দেখুন আমি কিন্তু চিৎকার করব, ছাড়ুন আমার হাত।
“করো চিৎকার।” শাওন শান্তভাবে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে বলল।
আমি হাত ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা করে বললাম, লাগছে আমার ছাড়ুন আমাকে।
“কী মনে করো তুমি আমাকে?” শাওন বলল।
তারপর এক ঝটকায় আমার হাত ছেড়ে দিল। আমি জলদি পিছিয়ে এসে গায়ে তোয়ালে পেচিয়ে নিলাম।
এখনো ভয়ে গা কাপছে।
শাওন বলল, “ভিজে গায়ে রুমে গিয়ে আমার রুম নষ্ট করার ইচ্ছা?! You have got 2 minutes. ২মিনিটের মধ্যে বের হবা। তোমার জন্য লেট হবে আজ আমার।”
বিরক্তি নিয়ে কথাগুলো বলে শাওন বেড়িয়ে গেল।
আমি মনে মনে বললাম, ২ মিনিটে কেউ কীভাবে গোসল করে।
তাও জলদি বাথরুমের দরজা আটকে গোসল সেরে শাড়ি পরাতে হবে এমন সময় মনে এলো শাড়ি ত আনি নি। এখন কি হবে?উনি কি রুমেই আছেন? ২ মিনিটের জায়গায় ৫ মিনিটে গোসল ত শেষ করলাম কিন্তু এখন!
অল্প একটু দরজা খুললাম উকি দিয়ে দেখলাম কেউ নেই রুমে। বের হব কিনা চিন্তা করতে লাগলাম।
এত ভাবলে আর চলে না তাই বের হয়ে এলাম।
গায়ে তোয়ালে টা ওড়নার মত করে নিলাম। ল্যাগেজ থেকে যে শাড়ি হাতে এলো সেটা জলদি নিয়ে ছুটতে
গিয়েই ধাক্কা খেলাম শাওনের সাথে। উনি বেলকনিতে ছিলেন হাতে ফোন ছিল ফোন টিপতে টিপতে বের হতেই ধাক্কাটা খেল।
আমি ধাক্কার তাল সামলাতে না পেরে ওনার দুই বাহু দুই হাতে ধরলাম যাতে পরে না যাই। শাওন তীক্ষ্ণ চোখে তাকালো।
উনি এখনো শার্ট পরেন ই নি। আমি ওনাকে ছেড়ে কয়েক পা পিছালাম।
হার্ট এত জোরে জোরে বিট করছে যে এখনি ফেটে যাবে।
দেখতে পাও না? শাওন বিরক্তির সাথে বলল।
আম থতমত খেয়ে শাওনের দিকে তাকালাম।
শাওন উত্তরের অপেক্ষা না করেই চলে গেল বাথরুমে। আমি মুখ ভেংচি দিয়ে মনে মনে বললাম আপনি দেখতে পান না?
আমি শাড়ি হাতে চিন্তা করতে লাগলাম এখন কি করি।
মাথায় idea এলো। ওনার ত গোসল করে বের হতে দেরি আছে সেই ফাকে শাড়ি পরে নিই। তাও রিস্ক নিতে পারলাম না তাই আস্তে করে বাহিরে থেকে বাথরুমের দরজা লক করে দিলাম।
কোনোমতে শাড়ি পরে বাথরুমের লক খুলে শাওনের রুম থেকে বেরিয়ে এলাম।
পিশামশাই ডাইনিং টেবিলে বসে পেপার পড়ছিল। আমাকে দেখে চশমার ফাক দিয়ে তাকিয়ে বললেন, “কিরে কাচুমাচু হয়ে আছিস যে!”
আমি ফ্যাকাসে হাসি দিয়ে বললাম, “ক… কই। না ত!”
পিশামশাই খবরের কাগজের দিকে মন দিয়ে বলল, যাক ভাল। ঘুম হয়েছে ভাল?
“হ্যা পিশামনি।” আমি আবার ফ্যাকাসে হাসি দিলাম।
– পিশামনি
– হ্যা বল (খবরের কাগজে দৃষ্টি আবদ্ধ রেখে বললেন)
– বাড়ি যাব।
– কোন বাড়ি (পেপারের দিকে তাকিয়েই বললেন)
– এখানে ভাল লাগেনা।(ফট করে বললাম)
– শাওন কিছু বলেছে? থাম দিচ্ছি ওকে। (আমার দিকে তাকিয়ে পিশামশাই বললেন।)
– না না, উনি কিছুই করেন নি। আমি এমনিই যেতে চাচ্ছি
পিশামশাই খবরের কাগজ ভাজ করতে করতে বললেন, আচ্ছা তাইলস আজ কালের মধ্যে যাই ফিরে নাকি!
আমি একগাল হাসি দিলাম। খুশির ঠেলায় বললাম, “চা দিব?”
– দে দে।
আমি রান্নাঘরে ঢুকে চটজলদি দুই কাপ চা করে নিলাম।
পিশামশাই কে চা দিয়ে আমি পাশের চেয়ারে বসে নিজের চা খেতে যাব তখন পিশামশাই বললেন, শাওনের চা করলি না?
আমি মুখ ভেংচি দিয়ে বললাম, আমি কেন করব!
“আমি যার তার হাতের চা খাইনা” বলতে বলতে রুম থেকে বেড়িয়ে এলো শাওন।
অফিসের জন্য একদম রেডি সাদা শার্ট, কালো স্যুট কালো ঘড়ি পরে।
অফিসিয়াল ড্রেস-আপে অনেক সুন্দর লাগছে ওকে।
আমি অপমানের জবাব দিলাম না। এমনি বাথরুমের ঘটনার জন্য এখনো লজ্জা লাগছে। তাই নিজের চা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে রইলাম।
শাওন পিসামশাইকে একটা মোটা খাম ধরিয়ে দিয়ে বলল, এটাতে সব আছে। আমি আড়চোখে তাকালাম কিন্তু কিছুই বুঝলাম না। কি আছে খামে? যাই থাকুক আমার কি। আমি উঠে চায়ের কাপ রাখতে গেলাম কিচেনে। কিচেন থেকে ডায়নিং দেখা যায়।
শাওন আরো কিছু মেবি বলল পিশামশাই কে তারপর চলে গেল।
এবার প্রশ্ন করলাম, ওই খামে কি আছে?
– এখনো ত জানিনা। কিসের কি যেন কাজের। যাই হোক তুই রেডি হয়ে থাকিস আজ ই ফিরে যাব। যাওয়ার আগে ঘুড়তে যাব বুঝলি। তুই দুপুরের পর রেডি হস আমি একটা কাজ করে ফিরে এসে নিয়ে যাব তোকে।
আমি খুশিতে শেষ। শেষমেশ যাচ্ছি তাইলে।
“দুপুরের খাবার সব ফ্রিজে বুঝলি, গরম করে রাখিস ত।”
“হ্যা হ্যা সব করে নিব”, আমার খুশির শেষ নেই আজ। আমি ল্যাগেজ গুছাতে গেলাম। এদিকে পিশামশাই সেঈ খাম নিয়ে নিজের রুমে গিয়ে ব্যাগ হাতে বেরিয়ে এসে গেস্ট রুম টা তালা মেরে দিলেন। তালা মনে হয় নিজেই নিয়ে এসেছিলেন।
তারপর সোফাতে বসে বললেন শোন বাহিরে থেকে আসছি আমি বুঝলি।
আমি ব্যাগ গোছাতে গোছাতে শাওনের রুম থেকেই বললাম, আচ্ছা আচ্ছা।
আমি খুশিতে গুন গুন গান করতে করতে ব্যাগ গোছাতে লাগলাম।
ভিজে শাড়ি জলদি বেলকনিতে দিলাম যাতে দুপুরের আগেই শুকিয়ে যায়।
ঘরের বাহিরে এসে দুপুরের খাবার গুলো ফ্রিজ থেকে বের করলাম।গরম করে টেবিলে রেডি করতেই চোখ পড়লো পিশামশাই এর তালা মারা গেস্ট রুমে।
এটাতে তালা মারার কি অর্থ?
যাই হোক হবে কিছু।
সেদিন দুপুরে টেলিফোনে কল আসল আমি ফোন তুলে হ্যালো বলতেই
ওপাশ থেকে পিশামশাই বলল, “বুঝলি খেয়ে নে। আমি বাহিরে খেয়ে নিলাম ফ্রেন্ড এর সাথে। আসব একটু দেরি করে।”
একা একা খেতে ভালো লাগছেনা তাই খেলাম না। অপেক্ষা করতে করতে দুপুর পেরিয়ে বিকাল। পিশার খবর নেই।
আমি রেডি হয়ে বসে আছি।
আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হয়ে গেল। যত না খুশি লাগছিল তার চেয়ে বেশি খারাপ লাগছে এখন।
পিশামনিকে ফোন দিলাম ধরল না। তাই ফোন দিতেই থাকলাম।
ধরল না। মনে হয় ব্যস্ত। আমি মন মরা হয়ে বিছানার গিয়ে বসলাম। এক পর্যায়ে ঘুমিয়ে গেলাম।
শাওন রাত ৮ টায় বাসায় এলো। দরজার লক সিস্টেম ৩ রকম। তালাও দেওয়া যায় আবার লক দরজায় চাবি দিয়েও খোলা যায় আবার পাসওয়ার্ড সিস্টেম। শাওন চাবি ঘুরালেও দরজা খুলল, না মানে ভিতরে হুক লাগনো। তিন বার কলিং বেল দিল শাওন বিরক্তির সাথে। কারন আজই আমাদের চলে যাবার কথা ছিল। এজন্যই খামে টাকাগুলো পিশামশাইকে দিয়েছিল শাওন।আমি ঘুমে অচেতন।
শাওন আবার কলিং বেল চাপ দিল ৩ বার। আমি চোখ ডলতে ডলতে উঠলাম। হঠাৎ খেয়াল হলো পিশামনি এসেছে নাকি। এত বড় ঘুম দিলাম যে ৮ টার বেশি বাজে ঘড়িতে। চট করে উঠে হাসিমুখে দরজা খুলতেই শাওনকে দেখে হাসি গায়েব হয়ে গেল।
শাওন ভ্রু কুচকে বলল, কানে শুনো না? আর দরজা কেন আটকিয়েছো? ডর লক ইউজ করলেই ত হয়।
শাওন আমাকে পাস কাটিয়ে ঢুকে পরল।
শাওন নিজের রুমে গেল তাই আমি হতাস মুখে সোফাতে এসে বসলাম। শাওন ফ্রেস হয়ে বের হলো। শাওনের ফোন বেজে উঠল। রিসিভ করে হ্যালো বলল।
ফোন পিশামশাই করেছেন।
-হ্যালো শোন শাওন আমি এক ফ্রেন্ড এর বাসায় আছি বুঝলি আজ আর ফিরব না। কাল আসব।
-তোমাদের না আজ বাসায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল?
পিশামশাই ইচ্ছা করে হ্যালো হ্যালো বলে নেটওয়ার্ক সমস্যা বুঝিয়ে ফোন কেটে দিল। শাওন অনেক বিরক্ত নিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ল।
৯টার দিকে শাওন নিজের সেই রুটি সবজি নিয়ে বসে পড়ল খেতে।
আমি সোফার কোনায় মাথা রেখে মন মরা হয়ে পরে রইলাম।
ক্ষুদা ত লেগেছে কিন্তু খেতে ইচ্ছে করছেই না। তাই উঠে রুমে এসে বিছানায় দুই হাটু মাঝে মাথা দিয়ে বসে রইলাম।
শাওন খাওয়া শেষ করে রুমে আসল। টের পেয়েও আমি মাথা তুললাম না। সকালে কি এক কান্ড হলো। লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করতেছে।
শাওন এসে নিজের ফাইলগুলো নিয়ে রুমে বসে বসে পেনসিল দিয়ে কি যেন করতে আরম্ব করল। আমার এখন মরা বাড়ি মরা বাড়ি মনে হচ্ছে এই বাসাটা। এর চেয়ে শশুড়বাড়ি ভাল ছিল মনে হয়।
১০ টা বাজে। ঘুম ও আসছেনা। একটু আগেই যা ঘুমিয়েছিলাম তাতে আজ ১২ টা ১ টা অব্দি ত আসবেই না।
শাওন ফাইল গুছিয়ে রেখে লাইট বন্ধ করে রুম থেকে বের হলো। সেই সুবাদে আমি মাথা তুললাম। আস্তে আস্তে গিয়ে বেলকনিতে দাড়ালাম। আজ চাঁদ মাঝারি আকারের। তাও ভালই আলো।
শাওন গেস্ট রুমের সামনে দাড়িয়ে আছে। তালা মারা দেখে ভ্রুকুচকে তাকিয়ে আছে। বুঝতে বাকি রইল না যে পিশা ঠিক ই জানেন ও গেস্ট রুমে এসে আজ ঘুমাতে পারে। তাই এই কাজ করে গেছে।
“সিরিয়াসলি! আজ ও সোফায় ঘুমাতে হবে” চিন্তা করেই মাথা ব্যাথা শুরু হলো শাওনের। বিরক্তির সাথে নিজের রুমে এসে বিছানায় কাউকে না দেখে শুয়ে পড়ল। মনে মনে বলল, ১ দিন আমি সোফায় ঘুমিয়েছি আজ তোমার পালা। শাওন ঘুমিয়ে গেল।
আমি অনেকক্ষণ বেলকনির মেঝেতে বসে রইলাম। কত মিস করছি নিজের গ্রাম কে আজ। জীবন কত দ্রুত বদলায়। ১২ টার দিকে রুমে ঢুকলাম।৷ রুম এখন ঘুরঘুটে অন্ধকার লাগছে। সোফাতে উনি নেই। কোথায় গেলেন তাইলে। বিছানার কাছে যেতেই বুঝলাম শাওন ঘুমিয়ে আছে।
দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে আমি বালিশ নিয়ে সোফাতে শুয়ে পড়লাম। ২ মিনিট শুয়েই বুঝলাম সোফাতে ঘুমানো অসম্ভব। এমনিও ঘুম আসছে না তাই খোলা বেলকোনির দিকে তাকিয়ে রইলাম। ভোরের দিকে চোখে একটু ঘুম এলো।
৬ টার একটু আগে আগেই শাওন উঠল। সোফার দিকে তাকালো। কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে গোসলের জন্য নিজের তোয়ালে আর কাপড় নিলো। নিতে নিতে আমার দিকে তাকাতেই দেখল আমি একদম সোফার কোনায় চলে এসেছি। আর একটু হলেই পরব নিচে।
মুখ দিয়ে বিরক্তির শব্দ করে বলল, “Hey”.মনে মনে বলল নামও ত মনে নেই।
বলতে বলতেই আমি ঘুমের ঘোড়ে পরে যাবার মত অবস্থা হতেই এসে আমাকে ধরল শাওন।
ওর এক হাত আমার মাথার নিচে অন্য হাত দিয়ে আমার হাত ধরা। এত কিছুর পরেও আমি শান্তিতে ঘুমাচ্ছি। ভাবা যায়। এজন্য কাকাকাকি বলত ঘুমের মধ্যে তোকে নিয়ে কেউ গর্তে ফেললেও তুই টের পাবি না।
আমি শান্তিতে মাথা নাড়িয়ে আরো শাওনের কাছে চলে আসলাম। শাওনের ফোন বেজে উঠল। শাওন বিছানার রাখা ফোনের দিকে তাকালো। আমিও ঘুমের ঘোড়ে চোখ খুললাম। শাওন আবার মুখ ঘুরিয়ে আমার দিকে ভ্রুকুচকে তাকালো।
আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমার অত কাছে কেন উনি।
কিছুই বুঝে উঠতে না পেরে ফট করে উঠে বসলাম আর বললাম, কি করছেন আপনি! দুই হাত নিজের গায়ের উপর দিলাম। আড়চোখে শাওনের দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলাম।
ফোন বাজা থেমে গেল। শাওন উঠে দাড়ালো।
“সোফা গড়াগড়ি করে ঘুমানোর জন্য না” ভ্রুকুচকে কথাটা বলেই শাওন গোসলে ঢুকে গেল।
আমি মনে মনে বললাম, মানে কি!
আমি উঠে দাড়ালাম। ভাবছি কি করব তখনি শাওনের ফোন আবার বেজে উঠল।
কি করব ধরব?
একবার বাথরুমের দিকে তাকালাম তারপর ফোনের কাছে গেলাম। দেখলাম পিশামশাই ফোন করেছে।
আমি রেগে গেলাম। বাহ উনি আমাকে ফোন না করে শাওনকে ফোন করেছেন আগে।
ফোন রিসিভ করে রেগে বললাম, পিশামনি কোথায় তুমি? আমি কাল থেকে অপেক্ষা করছি।
পিশামনি বলল, অহ তুই ধরেছিস। আর বলিস না কাল ওই খাম টা দিল না শাওন। বলল যে এই নেও এগুলার বদলে মিলাকে রেখে যাও। কি আর বলব আমি বল। তাই একাই চলে এলাম। শাওনের উপর ত আমি আর কথা বলতে পারি না তাই না?
আমি আশ্চর্য হয়ে বললাম, “কি বলেছেন উনি? আবার বলো!”
“ওকেই জিজ্ঞাসা করে নে না। আমি ভাই এখন সুন্দরবন যাচ্ছি। ঘুষ ঘুষ। ভালো থাক। টাটা।”
আমি হ্যালো হ্যালো বললাম কিন্তু অইদিকে পিশামনি ফোন কেটে দিয়েছেন।
আমি দ্রুত ফোন কান থেকে নামিয়ে আবার ফোন দিতে চাইলাম কিন্তু ছাতার পাসওয়ার্ড দেওয়া ফোনে।
রাগে ফুলতে লাগলাম আমি। মনে মনে বললাম, ঘুষ! দেখাচ্ছি ঘুষ!
শাওন বের হলো একটা ব্লু শার্ট আর কালো প্যান্ট পরে। আমি অইভাবেই রেগে দাড়িয়ে আছি।
শাওন আলমারি খুলে স্যুট খুজতে লাগল।
শাওন কালো স্যুট বের করে সোফায় রাখল। আর হাতার বোতাম লাগাতে লাগাতে আমার দিকে তাকালো। হঠাৎ ওর নজর আমার হাতে পরল। আমি ওর ফোন ধরে আছি।
শাওন রেগে বলল, আমার ফোন নিয়ে তুমি কি করছ?
আমিও রেগে বললাম, আপনি পিশাকে কি বলেছেন?
শাওন ভ্রু কুচকে বলল, কি বলেছি?
“জানেন না আপনি?”
শাওন নিজের ঘড়ি পরায় ব্যাস্ত হয়ে গেল।
এটা দেখে আমি আরো ক্ষেপে গেলাম। দুই পা এগিয়ে এসে বললাম, “আপনি ঘুষ দিয়েছেন?”
শাওন এবার আমার দিকে অবাক হয়ে তাকালো। এইভাবে তাকানো দেখেই আমি ভাবলাম যে পিশামনি তাইলে ঠিক ই বলেছেন।
– কি চান আপনি? কেন দিয়েছেন টাকা ওনাকে?
– সেটা তোমার জানার বিষয় না আর তোমার না জানলেও চলবে।
আমি রেগে বললাম, কেন? আমাকে নিয়েই যখন, তখন আমি জানব না কেন।
শাওন উওর না দিয়ে বলল, আমার ফোন দেও।
– না দিব না।
শাওন রেগে বলে উঠল, আমার ফোন দেও।
– আমাকে আগে আপনি বলবেন……
কথা শেষ করার আগেই শাওন আমার দিকে আসল তাই আমি চুপ হয়ে গেলাম।
– ভালো ভাবে দেবে? শান্ত গলায় বলল শাওন।
হাত বাড়িয়ে দিল।
আমি ভয়ে ভয়ে বললাম, আপনি আগে,…..
আমার কথা শেষ হবার আগেই আমার হাত থেকে ফোন টা টেনে নিয়ে আবার আলমারির দিকে চলে গেলেন উনি।
“আমি থাকতে চাই না আপনার সাথে” রেগে বলে উঠলাম।
শাওনও শান্ত গলায় স্যুট ঠিক করতে করতে বলল, “আমিও তোমাকে রাখতে চাইনা।”
– তাইলে কেন জোর করছেন?
“What do you mean? জোর করছে কে!” অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল শাওন।
– আপনি। আপনি করেছেন। আপনাকে আমার একদম ই সুবিধার মনে হয় না।
শাওন ওর স্যুট ঠিক করা রেখে আমার দিকে তাকালো । শাওনের চোখ দেখেই বুঝলাম লাস্ট কথাটা বলাটা কত বড় ভুল হয়েছে আমার।
একটা ঢোক গিলে নিলে মনে মনে বললাম, আমার কি ভয়, হুহ, যা সত্যি তাই ই ত। আমাকে জোড় করে রাখতে কেন চাইবে উনি?
“কে সুবিধার না?” শাওন বলতে বলতে আমার কাছে এগিয়ে এলো।
আমি ভয়ে শেষ । উপর থেকে কেউ দড়ি ফেললে আমি উঠে যাব এমন অবস্থা।
– আমি ত… (আমার কথাও বের হচ্ছে না)
শাওন আমার কাছে আসতেই আমি জলদি মুখ ঘুরিয়ে চলে আসতে যেতেই শাওন আমার হাত ধরে নিজের দিকে ফিরালো আমাকে।
আমি চমকে উঠলাম।
– কি করছেন আপনি হাত ছাড়েন আমার।
– what did you just say? আমি সুবিধার না!?
– আ… আমি ত….
-“তুমি ত কী?” শাওন আমার চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল।
আমি শাওনকে ধাক্কা দিয়ে দুই পা পিছাতেই বিছানায় পরে গেলাম। এখন কি করব আমি। নিজের বলা কথায় নিজেই পস্তাচ্ছি।
শাওন আমার কাছে ঝুকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলল, “সুবিধার না হলে কি হতে পারে সেটা আজ আমি তোমাকে দেখাব।”
চলবে…