A Destination Wedding

সেদিনের পর কেটে গেছে আরো ৫দিন।এরমধ্যেই আমার সাথে আদিয়াতের বেশ ভালো ফ্রেন্ডশিপ হয়ে গেছে।আয়াজের সাথেও আমাদের সবার নিয়মিত কথা হয় আমাদের এফবি গ্রুপে।এছাড়া এই কয়েকদিনে আমরা সবাই ঐশির সাথে দেখা করেছি,খেয়াল রেখেছি।এরপর আজ ৫দিন পর আমরা সবাই মিলে ভার্সিটিতে এসে ক্যান্টিনে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছি।একটুপরই আমাদের ক্লাসে যেতে হবে।আজ নাকি নিউ প্রফেসর আসবে।
ঐশি:এই চল চল,,,ক্লাসে যাই আমরা।ক্লাসের সময় হয়ে যাচ্ছে তো।
সাদাফ:হুম,,,চল আমরা এইবার ক্লাসে যাই।
আমরা সবাই উঠে ক্লাসরুমের সামনে এসেই আমরা সবাই হা হয়ে গেলাম।কারণ,,,,,,

ক্লাসে ঐ মি.অন্ধ দাড়িয়ে আছে।প্রিন্সিপাল স্যার আমাদের দেখেই ক্লাসে আসতে বললেন।আমরা সবাই ক্লাসে যেতেই স্যার আমাদের সবার উদ্দেশ্যে বলা শুরু করলেন,,,,,,
স্যার:ডিয়ার স্টুডেন্টস,,,,ইনি হচ্ছে মি.নিহান আহমেদ আরুশ।তোমাদের ম্যাথ টিচারের ফ্রেন্ডের ছেলে আরুশ।উনি কিছুদিন যাবত অসুস্থ থাকায় তোমাদের ম্যাথ ক্লাস নিবে আরুশ।এইবার তোমরা সবাই বসতে পারো।
এই কথা বলেই প্রিন্সিপাল স্যার চলে গেলেন।তারপর মি.অন্ধ মানে ঐ আরুশ স্যার বলতে লাগলেন,,,,,,,,
আরুশ: হেই স্টুডেন্টস,,,তোমরা তো শুনলেই যে আমি তোমাদের ম্যাথ টিচারের পরিবর্তে এসেছি।আমি মুলত একজন ফ্যাশন ডিজাইনার এবং আমার নিজস্ব একটি কোম্পানি রয়েছে।যার নাম “আরুশা’স ওয়ার্ল্ড”। আশা করি তোমরা সবাই এই নামটার সাথে পরিচিত।তো এইবার তোমরা সবাই নিজেদের পরিচয় দাও,,,,,
এরপর একে একে সবাই নিজেদের পরিচয় দিতে লাগলো।এক সময় আমার পরিচয় দেওয়ার সময় আসলে স্যার আমাকে দাড়াতে বললেন।আমিও দাড়িয়ে নিজের নাম বলে দিলাম।কিন্তু কথা হচ্ছে স্যার আমার দিকে কেমন জানি বাঁকা হেসে তাকালেন।এর মানেটা আমি বুঝলাম নাহ।আচ্ছা সে যাইহোক,,,এটা নিয়ে এতো না ভেবে আমি ক্লাস করায় মনোযোগ দিলাম।
ক্লাস শেষে আমরা সবাই মাঠে গিয়ে বসলাম।এর মধ্যেই আমাদের আরেকটা ফ্রেন্ড আহিয়া এসে হাজির।ওর ডিপার্টমেন্ট আলাদা হওয়ায় ওর সাথে আমাদের দেখা একটু কমই হয়।তবে এই কয়েকদিন ওও ওর নানু বাড়িতে ছিল।তাই ঐশির অ্যাকসিডেন্টের ব্যাপারে ওকে আমরা কিছু বলিনি।কারণ অযথায় টেনশন করতো।
তো আমরা সবাই আড্ডা দিয়ে উঠে পরলাম বাসায় যাওয়ার জন্য।কিন্তু আমার কপাল এতোটায় খারাপ যে আমি পা স্লিপ করে পরলাম তো পরলাম ডিরেক্ট আরুশ স্যারের উপর।ব্যাপারটা এতো দ্রুত ঘটেছে যে আমি লজ্জায় যেন একদম মাটির সাথে মিশে যাচ্ছি।আমি তাড়াতাড়ি করে উঠে স্যারকে স্যরি বলে দিলাম এক দৌড়।এক দৌড়ে পার্কিং লটে এসে হাপাচ্ছি আমি।ইসসসসসসসস,,,কি লজ্জা কি লজ্জা।কয়েকদিনের জন্য হলেও তো উনি আমাদের স্যার।বাট এইভাবে যে একটা ব্লান্ডার হবে তা কি আর আমি জানতাম।
ইভা:আরে তুই এভাবে দৌড়ে আসলি কেন।এইটা তো মিসটেক।এতে তো তোর কোনো দোষ নেই।
ঝিনুক:হুম,,,তাই তো।তুই এতো লজ্জা পাচ্ছিস কেন,,,আজব।
সাদাফ:দেখ,,,,আর এতো লজ্জা পাস নাহ তো,,,তার থেকে বরং চল আজকে আমরা রেস্টুরেন্টে গিয়ে লাঞ্চ করে আসি।
আয়মান:হ্যা চল চল।
ওদের সবার কথায় সাই দিয়ে আমিও হ্যা বলে দিলাম।
আমরা “গ্রিন ক্যাফে” তে গেলাম।কারণ,এইটা আমাদের খুব ফেবারিট একটা আড্ডা দেওয়ার জায়গা।আর এখানকার খাবার,সার্ভিস সবই অনেক উন্নত মানের।যার জন্য আমরা প্রায়ই এখানে আসি।
সাদাফ:এই তোরা এখানেই বসে আড্ডে দে।আর আমি সবার জন্য খাবার অর্ডার দিয়ে আসি।
আমি:আচ্ছা যা।আর আজ আমার জন্য বিরিয়ানি আনবি কেমন।
ঐশি:আজ সবার জন্যই বিরিয়ানি অর্ডার কর যা।
আমি:এই তোরা কথা বল,,,আমি একটু ওয়াসরুম থেকে আসছি।
এই বলে আমি ওয়াসরুমে গিয়ে হাতে-মুখে পানি দিয়ে নিলাম।আজ কেমন জানি লাগছে যেন আমার সাথে আজ কিছু একটা হবে।কিন্তু কি হবে??আমার জন্য কোনো খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে নাহ তো?
এইসব ভাবতে ভাবতেই আমি ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে ওদের সবার সাথে যোগ দিলাম।খাওয়া-দাওয়ার এক পর্যায়ে আরিয়ান বলে উঠলো যে ওর তো আর কিছু পর জন্মদিন।তাই ওও আমাদের সবাইকে নিয়ে ওদের ফার্ম হাউজে যাবে।সেখানে নাকি কি এক সারপ্রাইজ আছে আমাদের জন্য।
আমি:কিরে,,,জন্মদিন তোর আর সারপ্রাইজ আমাদের জন্য?ব্যাপার কি?
আরিয়ান:সেটা তো সেদিনই বুঝতে পারবি।এখন আর এই বিষয়ে কিছু ভাবিস নাহ,,,,ওকেই
আমি:হুম।
আমাদের কথা বলার মাঝেই আদিয়াত আমাকে কল দিল।হঠাৎ এই সময় কল কেন দিলো?
সাদাফ:কে কল দিছে?রিসিভ কর।
আমি:আদিয়াত কল দিয়েছে।(ওরা সবাই যানে আমার আর আদিয়াতের ফ্রেন্ডশিপের ব্যাপারে)
আয়মান:হ্যা তো কলটা রিসিভ কর।
আমি:হুম।এই বলে আমি কল রিসিভ করে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে আদিয়াত আমাকে বললো যে আমি এখন কোথায় আছি।
তো আমিও বলে দিলাম যে আমি এখন কোথায়।আদিয়াত বললো ওও নিজেও নাকি এইদিকেই আছে।তাই আমার সাথে মিট করতে চায়।আমিও বললাম যে তাহলে চলে এসো।
আমি:আজ হঠাৎ কি হলো যে মিট করতে চাচ্ছে?
আয়মান:সেটা তো আদিয়াত ভাইয়া আসলেই বোঝা যাবে।
আমি:হুম
কিছুক্ষণ পর আদিয়াত আসলো।ওর চোখ মুখ কেমন যেন ফ্যাকাশে হয়ে আছে।আগে তো কখনো ওকে এতোটা বিষন্ন হতে দেখিনি তাহলে আজ কি এমন হয়েছে যে ওকে এতোটা বিষন্ন মনে হচ্ছে?(মনে মনে ভাবছি)
আমি:কি হয়েছে আদিয়াত ব্রো?তোমাকে এমন বিষন্ন কেন লাগছে?কি হয়েছে তোমার?
আদিয়াত:আয়রা,,,তোমাকে আমি কতোবার বারণ করেছি যে আমাকে ভাই বলে ডাকবে নাহ(রেগে)
আমি:আরে আজব,,,তুমি তো আমার সিনিয়র।তো ভাই বললে সমস্যা কোথায়?
আদিয়াত:সমস্যা আছে।আর আজ আমি তোমাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলতে চাই।
আমি:হ্যা,,,তো বলো।
আমাদের দুইজনের কথোপকথন খুব মনোযোগ সহকারে শুনছে সবাই।আর আমি শিওর যে ওরাও আমার মতোই কৌতুহলি হয়ে আছে যে আদিয়াত আমাকে কি এমন বলতে চাই,,,,,,
তো আদিয়াত এরপর যা বললো তার জন্য আমি বা আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম নাহ…

চলবে…

SHARE:

Logo Light

হারিয়ে যান গল্পের দুনিয়ায়

Useful links

2024 © Golpo Hub. All rights reserved.