সংঘাত

মৌসুমী আক্তার

–ভাল কথায় না গেলে অন্য ভাবে নিতে হবে কথাটা বলেই উনি জোর করে আমাকে পাজা কোলে তুলে বিছানায় এনে ফেললেন। মানুষের হাত এত শক্ত হয় কিভাবে জানিনা?চেষ্টা করেও উনার হাতের বাঁধন থেকে মুক্তি পেলাম নাহ।আমি অগ্নিচোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।আমার অনিচ্ছায় উনি আমাকে বিছানায় এনে ফেললেন।

মৌসুমী আক্তার

আমি জানি দিয়া তোর বিয়েটা হয়তো এভাবে দেওয়া ঠিক হয়নি। কিন্তু দিয়া একটা কথা মাথায় রাখিস মা বিয়ের পর স্বামি ই কিন্তু সব।হুট হাট করে এইভাবে চলে আসলে মানুষ কত বাজে কথা বলে দেখেছো তো।বিহানের জীবনের সুখ শান্তি তোমার উপর নির্ভর করছে।

মৌসুমী আক্তার

কাউকে কিছুই না বলে আম্মুদের বাসায় চলে এলাম আমি।সারারাস্তা ভেবেছি সামান্য ফোনের কথা শোনার জন্য এতটা রিয়্যাক্ট কেনো করলেন উনি।আমি আর একদিন ও যাবো না ও বাড়িতে।উনি উনার প্রেমিকাকে এতটায় ভালবাসেন তার সম্পর্কে কথা শুনে ফেলেছি বলে এত বাজে ব্যাবহার করলেন।

মৌসুমী আক্তার

–দেখো বিহান তোমার সাথে দিয়ার বিয়ে আরো অনেক আগেই ঠিক ছিলো।আমাদের দুই পরিবারের ইচ্ছা তোমাদের বিয়ে দেওয়ার।তুমি যদি এখন এই বিয়ে না করো তাহলে আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো।আর তুমি ফুফু যদি এটা শোনেন যে তুমি তার মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি নও তাহলে তার কেমন লাগবে ভেবেছো।

সানজিদা বিনতে সফি

আকাশে মেঘ জমেছে। যেকোনো সময় আকাশ ভেঙে বৃষ্টি হবে।দমকা বাতাসে চারিদিকের গাছপালা দুলে দুলে উঠছে। বারান্দায় বসে একমনে সামনের কৃষ্ণচুরা গাছের দিকে তাকিয়ে আছে নূর।কৃষ্ণচুরা ফুলে গাছটি নতুন সাজে সেজেছে। সেদিকেই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে নূর।

জান্নাতুল নাঈমা

চোখের পলকেই অতিক্রান্ত হলো বিবাহিত ব্যাচেলর জীবনের কয়েকটা মাস। এই কয়েকমাসে অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটেছে। নামী, সুহাসের সম্পর্ক মোড় নিয়েছে বন্ধুত্বে। প্রত্যহ কাজের পাশাপাশি নিয়ম করে তিনবেলা খুনশুটিও চলে তাদের। ওদের এই বন্ধুত্ব, খুনশুটির আড়ালে রয়েছে প্রগাঢ় ভালোবাসা। যা ওরা টের না পেলেও টের পায় আশপাশে থাকা প্রত্যেকে।

জান্নাতুল নাঈমা

সৌধর গাড়ি এসে থামল সদর হাসপাতালের সামনে। সুহাস ত্বরিত গাড়ি থেকে নেমে দৌড় লাগাল৷ সৌধ মুখে মাস্ক পরে অপেক্ষা করতে লাগল ওদের ফিরে আসার৷ সে নিজে আর নামল না৷ দেখা গেল কেউ চিনে ফেললে বাবা, ভাইকে জানিয়ে দেবে। আর তারা রাগারাগি করবে একা একা বের হওয়ায়।

জান্নাতুল নাঈমা

ঠোঁটের কোণা বেয়ে পড়া রক্ত টুকু তর্জনীতে মুছে নিল নামী৷ মুছে নিল গাল বেয়ে পড়া অশ্রুটুকুও৷ এরপর নিজেকে যথাসম্ভব শক্ত করে নিয়ে দৃঢ় গলায় বলল, ‘ মিসেস উদয়িনী, অনেক বলেছেন আপনি। এবার আপনার শোনার পালা। ‘ চমকে গেল উদয়িনী। হতভম্ব মুখে তাকিয়ে রইল নামীর বিধ্বস্ত মুখপানে।

জান্নাতুল নাঈমা

লিভিং রুম থেকে গিটারের শব্দ ভেসে আসছে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসা সিমরান সে শব্দ শুনেই লাফিয়ে ওঠে বলল, ‘ ও মাই গড! সৌধ ভাই গিটার বাজাচ্ছে! ‘ নামী ওর চুল আঁচড়ে দিচ্ছিল। আকস্মিক লাফিয়ে ওঠায় ভয় পেয়ে গেল সে। শুনেছিল সুহাস, সৌধ দুজনই দারুণ গিটার বাজাতে পারে। গানের গলাও অসাধারণ।

জান্নাতুল নাঈমা

সুহাস, নামী এক সঙ্গে এক রাত বদ্ধ ঘরে থাকা মানে ভয়াবহ সুনামি ঘটবেই ঘটবে। এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী ছিল বন্ধুরা। কিন্তু সেই সুনামির পরিণাম যে সুহাসকে এভাবে বদলাতে শুরু করবে ভাবতে পারেনি ওরা। ভাবতে পারেনি স্বয়ং নামীও। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে সেদিনের পর সুহাস আর নামীর পেছনে লাগেনি৷

জান্নাতুল নাঈমা

সুহাস নামীকে একঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা লক করে দিল নিধি৷ এরপর প্রলম্বিত নিঃশ্বাস ছেড়ে সৌধ, আইয়াজ আর ফারাহর সঙ্গে খুঁড়িয়ে নিচে চলে এলো। তাকে সাহায্য করল সৌধ। সুহাস, নামীর মধ্য স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। বদ্ধঘরে এবার দু’জন মা’রামারি করুক, কা’টাকা’টি করুক। বা প্রেম, ভালোবাসায় হাবুডুবু খাক। এটা সম্পূর্ণ ওদের ব্যাপার।

জান্নাতুল নাঈমা

প্রতি খুবই অবাক হলো সুহাস৷ সে তো এটা বলতে চায়নি। খেলার শর্ত মেনে নামীকে আই লাভ ইউ’ই বলতে চাচ্ছিল৷ তাহলে কী করে আই হেইট ইউ বলে ফেলল! ভালোবাসি বলতে গিয়ে ঘৃণা করি বলে ফেলল কেন? এসব ভাবনার ভীড়ে নামীর ঝাপসা চোখ, গাল বেয়ে পড়া অশ্রু নজর এড়াল না।