অর্কের সাথে রাওনাফ পুরো এনজিওটা ঘুরে দেখলো।রাওনাফ দেখলো এখানে একটা অনাথ আশ্রম আছে সাথে একটা স্কুলও আছে।রাওনাফ অনাক হয়ে অর্ককে জিজ্ঞাস করলে অর্ক বললো,বাচ্চারা এখানেই থাকে আর এখানেই পড়াশোনা করে।অয়ন, কলি, তনিমা আর দিহাদ ওদের ক্লাস নেয়।মাঝে মাঝে অর্কও ওদের ক্লাস নেয়।তবে খুব কম,বিজ্ঞান ক্লাসটা অর্ক নিয়ে থাকে সপ্তাহের যেকোনো একদিন।অন্যসময় অয়নই পড়ায়।রাওনাফ খরচের কথা জানতে চাইলে অর্ক হেসে বললো,
– ওদের আর তেমন কি খরচ।আমাদের নিজেদের সেভিংস থেকেই চলে যায়।এছাড়া অনেকেই ডোনেশন দেয়।ডোনেশনের ওই টাকাটা ওদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সেভিংস করা হচ্ছে।ওদের প্রয়োজন মতো কাজে লাগাবো।
আজকের মতো এনজিওতে অর্কের কাজ শেষ।বাহিরে কোথাও আড্ডা দিবে বলে দুই বন্ধু এনজিও থেকে বেড়িয়ে আসে।
অর্ক আর রাওনাফ যখন বাড়ি ফিরে তখন অনেকটা রাত হয়ে যায়।রাওনাফ বাড়ি ফিরে এসে দেখলো মেহেনূর বা রোশনি কেউই বাড়িতে নেই।একটু অবাক হয়ে রেনুফা বেগমকে জিজ্ঞাস করলো,
– মা মেহেনূর আর রোশনি কোথায়?
ছেলের কথায় রেনুফা বেগম তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।বাজখাইঁ গলায় বললো,
– তোর ফোন বন্ধ ছিল কেন?
সন্তান দেরি করে বাড়ি ফিরলে সব মায়েরাই চিন্তা করেন মিষ্টি শাসনের মাধ্যমে বকাবকিও করেন।কিন্তু রেনুফা বেগমের রাগের কারণ বাসায় দেরি করে ফেরা নিয়ে নয়,রাওনাফের ফোন বন্ধ পাওয়ায় তিনি ভীষণভাবে রেগে গেছেন।হয়তো তিনি অনেক বার ট্রাই করার পরেও ব্যর্থ হয়েছেন বলেই এতটা রেগে গিয়েছেন।ওর ভুলবশত হয়ে যাওয়া কাজটা মায়ের রেগে যাওয়ার জন্য যে যতেষ্ট রাওনাফ সেটা আন্দাজ করতে পারছে।মায়ের কঠোরতা দেখে রাওনাফ একটু নরম গলায় বললো,
– সরি মা,ফোনে চার্জ ছিল না।
ফোনে চার্জ ছিল না কি আর করা যাবে।এর প্রতুত্তরে ছেলেকে কিছু বলেন নি রেনুফা বেগম।কিন্তু দমে যান নি তিনি।পরমুহূর্তেই রাগটা যেনো মাথায় আবার চড়াও হয়ে উঠে।কপালে চিন্তার ছাপ ফেলে ধমকানোর ভঙ্গিমায় বললো,
– মেহেনূর আর রোশনি সেই বিকাল বেলা বের হয়েছে বাসা থেকে। এখন রাতের বাজে সাড়ে বারোটা কিন্তু ওরা এখনো বাসায় আসে নি।ওদেরকেও ফোনে পাচ্ছি না।এমনিতেই তো ওরা এই শহরের তেমন কোনো কিছুই চিনে না জানে না।তারউপর এই রাতের বেলা একা দুজন মেয়ে মানুষ।রাস্তায় যদি ওদের কোনো বিপদ-আপদ হয় তখন কি হবে?
– ওদের জন্য চিন্তা করো না।ওরা ঠিক রাস্তা চিনে বাসায় চলে আসবে!
রাওনাফ কথাটা বলে চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হতেই রেনুফা বেগম ওর পথ আগলে দাঁড়ান।ছেলের এমন ভ্রুক্ষেপহীন উত্তর শুনে উনি বেশ অবাক হয়েছেন।সাথে রাগও।দুইটা মেয়ে মানুষ রাতের বেলায় বাড়ির বাইরে আর এই ছেলে কিনা বলছে ওরা ঠিক রাস্তা চিনে বাসায় চলে আসবে।রেনুফা বেগম আশ্চর্য হয়ে বললো,
– তোর কথা শুনে তো আমি রীতিমতো অবাক হচ্ছি রাওনাফ।মেয়ে দুটো বাড়ির বাইরে আর তুই বলছিস চলে আসবে?ঘড়িটায় তাকিয়ে দেখ কয়টা বাজে।একটার কাটা ছুইঁছুইঁ।
রাওনাফ মাকে কি ভাবে বুঝাবে ওর বোন আর দশটা মেয়ের মতো নয়।ওর চলন-বলন বাকি মেয়েদের মতো নয়।বয়স অল্প হলেও ও অনেক বেশি ম্যাচিউর একটা মেয়ে।নিজের সমস্যা নিজেই স্যান্ডেল করার মতো ক্যাপাবিলিটি ওর আছে।কিন্তু মাকে সেই কথা বুঝানোর মতো শব্দ রাওনাফের কাছে নেয়। রাওনাফ ওর মাকে শান্ত কন্ঠে বললো,
– ওরা চলে আসবে মা।তুমি চিন্তা করো না।
তেতে উঠেন রেনুফা বেগম।ছেলের কথা শুনে উনার রাগ যেন বেড়ে গেছে আরো একধাপ।পরমুহূর্তেই তাচ্ছিল্যের সুরে বললো,
– এটা তোদের কানাডা না বাবা,এটা বাংলাদেশ।এখানে মেয়েরা এতো সেইফলি চলাফেরা করতে পারে না!
মায়ের কথায় রাওনাফ ঠোঁট বাকিয়ে তাচ্ছিল্যে হাসে।মাকে কিছু একটা বলতে গিয়েও বললো না।জানে ওর কোনো কথায় এখন আর উনি শুনবে না।তাই মুচকি হেসে বললো,
– ঠিক আছে আমি দেখছি কি করা যায়।
রাওনাফ আবার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে।এতো রাতে কোথাও গাড়ি পাওয়া যাবে না।তাই অর্কের বাইক নিয়ে যাবে বলে ঠিক করলো।অর্কের কাছে বাইকের চাবি চাইলে অর্ক একটু অবাক হয়ে বললো,
– এতো রাতে বাইক নিয়ে কোথায় যাবি তুই?
রাওনাফ অর্ককে বলে যে মেহেনূর আর রোশনি এখনো বাসায় পড়ে নি।অর্ক মেহেনূর আর রোশনির কথা শুনতে পেয়ে রাওনাফকে অনেক বকাবকি করে।কেন ওকে আগে বলে নি?রাওনাফ অর্কের শাসানো দেখে বললো,ও নিজেই জানে না যে মেহেনূর আর রোশনি বাইরে বেড়িয়ে।যদি জানতো তাহলে ওদের নিয়ে এক সাথেই বাসায় ফিরতো।অর্কের কপালে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু রাওনাফের মধ্যে কোনো হেলদোল নেই।ওর হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে সবে সন্ধ্যা সাতটা!অর্ক রাওনাফের এমন ব্যবহার দেখে চোখ পাকিয়ে বললো,
– তোর কি ওদের জন্য টেনশন হচ্ছে না?
– টেনশন হওয়ার কি আছে।ওরা কি ছোট্ট বাচ্চা নাকি?ওরা ঠিক বাসায় চলে আসতো।কিন্তু শুধু মায়ের জন্য আমাকে যেতে হচ্ছে।
রাওনাফের কান্ডজ্ঞানহীন কথা শুনে অর্ক তাজ্জব বনে গিয়ে শুধু রাওনাফের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ।অর্ক বুঝে গেছে রাওনাফ আসলে ওদের খুঁজতে যেতে চাইছে না।ওর বোন আর উডবি ওয়াইফ এই রাতের বেলায় বাড়ির বাইরে কিন্তু এই ছেলে দিব্যি শান্ত মস্তিষ্ক নিয়ে কিভাবে এই কথাগুলো বলছে একমাত্র আল্লাহ-ই জানেন।ওর কি একবারও মনে হচ্ছে না ওদের কোনো বিপদ হতে পারে!অর্ক ফোঁস করে তপ্ত একটা নিঃশ্বাস ফেলে গাড়ির চাবি নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়।রাওনাফ অর্কের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে বললো,
– হু!আমার বোন আমার বউ আর যত চিন্তা ওর।
রাওনাফ জানে ও যদি নাও যায় অর্ক একাই ওদের খুঁজতে যাবে।কিন্তু বোকা ছেলের কাছে না আছে মেহেনূরের ফোন নাম্বার আর না রোশনির।বিশাল এই শহরের কোথায় খুজতে যাবে ওদের?রাওনাফ পকেট থেকে ফোনটা বের করলো ঠিকই কিন্তু হতাশ হয়ে আবার পকেটেই রেখে দিলো।তারপর বাহিরে বেরিয়ে এসে দেখে অর্ক গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করে চলে যাচ্ছে।রাওনাফ দৌঁড়ে গিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ায়।ব্রেক কষে অর্ক।বিরক্ত হয়ে বললো,
– বিড়ালের মতো রাস্তা কাটলি কেন?
রাওনাফ মুখ ফুলিয়ে বললো,
– তাছাড়া কোনো উপায় ছিল না।আমাকে না নিয়েই তো চলে যাচ্ছিলি।
– তো কি করবো?
কথাটা বেশ ঝাঝালো কন্ঠে বললো অর্ক।রাওনাফ তাড়াতাড়ি করে এসে গাড়িতে উঠে বসতে বসতে বললো,
– গাড়িতে পাওয়ার ব্যাংক আছে?
অর্কের উত্তরের আশায় না থেকে নিজেই খুঁজতে লাগলো।ফোনটা চার্জে বসিয়ে দিয়ে অর্কের দিকে তাকাতেই চমকে উঠে রাওনাফ।অর্ক চোখ রাঙিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে এক্ষুণি গিলে খেয়ে ফেলবে।রাওনাফ মেকি হেসে বললো,
– আসলে ফোনটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।তাই মায়ের কলগুলো……
অর্কের দাঁত কড়মড় করতেই পুরো কথা শেষ না করেই থেমে যায় রাওনাফ।মুখে সিরিয়াস ভাব টেনে বললো,
– বসে আছিস কেন?চল।
সামনের দিকে তাকিয়ে আছে রাওনাফ।অর্ক চুপচাপ ড্রাইভ করছে।মিনিট তিনেক পরেই রাওনাফ ওর ফোনটা হাতে নিয়ে অন করে কাউকে একটা টেক্সট করলো।সেকেন্ডে দশেক পরেই রিপ্লাই আসলো।চেক করে ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে ফোনটা আবার রেখে দিলো।অর্ক রাওনাফের দিকে সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বললো,
– ওরা কোথায়?
– নীল চত্ত্বরে!
ভ্রু কুচকে আসে অর্কের।এত রাতে নীল চত্ত্বরে?ওদের বাসা থেকে তো নীল চত্ত্বর অনেক দূরে!তাহলে ওরা ওখানে কি করছে?অর্ক আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু রাওনাফ ওকে বলতে না দিয়ে হাতে থাকা ঘড়িটায় তাকিয়ে বললো,
– দেড়টা বাজে তাড়াতাড়ি চল।
অর্ক আর কিছু বললো না।শুধু গাড়ির গতিটা বাড়িয়ে দিয়েছে।মিনিট বিশেক পরেই অর্ক আর রাওনাফ এসে পৌঁছায় নীল চত্ত্বরে।কিন্তু এখানে কোথাও মেহেনূর বা রোশনি কাউকেই দেখতে পাচ্ছে না।গাড়ি থেকে নেমে আসে দুজনই।এদিক ওদিক তাকিয়ে একটু সামনে এগোতেই রোশনি আর মেহনূরকে দেখতে পেলো। রাওনাফ স্বাভাবিক থাকলেও অর্ক বেশ অবাক হয়।অর্ক দ্রুত পায়ে ওদের কাছে গিয়ে মেহেনূরকে উদ্দেশ্য করে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বললো,
– কয়টা বাজে ম্যাডাম?
– পাঁচ মিনিট কম দুইটা!
মেহেনূর গাড়ি সামনে উঠে আসন পেতে বসে রোশনির হাত থেকে মনের সুখে ফুচকা খাচ্ছিলো আর ফোন স্ক্রল করছিল।ফোনটা হাতে ছিল বলে অর্কের প্রশ্নের ঝটপট উত্তর দিয়ে দেয়।কিন্তু পর মুহূর্তেই পরিচিত কন্ঠস্বরের আন্দাজ করতেই ফোনের উপর থেকে দৃষ্টি সড়িয়ে সামনে তাকায় মেহেনূর।আদোআদো আলো অন্ধকারে অর্কের মুখটা ভেসে উঠতেই এক লাফে গাড়ির উপর থেকে নেমে দাঁড়ায় মেহেনূর।চোখ গোলগোল করে তাকিয়ে আছে।অর্ক রোশনির হাতে থাকা ফুচকার প্লেট থেকে অবশিষ্ট ফুচকাটা তুলে নিয়ে মেহেনূরের মুখে পুরে দিয়ে বললো,
– এএম আর পিএম,এই দুটোর মধ্যে পার্থক্য বুঝো?দুটো শব্দের মধ্যে পার্থক্য শুধু দুইটা বর্ণের হলেও এর বিশালতা কিন্তু অনেক।পরেরবার থেকে কথাটা মাথায় রাখবে।
কথাটা শেষ করে নীরব দৃষ্টি স্থির করে মেহেনূরের দিকে তাকিয়ে আছে অর্ক।অর্কের এ হেন কান্ড দেখে মেহেনূরের চোখ কোটর থেকে বেড়িয়ে আসার উপক্রম।রোশনি মেহেনূরের অবস্থা দেখে মুখ টিপে হাসছে।পরমুহূর্তেই অর্ক মেহেনূরের হাতে সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বললো,
– বসে বসে তো দিব্যি ফোন গুতোচ্ছিলে তাহলে আন্টির কল রিসিভ করো নি কেন?
মুখে থাকা ফুচকাটা চটজলদি হাতে নিয়ে নেয় মেহেনূর।মেহেনূর কি বলবে বুঝতে পারছে না।অর্ক চোখ রাঙিয়ে বললো,
– খাবারের অপচয় করতে নেই।
– বাসায় ফিরতে হলে খেয়ে নে তাড়াতাড়ি!
মেহেনূর রাওনাফের গলার আওয়াজ পেতেই অর্কের পিছনে উঁকি দিয়ে দেখে রাওনাফ দাঁড়িয়ে আছে।ভাইকে দেখে মুখে হাসি ফুটে উঠে মেহেনূরের।এতক্ষণ চুপ ছিল কারণ ও ভেবেছিল হয়তো অর্ক কোনোভাবে ওদের এখানে দেখতে পেয়ে চলে এসেছে।কিন্তু এখন শিওর হলো ওদেরকে নিতেই এসেছে অর্ক আর রাওনাফ।কিন্তু কি করে জানলো ওরা এখানে আছে?রোশনির দিকে জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে তাকাতেই রোশনি মাথা নেড়ে বললো, ওই বলেছে।রাওনাফ এগিয়ে এসে রোশনির পাশে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাস করলো,
– গাড়ি কিনেছিস?
কপাল কুঁচকে আসে অর্কের।সামনে তাকিয়ে খেয়াল করে দেখলো আসলেই মেহেনূরের পিছনে একটা নতুন গাড়ি।কারোর মধ্যেই তেমন কোনো কৌতূহলী ভাব দেখতে না পেয়ে অর্ক একটু অবাক হয়।মেহরাব সাহেব ব্যাংক ম্যানেজার ছিলেন।বছর দুয়েক আগেই রিটায়ার্ড করেছেন।ছেলে বিদেশী কোম্পানিতে জব করে গাড়ি কিনতেই পারে।কিন্তু রাওনাফের কথার ভঙ্গিটা এমন ছিল যে বাজার থেকে হয়তো কোনো চকলেট কিনেছে ওরা।কিন্তু গাড়িটা দেখে বেশ দামিই মনে হচ্ছে অর্কের।দুই কোটি তো হবেই।অর্ক তাও রাওনাফের বিষয়টি নিয়ে বেশি মাথা ঘামায় নি।মেহেনূর মুখে ফুচকা পুরে নিয়ে তাড়াতাড়ি শেষ করে একটু পানি খেয়ে নেয়।রোশনি কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু মেহেনূর ওকে থামিয়ে দিয়ে মিনমিনে স্বরে বললো,
– আসলে ভাইয়া আজকে বিকালে ভাবীকে নিয়ে একটু বেড়িয়েছিলাম।কিন্তু বাসা থেকে বের হয়ে আধঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরেও কোনো গাড়ি পাচ্ছিলাম না।তখন আমার ভীষণ রাগ হয়েছিল।তাই আরকি!
– হুম বুঝেছি।যা গিয়ে গাড়িতে বস।মা কিন্তু খুব রেগে আছে।এখন যদি বাসায় না ফিরিস তাহলে মা বাড়িতে ঢুকতেই দেবে না।
থমথমে মুখ করে রোশনি গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।মেহেনূর রাওনাফের হাতে চাবিটা দিয়ে বললো,
– ভাইয়া এই নে চাবি।
– আমি চাবি নিয়ে করবো?তোর গাড়ি তুই নিয়ে যা।আমি অর্ককে নিয়ে আসছি।
মেহেনূর রাওনাফের হাতের মুঠোয় চাবিটা ধরিয়ে দিয়ে মুচকি হেসে শান্ত স্বরে বললো,
– ভাবীকেও একটু সময় দে।দেখ তো মেয়েটার মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে।কেমন যেন মনমরা হয়ে আছে।কাল রাতের পর আজকে এখন দেখা হলো তোর সাথে।এর মধ্যে তো একটা বারের জন্য ফোন অবধি করিস নি।হয়তো মুখে কিছু বলবে না,তাই বলে অভিমান হতে পারে না বুঝি?তোরা ওই গাড়ি করে বাসায় যা আমরাও আসছি।
রাওনাফ চাবি নিয়ে গিয়ে গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে অর্ক আর মেহেনূরকে উদ্দেশ্য করে বাই বলে চলে যায়।ওরা চলে যেতেই মেহেনূর অর্কের দিকে তাকিয়ে চোখে থাকা চশমাটা ঠিক করে এক গাল ফোকলা হেসে গাড়ির উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়।
চলবে…