে কার ওপর বিশ্বাস রাখবে?
শ্বেত অশ্বের স্বপ্ন
এক বন্ধুর অনাকাঙ্ক্ষিত প্রেম নিবেদন মিতার মনে নতুন দ্বিধার জন্ম দেয়, যখন সে তার আরেক বান্ধবীর গোপন অনুভূতি টের পায়। ঠিক তখনই দূর দেশ থেকে আসা এক ক্ষীণ সংবাদের আলোয় তার মৃতপ্রায় আশা আবার জেগে ওঠে। এই নতুন সমীকরণের মাঝে, সে কি পারবে নিজের ভাঙা হৃদয়কে জোড়া লাগাতে, নাকি স্বপ্নের মাঝেই খুঁজে ফিরবে তার হারানো রাজকুমারকে?
আত্মসমর্পণ
অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়, কিন্তু ভালোবাসার মানুষটি ফেরে না। পরিবার তার বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করে। প্রতিবাদের শেষ শক্তিটুকু হারিয়ে, সে শেষবারের মতো স্মৃতির ঘরে পা রাখে, যেখানে তার অতীত ধুলোয় মিশে গেছে। সব আশা বিসর্জন দিয়ে, সে কি পারবে এক অচেনা ভবিষ্যতের কাছে নিজেকে সঁপে দিতে?
নিলামে ওঠা রাজকন্যে
বিয়ের বাজারে এক অচেনা পরিবারের সামনে তাকে দাঁড় করানো হয়। পাত্র এক মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার, যার জগৎ তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কথার ছলে যখন যৌতুক আর নিরাপত্তার দাম ঠিক হয়, তখন সে বুঝতে পারে এই বিয়ে আসলে একটা सौदा। আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে এই নতুন সম্পর্কের খাঁচায় কি সে বন্দি হবে?
বলির আয়োজন
বিয়ের সানাইয়ের সুরের আড়ালে বিদায়ের সুরও বেজে ওঠে। কাছের মানুষেরা একে একে দূরে সরে যেতে থাকে। গায়ে হলুদের রঙ যখন তার অতীতকে ঢাকতে চেষ্টা করে, তখন এক দাদার আত্মত্যাগ তার শূন্য হৃদয়কে আরও রক্তাক্ত করে দিয়ে যায়। সব বন্ধন ছিন্ন করে, এই সাজানো পুতুল কি পারবে শেষ পর্যন্ত বিয়ের পিঁড়িতে বসতে?
সপ্তপদীর আগুন
বিয়ের মন্ত্র আর হোমের আগুনের সামনে সে বসে এক প্রাণহীন মূর্তি হয়ে। সপ্তপদীর প্রতিটা পাকে সে নিজের অতীত, স্বপ্ন আর পরিচয়কে বিসর্জন দেয়। সিঁথির সিঁদুর মুছে দেয় তার কপালে লেখা ভালোবাসার শেষ চিহ্নটুকুও। এই আত্মত্যাগের পর যে নতুন ‘শুচি’-র জন্ম হলো, তার হৃদয়ে কি আর কোনোদিন প্রাণের স্পন্দন জাগবে?
খাঁচার পাখি
ভালোবাসার মানুষটির ফিরে আসার সব আশা নিভে গেছে। এক প্রাণহীন রাজকন্যে তার সোনার খাঁচায় ফিরে আসে। পরিবার যখন তার বিয়ের জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়, সে শেষবারের মতো তার হারানো অতীতের দরজায় কড়া নাড়ে। স্মৃতির ঘরে তালা দিয়ে, সে কি পারবে এক অচেনা ভবিষ্যতের কাছে চিরতরে আত্মসমর্পণ করতে?
নিয়তির বিধান
এক অচেনা পাত্রের সামনে তাকে দাঁড় করানো হয়, যার সাথে তার জীবনের কোনো মিল নেই। আলোচনার টেবিলে যখন তার ভবিষ্যৎ জীবনের শর্ত আর মূল্য নির্ধারণ করা হয়, সে বুঝতে পারে তার আর ফেরার কোনো পথ নেই। এক প্রাণহীন পুতুল কি পারবে এই নতুন সম্পর্কের বোঝা বইতে?
শেষ অধ্যায়?
বিয়ের দিন যত এগিয়ে আসে, শুচিস্মিতার মনের সব প্রতিবাদ থেমে যায়। সে তার শেষ আশাটুকুও বিসর্জন দিয়ে, ভাগ্যের হাতে নিজেকে সঁপে দেয়। এই কি তবে তার জীবনের শেষ অধ্যায়, নাকি নিয়তি অন্য কিছু লিখে রেখেছে?
অগ্নির কাছে আত্মসমর্পণ
বিয়ের পিঁড়িতে বসে সে এক সাজানো পুতুল। হোমের আগুনের দিকে তাকিয়ে সে শেষবারের মতো তার অতীতকে স্মরণ করে। সপ্তপদীর প্রতিটি ধাপে সে নিজের সত্তা, ভালোবাসা আর স্বপ্নকে আহুতি দেয়। সিঁথির সিঁদুর তাকে এক নতুন পরিচয় দিলেও, তার ভেতরটা ছাই হয়ে যায়। এই আত্মবলিদানের পর যে ‘শুচি’-র জন্ম হল, সে কি আর কোনোদিন নিজের হারিয়ে যাওয়া ‘পরী’-কে খুঁজে পাবে?