থ্রিলার

জান্নাতুল নাঈমা

-‘ আপনি কোথায় যাচ্ছেন? আমাকে রেখে যাবেন না। আমার খুব ভয় হচ্ছে।’ বুকচিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করল, -‘তোমরা কারা? আমাকে ছেড়ে দাও। আমার নুর অপেক্ষা করছে, আমাকে ফিরতে দাও।

জান্নাতুল নাঈমা

সেদিন রাতে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি নিয়ে ভীষণ চিন্তিত ছিল প্রণয়। কয়েক রাত ঠিকভাবে ঘুমাতেও পারেনি৷ কিন্তু গত ক’দিন ধরে শাহিনুরের শরীর ভীষণ খারাপ।

জান্নাতুল নাঈমা

অন্যদিনের তুলনায় আজ দ্বারে করাঘাতের শব্দটি বেশিই কড়া ছিল। শাহিনুর ত্বরান্বিত হয়ে বদ্ধ দ্বার উন্মুক্ত করল। প্রিয়তম অর্ধাঙ্গের ক্লান্ত মুখমণ্ডল, চিন্তান্বিত দৃষ্টিজোড়া নজরে পড়তেই মিষ্টি করে হাসলো। তার সে মিষ্টি হাসি দেখে প্রণয়ের দেহ, মনে চলা দাবদাহের অনুভূতি’তে ভাটা পড়ল।

জান্নাতুল নাঈমা

চোখমুখের রঙ বিকৃত হয়ে গেল প্রেরণার। ভয়ে থরথর করে কাঁপতে শুরু করল মানুষ’টা। অঙ্গন অসহনীয় কণ্ঠে চিৎকার করে ওঠল। প্রেরণার ভয়ের মাত্রা দ্বিগুণ হয়ে ওঠল।

জান্নাতুল নাঈমা

আনমনেই হেসে ফেলল প্রণয়। কাঁধে চেপে রাখা গামছা দিয়ে ঘর্মাক্ত মুখমণ্ডল মুছলো। হাতে থাকা পলিথিনের ভেতরে গরু মাংসের তরকারির দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার হাঁটা ধরল।

জান্নাতুল নাঈমা

যে নির্ভরতা বুড়ো,বুড়ি নিজের ছেলের কাছে চেয়েও পায়নি, সেটুকু প্রণয়, শাহিনুরের কাছে পেয়ে বড়োই শান্তি পেলেন। দু’হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রাণভরে দোয়াও করলেন ওদের জন্য।

জান্নাতুল নাঈমা

-‘ দাদা বড়ো বিপদে পড়ে গর্ভবতী বউ নিয়ে এই অচেনা জায়গায় এসে আশ্রয় নিয়েছি। সারাদিন অনাহারে বউয়ের প্রাণ যায় যায় অবস্থা। একমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতে পারবেন?’

জান্নাতুল নাঈমা

-‘ হাতের নাগাল থেকে যে অপরাধী পালিয়ে যায়, তাকে আর কোন উপায়ে ধরবে তোর সৈন্যদল?’

জান্নাতুল নাঈমা

সিগারেটে শেষ দু’টো টান দিতে দিতে সারিম পর্যবেক্ষণ করল সামনের সুশ্রী নারী মূর্তি’কে। কিঞ্চিৎ ত্বরান্বিত হয়ে সিগারেটের শেষ অংশটুকু মাটিতে ফেলে দিলো। ভাবুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে পা দিয়ে পিষেও ফেলল।

জান্নাতুল নাঈমা

-‘ শুধু বউ হলে হয়তো দিতো। ‘ -‘ শুধু বউ নয়? ‘ -‘ যে নারী কোন পুরুষের হৃদয়ের রানি হওয়ার ক্ষমতা নিয়ে জন্মায় সে নারী শুধু বউ হবে কেন? সে তো আমার হৃদয়ের রানি।’

জান্নাতুল নাঈমা

-‘ সুজন তুমি শায়লাকে নিয়ে এবার রুমে যাও। একটা বিছানা পাতাই আছে, তোমাদের আর বিছানার ব্যবস্থা করতে হবে না। বাকিসব ধীরে ধীরে করে নিও।’

জান্নাতুল নাঈমা

ত্বরিতবেগে সাইকেলের পিছনে শাহিনুরকে বসিয়ে দিয়ে নিজেও ওঠে পড়ল। শ্বাসরুদ্ধকর কণ্ঠে বলল, -‘ শক্ত করে ধরে থাকবে আমাকে। একদম চুপ করে বসে থাকবে।’