ক্যারাম বোর্ডের পাশেই চায়ের দোকানে বসে ধোয়া উঠা গরম চায়ে চুমুক দিচ্ছে প্রান্ত। ডান হাতে চায়ের কাপ, বাম হাতে সিগারেট। একবার সিগারেটে ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছে তো আরেকবার চায়ের কাপে। বাবা-মায়ের ছোট ছেলে সে। বড় ভাই
রাজনীতিতে জড়িত থাকার সুবাদে প্রান্তরও খুব নাম ডাক আছে। তবে বেশিরভাগ মানুষই তাকে চেনে রাগী,গম্ভীর, বদমেজাজী,গুন্ডা বলে। কিন্তু প্রান্ত দেখতে ঠিক তার বিপরীত। প্রথম দেখায় কেউই বলতে পারবে না এই ছেলের মধ্যে এত দোষ। সবসময় সাদাসিধা ভাবে থাকবে। চোখে মোটা ফ্রেমের সাদা গ্লাসের চশমার জন্যই বোধ হয় প্রান্তকে আরো বেশি ইনোসেন্ট লাগে। এলাকায় হোক বা বাহিরে কোথাও খুব দাপটের সাথেই চলে। তার মুখের ওপর কথা বলার সাহস তার বড় ভাই ছাড়া আর কারো নেই।
প্রান্তর পাশেই বসে রয়েছে তার চ্যালাপ্যালা। কালকের সেই ছেলেটা প্রান্তর উদ্দেশ্যে বলে,
“ভাই, কালকে আপনি চইলা যাওয়ার পর এক মাইয়া আইছিল।”
প্রান্ত আরেকবার চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলে,
“কোন মেয়ে?”
“চিনি না ভাই। এই এলাকায় কাইলই প্রথম দেখছি।”
“পরে?”
“মাইয়া তো ভাই খুব তেজি আর প্রতিবাদী। কথার ধারে যেন শরীর কাইটা যাওয়ার মতোন অবস্থা।”
প্রান্ত একবার ওর দিকে তাকিয়ে কপাল কুঁচকে হাসে। তারপর বসা থেকে ওঠে চায়ের কাপটা চাওয়ালার সামনে রেখে পাশের ছেলেটাকে ইশারায় বিলটা দিয়ে দিতে বলে।
তারপর হাঁটতে হাঁটতে ক্যারাম বোর্ডের দিকে এগিয়ে যায়। খেলতে খেলতে বলে,
“হ্যাঁ, সেলিম তারপর কী হলো?”
“মাইয়া কয়, আপনারে নাকি দেইখা নিব।”
প্রান্ত এবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে কপাল চুলকে বলে,
“মেয়ে বোধ হয় তাহলে সত্যিই এই এলাকায় নতুন। আমায় চিনলে এই কথা বলার সাহস করত না।”
“আমারও তাই মনে হয় ভাই। কিন্তু মাইয়া যে আপনেরে থ্রেড দিয়া গেল আপনি কিছু করবেন না?”
“সেলিম তুই তো জানিসই মেয়েদের সাথে ঝামেলা করা আমার পছন্দ না। আম্মা পছন্দ করেন না। তবে একটা কাজ করতে হবে তোর।”
“আপনি খালি কন কী করতে হইব আমার।”
“মেয়েটার বাবাকে খুঁজে বের কর। তাকে ভয় দেখিয়ে কিছু বলে দে। সাথে আমার সম্পর্কে বিস্তারিত সব বলবি। তাহলে আর প্রতিবাদ করার সাহস করবে না।”
“আইচ্ছা ভাই এই কাজ আমি আইজই কইরা দিমু।”
“আচ্ছা। আমি এখন তিথির কলেজে যাচ্ছি।”
প্রান্ত সাথে আরো কয়েকজন ছেলেকে নিয়ে তিথির কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
——————————-
পরীর হাসি দেখে রাগী লুকে তাকিয়ে আছে তুর্য। পরীর সাথে বাসের আরো অনেকেই হাসিতে যোগ দিয়েছে। কয়েকজন আবার মিটিমিটি হাসছে। হিজড়াটা পরীর দিকে তাকিয়ে বলে,
“এই সুন্দরী এমনে হাসো ক্যান হুম? তোমার বয়ফ্রেন্ড বুঝি সেক্সি না?”
পরী হাসি থামিয়ে বলে,
“না, না উনি কেন আমার বয়ফ্রেন্ড হতে যাবে?”
তুর্য এবার হিজাড়াকে পঞ্চাশ টাকার একটা নোট এগিয়ে দিয়ে বলে,
“ও আমার গার্লফ্রেন্ড নয় আপা। ও আমার বউ।”
হিজড়াটা আরেকবার তুর্যর গাল টেনে বলে,
“আপা কী গো হ্যান্ডসাম? এমনে আপা বললে বুকে লাগে বোঝো না?”
তুর্য একটু কেশে বলে,
“এভাবে গাল ধরে টানাটানি করলে বাড়িতে বউ খুব মারবে গো আপা।”
“হুহ! দুষ্টু ছেলে।”
টাকা তোলা শেষ হলে ওরা বাস থেকে নেমে যায়। পরী তুর্যর দিকে ঘুরে একটা ভ্রু কিঞ্চিৎ উঁচু করে বলে,
“মিথ্যা বললেন কেন? আমি আপনার বউ লাগি?”
“ওটার হাত থেকে বাঁচার আর কোনো উপায় ছিল না। দেখছিলে না গাল ধরে কেমন টানাটানি করে।”
“তো কী? ভালোই তো লাগছিল আপনাদের।”
“তোমার এই ফাইজলামির জন্য কবে যে কী করে বসি।”
“স্বপ্নেই ভাবেন শুধু হুহ।”
বাস কলেজের সামনে এসে পড়লে পরী নেমে পড়ে। পিছু পিছু তুর্যও নামে। পরীর সাথেই তুর্যকে কলেজে ঢুকতে দেখে পরী কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,
“একি আপনি পিছু পিছু কলেজে আসছেন কেন?”
“এই শোনো, আমি তোমার পিছু পিছু আসিনি ওকে? আমার বোনের কলেজের অনুষ্ঠানে এসেছি।”
“তাই নাকি? তো কোথায় আপনার বোন?”
“ও আরো আগেই চলে এসেছে।”
দুজনের কথার মধ্যেই তুর্যর বোন দৌঁড়ে আসে। কাছে এসে বলে,
“এত দেরি হলো কেন আসতে?”
“একটু দেরি হয়ে গেছে আরকি!”
“আচ্ছা।”
পরীর দিকে তাকিয়ে বলে,
“ও কে?”
“এক ঝগড়ুটে মেয়ে।”
পরী হাত তুলে কিছু বলতে যাবে তখনই তুর্যর ফোন আসে। তাই ফোন রিসিভ করে কথা বলতে বলতে অন্যদিকে চলে যায়। পরীর মুখে বিরক্তর ছাপ দেখে বলে,
“আচ্ছা আমরাই পরিচিত হই এসো। আমি তিথি। তুমি?”
পরী মৃদু হেসে বলে,
“পরী।”
“তুমি এই কলেজেই পড়?”
“হ্যাঁ।”
“আমি পাশের কলেজে পড়ি। কোন ইয়ার তুমি?”
“সেকেন্ড ইয়ার।”
“আরে, আমিও তো সেকেন্ড ইয়ারেই পড়ি।”
পরী একটু ইতস্তত করে তুর্যর দিকে তাকিয়ে বলে,
“তুমি কি উনার বোন?”
তিথি পরীর দৃষ্টি অনুসারে পিছনে তাকিয়ে বলে,
“কে? তুর্য ভাইয়ার কথা বলছ? হুম, আমরা ভাই-বোন। কিন্তু তুমি ভাইয়াকে চেনো কী করে বলো তো? বাই দ্যা ওয়ে, তুমি আমার ভাবি-টাবি কিছু লাগো না তো?”
তিথির চোখেমুখে দুষ্টুমির হাসি। এদিকে তিথির এমন কথায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে আছে পরী। মাথাটা সামান্য নাড়িয়ে বলে,
“না, না অসম্ভব। এমন ঝগড়ুটে ছেলের সাথে কখনো কোনো মেয়ের সম্পর্ক হতে পারে নাকি? কখনোই না।”
“আচ্ছা একটা জিনিস বুঝলাম না, একটু আগে ভাইয়াও তোমাকে ঝগড়ুটে বলল। এখন আবার তুমিও ভাইয়াকে ঝগড়ুটে বলছ। তোমাদের মধ্যে সম্পর্ক কী বলো তো?”
“সম্পর্ক তেমন কিছুই না। তবে সাপে-নেউলে সম্পর্ক বলতে পারো।”
“ভাইয়ার ওপর দেখছি তোমার খুব রাগ। ভাইয়াকে চেনো কীভাবে?”
পরী বিরসমুখে বলে,
“সে এক কালো ইতিহাস।”
তিথি ফিক করে হেসে বলে,
“সে আবার কেমন ইতিহাস।”
“আছে গো। অনেক কাহিনী। পরে একসময় বলব।”
“ঠিক আছে। কিন্তু পরিচয়টা কীভাবে জানতে পারি?”
“আমি তোমাদের ফ্ল্যাটেই থাকি।”
“তাই নাকি? আগে তো কখনো দেখিনি তোমায়।”
“এই মাসেই এসেছি। তাই দেখোনি।”
“ওহ আচ্ছা।”
মেহেনুবা ফোন করেছে। পরী তিথির দিকে তাকিয়ে বলে,
“আমার ফ্রেন্ড ফোন করছে। ভেতরে যাবে না?”
“যাব একটু পর। তুমি যাও আমি আসছি।”
“ঠিক আছে।”
পরী ফোন রিসিভ করে এগোতে থাকে। মেহেনুবা ধমক দিয়ে বলে,
“অনুষ্ঠান শেষ হলে আসবি নাকি?”
“আরে কলেজেই আছি আমি।”
“কোথায়? দেখতে পাচ্ছি না তো।”
“তুই কোথায়?”
“আমি তো স্টেজের সামনে।”
“স্টেজ থেকে বেরিয়ে আয়।”
“পাগল তুই? সেই কখন থেকে জায়গা দখল করে বসে আছি। তোর জন্যও একটা চেয়ার রেখেছি। এখন যদি উঠে যাই তাহলে জায়গা দখল হয়ে যাবে।”
পরী হেসে বলে,
“ছোট বেলাকার অভ্যাস এখনো গেল না তোর। তুই থাক। আমিই আসছি।”
“আচ্ছা আয়। রাখছি।”
এত মানুষের ভিড়ে অবশেষে অনেক কষ্টে খুঁজে বের করে মেহেনুবাকে। পরীকে পাশে বসিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মেহেনুবা।
“ইশ! এতক্ষণ আমার কী যে খারাপ লাগছিল। এখন নিজেকে পূর্ণ লাগছে।”
পরী হাসে। মেহেনুবা আবার বলে,
“জানিস আমাদের ক্লাশের অনেকেই গান গাইবে, নাচবে।”
“ভালো তো। তুইও কিছু কর।”
মেহেনুবা এবার মলিন মুখে বলে,
“না রে। সাগর জানলে খুব রাগ করবে।”
“বালের বয়ফ্রেন্ড তোমার। সবসময় বয়ফ্রেন্ডের কথায় উঠতে, বসতে হবে কেন?”
“যখন প্রেম করবি তখন বুঝবি।”
“প্রেম করলেও কখনো এমন ছেলের সাথে করব না যে আমার স্বাধীনতা কেড়ে নেবে। না আমি তার কথায় কখনো উঠব, বসব আর না সে কখনো আমার কথায় উঠবে, বসবে। আমাদের দুজনের পার্সোনালিটিই বজায় থাকবে। কোনো মেরুদণ্ডহীন ছেলেকে পরী ভালোবাসবে না বুঝেছিস।”
“হু।”
“মুখ এমন গোমড়া করে রেখেছিস কেন? আমি তো শুধু আমার মতামতটাই বললাম।”
“হু।”
“আবার হু! হু, হু করছিস কেন? হাস।”
মেহেনুবা এবার দাঁত কপাটি বের করে হেসে দেয়। পরী মেহনুবার গলা জড়িয়ে গালে গাল ঠেকিয়ে বলে,
“আমার কিউটি।”
অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। পাশের কলেজের এক ছাত্রী নৃত্য পরিবেশন করছে এখন। স্টেজের পাশ থেকে বাংলা সাবজেক্টের ম্যাম ইশারায় পরীকে ডাকে। পরী মেহেনুবাকে বলে ম্যামের কাছে যায়। ম্যাম পরীর হাত ধরে টেনে ক্লাশরুমে নিয়ে যায়। যেখানে সবাই নাচ, গান প্র্যাকটিস করছে। পরী ম্যামের দিকে তাকিয়ে বলে,
“কী হয়েছে ম্যাম? আপনাকে এমন চিন্তিত লাগছে কেন?”
“তোমার একটা হেল্প লাগবে পরী।”
“হ্যাঁ ম্যাম, কী হেল্প লাগবে বলুন।”
“যেই মেয়েটা এখন নৃত্য করছে ওর পরই তোমাদের ক্লাশের গীতার গান গাওয়ার কথা। কিন্তু কাল রাত থেকে গীতার জ্বর আসায় ও আজ কলেজে আসেনি।”
“একজন গান না গাইলে তাতে কী সমস্যা ম্যাম?”
“সমস্যা আছে। ঐ কলেজ আর আমাদের কলেজ মিলে সমান সমান স্টুডেন্ট বেছে নিয়েছে গান আর নাচের জন্য। এখন আমাদের একটা স্টুডেন্ট কম থাকলে বিষয়টা কেমন দেখায়?”
“কিন্তু ম্যাম কারো অসুস্থতা তো আর বলে আসে না।”
“হ্যাঁ, জানি। আর এজন্যই গীতার বদলে তুমি গান গাইবে। আমি গীতার অসুস্থতা কথা ঘোষণা করেই তোমাকে ডাকব। ততক্ষণ তুমি একবার প্র্যাকটিসও করে নিতে পারবে।”
“কী বলছেন ম্যাম? এভাবে হুটহাট কীভাবে? মানে আমার তো কোনো প্রিপারেশনই নেই।”
“সমস্যা নেই। গানটা তো তুমি পারোই। একদিন ক্লাশে তোমার গানটা যে শুনলাম? তোমার গলার স্বর আর সুর বেশ মিষ্টি। তুমিই পারবে গীতার অনুপস্থিতি ফিলআপ করতে। প্লিজ পরী!”
“ম্যাম এভাবে অনুরোধ করে বলবেন না প্লিজ। আপনার কথাই আমার আদেশ। কিন্তু কোন গানের কথা বলছেন?”
“পরিণীতা মুভির ‘তোমাকে’ গানটা। ওর বোধ হয় নৃত্য প্রায় শেষের দিকে। তুমি একবার প্র্যাকটিস করে নাও।”
ম্যাম চলে যেতেই পরী একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। ফোনে গানটা প্লে করে ভালো করে একবার শুনে নেয়। এরপর নিজে নিজেই আবার গায়। এতগুলো মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে গান গাইতে হবে এটা ভেবেই বেশি নার্ভাস হয়ে পড়ছে পরী। কিন্তু কিছু তো আর করারও নেই। অনেক কষ্টে সাহস সঞ্চয় করে নেয়। এনাউন্সমেন্টে নিজের নাম শুনতে পেয়েই ভীরু মনে ধীর পায়ে স্টেজে গিয়ে উপস্থিত হয় পরী। ম্যাম মাইক্রোফোনটা পরীর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,
“অল দ্যা বেষ্ট মাই ব্রেফ গার্ল। ডোন্ট বি নার্ভাস। আই নো, ইউ ক্যান ডু ইট পার্ফেক্টলি।”
ম্যামের কথায় পরী একটু ভরসা খুঁজে পায়। সেলিম পরীকে দেখে উত্তেজিত হয়ে প্রান্তকে বলে,
“ভাই, ভাই এইটাই তো ঐ মাইয়া। যে বলছিল আপনারে দেইখা নিব।”
প্রান্ত হাতের ইশারায় সেলিমকে থামতে বলে।
কয়েকজোড়া উৎসুক চোখ তাকিয়ে আছে পরীর দিকে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, মেহেনুবা, ম্যাম, তিথি, সেলিম, প্রান্ত ও তুর্য।
পরী ভয়ে ভয়ে দীর্ঘশ্বাস চাপিয়ে দৃঢ়তার সাথে গান শুরু করে।
“প্রাণ দিতে চাই
মন দিতে চাই,
সবটুকু ধ্যান
সারাক্ষণ দিতে চাই
তোমাকে,
ওওও তোমাকে।
স্বপ্ন সাজাই
নিজেকে হারাই
দুটি নয়নে রোজ নিয়ে শুতে যাই
তোমাকে,
ওওও তোমাকে।
জেনেও তোমার আঁখি চুপ করে থাকে,
রোজ দুইফোঁটা যেন আরো ভালো লাগে।
কানে, অভিসারে
চাই শুধু বাড়ে বাড়ে,
তোমাকে
ওওও তোমাকে।
যেদিন কানে কানে সব বলব তোমাকে
বুকের মাঝে জাপটে জড়িয়ে ধরব তোমাকে,
পথ চেয়ে রই,
দেরি করো না যতই
আর ভোলা যাবে না
জীবনে কখনোই
তোমাকে,
ওওও তোমাকে।
তুমি হাসলে
আমার ঠোঁটে হাসি,
তুমি আসলে
জোনাকি রাশি রাশি,
রাখি আগলে
তোমায় অনুরাগে
বলো কীভাবে
বোঝাই ভালোবাসি।
সব চিঠি সব কল্পনাজুড়ে
রঙ মিশে যায় রুক্ষ দুপুরে
সেই রঙ দিয়েই
তোমাকে আঁকি
আর কীভাবে
বোঝাই ভালোবাসি।”
পরীর গান শেষ হলে চারপাশে করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। পরী হাসিমুখে স্টেজ থেকে নামে।
পরী স্টেজের দিকে এগিয়ে আসতেই তুর্য সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে পরীর দিকে।