আহ আমার লাগছে ছাড়ুন, ছাড়ুন বলছি। প্লিজ ছাড়ুন ব্যাথা পাচ্ছি। একমনে আকুতি মিনতি করছে মেঘলা।
কিন্তু আকাশের কানে কিছুই ঢুকছে না সে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাচ্ছে মেঘলাকে…..
আকাশ মেঘলাকে ঘরে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল আর দরজা লক করে দিল।
আকাশ মেঘলাকে ধমক দিয়ে বলল আবারো সুযোগ দিচ্ছি বল কি হয়েছে কেন এমন করছিস?
মেঘলাঃ কি হবে কিছুই হয় নি….
আকাশঃ এখন যদি না বলিস কিছুক্ষন পর কথা বলার অবস্থাতেই থাকবি না মেঘলা।
মেঘলাঃ আমার আপনাকে ভাল লাগে না…
আকাশঃ ভাল… খুবই ভাল কথা তাহলে আগে লাগত কি করে…??
মেঘলাঃ আগে তো বুঝিনি।
আকাশঃ তা আগে কি বুঝিসনি আর এখন কি বুঝেছিস? আগে ছেলে ছিলাম এখন কি মেয়ে হয়ে গেছি নাকি? ও আচ্ছা তোকে এখুনো বেডে নিয়ে যাইনি বেড শেয়ার করি নি সেটাই আমার দোষ?
মেঘলাঃ ছি… কি অসভ্যের মত কথাবার্তা আমি এসব বলি নি…
আকাশঃ তাহলে কি বলেছিস এটাই ত বোঝিয়েছিস…আমি আগেই যেমন ছিলাম এখনো তেমনি আছি আগে যদি ভাল লাগতে পারে এখন কেন কেন লাগবে না? ও আচ্ছা টেস্ট করে দেখতে চাস তোকে ঠান্ডা করতে পারি কিনা? আচ্ছা আমার তো কোন আপত্তি নেই চল এখুনি দেখিয়ে দেই আমি ছেলে নাকি মেয়ে…আর কেমন পারি???
মেঘলাঃ আমি এসব বাজে কথা বলি নি বলেছি ওই ছেলেটা আপনার চেয়ে অনেক ভাল আপনার মত খারাপ না…
আকাশ জিন্স থেকে বেল্ট খুলে মেঘলাকে ভয় দেখিয়ে বলল তাই বুঝি…???
এই মেয়ে ভালই ভালই বলছি এসব ঘুরানি কথা না বলে সরাসরি সব বল কি হয়েছে?তুই যে আমায় কতটা পছন্দ করিস সেটা তো আমি জানি।
মেঘলাঃ কিছুই জানেন না আমি আপনাকে না ওই ছেলেটাকে ভালবাসি… আমি ওকে ছাড়া বাঁচব না…
।
অহ আচ্ছা তাহলে মরে যা…. বলেই মেঘলাকে মারতে শুরু করল আকাশ।
।
আকাশঃ কাকে ভালবাসিস বল আবার….
মেঘলা এমন মার আগে কখনো খায় নি।
সে চেঁচাচ্ছে, কাঁদছে কিন্তু আকাশের একটুও মায়া হচ্ছে না। সে একনাগাড়ে মেরেই চলেছে।
মেঘলা হাত দিয়ে বাঁধা দেওয়ার চেস্টা করছে কিন্তু তাতে মারের স্পীড তো কমছে না বরং হাতে বেশি আঘাত লাগছে, ২ হাতেই জায়গায় জায়গায় রক্ত জমে কালো হয়ে গেছে। আকাশ তবুও থামছে না।
মেঘলাঃ আর মারবেন না প্লিজ,অনেক লাগছে…ব্যাথা পাচ্ছি ভাইয়া….
আকাশঃ এতক্ষন যে সুযোগ দিয়েছিলাম তখন আমাকে পাত্তা দিতে ইচ্ছে করে নি তাই না? এখন কাঁদছিস কেন? আকাশ কতটা খারাপ সেটা আজ দেখে নে আর প্রেম করার স্বাদটাও মিটিয়ে নে।
মেঘলা বেল্টের এক একটা আঘাতে কেঁপে উঠছে চোখ মুখে ভয়ের ছাপ। এতক্ষনে সে বোঝে গেছে আকাশ আজ আর মানবে না। আকাশ মেঘলাকে ততক্ষন মারল যতক্ষন না মেঘলা জ্ঞান হারাল…
মেঘলা অজ্ঞান হওয়ার পর আকাশ মেঘলাকে টেনে তুলে কোলে করে নিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে বাইরে দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল।
আকাশ বাইরে আসার সাথে সাথে নাবিলের ফোন আসল।
নাবিলঃ হ্যালো আকাশ কোথায় চলে গেছিস তুই মিটিং এ আসলি না যে…
আকাশঃ একটা কাজ পড়ে গেছিল তাই মিটিং এ যাই নি। না পেঁচিয়ে সোজাসোজি বল কি হয়েছে বল? মিটিং এ যাই নি বলে সিনিয়র না রাগ করেছে?
নাবিলঃ আরে কি বলিস তোর উপড়ে কেউ কথা বলার সাহস পাবে না নাকি? আজ থেকে সবাই জুনিয়র তুই সিনিয়র। দোস্ত তুই এতদিন ধরে যে পদ টা চাচ্ছিল আজ মিটিং এ তোকে দেওয়া হয়েছে…!!! তুই এবার থেকে দলের মাথা….তোর স্বপ্ন পুরন হয়েছে।
আকাশ কিছু বলছে না….
নাবিলঃ কি ব্যাপার তোর এতদিনের স্বপ্ন আজ পুরন হল অবশ্য তুই এটার যোগ্যই ছিলি তাই বলে খুশি হবি না? কিছু বলছিস না কেন?
আকাশঃ জাহান্নামে যাক দল এসব দিয়ে কি হবে যে জন্য ক্যারিয়ার গরতে চেয়েছিলাম সেটাই তো হারাতে বসেছে আর কি হবে পদ দিয়ে?
নাবিলঃ কি হয়েছে আকাশ? মন খারাপ কেন?
আকাশ গম্ভির গলায় বলল মেঘলাকে খুব মেরেছি নাবিল….
নাবিলঃ মেরেছিস মানে?
আকাশঃ মেরেছি মানে মেরেছি, বেল্ট দিয়ে মেরে অজ্ঞান করে দিয়েছি।
নাবিলঃ কি বলছিস এসব? একটা মেয়েকে তুই মারলি? তাও আবার যাকে এত ভালবাসিস।
আকাশঃ তো কি করব বল আমাকে রেখে অন্য ছেলের সাথে ডেটিং এ যায়। আজ রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে দেখি এক ছেলের হাত ধরে বসে আছে।
রাগ কন্ট্রোল করার চেস্টা করেছিলাম শেষ পর্যন্ত পাড়ি নি তাই যতক্ষন ছটফট করেছে ততক্ষনি মেরেছি।
নাবিলঃ ছি আকাশ এটা তুই কি করলি? যা এক্ষুনি হাসপাতালে নিয়ে যা।
আকাশঃ দরকার নেই মরবে না… মরার মত করে মারি নি। আগে কখনো মার খায় নি তাই সহ্য করতে পাড়েনি অজ্ঞান হয়ে গেছে কিছুক্ষন পর এমনি জ্ঞান ফিড়বে।
নাবিলঃ তুই এসব ভাল বোঝিস…লোকজনদের কত মারলি। মারার সময় যদি বলিস একটা হাঁড় ভেংগেছে তবে পরিক্ষা করে দেখা যায় একটাই ভাংগেছে তুই তো এক্সে ছাড়াই বলতে পড়িস কোন হার টা ভেংগেছে এখন যখন বলছিস কিছু হয় নি তখন হয়ত ঠিকি বলছিস কিন্তু মেঘলাকে মারাটা একদম উচিত হয় নি ও একটা মেয়ে…
আকাশঃ কিছু হয় নি কে বলল সারা শরীরে রক্ত জমে গেছে। অনেক বার বোঝিয়েছিলাম কি হয়েছে বলতে বলেছিলাম কিন্তু ও বলে নি বরং উল্টে আমাকে রাগিয়ে দিল…
নাবিলঃ আমার মনে হয় এর পিছনে কোন রহস্য আছে তাছাড়া মেঘলা এমন করার মেয়ে নয়। হয়ত এমন কিছু ঘটেছে যা তোর সাথে শেয়ার করা যাবে না। আমার মনে হয় ও কিছু একটা লুকাতে চাচ্ছে তোর কাছ থেকে এমন তো হতেই পারে তোর পরিবার থেকে হয়ত ওকে বোঝানো হয়েছে তুই ওকে বিয়ে করলে তোকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হবে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হবে তুই সব হারাবি আর তাই তোর ভালর জন্যই ও তোর থেকে দূরে সরে যেতে চাইছে…
আকাশঃ যদি সেটাই হয় আমার সাথে শেয়ার কেন করছে না?
নাবিলঃ তুই বাড়িতে রাগারাগি করবি, হয়ত ওকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবি তাতে তোর কস্ট করে ইনকাম করতে হবে। বিলাশবহুল জীবন ছেড়ে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে তোকে। তোর পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাবে রাজনীতির স্বপ্ন পুরন হবে না। তাই মেঘলা চায় না তুই ওর জন্য এত কিছু হারিয়ে ফেল তাই ও তোকে রাগিয়ে দিচ্ছে যায়ে তুই ওকে ছেড়ে দিস। তানাহলে কেন তোর দেওয়া একাউন্ট দিয়েই প্রেম করবে আর তোর দেওয়া নাম্বার দিয়েই কেন ছেলেদের সাথে কথা বলবে…?? বাজারে কি সিম কার্ডের অভাব নাকি ও ফেসবুকের একাউন্ট খুলতে পাড়ে না কোনটা। আর ওয়েটিং এর মধ্যে তোর কল ঢুকার পরো কেন ফোন কেটে তর ফোন ধরে না? কেন লুকিয়ে কিছু করে না? সব কেন তোর সামনেই করে?
কখনো শুনেছিস এক্স এর সামনে কেউ নিউ বিএফ কে আনে? আর এখানে তো তোদের ব্রেকাপই হয় নি রিলেশান থাকা অবস্থায় তোকে দেখিয়ে দেখিয়ে অন্য ছেলেদের সাথে প্রেম করছে কেন?
আমার তো মনে হয় এর পিছনে কোন কাহিনি আছে….তোর প্রতি মেঘলার ভালবাসাটা কে কেন্দ্র করে কেউ গেম খেলছে। মেঘলাকে ইমোশনালি ব্লেকমেইল করছে আর মেঘলা তো এমনেতেই সহজ সরল আর তারউপর যদি শুনে তোর ভালর জন্য ওর কিছু করতে হবে তাহলে তো সেটা করার জন্য ও মরে যেতেও ২ বার ভাব্বে বলে আমার মনে হয় না।
আকাশঃ নাবিল তুই এসব কি বলছিস? এগুলি আগে কেন বল্লি না আমি কি করে এত বড় একটা পয়েন্ট মিস করে গেলাম শুধু শুধু এত মারলাম মেয়েটাকে ছি ছি ছি….কোন মুখে দাঁড়াব ওর সামনে? নিজের প্রতি নিজের ঘিন্না করছে,
কোন কারন ছাড়া কুকুরের মত মেরেছি মেয়েটাকে। কতবার আকুতি করেছিল বলেছিল ভাইয়া আমার লাগছে আর মারবেন না আমি শুনি নি….আমার মরে যাওয়া উচিত,বআমি তো ক্ষমা পাওয়ার ও অযোগ্য।