পরিজান

পরী দ্রুত পায়ে জুম্মানের কাছে গেল। এসব মা*রা*মা*রি দেখলে ভয় পায় জুম্মান। আর সেই ছেলেটাকে দিয়েই খারাপ কাজ করাতে চায়!! এটা ভেবে আরও রাগ হচ্ছে পরীর। রুপালি দা হাতে বেঁচে যাওয়া রক্ষির দিকে এগোয়। লোকটা ভয়ে এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে। তবে রুপালি তাকে বাঁধল দড়ি দিয়ে।
এবার জুম্মান কে ওরা বাড়িতে পাঠাবে। সিরাজ এখুনি চলে আসবে। এখন জুম্মান কে বাইরে পাঠানোটা ঠিক হবে না। পরী জুম্মান কে উদ্দেশ্য করে বলে,’এখুনি সিরাজ এখানে আসবে। তুই লুকিয়ে বাড়িতে যাবি। সদর দরজা দিয়ে ঢুকবি না। গাছ বেয়ে ছাদে উঠবি তার পর ঘরে যাবি। সবার আগে সোনা আপার ঘরে যাবি। সেখানে তোর শায়ের ভাইকে আমি বেঁধে রেখেছি। তুই আগে তার বাঁধন খুলে দিবি। আমার শ্বশুরবাড়ির পথ জানা আছে তোর? রাতের বেলা যেতে পারবি তো?’

কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না জুম্মান। তবে এটুকু বুঝতে পারছে যে পরীর কথামত ওকে কাজ করতে হবে। তাই সে মাথার নাড়ল। পরী বলল,’শেফালিকে
বলবি ও যেন পিকুলকে নিয়ে বাইরে তোর কাছে দিয়ে যায়। তারপর পিকুল কে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়িতে চলে যাবি। আমি পরে তোকে চিঠি পাঠাব কেমন?’

জুম্মান কাঁদছে আর মাথা নাড়ছে। সে বলে,’আব্বা একটুও ভাল না আপা। আম্মারে খুব মা*রে। ওইদিন আমারে কইলো আমি যদি মিথ্যা কইয়া তোমারে বাড়িতে না আনি তাইলে আম্মারে মা*ইরা ফালাইব।’

এরই মধ্যে সেখানে সিরাজের আগমন ঘটল। পরী আশেপাশে রুপালিকে দেখলো না। জুম্মান দৌড়ে পালিয়ে গেল। সিরাজের বুঝতে বাকি রইল না কিছুই। লাঠি হাতে সোজা হয়ে দাঁড়াল পরী। সিরাজ বলল,’তুমি এখানে?’

-‘বাহ চিন্তা শক্তি দারুণ তোমার। আমাকে চিনে ফেললে! তবে আজ পরী হয়ে নয় তোমার জম হয়ে এসেছি।’

পরনের পাঞ্জাবির হাতাটা গোটাতে গোটাতে এগিয়ে এলো সে। ঠোঁটের কোণে তার ঝুলে আছে হাসি। আশেপাশের সবকিছুই সে ভাল করে দেখে নিল। আসার সময় রক্ষিদের না দেখেই তার সন্দেহ হয়েছিল। পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্যই সে ভেতরে আসে। ঘরের এক কোণে রক্ষিকে বাঁধা দেখে সেদিকে পা বাড়াল সে। কিন্ত মাঝপথে লাঠি উচিয়ে পরী তাকে থামিয়ে দেয়,’ভুলেও ওদিকে পা রেখো না। আগে নিজের দিক ভাবো।’

সিরাজ আবার হাসে,’তুমি আমার সাথে লড়াই করতে এসেছো? পরী? এটা হাস্যকর পরী। বাঁচতে চাও তো ফিরে যাও। এই মুহূর্তে তোমাকে মা*রার কোন ইচ্ছা আমার নেই। তোমাকে ধীরে সুস্থে মা*রব। যাও ফিরে যাও।’
নিজের কথা শেষ করে সিরাজ আবারও সামনে এগিয়ে চলল। কিন্ত এবার সে প্রতিহত হলো পরীর লাঠি দ্বারা। সিরাজের পিঠে জোরে আ*ঘাত করেছে পরী। রাগন্বিত হয়ে ঘুরে দাঁড়াল সিরাজ। মুখে বিশ্রী ভাষা তুলে এগিয়ে গেল পরীর দিকে। সিরাজের সাথে হাতাহাতি শুরু হলো পরীর। সিরাজ খালি হাতে আর পরী লাঠি হাতে। সিরাজ বুঝে গেল এভাবে খালি হাতে পরীর সাথে লড়াই করা যাবে না। তাই সে ফাঁক বুঝে কক্ষ ত্যাগ করে দৌড়ে গেল অন্য একটা কক্ষে যেখানে ধারালো অ*স্ত্র রাখা আছে। পরী নিজেও ছুটছে সিরাজের পিছু পিছু।
সিরাজ দৌড়ে একটা ঘরে ঢোকে। তার জানা মতে এই ঘরে অ*স্ত্র আছে। এবং সে পেয়েও গেল। পরীকে উদ্দেশ্য করে বলল,’এখনও সময় আছে পরী তুমি চলে যাও। নাহলে কঠিন মৃ*ত্যু দেব আমি তোমায়।’

-‘তুমি ভুল সিরাজ। আজ সে মৃ*ত্যু আমি তোমাকে দেব। আমি জানি মৃ*ত্যুর দুয়ারের কাছে আমি পৌঁছে গেছি। আমি ভয় পাই না মৃ*ত্যুকে।’
সিরাজ বুঝলো আজ লড়াই করতেই হবে তাকে। তাই সে এগিয়ে এসে অস্ত্র চালায় পরীর উপর। পরী নিজেকে রক্ষা করে ঘুরে গিয়ে আরেকটা অ*স্ত্র হাতে নেয়। কিছুক্ষণ দুজনে অ*স্ত্র যুদ্ধ করার পর দুজনেই একটু আধটু জখম হয়। একটা সময় পরীর হাতের অ*স্ত্রখানা ছিটকে দূরে পড়ে গেল। একজন পুরুষের সাথে তো পেরে ওঠা সম্ভব নয়। সেখানে সিরাজ শক্তিশালী পুরুষের মধ্যে একজন। তারমধ্যে রুপালি এখনও আসছে না। পরী তাও থামে না। কক্ষের দেয়ালের সাথে মশাল ঝুলানো ছিল। তাতে আগুন জ্বলছে। পরী দ্রুত পদে আগুনের মশাল টা হাতে নিলো। সিরাজের দিকে উঁচিয়ে ধরল। এভাবে কয়েকবার নিজেকে রক্ষা করে পরী। কিন্ত সিরাজ মশাল সহ পরীর হাত ধরে ফেলে। অন্যহাত দিয়ে অ*স্ত্র ধরে পরীর গলায়। পরী নড়াচড়া বন্ধ করে কিছু একটা ভাবতে থাকে।

সিরাজ বলে,’রূপের দেমাগ তোমার তাই না? এর জন্যই তো শায়ের এতো পাগল। তবে আজকের পর সেই পাগলামি তুমি দেখবে না। রূপ না থাকলে শায়ের তো তোমার ধারে কাছেও আসবে না।’

সিরাজ মশাল টা চেপে ধরে পরীর মুখের উপর। অগ্নি লাভায় মুখটা ঘুরিয়ে নেয় পরী। মুখে কাপড় বাঁধা ছিল,আগুন লেগে গেল কাপড়ে। পরী সাথে সাথেই লাথি মারে সিরাজের পশ্চাৎ এ। এবং ছিটকে দূরে সরে যায়। পরী হাত দিয়ে বৃথা চেষ্টা চালায় আগুন নেভানোর। কিন্ত পারে না। আগুন ছড়িয়ে যাচ্ছে মুখের চারিদিক এবং গলাতে। পরী কাপড়টা খুলতে চাইল কিন্ত ওর হাতে জখম হয়েছে তাই ব্যাথায় ঠিকমত খুলতেও পারছে না। কাপড় পুড়ে পুড়ে পরীর মুখের সাথে লেগে গেল। ভিশন জ্বালাপোড়া হতে লাগল পরীর।
সিরাজ আবার উঠে দাঁড়াল। এগিয়ে গেল পরীর দিকে। পরমুহূর্তে ঘটে গেল আরেকটি ঘটনা। পেছন থেকে একটা ত*লো*য়া*র এসে ভেদ করে সিরাজের বুক। পেছন ফিরতে পারে না সিরাজ। শুধু নিজের বুক ভেদ করে বের হওয়া ত*লো*য়া*রে*র র*ক্ত*মাখা মাথাটার দিকে তাকিয়ে রইল নির্ণিমেশ। রক্তের স্রোত বইতে লাগল সিরাজের বুক থেকে। রুপালি এক টানে বের করে নিল ত*লো*য়া*র খানা। তারপর দ্বিতীয়বারের মতো আবারও একই স্থানে আঘাত করে। সিরাজ আর শরীরের ভর ধরে রাখতে পারে না। লুটিয়ে পড়ে মেঝেতে। রুপালিকে দেখে ওর চোখজোড়া শান্ত হয়ে যায়। মুখের কাপড়টা সরিয়ে দাঁড়িয়েছে সে। সিরাজের দিকে তাকিয়ে সে হেসে বলে,’পেছন থেকে আঘাত করার পদ্ধতি আমি তোমার কাছ থেকেই শিখেছি সিরাজ। দেখো আজ কাজে লেগে গেল।’
কিন্ত রুপালি আর কিছু বলতে পারে না সিরাজ কে। পরীর আর্তনাদে সেদিকে ফিরে তাকায়। আগুন পরীর শরীরের একটু একটু করে ছড়াচ্ছে। রুপালি দৌড়ে পরীর কাছে গেল। নিজের মাথায় বাঁধা কাপড়টা খুলে সেটা দিয়ে চেপে ধরে পরীর মুখ। ঠিক তখনই শায়েরের আগমন ঘটে সেখানে। প্রিয়তমার এরকম অবস্থা দেখে দৌড়ে গেল সে। রুপালির হাত থেকে কেড়ে নিল কাপড়টা। নিজেই নেভালো আগুন। কিন্ত ততক্ষণে পরীর মুখের অর্ধেক ঝলসে গেছে আগুনের তাপে। শায়ের ছুটে গেল বাইরে। খানিক বাদে মাটির কলস ভর্তি পানি এনে ঢেলে দিল পরীর মুখে। মুখটা জ্বলছে খুব। পরী শক্ত মুখে বসে আছে। এখন মুখ দিয়ে শব্দ বের হচ্ছে না ওর। ইতিমধ্যে বাইরে হইচই শোনা যাচ্ছে। শায়ের আতঙ্কিত হয়ে বলল,’সবাই চলে এসেছে। এখান থেকে পালাতে হবে। চলুন তাড়াতাড়ি।’

পরী উঠতে পারলো না। শায়ের বিলম্ব না করে কোলে তুলে নেয় পরীকে। রুপালিকে সাথে করে পেছনের দরজা দিয়ে বের হয় ওরা। আফতাব সহ বাকি সবাই ততক্ষণে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেছে। সিরাজ ই তাদের খবর পাঠিয়েছিল। আসার পথে রক্ষিদের দেখতে না পেয়ে সিরাজের চতুর মন বুঝতে পারে এখানে কিছু হয়েছে। আশেপাশে খুঁজে সেই রক্ষিদের বাঁধা অবস্থায় দেখতে পায়। একজনের জ্ঞান ছিল না। আরেকজনের বাঁধন খুলে তাকে জমিদার বাড়িতে খবর দিতে পাঠায়। এজন্যই আফতাব তার দলসহ চলে এসেছে। সিরাজের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়। র*ক্তে ভেসে যাচ্ছে চারিদিক। কে মা*র*ল সিরাজ কে? অন্য কক্ষে বেঁধে রাখা সেই রক্ষিকেও রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায় সবাই। সেও মৃ*ত।
আফতাবের সন্দেহ পুরোটাই পরীর উপর গিয়ে পড়ে। সে চারিদিকে লোক পাঠায়। পরী নিশ্চয়ই আশেপাশে কোথাও আছে।
কিন্ত ততক্ষণে শায়ের পরীকে নিয়ে চলে যায়। পরীর শরীরের শক্তি খুবই কম। শায়ের কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। রুপালি বলে উঠল,’পরীকে এখুনি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ওর কষ্ট হচ্ছে।’

শায়ের রুপালিকে বলে উঠল,’আপনি বাড়িতে ফিরে যান। আপনার বাবা আপনাদের খোঁজ করতে বাড়িতে যাবে। বাড়ির কেউই আমাদের খবর জানে না। আপনি থাকলে সব সহজ হবে।’

-‘কিন্তু পরী?’
শায়ের খানিকটা ধমকে ওঠে বলে,’আপনি যান। পরীজান কে আমি সামলে নিব।’
রুপালি দেরি করে না। দৌড়ে চলে গেল জমিদার বাড়ির রাস্তা ধরে।
শায়ের উপায়ন্তর খুঁজতে লাগে। এই মুহূর্তে পরীকে শহরের ভাল কোন ডাক্তার দেখাতে হবে। এই রাতের বেলা গাড়ি পাওয়া মুশকিল। কিন্ত পরীকে তো নিতেই হবে। রাতের বেলাতে গাড়িওয়ালা চাচাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে শহরের পথে রওনা দিলো সে। সারারাস্তা পরীকে সে বুকে চেপে ধরে রাখে।

-‘আমার কথা না শুনে কেন গেলেন আপনি সেখানে পরীজান? আমি যে এখন আপনার কষ্ট সহ্য করতে পারছি না।’
পরী ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু বলার চেষ্টা করে কিন্ত পোড়া স্থানে টান ধরায় ব্যথা অনুভব করতেই থেমে যায় সে।শায়ের বলে,’আপনি কথা বলবেন না পরীজান। দয়া করে চুপ থাকুন। চিন্তা করবেন না। আপনি শীঘ্রই সুস্থ হয়ে যাবেন। আমি থাকতে আপনার কিছুই হবে না।’
গাড়ি থেকে নেমে নৌকার খোঁজ করে শায়ের। পেয়েও যায়। শহরে যেতে হলে পদ্মা পাড়ি দিতে হবে। এখন কোন ট্রলার পাওয়া যাবে না। জেলে দের নৌকা দেখা যাচ্ছে শুধু। তাদেরই এক নৌকায় করে পরীকে নিয়ে রওনা হয় শায়ের। পদ্মা পার হওয়া চারটেখানি কথা না। বৈঠা বেয়ে যেতে অনেক সময়ই লেগে গেল। এতো রাতে তো আর কোন ডাক্তারের দোকান খোলা থাকবে না। সরকারি হাসপাতাল গুলোও মনে হয় বন্ধ হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে শায়ের নিজেকে ভিশন অসহায় লাগছে। এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন সে কখনোই হয়নি। একটা হাসপাতালের সামন গিয়ে সেটা খোলা পেলো।
অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সে। দুজন মহিলা ডাক্তার পরীর চিকিৎসা শুরু করে।
আর শায়ের চিন্তিত হয়ে বাইরে বসে থাকে। ঘেমে একাকার হয়ে গেছে শায়ের। এই মধ্যরাতে এতকিছুর সাথে যুদ্ধ করে এতদূর এসেছে সে। তবুও শায়ের পরীকে বাঁচাতে পেরেছে এটাই অনেক তার কাছে। তার করা পা*পে*র শাস্তি পরী পাচ্ছে। এজন্য শায়েরের অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে। সিরাজ কে জীবিত পেলে শায়ের ওর যে অবস্থা করতো তা সে নিজেও ভাবতে পারছে না। মাথা নিচু করে সে বসে আছে। হঠাৎই চোখের সামনে একজোড়া পা থামতেই চোখ তুলে তাকায় শায়ের। মানুষ টা তার অতি পরিচিত। যদিও তার সাথে অল্প দিনের জন্য পরিচয় হয়েছিল তবুও মানুষ টা তো পরিচিত। শায়ের দাঁড়িয়ে পড়ল।
নাঈম বিষ্মিত কন্ঠে বলে উঠল,’আপনি এখানে? এতো রাতে?’

এতক্ষণ যে শায়ের চোখের পানি ফেলছিল তা শায়েরের চোখ দেখেই নাঈম বুঝতে পেরেছে। ভেজা ভেজা গলায় শায়ের বলল,’পরীজান!!!’
বাকি কথা গলাতেই আটকে গেল ওর। তবে নাঈম বুঝে নিল তার উল্টো। সে ভেবেছিল পরী বোধহয় মা হতে চলেছে সেজন্যই শায়ের তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে।

——–

-‘তো সেদিন নাঈমের সাথে আপনার আর পরীর আবার দেখা হয়! কিন্ত আপনি যে বললেন পিকুল কে আপনার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল পরী। তাহলে পিকুল নাঈমের কাছে কীভাবে আসল?’

শায়ের এতক্ষণ কথা বলতে বলতে হাঁপিয়ে গিয়েছিল বিধায় একটু দম নিচ্ছে। হঠাৎই মুসকানের প্রশ্নে চোখ তুলে তাকায় সে। ঠোঁট জোড়া প্রশ্বস্ত করে হাসে শায়ের। অদ্ভুত লাগে শায়েরের এই হাসি ওর কাছে। মনে হচ্ছে এই চাহনি আর এই হাসি তার পরিচিত। কিন্ত মুসকান ঠিক মনে করতে পারছে না যে এর আগে সে শায়ের কে কোথাও দেখেছে কি না! মুসকান কে চিন্তিত দেখে শায়ের হেসে বলে,’এই চিন্তা শক্তি নিয়ে আপনি সাংবাদিক হয়েছেন? আমি তো ভাবতেই পারছি না।’

কথা শেষ করতে করতেই আবার হাসে শায়ের। মুসকানের ভিশন অস্বস্তি লাগছে। এই হাসিটা ওর চেনা কিন্ত মনে পড়ছে না সে কোথায় দেখেছে? কিছুক্ষণ গভীর ভাবে ভাবার পর ওর মনে পড়ল শোভনের কথা। কিন্ত কেন মনে এলো তা সে বুঝতে পারছে না। শোভনের চোখদুটো যেন একদম শায়েরের মতো। এমনকি হাসিটাও। কিন্ত শোভন তো রুপালির ছেলে। নাঈম ই তো ওকে বলেছে। তাহলে শায়েরের সাথে শোভনের এতো কেন মিল? মাথা ঘোরাচ্ছে মুসকানের। এ কোন গোলক ধাঁধায় আটকে গেল সে। তবে সে নিশ্চিত শায়ের এই বিষয়ে মুখ খুলবে না। শায়ের আগের মতোই হাসছে। মুসকান ভেবে পাচ্ছে না এরকম একটা সময়ে আদৌ কোন লোক হাসতে পারে!! দুদিন পর তার ফাঁ*সি। পরীর মতো সেও হাসতে হাসতে মৃত্যুকে বরণ করতে চাইছে!!
মুসকানের মনে পড়ে গেল পিকুলের কথা। হিসেব অনুযায়ী পিকুলের জন্ম ১৯৯৯ তে। তাহলে পিকুলের বর্তমান বয়স দশ বছর। কিন্ত শোভনের বয়স মাত্র ছয়। তার মানে শোভন পিকুল নয়। সে অন্য কেউ। তাহলে শোভন শায়ের পরীর সন্তান!!
এসব কথা মাথায় আসতেই চট করে দাঁড়িয়ে পড়ে মুসকান। শায়েরের সাথে আর কোন কথা না বলে দৌড়ে থানা থেকে বের হয়ে যায়।

SHARE:

Logo Light

হারিয়ে যান গল্পের দুনিয়ায়

Useful links

2024 © Golpo Hub. All rights reserved.