অগোচরে তুমি - এর সকল পর্ব একসাথে

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১

ভোর সাড়ে চারটা।প্রথম আযানের ধ্বনি কর্ণকুহরে প্রবেশ করতেই ঘুম ভেঙে যায় রেনুফা বেগমের।চটজলদি উঠে ওযু করে চলে যান নামাজ খানায়।আলমারি থেকে কুরআন শরীফ আর জায়নামাজ নিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় জায়নামাজ বিছিয়ে সামনেই কুরআন শরীফটা রাখেন।নামাজ শেষ করেই কুরআন তিলাওয়াত করতে বসেন।এখনো চারপাশ থেকে আযানের ধ্বনি ভেসে আসছে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২

স্টেডিয়ামের প্রত্যেকটা কোণায় কোণায় লোক লাগিয়ে রেখেছে অর্ক!ড্রেসিং রুমে যাওয়ার রাস্তার পাশের গ্যালারিতে একদম কিনার ঘেঁষে থাকা সিটের টিকিট টা অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অর্কের জন্য জোগাড় করেছে।এখানে বসে আজকে কিরণ চৌধুরীর প্রত্যেকটা কদমের পই পই করে হিসাব রাখবে বলে।হুডির আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে দর্শক সারিতে বসে আছে অর্ক।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৩

– এই তোরা আবার এসেছিস? দরজা খুলে খুন্তি উঁচিয়ে নিয়ে কথাটা বললেন আয়েশা বেগম।কিন্তু সামনে থাকা ব্যক্তিটিকে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন।খুন্তি উঁচিয়ে রাখা হাতটা চটজলদি নামিয়ে নেন।বিস্মিত হয়ে বললেন, – মেহেনূর তুমি! আয়েশা বেগমের রণচণ্ডীর রূপ দেখে ভয় পেয়ে গিয়ে কিছুটা পিছিয়ে যায় মেহেনূর।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৪

প্রেমিকার কাছে প্রতি রাতে নিয়ম করে ব্যক্তিগত ছবি চাওয়া ছেলেটাও দিনশেষে একটা লক্ষ্মী বউয়ের স্বপ্ন দেখে।টাইটফিট পোশাক পড়ে,রকমারি ফ্যাশন করে, বুক উঁচিয়ে চলা মেয়েটা ছেলেদের গার্লফ্রেন্ড হিসেবেই উপযুক্ত!ঘরের বউ হিসেবে নয়!অথচ বোকা মেয়ে গুলো ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে, ভালোবাসাকে আকঁড়ে ধরে রাখতে গিয়ে নিজের মূল্যবান সম্পদ নষ্ট করে দেয়।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৫

– এই বাড়িতে পা রাখার সাহস কি করে হলো তোর? গেস্ট রুম থেকে কথাটা অর্কের কানে আসতেই থমকে দাঁড়ায়।সামনে থাকা মেহরাব সাহেবের দিকে ভয়ার্ত চোখ তাকিয়ে আছে অর্ক।মেহরাব সাহেবের চোখ থেকে যেন আগুন ঝড়ছে।মুহূর্তেই কান গরম হয়ে আসে অর্কের।হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিয়ে দাঁত কড়মড় করে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বললো,

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৬

গত কয়েক দিন এনজিওতে আসতে না পারায় অর্কের অনেক কাজ জমে গেছে।হাতে থাকা ঘড়িটায় বারবার তাকাচ্ছে আর ফাইলে কিছু লিখছে।অনেকটা রাত হয়ে গেছে তাই অয়নকে দিয়ে তনিমা আর কলিকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে।দিহাদ অর্ককে ছাড়া বাসায় ফিরবে না।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৭

নেশায় ভোর হয়ে ব্যালকনিতেই ঘুমিয়ে পড়েছিল অর্ক।সূর্যের তীর্যক রশ্মি চোখে মুখে পড়তেই বিরক্তিতে কপাল কুচকে আসে অর্কের।চোখ খুলে নিজেকে মেজেতে বসে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে কিঞ্চিৎ বিস্মিত হয় অর্ক।পরমুহূর্তেই গত রাতের কথা মনে পড়তেই গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ায়।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৮

রাওনাফ সোজা ওদের বাড়ির সামনে এনে গাড়ি থামায়।গাড়ি থামতেই মেহেনূর তাড়াতাড়ি করে নেমে দৌঁড়ে বাড়ির ভিতরে চলে যায়।অর্ক মেহেনূরের দিকে এক পলক তাকিয়ে গাড়ি থেকে নেমে যায়।রাওনাফ সিট বেল্ট খুলতে খুলতে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে রোশনি এখনো ল্যাপটপেই মুখ গুজে বসে আছে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৯

বিকালের দিকে রাওনাফ রোশনি আমার মেহেনূর শহর দেখবে বলে বেড়িয়েছে।যাওয়ার সময় অর্ককেও এক প্রকার জোর করেই নিয়ে আসা হয়েছে।অর্ক কিছুতেই আসতে চাইছিল না। কিন্তু রোশনি কি আর কম চালাক মেয়ে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১০

রোশনি চমকে গিয়ে চটজলদি উঠে দাঁড়ায়। সামনে এগিয়ে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করছে পানির মধ্যে কি পড়লো।লেকের ধারে ফুল বিক্রি করছিল ছোট ছোট কয়েকটা ছেলে মেয়ে।মেহেনূর ওদের সাথে খুব খুশমেজাজে গল্প করছিল।কিন্তু হঠাৎ করেই পানিতে এমন ধড়াম করে শব্দ হওয়াতে ওউ চমকে উঠে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১১

– তোদের দুজনেরই হঠাৎ করে এমন ঠান্ডা লেগে গেলো কি করে?বিকালে বাসা থেকে তো দিব্যি ভালো বের হয়েছিলি। আয়েশা বেগম রোশনি আর রাওনাফকে ডিনারের জন্য উনাদের বাসায় নিয়ে এসেছে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১২

অর্কের সাথে রাওনাফ পুরো এনজিওটা ঘুরে দেখলো।রাওনাফ দেখলো এখানে একটা অনাথ আশ্রম আছে সাথে একটা স্কুলও আছে।রাওনাফ অনাক হয়ে অর্ককে জিজ্ঞাস করলে অর্ক বললো,বাচ্চারা এখানেই থাকে আর এখানেই পড়াশোনা করে।অয়ন, কলি, তনিমা আর দিহাদ ওদের ক্লাস নেয়।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১৩

গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো মেহেনূর।অর্ক মেহেনূরের চলে যাওয়া পথের দিকে এক পলক তাকিয়ে ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে গাড়ির উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়।দ্রুত পায়ে এগিয়ে ড্রাইভিং সীটে গিয়ে বসে অর্ক।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১৪

– আন্টি আপনার ছেলের কি কোনোদিনও আক্কেল জ্ঞান হবে না? দিহাদ করুন চোখে তাকিয়ে আছে আয়েশা বেগমের দিকে।কালকে বিকালে এনজিও থেকে অর্ক বেড়িয়ে আসার পর অর্কের ফোনের অনেকগুলো কল দিয়েছিল দিহাদ।কিন্তু রিসিভ করে নি ও।তারপর সন্ধ্যার দিকেও অনেক গুলো কল দেয় দিহাদ।অর্ক তখনও ওর কল রিসিভ করে নি।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১৫

অর্ক বিষন্ন মনে এনজিও থেকে বেড়িয়ে সোজা মেহেনূরদের বাড়িতে চলে আসে।তারপর ওখান থেকে রাওনাফকে নিয়ে এয়ারপোর্টে চলে যায়।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১৬

যখন অর্কের ঘুম ভাঙে তখন ঘড়ির কাঁটা সাড়ে এগারোটার গন্ডি পেরিয়ে বারোটার ঘর ছুঁইছুঁই।বাড়িতে বিয়ের আমেজ বলে কথা।হট্টগোল হবে এটাই তো স্বাভাবিক।মেহেনূরদের বাসার হৈচৈও অর্কদের বাসা থেকে শুনা যাচ্ছে।আত্মীয় স্বজনরা সবাই আসতে শুরু করেছে।এত হৈহল্লার মধ্যেও অর্ক সজাগ হয় নি!অর্কের ঘুম ভাঙে রাওনাফের চিৎকারে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১৭

ঘুম থেকে জেগে প্রতিবারের ন্যায় আজো অর্ক নিজেকে ব্যালকনিতে আবিষ্কার করলো।তবে অন্যদিনের তুলনায় আজকে অর্কের সাথে ব্যাতিক্রম ঘটনা ঘটেছে।প্রতিবার এই ব্যালকনিতে ঘুমিয়ে যাওয়ার পরে হয়তো আয়েশা বেগমের ডাকাডাকিতে অর্কের ঘুম ভাঙে

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১৮

– তোমার বিয়ে হয়েছে? আমেনা বেগম মুখভর্তি পান চিবাতে চিবাতে প্রশ্ন ছুড়লেন তাঁর পাশেই বসে থাকা মেহেনূরের দিকে।রাওনাফ আর রোশনির বিয়ে উপলক্ষে অর্কদের গার্ডেনটাকে খুব সুন্দর করে ডেকোরেশন করা হয়েছে।এই গার্ডেনেই হলুদ আর বিয়ের অনুষ্ঠানটা করা হবে। এখন রাওনাফ আর রোশনির ফটোশুট চলছে।স্টেজের সামনে পেতে রাখা আসনগুলোয় সবাই বসে আছে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ১৯

– কিরে তুই এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? আচমকায় মায়ের গলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে আয়েশা বেগম একটু চমকে উঠলেও পরমুহূর্তেই মায়ের দিকে ফিরে নরম কন্ঠে বললো

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২০

টস রাউন্ডে জিতেছে অর্কের টিম।এখন ওদের টিম থেকে যেকোনো একজন নিজের পছন্দের যেকোনো একটা মুভির গান দিয়ে প্রথম পারফর্ম করার সুযোগ পাবে।আর প্রতিপক্ষ দলকে একটা গান ওরা সিলেক্ট করে দেবে এবং ওই গানেই ওদের নাচতে হবে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২১

চারদিকের বিয়ের আমেজটা অনেকটা কমে গেছে।কালকের ইভেন্টের পর থেকে আর কোনো কোলাহল থাকবে না।চতুরদিকে নিকষকালো অন্ধকার।ভাদ্রের চাঁদশূন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে মেহেনূর।রোশনি আর রাওনাফের বিয়েটা খুব সুন্দর মতোই সম্পূর্ণ হয়েছে।গতকালের খেলার নিয়ম অনুযায়ী মেহেনূর বলেছিল, আজকে অর্কের টিমকে যেকোনো একটা টাস্ক দিবে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২২

ঘড়ির কাটা বলছে দশটা বেজে পয়তাল্লিশ মিনিট।কাজী অফিসের ভেতরে বসে আছে কলি আর তনিমা।আর দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে ছটফট করছে মেহেনূর।সূর্যের প্রখরতার জন্য চোখ ধরা যাচ্ছে না।ডান হাতে থাকা মোবাইলটা বাম হাতে নিয়ে ডান হাতটা কপালের উপর দিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি মেলে রাস্তার দিকে তাকালো।সারা রাস্তায় একটা গাড়িও দেখা যাচ্ছে না।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২৩

চারদিকে শুনশান নীরব নিঃস্তব্ধতায় ঘেরা।ফাঁকা রাস্তায় খুব ধীর গতিতে ড্রাইভ করছে মেহেনূর।মাঝে মধ্যে দু একটা গাড়ি ক্রস করছে।গাড়ির ভেতরের লাইটগুলো অফ করে দিয়ে সামনের জানালাগুলো খোলাই রেখেছে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২৪

এয়ারপোর্টে দু’জোড়া কাপলকে বিদায় দিয়ে ফিরতি পথে মেহেনূর,তনিমা,অর্ক আর অয়ন।রাওনাফরা এবং দিহাদরা একসাথেই কক্সবাজার যাচ্ছে,হানিমুনে।এয়ারপোর্টে আসার পর আরেক দফায় সারপ্রাইজড হয় দিহাদ কলি সাথে রাওনাফ রোশনিও।ওদের একসাথে কক্সবাজার যাওয়ার বিষয়টা একে অপরের কেউই জানতো না।রাওনাফ আর রোশনিকে মেহেনূরই কক্সবাজার পাঠাচ্ছে।ওদের এই ট্রিপে রাওনাফ দিহাদ দুজনেই খুব খুশিই হয়।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২৫

প্রথম প্রথম প্রেমে পড়লে একটু আধটু পাগলামি না করলে চলে?অবশ্য সেটা নিজের ইচ্ছায় করতে হয় না।প্রেমের ভূত মাথায় চাপলে এমনিতেই তাদেরকে দেখে পাগলই মনে হয়।যেমনটা এখন তনিমাকে দেখে মনে হচ্ছে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২৬

আকস্মিক হাতে হেঁচকা টানে চমকে উঠলো মেহেনূর।চটজলদি বাঁ হাতে চোখের বাঁধনটা খুলে সামনে তাকালো।অর্ক চোয়াল শক্ত করে মেহেনূরের দিকে তাকিয়ে আছে।অর্ককে সামনে দেখে মেহেনূরের কপাল কুঁচকে আসে।অর্কের দিক থেকে চোখ সড়িয়ে পুরো ছাদে একবার চোখ বুলালো মেহেনূর।পুরো ছাদ ফাঁকা।ছাদে রোশান,জীম আর ও কানামাছি খেলছিল।কিন্তু এখন কাউকেই দেখতে পাচ্ছে না।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২৭

গাঙিনীর পাড়েই গাঙচিল নামক ছোট্ট ক্যাফেটার ভেতরে গোল টেবিলের চার আসনের তিনটা আসন দখল করলো মেহেনূর,তনিমা আর শান্ত।অবশিষ্ট খালি আসন খানি আপাতত শান্তর স্যুটের দখলে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২৮

জানালার সামনের পর্দাটা সড়িয়ে দিতেই জানালার কাঁচ ভেদ করে বাহিরের তীর্যক রশ্মি হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকছে।প্রবল উত্তাপের প্রখরতায় চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে নেয় মেহেনূর।ঝটপট হাতের পিঠ ঠেকায় চোখের উপর।চোখ বন্ধ রেখেই আহ্লাদী গলায় বললো, – ভাবী প্লীজ আরেকটু ঘুমাতে দাও না। মেহেনূরের বিছানাটা একদম জানালার কিনার ঘেঁষে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ২৯

অর্ক ডিনার শেষ করে নিজের ঘরে এসে ল্যাপটপ নিয়ে বসেছে।বৃদ্ধাশ্রম আর অনাথাশ্রম মিলিয়ে যে বিল্ডিংটা করা হবে ওইটারই ডিজাইন দেখছে।তনিমা আজ আবার এনজিওতে আসে নি,সাথে ওই হতচ্ছাড়া অয়নটাও।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৩০

অমাবস্যার মধ্যরাতে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে নীরবে চোখের উষ্ণ নোনা জন্য বিসর্জন দিচ্ছে তনিমা।নিকষকালো অন্ধকারে শূন্যে দৃষ্টি স্থির রেখে নির্বিকার চিত্তে তাকিয়ে আছে।চারদিকে তপ্ত হাওয়া বইছে তীব্র ভাবে।দূরের আকাশে ক্ষণে ক্ষণেই বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।মাঝেমধ্যেই কোথা থেকে যেন শীতল হাওয়া এসে আঁচড়ে পড়ছে ওর চোখে মুখে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৩১

নিঃস্তব্ধ রাতে মাউথ অর্গানে সুর তুলে ল্যাম্পপোস্টের আলোর পথ ধরে হেঁটে চলা মানবীর দিকে তাকিয়ে আছে টরেন্টোবাসী।তাঁদের মধ্যে বাঙালীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।চাকরীর সুযোগ সবচেয়ে বেশী এবং সবচেয়ে বেশী বাঙালী এই টরেন্টো অর্থাৎ এই অন্টারিও প্রভিন্সে বসবাস করে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৩২

– কেমন আছো মেহেনূর? সবাই যখন ডগিরাকে নিয়ে ব্যস্ত ঠিক তখনই পরিচিত মানুষের ক্ষীণ কন্ঠস্বর কর্ণকুহরে প্রবেশ করতেই আঁতকে উঠলো মেহেনূর।বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকালো দরজার দিকে।অর্ক এসেছে।সবার সাথে যে অর্কও আসতে পারে এটা ওর মাথায়ই আসে নি।ডগিরাকে ঘিরে বসে থাকা মানুষগুলোর দিকে এক পলক তাকালো মেহেনূর।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৩৩

ক্ষণে ক্ষণেই আতশবাজির জ্বলকানিতে আলোকিত হয়ে উঠছে টরেন্টো শহর।শহরের অলিগলির পথ থেকে শুরু করে নগর প্যাচানো লেকের পাড় রঙবেরঙের আলোয় মুখরিত।রাস্তায় বড় বড় বিলবোর্ড গুলোয় আজ রকস্টার কিরণের ছবি।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৩৪

এক জোড়া চোখ অস্থির।কপালের ঘাম চোখের পশ্চাৎ বেঁয়ে গড়িয়ে পরছে।দুরুদুরু বুকে শ্বাস ফেলছে খুব সতর্ক ভাবে।কিঞ্চিৎ শব্দ হলেই হয়তো ধরা পরে যাবে,এই ভয়ে।আলমারির খুব কাছে কারোর অস্তিত্ব টের পেয়ে আরেকটি অস্তিত্ব সাবধানে সটানভাবে দাঁড়ায়।দাঁড়ানোর ভঙ্গিমা দেখে মনে হচ্ছে ফাঁসির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছে।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৩৫

একটা স্টেজ শো তে কিরণকে বলতে শুনেছিলাম,“মানুষ আবহাওয়ার সাথে সম্পর্কযুক্ত!মানুষ তার চরিত্রের সাথে মুড অনুযায়ী পাল্টায়!” কিরণের বলা সেই কথাটার মানে আমি কখনই বুঝতে পারতাম না।আমরা জানি সময়ের সাথে সাথে প্রতিটা মানুষই পরিবর্তনশীল।

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৩৬

রান্নাঘরের টুকটাক শব্দ ছাড়া পুরো বাড়িই নিঃশব্দ।ফাঁকা বাড়িতে অবশিষ্ট শুধু মেহেনূর আর অর্ক।কলি আর দিহাদ ওদের বাসায় গিয়েছে।সাথে ওহি আর তিন্নিকেও নিয়ে গেছে।মেহেনূর কনসার্টে যাওয়ার আগে ওখান থেকেই ওদেরকে নিয়ে যাবে।এখন মেহেনূর অর্কের জন্য রান্না করা খাবারগুলো গরম করছে।সকালে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে নিজের হাতে অর্কের জন্য এই খাবারগুলো রান্না করেছিল

অগোচরে তুমি | পর্ব – ৩৭ | সর্বশেষ পর্ব

বুকে থাকা চাপা যন্ত্রণার মধ্যেও ফিক করে হেসে উঠলো অর্ক।মেহেনূরকে জড়িয়ে রাখা হাতগুলোও আলগা হয়ে আসে।সুযোগ বুঝে মেহেনূরও দূরে সড়ে দাঁড়াতে চাইলে অর্ক আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।

No more posts...