বাইজি কন্যা

দেখতে দেখতে কেটে গেলো চৌদ্দদিন৷ অলিওরের চল্লিশা শেষে নিকটাত্মীয়’রা পাঁচফোড়ন গৃহেই অবস্থান করলো। প্রণয়ের সিদ্ধান্ত আগামীকালই তার আর নুরের বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন হবে৷ তার সিদ্ধান্তে সকলে সায় দিলো। এতে অবশ্য বিরূপ প্রভাব পড়লো পলাশের মনে। মা’য়ের ওপর ভীষণ চোটপাট করে শেষে বড়ো মা’য়ের হাতের থাপ্পড় খেতে হয়েছে তাকে। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে গৃহ ছেড়ে বেরিয়ে গেছে সে। যাওয়ার আগে অবশ্য মুনতাহা’কে হুমকি দিয়ে গেছে। সে যদি সবার মতো এই বিয়েতে যোগ দেয় তাহলে পেটের সন্তান’টাকে আর দুনিয়ার আলো দেখতে দেবেনা। মুনতাহাও ভয়ে আচ্ছন্ন হয়ে আর কক্ষ ছেড়ে বের হয়নি। এতে অবশ্য কানাঘুষা হচ্ছে। বদনাম হচ্ছে। তার স্বামী নামক পুরুষ’টা কতো ভয়ংকর সবাই জানে। তবুও বদনাম তারই হচ্ছে। কেউ জানেনা এর পেছনে পলাশ রয়েছে। গৃহের সকলে জানলেও আত্মীয়’রা কেউ জানলোও না বুঝলোওনা বদনাম ঠিকই করলো।

কাঙ্ক্ষিত সে মুহুর্ত’টি চলে এলো৷ প্রণয় আর শাহিনুরের বিয়ের দিন আজ। সকাল থেকে বেশ নিয়মকানুন মেনে শাহিনুর’কে গোসল করানো হয়েছে। এতো সব আয়োজন এত কোলাহলে দম বন্ধ লাগছে। তবুও মুখবুঝে সবটা সহ্য করে নিচ্ছে।লোকসমাগমে একের পর এক নিয়ম সম্পন্ন হচ্ছিল আর শাহিনুরের মনের ভিতর ক্ষুদ্রাকারে ঝড় বয়ে যাচ্ছিলো৷ সে ঝড়ের বেগ তীব্রবেগে বাড়িয়ে দিলো এক নিকটাত্মীয়ের বউ। যিনি সম্পর্কে প্রণয়ের ভাবি হয়৷ নাম সুহানা। সে অবাকান্বিত সুরে হঠাৎ বলে ওঠলো,
-‘ ইশ এমন তুলতুলে নরম দেহ ঐ বিশাল দেহ দিয়ে একেবারে পিষে ফেলবে সহ্য করা যায় এসব! ‘
সকলেই হৈহৈ করে হেসে ওঠলো৷ শরীর ঝিমঝিম করে ওঠলো শাহিনুরের। লজ্জায় আরক্ত হলো তার শুভ্র মুখশ্রী। আপনমনে ছিঃ ছিঃ করে ওঠলো সে।
সব শেষে ভাবি’রা মিলে বউ’য়ের সাজে সাজালো তাকে। লাল বেনারসি পরালো, ছোট্ট নরম দেহে শক্ত ভারি ভারি গহনায় ভরিয়ে দিলো। ঠোঁটে খয়েরি রঙের লিপস্টিক লাগিয়ে আবারো সুহানা ভাবি বললো,
-‘ ইশ টসটসে ঠোঁটজোড়ার আজ বুঝি রক্ষা নেই!’
সকলে আবারো খলখলিয়ে হেসে ওঠলো। শাহিনুর ভীষণ বিব্রত বোধ করলো। কেন জানি এমন পরিস্থিতি এমন বাক্যের আঘাত সহ্য করতে পারলো না সে। এমন সময় খবর এলো কাজী এসে গেছে। এবার বিয়ে পড়ানো হবে। এ খবর আসার মিনিট কয়েক পরেই ভাবিরা মিলে একটি লাল সুতি শাড়ি দিয়ে শাহিনুরের সামনে দেয়াল পেতে দিলো। শাড়ির এপাশে শাহিনুর ওপাশে কাজির সঙ্গে পল্লব চৌধুরী এবং প্রণয়ের মামা দাঁড়িয়ে আছে। এমন পরিস্থিতি’তে শাহিনুরের মস্তিষ্ক একে বারেই ফাঁকা হয়ে গেলো৷ ক্ষণকাল পর বরবেশে কক্ষে প্রবেশ করলো প্রণয় চৌধুরী। যার পরনে সোনালি রঙের শেরওয়ানি। মাথায় বরের মুকুট। এক নজরে তাকালে এ মুহুর্তে তাকে তার পূর্ব বংশীয় জমিদারদের মতোই লাগছে। যারা তার মতো সাহেবি পোশাক পরিধান করতো না। বরং বেশভূষায় সব সময় জমিদারিত্ব ফুটিয়ে তুলতো। প্রণয়ের দিকে অপলকে চেয়ে রইলো ভাবি’রা। শবনম বললো,
-‘ মাশাআল্লাহ। ‘

নিয়ম অনুসারে কাজী তার বক্তব্য উপস্থাপন করলো। প্রণয়’কে কবুল বলতে বলা হলো। সে শান্ত কন্ঠে পরপর তিন কবুল পড়লো। সকলেই বলে ওঠলো আলহামদুলিল্লাহ। নিজের কাজ সম্পন্ন করে শাড়ির বেড়ার ওপাশে শাহিনুরের মুখোমুখি বসলো প্রণয়। তাদের মাঝে কেবল একটি শাড়ির দেয়াল। এবার কাজী’কে ইশারা করলো প্রণয়। কাজী আবারো যথার্থ বাণী আওড়িয়ে শাহিনুর’কে কবুল বলতে বললো,
শাহিনুর যেনো দিনদুনিয়া ভুলে চলে গেলো ভিন্নজগৎে। ভাবিরা ধাক্কা দিলো। আশপাশ থেকে সকলেই বলে ওঠলো, কবুল বলো,কবুল বলুন। কিন্তু শাহিনুর অনড়। কতক্ষণ আর চুপ করে থাকবে? চারপাশ থেকে অসংখ্য মানুষ এভাকে চিল্লাচ্ছে। শেষে নিজের আম্মা আর মান্নাত বুবু’কে স্মরণ করে ভাঙা আওয়াজে ‘কবুল ‘ শব্দটুকু উচ্চারণ করলো শাহিনুর। মিহি সে সুরে কবুল শুনে সর্বপ্রথম প্রণয়ের মুখে উচ্চারিত হলো,
-‘ আলহামদুলিল্লাহ। ‘
দ্বিতীয়বার কবুল পড়ার পর যখন একদম স্তব্ধ হয়ে গেলো শাহিনুর। কোন উপায়েই তৃতীয় কবুল বললো না সে৷ তখন হাত বাড়িয়ে শাড়ি উঁচিয়ে শাহিনুরের সন্নিকটে চলে এলো প্রণয়। লাল টুকটুকে বউ’টি’কে সন্তর্পণে দৃষ্টিপাত করে নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো,
-‘ প্রিয়দর্শিনী, মাত্র তিন বার কবুল বলারই তো ব্যাপার। বলে দিলেই হয়। ‘
তবুও শাহিনুর থম মেরে বসে রইলো৷ প্রণয় আবারও বললো,
-‘ প্রেম এক তরফা হয়েছে বলে বিয়েটাও কি এক তরফা হবে নাকি নুর? এই প্রণয় চৌধুরী’র দিলের রানী হওয়ার জন্য মুখ ফুটে তিনবার কবুল’ই তো বলতে হচ্ছে। বলো নুর দু’বার যখন বলে দিয়েছো, আর একবার বলতে খুব বেশী কষ্ট হবে না। ‘
অনেকক্ষণ সময় নিয়ে তৃতীয় কবুল পড়লো শাহিনুর। বিয়ে সম্পন্ন হলো তাদের। কাজির সঙ্গে বেরিয়ে গেলো প্রণয়। আত্নীয়স্বজনে ভরপুর পাঁচফোড়ন গৃহ। বিয়ে সমাপ্ত। এবার বউ দেখার পালা। শাহিনুর’কে নিয়ে বসানো হলো বৈঠকখানায়। বৈঠকখানায় সর্বপ্রথম শাহিনুর পলাশ’কে দেখতে পেলো৷ কি ভয়ানক তার দৃষ্টিজোড়া। অমন অগ্নিচক্ষু’তে তাকিয়ে হৃদয় কেঁপে ওঠলো তার। এমন সময় প্রণয় এসে বসলো পাশে। শাহিনুর দৃষ্টি নত করে ফেললো। বিয়ের সাজে কপোত-কপোতী’কে দেখে গা জ্বলে ওঠলো পলাশের। অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে ত্যাগ করলো বৈঠকখানা। যা দেখে তাচ্ছিল্যমিশিয়ে হাসলো প্রণয়। শাহিনুরের দিকে একটু ঘেঁষে বললো,
-‘ আমার এক বন্ধু এসেছে কথা বলে আসি। ‘
প্রণয় বৈঠকখানার সাইটে চলে গেলো৷ আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে পরিচয় করানো শুরু হলো শাহিনুর’কে৷ এমন সময় প্রণয়ের এক মামি বললো,
-‘ চেহারা তো মন্দ না কিন্তু বংশ পরিচয় তো নাই! ‘
তাকে তাল মিলিয়ে দূর সম্পর্কের ফুপু বললো,
-‘ ঠিক বলেছো রূপ দেখে পুরুষ মানুষের হুঁশ থাকে না এখানেই প্রমাণিত। বংশের মান সম্মান ডুবিয়ে পুরুষ মানুষ মজা মস্তি করতে পছন্দ করে! ‘
মামি আবার বললো,
-‘ শেষমেশ আমাদের প্রণয় এমন কাজ করবে ভাবতেও পারিনি!’
ফুপু বললো,
-‘ একটা বাইজির মেয়ে এ বাড়ির বউ হলো! বাপের পরিচয় নাই এমন বউ ঘরে আনলো প্রণয়। আহারে! ‘

চারপাশ থেকে অগণিত মন্দ ভাষায় মনটা বিষিয়ে ওঠলো শাহিনুরের। আশপাশে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখলো প্রণয় একটু দূরে দাঁড়িয়ে কারো সঙ্গে কথা বলছে। কথার ফাঁকে তার দিকে তাকাচ্ছেও। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল শাহিনুর। শেষে প্রণয়ের মা প্রেরণা যখন সকলের তালে তাল মিলিয়ে বললো,
-‘ আমার ঘরে আসার কথা জমিদারের বাচ্চা অথচ আসলো এক বাইজির বাচ্চা। ‘
এবার আর সহ্য করতে পারলো না শারমিন বাইজির মেয়ে শাহিনুর। নিভু নিভু প্রদীপ হঠাৎ জ্বলে ওঠলো। জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকা লাল টুকটুকে বধূ যখন এভাবে হঠাৎ জ্বলে ওঠলো। সিনা উঁচু করে সকলের সামনে দাঁড়িয়ে সকলের দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো উপস্থিত সকলেই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো। একদিকে শাহিনুরের অপরূপ সৌন্দর্য্য অপরদিকে তেজস্বী দৃষ্টি ভীষণ রকম একটি ধাক্কা লাগলো বুকে। ইতিহাসে এ ঘটনা কি প্রথম ঘটলো? কোন নারীর সৌন্দর্যে অন্য দু’চারজন নারীর হৃদয়ে আঘাত পড়ার ঘটনা! সকলের ধ্যান মগ্ন হলো। শাহিনুরের তীব্র স্বরে বলা কথাগুলো শুনে,
-‘ আমি বাইজি কন্যা, এই কথাটি কখনোই অস্বীকার করিনি, করবোও না। শারমিন বাইজির কন্যা হিসেবে আমি গর্বিত। এখানে উপস্থিত দু’জন ব্যক্তি খুব ভালো করেই জানে আমার পরিচয়। বাইজি কন্যা ছাড়াও এই শাহিনুর শায়লার আরেকটি পরিচয় আছে। সে পরিচয় আপনারা জানতে চান? ‘
শাহিনুর যখন তেজি রূপে বসা থেকে ওঠে দাঁড়ালো তখনি তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে প্রণয়। তাই তার মুখে এহেন কথা শুনে বিস্ময়ান্বিত হয়ে আকস্মাৎ শাহিনুরের তেজস্বী মুখশ্রী’তে দৃষ্টিপাত করলো। অনুভব করলো তার হৃৎপিণ্ডে ভয়ানক কম্পন ধরেছে। চারদিকে এতো মানুষ জন, সকলের দৃষ্টি’তেই সীমাহীন বিস্ময়। অগাধ কৌতুহল। আর প্রণয়ের দৃষ্টি’তে আকুলতা, বক্ষঃস্থলে তীব্র উত্তেজনা। সেই উত্তেজনাটুকু দমিয়ে রাখতে না পেরে সকলের সম্মুখেই শাহিনুরের পাশে এসে দাঁড়ালো প্রণয়। নিজের অধিকারের জোরে এ প্রথম স্বস্তি সহকারে শাহিনুরের কোমল হাতটি চেপে ধরলো। এ প্রথম শাহিনুরও প্রণয়ের থেকে নিজের হাতটি ছাড়ানোর চেষ্টা করলো না৷ হালাল স্পর্শটি সাদরে গ্রহণ করে প্রবল দৃঢ়তার সঙ্গে ঘাড় বাঁকিয়ে প্রণয়ের দিকে নির্লিপ্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো ৷ ভরসার সহিত হাতটি আবদ্ধ করে নিয়ে প্রণয় বললো,
-‘ আমি জানতে চাই নুর তুমি বলো? ‘
ছোট করে নিঃশ্বাস ছেড়ে প্রণয়ের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে উপস্থিত সকলের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো সে।একে একে সকলের দিকে দৃষ্টি বুলিয়ে শেষে তাকালো অরুণা এবং প্রেরণার পানে। তাদের ভয় মিশ্রিত শুঁকনো মুখশ্রী দৃষ্টিগোচর হতেই তাচ্ছিল্যেমাখা একটি হাসি দিয়ে বললো,
-‘ সত্যের জয় নিশ্চিত। শারমিন বাইজির মেয়ে সততার সঙ্গে আজ নিজের সম্মান রক্ষা করবে।’
একে একে বহুবছর পূর্বে শারমিন বাইজির জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা বিবৃতি করলো সে। অলিওর এবং তার মা’য়ের মুখোশ উন্মোচন করলো শাহিনুর শায়লা। শেষে নিজের পূর্ণ পরিচয়ও সকলকে জানালো৷ বাকরুদ্ধ হয়ে ঘৃণার দৃষ্টিতে দুই মা’য়ের দিকে তাকালো প্রণয়৷ দৃঢ় কন্ঠে বললো,
-‘ আপনারা দু’জন এ কোন পাপের ভাগিদার ! ‘
মাথা নত হয়ে গেলো অরুণা,প্রেরণার। পল্লব চৌধুরী সহ উপস্থিত সকলেই বিস্ময়ে কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে গেলো। সকলেই একডাকে বললো,
-‘ তার মানে ও বাইজি কন্যা নয়? সম্পর্কে অলিওরের ভাতিজি ! ‘
[৫০]
পুরো গৃহ নীরবতায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে৷ সকলে কোন শোক পালন করছে বোঝা দায়। সামান্য বাইজি কন্যা, বাইজি কন্যা বলে যারা চিল্লাতো আজকের পর সেই চিল্লানো বন্ধ হয়ে যাওয়ার শোক? নাকি পলাশ চৌধুরী’র সমস্ত আকাঙ্ক্ষায় ভাঁটা পড়ার শোক? কোন শোকে চারদিকে এমন নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে বোধগম্য হলো না৷ শাহিনুর ভেবেছিলো সবার মতোই শোকে জর্জরিত হয়ে প্রণয় ভুলে যাবে আজকের রাতটির কথা৷ কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে শবনম আর জেবা’কে দিয়ে পুষ্পেসজ্জিত কক্ষে নিয়ে এলো শাহিনুর’কে। যার ফলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লো শাহিনুর৷ সেই উদ্বিগ্নতা চারগুণ বেড়ে গেলো শবনম এবং জেবার কথাবার্তা শুনে৷ জেবা বললো,
-‘ শোনো, ফজরের আজানের আগেই গোসল করে নিবা। আমার মতো ভুল করে আবার বকা খেও না। জানো আমি কি করেছিলাম… ‘
শবনম জেবা’কে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বললো,
-‘ নুর প্রণয় এলে দু’জন মিলে দু’রাকাত নফল নামাজ পড়ে নেবে৷ ওখানে এক গ্লাস দুধ আছে নামাজ শেষে প্রণয়’কে দেবে আর একটি পান বানানো আছে ওটা তুমি খাবে৷ ‘
হৃৎস্পন্দন ক্রমাগত বেড়েই চলেছে শাহিনুরের৷ তার মধ্যে শবনমের কথা শুনে পালঙ্কের পাশে টেবিলে থাকা এক গ্লাস দুধ আর পান দেখে ভীষণ কৌতুহলদ্দীপক হলো৷ জড়ানো কন্ঠে বললো,
-‘ আমি পান খাইনা, খেতেও পারিনা৷ ‘
জেবা বললো,
-‘ এটা বললে চলবে না। আমরা সবাই এমন নিয়ম পালন করেছি তোমাকেও করতে হবে। এটা নিয়ম তাইনা আপা৷ ‘
শবনম সম্মতি দিয়ে বললো,
-‘ হ্যাঁ নুর যা বলেছি অবশ্যই মানবে। আমরা এবার আসি। ‘
শাহিনুরের বুকটা ধক করে ওঠলো। সহসা শবনমের একটি হাত চেপে ধরলো। শবনম ফিরে তাকাতেই দেখলো, শাহিনুরের চোখেমুখে ভয়ের ছাপ। নিঃশ্বাসে প্রচণ্ড অস্থিরতা। সবটা বুঝে সে শাহিনুর’কে বুকে টেনে নিলো। মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
-‘ ভয় পেও না বোন। আমার ডাক্তার দেবর’টা তোমাকে খুব ভালোবাসে সে তোমায় ভালোবাসায় মুড়িয়ে রাখবে দেখো। প্রথম রাত’তো তাই এমন হচ্ছে আমাদেরও হয়েছে। ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। আর হ্যাঁ একটুও ভয় পাবে না। মনে রেখো যা হবে এটা প্রতিটা মেয়ের সাথেই হয়। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এটা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা। ‘
আর সময় ব্যয় করলো না শবনম দ্রুতপায়ে কক্ষ ত্যাগ করলো সে৷ কিন্তু জেবা খানিক সময় পর গেলো। যাওয়ার আগে শাহিনুরের কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বললো,
-‘ আমার দেবর’কে বলো রয়ে সয়ে হুম! ‘
শাহিনুর আঁতকে ওঠলো। ভয়ে থরথর করে কাঁপতে শুরু করলো তার হাত,পা। আজ তার সাথে কি হতে পারে কল্পনা করতেই গা শিউরে ওঠছে। অন্তঃকোণে সুক্ষ্ম এক ব্যথা কাজ করছে। হাঁসফাঁস লাগছে খুব৷ কান্না করতে ইচ্ছে করছে,ছুটে চলে যেতে মন চাচ্ছে। আজ বাসর রাত নাকি ভয়ংকর রাত? পুষ্পসজ্জিত বিছানার দিকে তাকিয়ে ভাবলো,
-‘ এটা ফুলশয্যা নাকি মৃত্যুশয্যা? ‘
সারা শরীর অসাড় হয়ে আসলো শাহিনুরের। চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো৷ সে মুহুর্তে প্রণয় কক্ষে এলো। দুপুরে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা স্মরণ করে শাহিনুরের প্রতি তার শ্রদ্ধাবোধ দৃঢ় থেকেও দৃঢ়তর হলো। নিজের পরিবারের প্রতি ঘৃণা পূর্বেই ছিলো। আজকের পর যা আরো গাঢ় হলো৷ সবচেয়ে বেশী ঘৃণা বোধ করলো নিজের দাদির প্রতি। অনুভব করলো, নারী’রাই নারী’দের বড়ো শত্রু। একজন নারী খুবই নিখুঁত ভাবে আরেকজন নারী’র জীবনে ধ্বংসস্তূপ বয়ে আনতে পারে৷ বক্ষঃস্থলে প্রশান্তি ঠেকলো এই ভেবে, তার দাদির করা ভুলটুকু অজান্তে কিছুটা হলেও শুধরে নিলো সে। ভালোবাসা পবিত্র। আর এই পবিত্র অনুভূতিটুকুর জন্য আজ এতো বড়ো প্রাপ্তি পেলো সে। কিঞ্চিৎ পাপমোচন করলো জমিদার বংশের। প্রণয়ের উপস্থিতি টের পেয়ে অনড় হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো শাহিনুর। ধীরপায়ে প্রণয় এসে তার পেছনে দাঁড়ালো। মৃদু স্বরে বললো,
-‘ স্নায়বিক অবস্থার তো বেহাল দশা। আমি কিন্তু একদম ঠিক আছি। ‘
কথা শেষ করে শাহিনুরের অতিনিকটে চলে এলো প্রণয়। তার পুরুষালি উত্তপ্ত নিঃশ্বাসগুলো শাহিনুরের ঘাড় ছুঁয়ে মেখে গেলো সর্বাঙ্গে। বাসর রাতে বধূ বেসে ছিপছিপে দেহটির কাঁপাকাঁপি দেখে বুকের ভিতর তুমুল কলহ শুরু হলো। সেই কলহ’কে দমন করে শাহিনুরের কাঁধ ছুঁয়ে নিজের সামনে ঘোরালো। প্রণয়ের স্পর্শ পেয়ে যে ভয়ানক প্রতিক্রিয়া মেয়েটা দেখালো তাতে খুব বেশী কথা বলতে পারলো না সে। শুধু সন্তর্পণে মাথায় হাত রাখলো। যার ফলে শাহিনুরের উদ্বিগ্নতা কিঞ্চিৎ হলেও কমলো। আর প্রণয় রুদ্ধ শ্বাস ছেড়ে নির্নিমেষে তাকিয়ে বললো,
-‘ একটি চুমু খাওয়া ছাড়া আজ তোমাকে আমি কিছুই করবো না নুর৷ সেই একটি চুমুর জন্যই অনুমতি চাইছি। ‘
শাহিনুর ত্বরিতবেগে দু’কদম পিছিয়ে গেলো। তার কাঁধ থেকে প্রণয়ের হাতদুটোও ছেড়ে গেলো। প্রণয় তার সদ্য বিবাহিতা বউ’কে আগাগোড়া দৃষ্টিপাত করে নিয়ে দৃঢ় কন্ঠে বললো,
-‘ আমি পেশায় একজন ডক্টর বাংলায় যাকে বলে সেবক৷ ডক্টর হিসেবে আমি যেমন মানবদেহ কেটে দু’ভাগ করতে পারি। আবার জোড়া লাগাতেও পারি। আমার চরিত্রের দু’টো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এক, আমি ভীষণ শান্ত এবং স্বাভাবিক। দুই, আমি ভীষণ অশান্ত এবং অস্বাভাবিক। কিন্তু আজ তোমার সামনে শুধু ডক্টর প্রণয় চৌধুরী বা জমিদার পুত্র দাঁড়িয়ে নেই। আজ তোমার অর্ধাঙ্গ দাঁড়িয়ে আছে তোমার সামনে। আর আমার অর্ধাঙ্গিনী হয়ে দাঁড়িয়ে আছো তুমি। এ মুহুর্তে আমি অনুভব করছি আমার অর্ধাঙ্গিনী’র কপালে আমার একটি উষ্ণ চুমুর প্রয়োজন। কিন্তু ভুল করে ফেললাম অনুমতি চেয়ে। আমার খিদে পেলে কি ভাত খাওয়ার জন্য আমি আমার পাকস্থলির কাছে অনুমতি চাইবো? নিশ্চয়ই না। তেমনি আমার অর্ধাঙ্গিনী’র চুমুর প্রয়োজন পড়লে তার কাছেও অনুমতি নেওয়ার দরকার কী? আমার অর্ধেক অঙ্গের প্রতি সব ধরনের অধিকারই রয়েছে আমার। ‘
আচম্বিত দৃষ্টি’তে তাকালো শাহিনুর। প্রণয়ের অধরে দুর্বোধ্য হাসি৷ সে হাসি দেখে শাহিনুর অকপটে জবাব দিলো,
-‘ আমার চুমুর প্রয়োজন নেই। ‘
এগিয়ে এলো প্রণয়। শাহিনুর পিছিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যত হতেই বলিষ্ঠ হাত বাড়িয়ে কোমড় পেঁচিয়ে সন্নিকটে নিয়ে এলো প্রণয়। পুরু ঠোঁটজোড়া এগিয়ে গাঢ় ভাবে ললাট চুম্বন করলো৷ চোখ মুখ খিঁচে রাখলো শাহিনুর। বাঁকা হেসে প্রণয় বললো,
-‘ অতি আদুরে বাচ্চারা গবেট হয় তারা খেতে চায় না৷ বাবা,মা জোর করে করে খাওয়ায়। আমার কপালে অতি আদুরে বউ জুটেছে। সে জানে তার স্বমীর ভালোবাসার অভাব নেই আর না চুমুর অভাব আছে৷ তাই অহংকারে নিজে থেকে কিছু চাওয়ার প্রয়োজন মনে করে না সে৷ বউ’কে চুমু না খেলে সংসারে অশান্তি বাড়ে। নতুন সংসার আমার কোন প্রকার অশান্তি চাইনা৷ ‘
হকচকিয়ে গেলো শাহিনুর। প্রণয় চোখ বড়ো বড়ো করে ভয় দেখিয়ে বললো,
-‘ সংসারে অশান্তি কমানোর মূলমন্ত্র হচ্ছে বউ’কে চুমু খাওয়া৷ ‘
[৫১]
আজ প্রণয়, নুরের বাসর রাত। এ’দিনটা’কে স্মরণীয় করার জন্য একটি উদ্যেগ নিলো পলাশ। বেশ খোশমেজাজে বাইজি গৃহে প্রবেশ করলো সে৷ হাতে মস্তবড়ো একটি কাপড়ের ব্যাগ৷ তাতে ভারী কিছু রয়েছে বোঝা গেলো৷ নির্দিষ্ট একটি কক্ষে গিয়ে এক ভৃত্য’কে দিয়ে খবর পাঠালো মান্নাত’কে। মান্নাত এলো প্রায় পনেরো মিনিট পর। এতো দেরি হওয়াতে পলাশ রেগে গিয়ে বিশ্রি গালাগাল করলো তাকে। সেসব নীরবে হজম করে নিলো সে। অন্যদিন অল্পস্বল্প জবাব দিলেও আজ একদম নিশ্চুপ রইলো৷ কারণ আজ প্রণয়,নুর বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছে। এ মুহুর্তে নুর রয়েছে প্রণয়ের বাসর ঘরে৷ বহু আকাঙ্ক্ষিত নারী’টি চোখের সামনে ছোট ভাইয়ের বউ হয়ে গেলো! এ দহন সহ্য করার মতো মানুষ পলাশ নয়৷ তবুও সহ্য করতে হবে করুণা হলো খুব। সে করুণা থেকেই নীরবে সব গালিগালাজ হজম করলো। গালাগাল করতে করতেই অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে মান্নাত’কে বিছানায় ছুঁড়ে ফেললো পলাশ। দরজা বন্ধ করে পরনের শার্ট খুলতে খুলতে বিশ্রি গালি দিয়ে বললো,
-‘ ঐ বাইজির মেয়ের কতোবড়ো সাহস, কতো বড়ো সাহস আমার চোখের সামনে আমার ভাই’য়ের নামে কবুল পড়লো, আমার ভাই’য়ের বাসর ঘরে ঢুকলো। ওকে ছিঁড়ে খাওয়ার কথা ছিলো আমার আর ও সুযোগ দিলো আমার ভাই’কে! ‘
কথাগুলো বলতে বলতেই মান্নাতের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো সে৷ একহাতে মান্নাতের চুল খামচে ধরে অন্যহাতে গলা টিপে ধরলো। বললো,
-‘ আমি কেন পারলাম না, আমি কেন পারলাম না। ‘
-‘ তোমার মতো কাপুরুষ আমাকে বিধ্বস্ত করতে পারলেও নুর’কে পারেনি। তোমার পরাজয় দেখে আজ আমি বড়ো শান্তি পাচ্ছি পলাশ। ‘
কাঁটা ঘায়ে যেনো নুনের ছিঁটে দিলো মান্নাত। সহ্য করতে না পেরে ভয়ানক রূপ ধারণ করলো পলাশ। পাগলা কু’কুরের মতো মান্নাত’কে খুবলে খেতে শুরু করলো সে। সারা শরীর’রে জঘন্য ভাবে দাঁত দিয়ে আঁচড় কাটলো৷ তীব্র ক্রোধের সঙ্গে শারীরিক মিলন ঘটালো৷ মান্নাত যখন অসহনীয় হয়ে আর্তনাদ শুরু করলো পলাশ তাকে ছেড়ে দিলো। ঘর্মাক্ত শরীরে পলাশ’কে তখন কি ভয়ানকই না লাগছিলো। আর মান্নাত গলা কাঁটা মুরগির মতো বিছানায় ছটফট করছিলো। কাতরাতে কাতরাতে বলছিলো,
-‘ যতো ক্ষোভ আমার কাছেই কেন পলাশ…এই ক্ষোভ’টা তোমার ঘরের বউ’কে গিয়ে দেখাও। ওওওহ সে তো এখন মা হতে চলেছে তাকে নিশ্চয়ই খুব আদর, সোহাগ দিচ্ছো?’
রক্তিম চোখে এক নজর তাকালো পলাশ। শরীরে ভয়ানক আগুন জ্বলছে তার। এই আগুন থামানোর জন্য বদ্ধ উন্মাদ হয়ে গেলো সে। মান্নাতের কথা শুনে তার ক্ষিপ্ততা বেড়ে গেলো হাজারগুণ। বিছানার তলায় থেকে সেই কাপড়ের ব্যাগটি থেকে একটা বড়ো রশি বের করলো। মান্নাত স্পষ্ট দেখতে পেলো পলাশ রশি দিয়ে তাকে বেঁধে ফেলার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু গা’য়ে বিন্দু শক্তি না পাওয়ায় ওঠতে পারলো না। ন’গ্ন দেহে কাতর স্বরে শুধু বললো,
-‘ আমার সাথে আর কিছু করোনা পলাশ। আমি বাঁচবো না আমি বোধহয় আর বাঁচবো না। ‘
বিনিময়ে পৈশাচিক আনন্দ পেলো পলাশ হু-হা করে হেসে ওঠলো সে। হিংস্র জন্তুর মতো ঘাড় বাঁকিয়ে শরীর নাচিয়ে বিছানার সাথে বেঁধে ফেললো নগ্ন দেহটা’কে। মান্নাত কাতর স্বরে আবারো বললো,
-‘ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে পলাশশ। ‘
পালাশ সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করলোনা। আপন চিত্তে পুরো কক্ষের বাতি নিভিয়ে দিলো। ঘাড় কাত করে পালঙ্কের নিচ থেকে একটি ধারালো তলোয়ার হাতে নিলো। সে তলোয়ারের কতোক্ষণ আবছা আলোতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে লাগলো। মান্নাত উত্তেজিত হয়ে ভীতিকর কন্ঠে ভেঙে ভেঙে বললো,
-‘ ওটা কী পলাশ? ওটা কী? ‘
পলাশ আকস্মাৎ তার স্ত্রীজনেন্দ্রিতে তলোয়ার ঢুকিয়ে দিলো। বিভৎস এক চিৎকার দিলো মান্নাত। হিংস্রতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে গিয়ে অত্যন্ত নৃশংসভাবে অসংখ্যবার একই জায়গায় আঘাত করতে শুরু করলো পলাশ। অথচ দু’বার আঘাতের ফলেই মৃত্যুবরণ করেছে মান্নাত। নরপিশাচ পলাশ প্রাণহীন মান্নাত’কেও ছাড় দিলোনা৷ রক্তাক্ত দেহে কতোশতোবার তলোয়ার চালালো হিসাবের বাইরে। শেষ পর্যন্ত মুখ থেকে বক্ষঃস্থল অবদিও আঘাত করলো। যে আঘাতের ফলে নাক,মুখ এক হয়ে চেহেরা বিকৃত রূপ ধারণ করলো। বুকের দু’অংশ কেটে চৌচির করে ফেললো। যতোক্ষণ না মান্নাতের পুরো দেহ রক্তে রঞ্জিত না হলো ততোক্ষণ থামলোনা নৃশংস পলাশ! যখন থামলো তখন দু’হাতের তালু এক করে মান্নাতের রক্তাক্ত দেহ থেকে রক্ত তুলে নিজের মাথায় ঢাললো। ফোঁস ফোঁস নিঃশ্বাস ছেড়ে অদ্ভুত স্বরে বলে ওঠলো,
-‘ তুই ওকে বাসরশয্যায় পাঠিয়েছিস উপহার সরূপ তোকে আমি মৃত্যুশয্যা দিলাম। সবুর উদ্দিন সব বলেছে আমায় সব!’

শেষ রাত তখন। বাঁশির সুরে ঘুম ভেঙে গেলো শাহিনুরের। শোয়া থেকে সটান বসে পড়লো সে৷ তীব্র বেগে কিছুক্ষণ নিঃশ্বাস ছেড়ে পাশে তাকিয়ে উদাম শরীরে প্রণয়’কে দেখতে পেলো৷ লোকটা বেহায়ার মতো খালি গায়ে শুয়ে আছে ছিঃ! লজ্জিত হয়ে চোখ সরিয়ে নিলো সে৷ ভাবলো তাদের বাসর রাত ছিলো আজ। অথচ সে এই মানুষটার সঙ্গে এক বিছানায় শুঁতেও নারাজ ছিলো। তখনি প্রণয় তাকে ভরসা দিলো। বললো,
-‘ আজকের জন্য শুধু চুমুই প্রয়োজন ছিলো তোমার। আর ছুঁবো না। নিশ্চিন্তে পাশে এসে ঘুমিয়ে পড়ো। যদি কথার হেরফের হয় তাহলে ভয়ংকর ভাবে ছুঁয়ে দিতে পারি! ‘
বাঁধ্যতা বরণ করে পাশে এসে শুয়েছিলো সে। কখন চোখ লেগে গেছে টেরও পায়নি। এতো ভাবনার ভীড়ে আচমকাই বাঁশির সুর’কে স্মরণ হলো। খেয়াল করলো এখন আর সেই সুর শোনা যাচ্ছে না। কিন্তু কোনদিক থেকে সুর আসছিলো তা স্পষ্ট মনে পড়লো। দেরি না করে ছুটে চলে গেলো ভেতরের কক্ষে। দ্রুত জানালা খুলে সুক্ষ্ম দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো বাইজি গৃহের দিকে। কিন্তু কিছুই দেখতে পেলো না। নিরাশচিত্তে জানালা বন্ধ করতে উদ্যত হতেই চমকে তাকালো। পুকুর সই সই বাইজি গৃহের পশ্চাতে কেউ আছে আর কেউ মাটি খুঁড়ছে। দু’জন আগন্তুক কে সুক্ষ্ম নজরে দেখলো কিন্তু মুখ স্পষ্ট বুঝলো না৷ তারা দুজন লাল কাপড়ে মোড়ানো কিছু মাটিতে পুঁতে ফেললো। সাহসা শাহিনুর অস্ফুটে বললো,
-‘ ওরা কারা? কি পুঁতছে ওরা!’

১ম খন্ডের সমাপ্তি।

SHARE:

Logo Light

হারিয়ে যান গল্পের দুনিয়ায়

Useful links

2024 © Golpo Hub. All rights reserved.