অগোচরে তুমি
সমাপ্তঅর্ক তার প্রতিবেশী মেহেনূরকে একজন সাধারণ, বিরক্তিকর মেয়ে বলেই জানে। কিন্তু সে অগোচরে আসক্ত এক রহস্যময়ী রকস্টারের প্রতি, যার পরিচয় কেউ জানে না। কী হবে যখন অর্ক জানতে পারবে, তার অপছন্দের প্রতিবেশী আর পছন্দের রকস্টার আসলে একই মানুষ? নিয়তির এই লুকোচুরি খেলা কি তাদের এক করবে, নাকি চিরতরে দূরে ঠেলে দেবে?
সিজন ১
(৩৭ পর্ব)অর্ক তার প্রতিবেশী মেহেনূরকে একজন সাধারণ, বিরক্তিকর মেয়ে বলেই জানে। কিন্তু সে অগোচরে আসক্ত এক রহস্যময়ী রকস্টারের প্রতি, যার পরিচয় কেউ জানে না। কী হবে যখন অর্ক জানতে পারবে, তার অপছন্দের প্রতিবেশী আর পছন্দের রকস্টার আসলে একই মানুষ? নিয়তির এই লুকোচুরি খেলা কি তাদের এক করবে, নাকি চিরতরে দূরে ঠেলে দেবে?
প্রতিদিন সকালে মেহেনূরের বেসুরো রেওয়াজ অর্কের বিরক্তির কারণ। সে জানে না এই সাধারণ মেয়ের আড়ালেই লুকিয়ে আছে তার স্বপ্নের রকস্টার। অর্কের এই ঘৃণা আর অজানা ভালোবাসা কি একই বিন্দুতে এসে মিলবে?
হাজারো দর্শকের ভিড়ে অর্ক অপেক্ষা করছে তার স্বপ্নের রকস্টার কিরণ চৌধুরীকে এক ঝলক দেখার জন্য। কিন্তু কনসার্ট শেষে যখন সেই সুযোগ আসে, তখন এক অপ্রত্যাশিত আক্রমণে সব ওলটপালট হয়ে যায়। কে এই রহস্যময়ী, যার সুরের জাদুতে মোহিত অর্ক, তার শক্তির আঘাতে আজ পর্যুদস্ত?
অর্কের অসুস্থতার খবর পেয়ে পায়েস নিয়ে হাজির হয় মেহেনূর, কিন্তু বিনিময়ে পায় শুধু অপমান। অর্ক জানে না, তার প্রতিটি রূঢ় কথা নীরবে শুনে যাচ্ছে মেহেনূর। অনুশোচনার আগুনে পুড়ে অর্ক কি পারবে নিজের ভুল বুঝতে?
কিরণ চৌধুরীর কনসার্টে আজ গানের চেয়েও বেশি উচ্চারিত হচ্ছে জীবনের কঠিন বাস্তবতা। এক মেয়ের আত্মহত্যার চেষ্টা কিরণকে বাধ্য করে কিছু অব্যক্ত কথা বলতে। তার বলা কথাগুলো কি শুধু ওই মেয়ের জন্য, নাকি এর আড়ালে লুকিয়ে আছে তার নিজের জীবনের কোনো না বলা কষ্ট?
নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চাইতে এসে অর্ক দেখে মেহরাব সাহেব লাঠি হাতে তেড়ে আসছেন। ভয়ে জড়সড় অর্ক কি পারবে নিজেকে বাঁচাতে? নাকি মেহেনূরের বলা কোনো মিথ্যার জালে ফেঁসে গেছে সে?
বিয়ের চাপে দিশেহারা অর্ক। একদিকে পরিবারের চাপ, অন্যদিকে অধরা কিরণের জন্য মন পোড়ে। গভীর রাতে সিগারেটের ধোঁয়ায় সে কি নিজের কষ্ট উড়াচ্ছে, নাকি তার অগোচরে থাকা ভালোবাসার জন্য একরাশ কবিতা লিখছে?
রোশনির চোখে অর্ক একজন সাধারণ ড্রাইভার। এই ভুল ধারণা ভাঙার আগেই ঘটে যায় নানা ঘটনা। সবার সামনে নিজের পরিচয় গোপন রেখে অর্ক কি কোনো নতুন খেলা শুরু করেছে, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে?
একটি সাধারণ লেকের ধারে অর্ক আর রাওনাফের অতীত এসে দাঁড়ায় বর্তমানের সামনে। পনেরো বছর আগে ভেঙে যাওয়া বন্ধুত্ব আর ভুল বোঝাবুঝির আড়ালে থাকা সত্যটা কি এবার প্রকাশ পাবে? রোশনির বলা কথাগুলো কি পারবে পুরনো ক্ষত সারাতে?
অতীতের সত্য জানার পর অনুশোচনায় দগ্ধ অর্ক। রাওনাফের প্রতি করা অন্যায়ের ভার সে কিভাবে বইবে? লেকের শীতল জলেও যখন মনের আগুন নেভে না, তখন দুই বন্ধুর সম্পর্ক কি পারবে পুরনো দিনের মতো সহজ হতে?
হঠাৎ করে অর্ক আর রাওনাফের ঠান্ডা লাগাটা কি শুধুই অসুস্থতা, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে? বন্ধুদের অপ্রত্যাশিত আগমনে আর ভালোবাসার আক্রমণে রাওনাফ কি পারবে আসল সত্যিটা লুকাতে?
গভীর রাতে বাড়ি ফেরার পথে গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়ে মেহেনূর। ক্লান্তিতে ঢলে পড়া মাথাটা যখন অর্কের কাঁধে আশ্রয় নেয়, তখন অর্কের মনে কি নতুন কোনো অনুভূতির জন্ম হয়? এই নীরব মুহূর্তটি কি তাদের সম্পর্কের মোড় ঘুরিয়ে দেবে?
হঠাৎ মেহেনূরের চোখের অপারেশনের খবর আর চশমা ছাড়া তার নীল চোখ দেখে অর্কের মনে এক নতুন রহস্যের জন্ম হয়। এই চোখ জোড়া তার খুব চেনা। কিরণ চৌধুরীর কনসার্টে দেখা সেই চোখ কি মেহেনূরের? অর্ক কি পারবে এই রহস্যের জট খুলতে?
কিরণ চৌধুরীর শেষ কনসার্টের খবর অর্কের কাছে বজ্রপাতের মতো আসে। তার সাথে সাথে এনজিওতে আসা বিশ লক্ষ টাকার চেক অর্কের মনে সন্দেহের আগুনকে আরও উস্কে দেয়। কিরণ কি চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছে, নাকি এই বিদায় নতুন কোনো রহস্যের সূচনা?
বাড়িতে বিয়ের চূড়ান্ত আলোচনা, অথচ অর্ক উধাও। সবার প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে যখন সে ফেরে, তখন তার আচরণে ফুটে ওঠে একরাশ উদাসীনতা। এই বিয়ে কি অর্কের জীবনে নতুন অধ্যায়, নাকি এক অসমাপ্ত গল্পের বোঝা?
বাড়ির সাজসজ্জার মাঝে সিঁড়ি থেকে পড়ে যাওয়া মেহেনূরকে যখন অর্ক কোলে তুলে নেয়, তখন তার নীল চোখের গভীরে অর্ক এক চেনা রহস্য খুঁজে পায়। এই চোখ কি শুধুই মেহেনূরের, নাকি এর আড়ালে লুকিয়ে আছে তার স্বপ্নের কিরণ?
হলুদের অনুষ্ঠানে বোরিং মেহেনূরের এক নতুন রূপ দেখে অবাক সবাই। নাচে-গানে সে যখন অর্কের দলকে চ্যালেঞ্জ জানায়, তখন অর্কের অহংকার আর মেহেনূরের আত্মবিশ্বাস এক নতুন লড়াইয়ের জন্ম দেয়। কে জিতবে এই খেলায়?
গভীর রাতে ছাদে দিহাদ আর কলির গোপন কথোপকথন শুনে ফেলে মেহেনূর। ভালোবাসার স্বীকারোক্তি আর বিচ্ছেদের আশঙ্কায় ভরা সেই রাতে মেহেনূর কি পারবে দুটি মনকে এক করতে, নাকি নীরব দর্শক হয়েই থাকবে?
মেহেনূরের এক সিদ্ধান্তে কাজী অফিসে বিয়ের আসর। কলি কনের সাজে, কিন্তু বর কে? দিহাদের বিস্ময় আর অর্কের বিভ্রান্তি কি এক নতুন নাটকের জন্ম দেবে, নাকি দুটি ভালোবাসার গল্প পাবে তার পূর্ণতা?
ফাঁকা রাস্তায় মেহেনূরের গাড়ির পিছু নেয় এক রহস্যময় বাইকার। এই অনুসরণ কি কোনো বিপদের সংকেত, নাকি কোনো চেনা মানুষের লুকোচুরি খেলা? মেহেনূরের বুদ্ধির জালে কি ধরা পড়বে সেই রাতের আগন্তুক?
ছাদে অর্কের মুখোমুখি মেহেনূর। অর্কের মনে জমে থাকা সব প্রশ্নের উত্তর যখন মেহেনূর দেয়, তখন অর্ক বুঝতে পারে তার ধারণা কতটা ভুল ছিল। অনুশোচনায় দগ্ধ অর্ক কি পারবে তার ভুলের মাশুল দিতে?
নিজের অগোচরেই অর্ক তার ভালোবাসার কথা প্রকাশ করে ফেলে বিবিজানের কাছে। কিন্তু তার কল্পনার রানী আর বাস্তবের মেহেনূরকে সে আলাদা করে রেখেছে। অর্কের এই দ্বৈত সত্তা কি তাকে সঠিক পথের সন্ধান দেবে?
তনিমার জীবনে ভালোবাসার প্রথম অনুভূতি। কিন্তু যার জন্য এত ব্যাকুলতা, সে কি তার হবে? নাকি প্রথম প্রেমটা শুধু একরাশ কষ্ট হয়েই থেকে যাবে? গাঙিনীর পাড়ে বসে মেহেনূর কি পারবে তার বন্ধুর ভাঙা মন জোড়া লাগাতে?
মেহেনূরের বিয়ের কথা শুনে অর্কের মনে যে ঝড় উঠেছে, তার কারণ কি শুধুই একটা ভুল বোঝাবুঝি? নাকি এর আড়ালে লুকিয়ে আছে অন্য কোনো অনুভূতি? অর্ক কি পারবে নিজের অজান্তে করা ভুলের চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে?
অর্ক সরাসরি মেহেনূরকে বিয়েতে অসম্মতি জানাতে বলে। তার হৃদয়ে যে শুধু কিরণের বাস। মেহেনূর কি অর্কের এই কঠিন শর্ত মেনে নেবে, নাকি নিজের আত্মসম্মান রক্ষায় নতুন কোনো পদক্ষেপ নেবে?
ভালোবাসার মানুষটি যখন অন্যের, তখন তনিমার মনে জ্বলে ওঠে প্রতিশোধের আগুন। সে কি পারবে শান্তকে দেখিয়ে দিতে যে তাকে হারানো কত বড় ভুল ছিল? নাকি এই প্রতিশোধের খেলায় সে নিজেই হারিয়ে যাবে?
বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার মুহূর্তে মেহেনূরের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে অর্কের বলা কিছু তিক্ত কথা। কিরণ চৌধুরীর সাথে তার তুলনা যে তাকে কতটা কষ্ট দিয়েছে, সেটা কি অর্ক কখনো বুঝতে পারবে? এই বিদায় কি তাদের মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়িয়ে দেবে?
মেহেনূরের চলে যাওয়ার পর অর্কের জীবনে নেমে আসে একাকিত্ব। বাবা-মায়ের নীরব অভিমান আর বন্ধুদের কটাক্ষ তাকে বুঝিয়ে দেয়, সে এক মরিচীকার পেছনে ছুটছে। কিরণের প্রতি তার এই অন্ধ ভালোবাসা কি তাকে সত্যিটা দেখতে দেবে?
বাসর রাতে শান্তর কাছে আসে এক ভয়ঙ্কর খবর। আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ এক জাহাজ, যার গন্তব্য বারমুডা ট্র্যাঙ্গেল। ভালোবাসার মানুষকে রেখে শান্ত কি পারবে দেশের ডাকে সাড়া দিতে? তনিমার অপেক্ষার প্রহর কি তবে দীর্ঘ হতে চলেছে?
টরেন্টোর নিঃস্তব্ধ রাতে মাউথ অর্গানের সুরে ভেসে বেড়ায় কিরণ। তার এই রাত্রিবিলাস কি শুধুই একাকীত্ব কাটানোর উপায়, নাকি এর আড়ালে লুকিয়ে আছে না বলা কোনো গল্প? শহরের মানুষ তার সুরে মুগ্ধ, কিন্তু তার মনের খবর কি কেউ জানে?
বন্ধুদের অপ্রত্যাশিত আগমনে মেহেনূরের বাড়িতে খুশির আমেজ। কিন্তু অর্কের উপস্থিতি মেহেনূরকে দাঁড় করায় এক নতুন পরিস্থিতির সামনে। ডগিরার অদ্ভুত আচরণ কি কোনো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে? এই পুনর্মিলন কি পুরনো সম্পর্কগুলোকে নতুন করে সাজাবে?
মেহেনূরের জন্মদিনে এক অপ্রত্যাশিত অতিথি—কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো। এই সাধারণ মেয়ের সাথে তার এমন কী সম্পর্ক? অর্কের মনে জমে থাকা সন্দেহের মেঘ কি আরও ঘনীভূত হবে, নাকি কোনো নতুন সত্যের আলো দেখতে পাবে সে?
মেহেনূরের ঘরে গোপন তথ্যের খোঁজে এসে অর্ক এক রহস্যময় আলমারির মধ্যে আটকা পড়ে। ডগিরার অন্তর্ধান আর আলমারির ভেতরের অদ্ভুত শব্দ অর্ককে এক নতুন পৃথিবীর সন্ধান দেয়। এই পৃথিবী কি কিরণের, নাকি মেহেনূরের কোনো গোপন ষড়যন্ত্র?
এক গোপন লিফটের মাধ্যমে অর্ক পৌঁছে যায় এক অচেনা জগতে—'কিরণের দুনিয়া'। চারদিকে শুধু কিরণের ছবি আর তার অস্তিত্বের ছাপ। মেহেনূরের বাড়ির নিচে এই গোপন মিউজিয়ামের রহস্য কী? সত্যের মুখোমুখি হয়ে অর্ক কি পারবে নিজেকে সামলাতে?
নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত অর্ক যখন মেহেনূরের কাছে ক্ষমা চায়, তখন তার আলিঙ্গনে থাকে একরাশ অসহায়ত্ব। কিন্তু মেহেনূরের কঠিন মন কি এই ভালোবাসার আবেদনে সাড়া দেবে? অর্কের করা ভুলের কি কোনো ক্ষমা হয়?
ভুলের অনুশোচনায় দগ্ধ অর্ক অবশেষে তার অগোচরে থাকা ভালোবাসা প্রকাশ করে কিরণের কাছে। কিন্তু জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে তার ভয়ঙ্কর অসুস্থতার খবর কি পারবে মেহেনূরের অভিমানের বরফ গলাতে? নিয়তি কি তাদের ভালোবাসার গল্পে ইতি টানবে?