তোমাকে | মুন্নি আক্তার প্রিয়া | পর্ব – ৩৭

ঝড় আসার ঠিক আগ মুহূর্তে চারপাশ যেমন নিরবতায় ছেয়ে থাকে ঠিক তেমনই পরিবেশ এখন। তাহমিনা বেগমের এতদিন চুপচাপ থাকার কারণটাও সম্পূর্ণ স্পষ্ট। তিনি বাইরের মানুষজনকে জানাতে চান না পরীর প্রতি তার অসন্তুষ্টি। কিন্তু পরীকে তিনি বুঝিয়েছেন। পরীর জায়গা তার মনের কোথাও নেই। রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশ দেখতে দেখতে ভাবছিল পরী। জীবন খুবই অদ্ভুত। কখন, কোথায় মোড় নেবে বোঝা মুশকিল। একই বাসায় থেকে শ্বাশুরীর সাথে মনোমালিন্য ভালো লাগে না পরীর। তাহমিনা বেগমের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে যখন কঠিন কিছু জবাব দিতে ইচ্ছে করে তখন মায়ের কথা মনে পড়ে। মা পরীকে কোলের ওপর শুইয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলেছিল,

“আজ তোকে কিছু কথা বলব। মন দিয়ে শুনবি। একটা কথা মাথায় রাখবি এখন তুই শুধু একজন মেয়েই নস। একটা বাড়ির বউ তুই। মেয়েদের বিয়ের আগের জীবন আর পরের জীবন সম্পূর্ণ আলাদা। শ্বশুরবাড়ি মানেই এই নয়, সারাক্ষণ স্বামীর সাথে সময় কাটানো। ইচ্ছে হলো রান্না করলাম না হলে করলাম না। নিজের ইচ্ছের আগেও ভাবতে হবে শ্বশুরবাড়ির সবার ইচ্ছের কথা। এখন চাইলেই তুই তোর মর্জিমাফিক চলতে পারবি না। তুই আগে বাড়ির পরিবেশ বুঝবি। তারা কী চায়, কীভাবে চলাফেরা পছন্দ করে। তুই ভালো করেই জানিস তোর প্রতি তাহমিনা বেগমের রাগ। সে তোকে প্রতি পদে হয়তো কথা শোনাবে। কিন্তু তুই ভেঙে পড়বি না। মনোবল দৃঢ় রাখবি। তুই অন্যায় না করা সত্ত্বেও যদি কথা শোনায় তাও চুপ থাকবি। আমি তো জানি আমার মেয়ে প্রতিবাদী। কিন্তু সংসারে সবসময় প্রতিবাদ চলে না। সংসার চালাতে হয় বুদ্ধি ও ভালোবাসা দিয়ে। যখন বেয়াইনের মাথা ঠান্ডা হবে তখন তার ভুলটা ধরিয়ে দিবি। আর ভুলেও ঘরের সব কথা তুর্যর কানে দিবি না। তাহমিনা বেগম যেন বলতে না পারেন তুই তুর্যকে উস্কাস।”
“মানে কী মা? অন্যায় সহ্য করব আবার তুর্যকেও কিছু বলব না?”
“না বলবি না। তুর্যর কান আছে, চোখ আছে। চোখের সামনে সত্যিটা নিজেই একদিন দেখবে আর নিজের কানেও শুনবে।”
“সংসার খুব কঠিন মা খুব!”
মা সেদিন মৃদু হেসেছিল। বলেছিল,
“স্বামী ঠিক থাকলেই সংসার ঠিক থাকবে।”
“সারাদিন রুমের ভেতর করো কী? ডাকি যে শোনো না?”
তাহমিনা বেগমের ডাকে নড়েচড়ে দাঁড়ায় পরী। চোখের কোণের পানিটুকু মুছে ড্রয়িংরুমে যায়। পরীকে দেখে তিনি বলেন,
“ঘরের কোনো কাজই তো করো না। এক কাপ চা কি বানিয়ে দিতে পারবে?”
তিনি মিথ্যে বললেন। বিয়ের এক মাস পর থেকে বাড়ির সব কাজ পরীই করে। তবুও তার মিথ্যে নালিশ চলে পরীর ওপর। পরী বলে,
“পারব।”
সকালে চা বানানোই ছিল। সেই চা গরম করে দুধ, চিনি মিশিয়ে তাহমিনা বেগমকে দেয়। তাহমিনা বেগম চায়ে এক চুমুক দিয়েই মুখটা বিকৃতি করে ফেলেন। পরীকে ধমক দিয়ে বলে,
“কী বানিয়েছ এটা? কোনো চা হয়েছে?”
“মা আজ সকালের চা আপনিই বানিয়েছিলেন। চায়ের পরিমাণ বেশি ছিল তাই শেষ হয়নি।” শান্ত ভঙ্গিতে বলে পরী।
তাহমিনা বেগম একটু চুপসে যান। কিন্তু চুপ থাকার মানুষ তিনি নন। পরীকে অপদস্থ না করে তার শান্তি নেই। তিনি শাসিয়ে শাসিয়ে বলেন,
“সাহস তো তোমার খুব হয়ে গেছে। মুখে মুখে তর্ক করছ। চা আমি বানিয়েছি তো কী হয়েছে? দুধ, চিনি তো তুমি মিশিয়েছ। একদম শরবত বানিয়ে ফেলেছ।”
“আপনি চায়ে তিন চা চামচ দুধ আর দু চামচ চিনি নেন। আমিও তাই দিয়েছি।”
তিনি এবার হাতের কাপটা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। টাইলসের ওপর পড়ে সুন্দর কাপটা মুহূর্তেই ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। চা ছড়িয়ে পড়েছে ফ্লোরজুড়ে। রাগে উদ্যত হয়ে পরীর দিকে এগিয়ে যান তিনি।
“তুমি কি বলতে চাও আমি মিথ্যা বলতেছি?”
“তা তো আপনিই ভালো জানেন।”
“আসুক আজ তুর্য! তোমার মুখে মুখে তর্ক করা আমি ছোটাচ্ছি। কী বউ ঘরে এনেছে সেটা আমি তুর্যকে দেখাব।”
পরী আর কথা না বাড়িয়ে ভাঙা কাপের টুকরোগুলো কুড়িয়ে বেলচায় চুলে নেয়। ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিয়ে ছোট বালতিতে করে পানি নিয়ে আসে।ন্যাকরা পানিতে ভিজিয়ে চা  মুছে নেয়। তখনো অনবরত মুখ চালাচ্ছেন তিনি। পরী সব শুনেও কথা গায়ে মাখাচ্ছে না। সব কথা কানে তুললে সংসার করা আরো কঠিন হয়ে পড়বে। মায়ের কথা মেনে চলতে হবে। তুর্যর জন্য হলেও আমায় রয়েসয়ে থাকতে হবে। 
দুজন মানুষের মধ্যে তর্কবিতর্ক চললে কথা বাড়ে। কিন্তু তাদের মধ্যেই একজন চুপ থাকলে কথা থেমে থাকে। যতই উস্কানো হোক ওপাশ থেকে উত্তর না আসলে কথা বাড়ানো যাবে না। তাহমিনা বেগম চাচ্ছেন পরী উত্তর দিক। যাতে তিনি চিৎকার চেঁচামেচি করতে পারেন। পাশের ফ্ল্যাট থেকে লোকজন আসুক। তখন তিনি তিলকে তাল বানিয়ে শোনাবেন। সবার কাছে পরীকে খারাপ বউ প্রমাণিত করবেন। তাহলেই না তুর্যও বিশ্বাস করবে পরী ভালো নয়। মায়ের কোনো সেবাযত্নই করে না। কিন্তু তার ফাঁদে পা দিচ্ছে না পরী। পরী ওর মতোই প্রতিদিনকার কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। পরী মনে মনে বলছে, “যত পারুক নিজেই বকবক করুক। ক্লান্ত হলে একাই থেমে যাবে।”
.
গোসল করে দুপুরের খাবার খেয়ে নেয় পরী। টেবিল গোছানোর পর মা ফোন দেয়। ফোনে কথা বলতে বলতেই কাজ করছিল। তখনই আবার চেঁচিয়ে ওঠে তাহমিনা বেগম। তার মতে, বাপের বাড়িতে ফোন দিয়ে পরী শলাপরামর্শ করে। মায়ের সাথে কুবুদ্ধি করে। ফোনের এপাশ থেকে তাহমিনা বেগমের সব কথাই রেহেনা বেগমের কানে যায়। তিনি বোঝেন মেয়েটা খুব ভালো নেই। পরীর বাবা জানলে কষ্ট পাবে।  বাপের বাড়ি নিয়ে যা নয় তাই বলছেন তিনি। পরী আর সহ্য করতে পারছে না।
“তোমার সাথে পরে কথা বলছি মা।” বলে ফোন কেটে দেয় পরী। খুব শান্ত দৃষ্টিতে তাহমিনা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে,
“কেন এমন করেন আপনি? অতীত নিয়ে কেনই বা পড়ে আছেন এখনো? যেখানে আমার কোনো দোষই ছিল না। বিয়ের পর থেকে আপনি এমন করছেন। বাড়িতে কারো সাথে কথা বললেই বলেন কুবুদ্ধি আঁটছি। কেন নিজেকে সবার মতোই ভাবেন? পাশের বাড়ির আন্টির সাথে আপনার করা সব কুরুচিপূর্ণ কুবুদ্ধির কথা সবই কিন্তু আমার কানে আসে মা। সব সহ্য করেও আমি চুপ থাকি। তবুও আপনি এমন করেন। কেন? কী চান আপনি?”
“আমি চাই তুমি তুর্যর জীবন থেকে চলে যাও। তোমার সাথে যখনই আমার ছেলেকে দেখি আমার রাগে শরীর জ্বলে যায়। সহ্য করতে পারি না তোমাকে।”
পরী একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,
“তাহলে যত পারেন জ্বলতে থাকেন। আমি তুর্যকে ছাড়ব না।”
“আমিও দেখব কতদিন তুমি থাকতে পারো। তখন তুর্যর মুখের দিকে তাকিয়ে বিয়েতে মত দিয়েছিলাম। এখন এমন ব্যবস্থা করব তুমি নিজেই চলে যাবে।”
“চেষ্টা করে দেখুন।”
.
.
বিকেলে টাইগারকে খাবার দিতে ছাদে যায় পরী। এখন আর টাইগারকে ভয় লাগে না। মজার বিষয় হচ্ছে পরী কুত্তা বললে টাইগার এখন আর রাগ করে না। অবশ্য পরীও এখন কুত্তা বলে না। টাইগার বলেই ডাকে। যখন খেতে চায় না তখন রাগ দেখিয়ে পরী কুত্তা বলে বকাবকি করে। তখন অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে নেয় টাইগার। জন্তু হলেও ভালোবাসা বোঝে। মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিলে অভিমান ভেঙে যায়। খুব মিল এখন দুজনের। সময় পেলে ছাদে এসে টাইগারকে নিয়ে বসে থাকে। টাইগার থাকে চিলেকোঠায়। তিনবেলা খাবার এখন পরীই দেয়। এজন্যই বোধ হয় পরীর সঙ্গে এত তাড়াতাড়ি ভাব জমে গেছে। ছাদে আসলেই পরীর পুরনো কথা মনে পড়ে যায়। তুর্যর সাথে ফুল নিয়ে ঝগড়া, এরপর টাইগারকে নিয়ে হাসাহাসি। কী ভয়টাই না পেত পরী! মায়ের রুমের ফ্যান ঠিক করতে গিয়ে নিচে পড়ে যাওয়া। দেখা হলেই দুজনের ঝগড়া। সব মনে পড়ে নিজে নিজেই একা হাসে পরী। সেই ঝগরুটে ছেলেটাই এখন কত আপন! এখন ও’কে ছাড়াই থাকার কথা এক মুহূর্তের জন্যও ভাবতে পারে না পরী। এত বেশি যে কাউকে কোনোদিন ভালোবেসে ফেলবে কল্পনায় ভাবেনি। সময় খুব দ্রুত যায়। মানুষের মনও বদলায়। ভাবনায় না আসা জিনিসগুলোই ম্যাজিকের মতো সত্যি হয়ে যায়।
“ও ভাবি তুমি এখানে? আমি তোমায় খুঁজছি।”
দিশানের ডাকে হুশ ফিরে। মাত্রই স্কুল থেকে এসেছে। পরনের ইউনিফর্মও এখনো পাল্টায়নি। দিশানের কী একটা স্বভাব হয়েছে এখন বাড়িতে আসলেই আগে পরীকে খুঁজবে। না দেখতে পেলে ভাবি বলে জোরে জোরে ডাকবে। বাবার বাড়িতে থাকতে এমন করত পরী আর প্রিয়ম। বাড়িতে এসেই আগে মায়ের খোঁজে লেগে পড়ত। হয়তো বাবা-মা ছাড়া ছোট্ট দিশানের মনে অনেকটাজুড়ে পরীর বসবাস। পরী বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। জিজ্ঞেস করে,
“কখন এসেছ?”
“এইতো। এসেই তোমায় খুঁজলাম তুমি নেই। তাই মনে হলো তুমি ছাদেই থাকবে।”
“আচ্ছা বাসায় চলো।”
বাসায় গিয়ে দিশান আগে গোসল করতে চলে যায়। পরী খাবার গরম করতে রান্নাঘরে যায়। দিশানের জন্য টেবিলে খাবার রেখে রাতের রান্নার জন্য সব জোগাড় করে। সন্ধ্যার মধ্যে রান্নাবান্না শেষ করে ফেলে। সন্ধ্যার নাস্তায় নুডলস আর চা বানায়। ফ্রেশ হয়ে এসে শ্বাশুরীকে নাস্তা দিয়ে দিশান আর নিজের নাস্তা রুমে নিয়ে যায়। ব্যাগ নিয়ে দিশান পরীর রুমেই ছিল। মাগরিবের নামাজ পড়ে দুজনে একসাথে নাস্তা করে। তারপর দিশানকে পড়তে বসায়। পরীর মনটা কিঞ্চিৎ খারাপ। আজ দুপুরে তুর্য ফোন করেনি। পরী ফোন করেছিল কিন্তু রিসিভ করেনি। হয়তো অফিসের কাজ বেড়েছে। এমনটা বলেই মনকে শান্তনা দেয় পরী। ড্রয়িংরুম থেকে শ্বাশুরীর ডাক শোনা যায়। নাস্তা না খেয়েই আগে যায়। গিয়ে দেখে পাশের বাড়ি থেকে কয়েকজন প্রতিবেশী এসেছে। এদের বেশিরভাগই গেঞ্জাম লাগানোর মানুষ। কীভাবে প্যাচ লাগানো যায়, এক বাড়ির কথা আরেক বাড়িতে লাগানো যায় সেটাতে ওস্তাদ এরা। কথায় আছে ‘সৎ সঙ্গে সর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ’। তাহমিনা বেগম যতটুকুও ভালো মনের অধিকারী ছিলেন এদের সাথে মিশে এখন তার ছিটেফোঁটাও নেই। এজন্যই দু চক্ষে তাদের দেখতে পারে না পরী। উনাদের মধ্যে একজন অতিরিক্ত দজ্জাল। তার ছেলের বউটা মাটির মানুষ। গ্রামের মেয়ে। যেভাবে বলে সেভাবেই চলে। তবুও শ্বাশুরীর অত্যাচারের শেষ নেই। এখানে একজন মহিলা খুব ভালো। ছাদে গেলে মাঝে মাঝেই তাদের সাথে কথা হয়। কিন্তু ভাগ্য খারাপ। উনার ছেলের বউ ভালো নয়। অতিরিক্ত মডার্ণ টাইপ। বাড়িতে তেমন থাকে না বললেই চলে। একটা সমীকরণ কিছুতেই মেলে না। ভালো শ্বাশুরীর কপালে দজ্জাল ছেলের বউ, আবার দজ্জাল শ্বাশুরীর ভাগ্যে ভালো ছেলের বউ। এমন না হয়ে যে যেমন তেমন বউ-শ্বাশুরী পেলে পার্ফেক্ট মিলে যেত। কিন্তু নিজে নিজে চাইলেই তো আর সব সম্ভব নয়।
সবার জন্য আবার নাস্তা বানিয়ে আনে পরী। পরী ড্রয়িংরুমে গেলেই তাদের শলাপরামর্শ থামে। পরিবেশ ভালো ঠেকছে না পরীর। তাহমিনার ভাবসাবও ভালো না। মনের ভেতর কী চলছে কে জানে! পরীকে দেখেই তিনি বলেন,
“আজকালকের ছেলের বউগুলোও হয়েছে! শ্বাশুরীর কোনো খেদমত তো করেই না। পারে শুধু মুখে মুখে তর্ক করতে। আর কীভাবে জামাই আঁচলে বাঁধা যায় সেই ফন্দি আঁটে।”
“এমন বউরেও আবার শিক্ষা দেওয়া লাগে। বেশি উড়লে ডানা ছেঁটে দেওয়া লাগে।” তাদের মধ্যে একজন বলে।
পরী চুপচাপ শুনে আর তাদের খাবার এগিয়ে দেয়। তাদের মধ্যে আরেকজন বলে,
“তোমারে তো ভালো ভাবছিলাম। মনে মনে যে এত প্যাচ রাখছ তা তো জানতাম না।”
“বুঝলাম না আন্টি।” বলে পরী।
তিনি ব্যাঙ্গ করে বলেন,
“এখন তো এমন ভাব করবাই। ভাজা মাছটাও মনে হয় উল্টিয়ে খেতে পারো না। আমার ছেলের বউরে দেখছ? আমার মুখের ওপর কথা বলার সাহসও পায় না। আমরা বউ জব্দ করে রাখতে পারি। ভাগ্য করে ভালো শ্বাশুরী পাইছ তাই কিছু বলে না।”
উত্তরে পরীও ব্যাঙ্গ করে হাসে। 
“বেয়াদবের মতো হাসতেছ কেন আবার?”
কথা পাল্টিয়ে পরী বলে,
“আপনারা খান। কিছু লাগলে আমায় ডাকবেন। ঘরে দিশান পড়ছে। ও’কে পড়া বুঝিয়ে দিতে হবে।”
“পরিবারের শিক্ষদিক্ষা নাই একদম। মুরুব্বীদের সাথে বেয়াদবি!”
“আমাকে যা বলার বলেন আন্টি। আমার পরিবার নিয়ে কিছু বলবেন না। পরিবারের শিক্ষা আছে বলেই আমি সব চুপচাপ সহ্য করছি”
“কী গো ভাবি! আপনার ছেলের বউ এমন ব্যবহার করে। আপনি কিছু বলেন না?”
ড্রয়িংরুমের দরজায় ছিটকিনি দেওয়া ছিল না। দরজা ভিড়িয়ে রাখা ছিল। অফিসের কাজে আজ একটু বেশিই ব্যস্ত ছিল। সব কাজ একসঙ্গে শেষ করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরেছে তুর্য। হাতে করে নিয়ে এসেছে বেলী ফুলের মালা। পরীর পছন্দ। রাগ ভাঙানোর জন্য এরচেয়ে ভালো উপায় আপাতত নেই। রাস্তায় ছোট এক বাচ্চাকে হাতে করে মালা বিক্রি করতে দেখে সবগুলো নিয়ে এসেছে। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকেই তুর্য স্তব্ধ হয়ে যায়। তাহমিনা বেগম সবার সামনে পরীকে থাপ্পড় দিয়েছে। পরী গালে হাত দিয়ে টলমল করা চোখে তাকিয়ে আছে তাহমিনা বেগমের দিকে। তুর্যকে দেখে তিনি ভড়কে যান। এই সময়ে যে তুর্য এসে পড়বে ভাবতে পারেননি তিনি।

Share This Article
Leave a comment

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।