অরিএান খুব জোড়ে গাড়ি চালাচ্ছে।ওয়াসেনাত তার পাশেই বসে আছে।ভয়ে সে চোখগুলো বন্ধ করে রেখেছে।অরিএানের দিকে তাকালেই তার আরো ভয় লাগছে।কেমন যেনো ভয়ংকর লাগছে তাকে। ওয়াসেনাত বরাবরি বাচাল।তবে ভয়ে কিছু বলতে পারছে না।তারপরেও অধিক সাহস যোগিয়ে বলে উঠে…………
__আমরা কই যাচ্ছি??আমার ভার্সিটিতে ক্লাস আছে।যেতে হবে অলরেডি একটা ক্লাস শেষ মনে হয়ে।
__জাস্ট শার্টআপ (চিৎকার করে)তোমাকে কে বলেছিল ওর গাড়ির নিচে যেতে। বলো কে বলেছিল। সমস্যাটা কি তোমার সব সময় কেনো এভাবে চলো বলো।নিজের প্রতি এত ক্যারলেস কেনো তুমি।আর আজকে কিছু হয়ে গেলে।কি হত যানো।সব সময় বাচ্চামু কখনো রাস্তায় মারামারি করো তো কখনো গাড়ির নিচে বসে পরো কেনো বলো কেনো।
অরিএান খুব জোড়ে গাড়ি থামিয়ে বলে উঠে।তার কথাগুলো খুব ভয়াবহ সাউন্ড সৃষ্টি করেছে যার কারনে ওয়াসেনাত ভয়ে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলে।ওয়াসেনাত তেমন একটা কাঁদেনা।তবে ওয়াসেনাতের একটা ভয়ংকর অভ্যাস আছে যেমন সিরিয়েস টাইমে তার খুব হাসি পায় আর অনেক সামান্য ব্যাপারে সে কেঁদে দেয়।এখন কার ব্যাপারটাও একই রকম।গাড়িতে ধাক্কা খেয়ে ব্যাথা পেয়েও সে কাঁদে নাই কিন্তু অরিএানের ধমকের সাথে সাথে ভ্যাঁ ভ্যাঁ শুরু।
অরিএান ওয়াসেনাতের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।কাদলে মেয়েদের সুন্দর লাগে ব্যাপারটা তার মাথায় না ডুকলেও এখন খুব ভালো করে ডুকেছে।ওয়াসেনাতের কান্নার দিকে সে তাকিয়েই আছে।মেয়েটা দুহাতের আঙুল গুলো দিয়ে চোখ ডলে ডলে কাদঁছে। মনে হচ্ছে কান্না পরীকে সে ডেকে আনছে তার নীলাভ চোখে ভর করে বেয়ে চলতে।এবার অরিএানের চোখ ওয়াসেনাতের মাথার কাছে কাটা জায়গাটাতে পরে। সাথে সাথে সে গাড়ি থেকে নেমে ওয়াসেনাতকে কোলে তুলে সামের দিকে হাটা ধরে।ওয়াসেনাত তো হাবার মত তাকিয়ে আছে।আর ভাবছে আজ কার মুখদেখে ঘুম থেকে উঠেছে আল্লাহ যানে। চট করে আবার তার নিজেরই মনে পরে তার ভাই আলিফ তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলেছে। তার এখন মন চাচ্ছে আলিফের মাথা পাটাই দিতে।এত অশুভ তার ভাই কেনো কেনো কেনো?? 😡😡আজকের দিনে তার সাথে সব খারাপ হচ্ছে। কিন্তু কেনো।
অরিএান ওয়াসেনাতকে কোলে নিয়ে হস্পিটালের ভিতরে ডুকে পরে। অরিএানকে দেখে উপস্থিত সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।তারা এতটাই অবাক হয়েছে যে অরিএানের মত ফ্যামাস ব্যক্তিকে এভাবে একটা মেয়েকে কোলে নিয়ে ডুকতে দেখে যে আমজনতার ছবি তুলতে হয় এটাও তারা ভুলে গেছে।ওয়াসেনাত তো মোচড়ামুচড়ি করেই চলেছে। আর বলছে…….
__ওই আপনিকি পাগল হয়ে গেছেন এভাবে কেনো ধরে রাখছেন ছাড়েন।
__ছেড়ে দিব?????🤨🤨
__এই না না আমি ওটা বলিনি বলেছি নামিয়ে দিতেন।সবাই তাকিয়ে আছে। আমার তো নিজেরে এক ভিলেনের শ্রাদ্ধা কাপুর মনে হচ্ছে 🙈🙈।কিন্তু আপনি তো আমার সিদ্ধাত না😭😭তাইলে কোলে নিয়ে কেন হাসপাতালে আসলেন।😭😭আপনি জানেন এটা আমার স্বপ্ন ছিল।আর আমার সিদ্ধাত আমার জীবনে আসার আগেই আপনি আমার স্বপ্নের বারটা বাজাই দিয়েছেন।এহহহহহহহহহহহহ😭😭
__শার্টআপ। ভেবে নেও তোমার সিদ্ধাত চলে এসেছে।(বাকা হেসে)
__কি😳
__কি না জি🥳
__কোই আমিও তো দেখি….🤔🤔🤔🤨🤨🤨
__যে চোখ থাকতেও দেখে না তাকে আলাদা করে আমি কিভাবে দেখাবো।😒
__কি😡😡আপনি বলতে চান আমি চোখ থাকতেও অন্ধ।আপনার এত বড় সাহস।আপনাকে তো আমি…(বলেই অরিএানের বুকে পিঠে ঘুষি মারা শুরু করে)
অরিএান কিছু বলে না।এই পিচ্চি পিচ্চি মারে তার কিছু হবে তো দুর উল্ট আরাম লাগছে।ওয়াসেনাতের কমল হাতের ছোঁয়া বলে কথা।অরিএান ওয়াসেনাতকে সোজা ডাক্তারের রুমে নিয়ে আসে।ডাক্তার তখন রোগী দেখছিল। অরিএানকে ভিতরে ডুকতে দেখে সব রোগীকে বাহিরে যাতে বলে।কিন্তু ওয়াসেনাতের ব্যাপারটা মোটেও পছন্দ হয় নাই তাই সে কিছু বলতে নিবে তার আগেই অরিএান বলে উঠে…….
__কেউ বাইরে যাবে না।আপনি ওনাদেরকে দেখেন।আমি ওয়াসেনাতকে নিয়ে এখানে বসবো।সবার দেখা হলেই ওকে দেখবেন। তার আগে তুলা আর স্যাভলন দিয়ে যান।(পাশের একটা চেয়ারে ওয়াসেনাতকে কোলে নেওয়া অবস্থায় বসে পরে)
অরিএানের এমন ব্যবহার ওয়াসেনাতের ভালো লাগলেও সে ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবে নিয়েছে।কিন্তু ডাক্তার অরিএানের পরিচিত তাই সে অরিএানকে ভালো করেই চিনে।প্রথমেই ওয়াসেনাতকে কোলে দেখে অবাক হয়েছে আর এখন কার ব্যবহারে আকাশ থেকে পরেছে।ডাক্তারকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে অরিএান বলে উঠে……..
__আঙ্কেল আমি আপনাকে কিছু বলেছি।আপনি কি ভুলে গেছেন
আঙ্কেল ডাক শুনে ডাক্তারের সেন্সলেস হওয়ার অবস্থা।অরিএানের জন্মের আগে থেকে তার অরিএানের পরিবারের সাথে সম্পর্ক আছে। এত বছর ধরে সে অরিএানকে দেখছে তবে কখনো এত সুন্দর করে আঙ্কেল তো দুর এত ভালো ভাবে কথাও বলে নাই।কি হয়েছে ছেলেটার। মাথা ঠিক আছে।এই ভেবেই সে আবার নিজের চেয়ারে বসে রোগী দেখতে শুরু করে আর অরিএানকে স্যাভলন আর তুলা দিয়ে দেয়।সে বারবার অরিএানের দিকে তাকাছে আর অবাক হচ্ছে। কত যত্নে আস্তে আস্তে তুলা দিয়ে ওয়াসেনাতের মাথায় স্যাভলন লাগাছে আর ফু দিচ্ছে যাতে সে ব্যাথা না পায়।এত যত্ন করে অরিএান খান কোনো মেয়েকে স্যাভলন লাগাছে ব্যাপারটায় তিনি হতবম্ভ।
অরিএানকে এত কাছে থেকে ওয়াসেনাত আগে কখনো ফিল করে নি।কেমন যেনো লাগছে।এই প্রথম কোনো ছেলে তার এত কাছে এসেছে।অরিএানের হার্টবিড খুব দ্রুত চলছে ওয়াসেনাতের কাছে আসলেই এমন হয়।ওয়াসেনাত বলে উঠে………….
__আচ্ছা একটা কথা বলি??
__মানা করলেও বলবে যানি। তাই বলেই ফেলো
__আপনার হার্টবিড খুব দ্রুত চলছে।সেই জোসসস একটা সাউন্ড হচ্ছে আমি একটু কান পেতে শুনি????☺☺
__what (অবাক হয়ে)
__হুমমমম☺☺☺☺🤗🤗(বলেই অরিএানের বুকের বা পাশে মাথাটা দিয়ে শুনতে থাকে)
অরিএান হতবম্ভ হয়ে বসে আছে। তার হার্টবিড আরো দ্রুত চলতে শুরু করে।শ্বাস আটকে আসছে।এক অসাধারন ফিলিংক্স হচ্ছে। যেনো স্বর্গীয় শান্তি। ডাক্তারের ডাকে অরিএানের হুশ আসে………….
__অরিএান বাবা চলো ওর ড্যাসিং করে দি।
__হুম চলেন।
অরিএান ওয়াসেনাতকে বেডে শোয়াতে গিয়ে আবার কোলে নিয়ে বসে পরে আর ডাক্তারকে বলে………..
__এভাবেই থাক। আপনি করে দেন
অরিএানের কার্যকলাপে ডাক্তার আর অবাক হতে পারলো না।তাই সে তার কাজ করতে শুরু করে।ড্যাসিং এর সময় ওয়াসেনাত আওওও করে চিৎকার করে উঠে। যা দেখে অরিএান ডাক্তারের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলে উঠে…………..
__আমি যখন করেছিলাম তখন তো ও ব্যাথা পায়নি তবে আপনি ওকে ব্যাথা কেনো দিচ্ছেন।
__sorry বাবা কিন্তু ভালো করে পরিষ্কার না করলে পরে ইনপ্যাকশন হবে।
অরিএান আর কিছু না বলে ওয়াসেনাতের ব্যাথায় ফু দিয়ে যাচ্ছে। এবার বড় বিপত্তি হলো ইনজেকশন 🙄ওয়াসেনাত তো দেওয়ার আগেই চিৎকার করেই চলেছে।সে কিছুতেই দিবে না।কিন্তু ডাক্তার বলেছে যদি লোহা বা জীবানু জাতিয় কিছুর সাথে কেটে থাকলে পরে ইনপ্যাকশন হতে পারে তাই এই ইনজেকশন দিতে হবে।ওয়াসেনাত তো চিৎকার করে কেঁদে দেয়।কারন সে ছোটো থেকে হাসপাতালে, ডাক্তার, ঔষুধ,ইনজেকশন এক কথায় ডাক্তারি সরন্জাম দেখেও সে ভয় পায়।তার তো জ্বর বা অন্য অসুখ হলেও সে হাসপাতালে আসে না।আর এখন তো তাকে ইনজেকশন দিতে হচ্ছে। তাই ভয়ে চিৎকার করছে।ওয়াসেনাতের কান্না দেখে অরিএান বলে উঠে………
__ok ok দিতে হবে না।তুমি আমার কথা শুনো।বলো বাচ্চারা কেমন আছে।
__ভালো।তবে আমি কিন্তু ইনজেকশন দিবনা।(চোখ মুছতে মুছতে)
__ ok দিতে হবে না।
অরিএান মনে মনে ভাবে যে মেয়ে গাড়ির নিচে পরে মরার কথা না ভেবে ওভাবে ছুটে যায় আর সে কি না ইনজেকশনকে ভয় পায়।পাগলি একটা।হালকা হেসে।যা দেখে ওয়াসেনাত বলে উঠে………
__wowww আপনার হাসিতো খুব সুন্দর।
__তাই নাকি।(ডাক্তারকে ইশারা দিয়ে ইনজেকশন দিতে বলে)
__হুম।butআপনি তখন এমন করে কেনো বললেন।আর ওই ভেবলাকান্তকে আপনি চিনেন।যানেন ছেলেটা আস্ত শয়তান। আমাকে কি বলেছে যানেন।
__না যানতে চাইও না।আর তোমারও যানতে হবে না।আমিও ছেলেটাকে চিনি না তুমিও চিনো না।আর কখনো এই ছেলের কথা বলা তো দূর চিন্তাও করবে না।mind it.(রাগী গলায় কথা গুলো বলে উঠে)
__কিন্তু কেনো??
__এত কেনোর মানে যানা লাগবে না।
__আউচচ।হাতে মনে হয় পিঁপড়া কামড় দিয়েছে(হাত ঘসতে ঘসতে)
__পিঁপড়া না। ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে।
__what।
__এই এভাবে ঠোঁট গোল করে what বলবে না।এভাবে ঠোঁট গোল করলে তোমার গালে একটা টোল পরে।যা মারাত্মক লাগে।এখন চলো(বলেই কোলে তুলে নেয়।)
ওয়াসেনাত অরিএানের কথা শুনে হা করে তাকিয়ে আছে।অরিএান যাওয়ার আগে ডাক্তারের উদ্যেশে বলে উঠে……………..
__thanks uncle (মুচকি হেসে)
ডাক্তার তো ঠাসসসস করে চেয়ারে বসে পরে।তারপর অরিএানের দাদার কাছে কল করে। অরিএানের বাবা আর ডা.শাহিন বন্ধু তাই অরিএানদের সাথে তার ভালো সম্পর্ক।অরিএানের দাদাকে তিনি বাবা ডাকে।কারন তার বাবা নেই।কল ধরতেই ডা.শাহিন বলে উঠে……..
__বাবা অরিএানের কি হয়েছে।আমার মনে হয় ওকে হস্পিটালে ভর্তি করতে হবে।আমি বরং এখনি ভালো সাইকোলজিস্টের সাথে কথা বলে রাখি।আপনি ওকে নিয়ে আসিয়েন।যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে আমার মনে হয় ব্যাপারটা সিরিয়েস ইসু।
__আরে থামো থামো কি হয়েছে বলো??
ডাশাহিন প্রথম থেকে সব বলা শুরু করে।অরিএানের দাদাও অবাক হলেন। তবে ডাশাহিদকে তিনি ভালো করে বুঝিয়ে দেন।তানা হলে তো ডাশাহিদ অরিএানকে পাগলা গাড়তে পাঠিয়েই ছাড়তো।😂😂😂😂😂
ওয়াসেনাত অরিএানকে তখন থেকে বলে যাচ্ছে তাকে নামাতে তবে কে শুনে কার কথা।সোজা গাড়িতে বসিয়ে দিলো।তারপর নিজে পাশের সিটে বসে গাড়ি চালানো শুরু করে।ওয়াসেনাত বলে উঠে…….
__আমরা কোথাই যাচ্ছি। আরে আমার বাসা তো ওই দিকে আপনি এদিকে কোথাই নিয়ে যাচ্ছেন
__চুপ করে বসে থাকো।(ধমকের সুরে)
ওয়াসেনাত চুপ করে বসে আছে। আর ভাবছে লোকটাকি তাকে পছন্দ করে।হতে পারে তানা হলে ওই কথা গুলো কেনো বলবে।আবার নিজে নিজেই বলে না না এত সুন্দর ছেলে তাকে কেনো পছন্দ করবে।হতে পারে তার আমার সঙ্গ ভালো লাগে তাই এমন করেছে।
অরিএান গাড়ি থামাতেই ওয়াসেনাত আশেপাশে তাকিয়ে অবাক হয়।কারন এটা সেই মাঠ যেখানে ওয়াসেনাত অরিএানকে নিয়ে হেটেছিলো।হঠাৎ এখানে কেনো এসেছে তা ওয়াসেনাতের বোধগম্য হল না। সে অরিএানের কাণ্ডকারখানায় এত টাই অবাক হচ্ছে যে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলছে।তাই চুপ করে দেখছে ছেলেটা আসলে কি করতে চায়।অরিএান গাড়ি থেকে নেমে ওয়াসেনাতের পাশের দরজাটা খুলে তার হাত টেনে বাহিরে নিয়ে আশে। তারপর নিজের শার্টের হাতা ভাজঁ করে সেদিনর মত করে।তারপর ইন টাও খুলে ফেলে। আজ সে ব্লেজারটা অফিসে রেখে এসেছে তাই কষ্ট করে খুলতে হয় নায়।ওয়াসেনাত হাবার মত তাকিয়ে আছে আসলে কি হচ্ছে এটাই তার মাথায় ডুকছেনা।অরিএান এবার ওয়াসেনাতের কাছে এসে বলে……………..
__ওই দিনের মত চুলগুলো নেড়ে দেও
ওয়াসেনাত তো হাবার মত তাকিয়েই আছে।তাই অরিএান ওয়াসেনাতের কোমর জড়িয়ে তাকে হালকা উপড়ে তুলে বলে……….
__হা করে তাকিয়ে থাকার কিছু নেই কিছু সময়ের ব্যবধানে আমি নিশ্চুই আগের তুলনাই অধিক সুন্দর হয়ে যাই নাই।so যা করতে বলেছি তা করো।hurry up
ওয়াসেনাত হা করেই অরিএানের চুলগুলো নেড়েচেড়ে দিলো। ওয়াসেনাতকে অবাকের সপ্তম আকাশে তুলে অরিএান ওয়াসেনাতের কপালে একটা চুমু খায় সাথে ওয়াসেনাতের কাটা জায়গাটাতেও।তারপর ওয়াসেনাতের অবাক হওয়া চোখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে তার হাত ধরে মাঠে নিয়ে যায়।
ওয়াসেনাত মাঠে বসে আছে আর অরিএান ওয়াসেনাতের কোলে মাথা দিয়ে আরামছে ঘুম দিয়েছে।ওয়াসেনাতের তো মাথায় হাত।মাএই লোকটা তার কোলে মাথা দিয়েছে তাতেই সে অবাক এর মাঝে ঘুমিয়ে পরেছে।আল্লাহ আজ তার সাথে কি অদ্ভুত অদ্ভুত ঘটনা ঘটাচ্ছে। কিছুই মাথায় ডুকছেনা।তার উপড় অরিএান তাকে মাঠের মাঝ খানে এনে বসিয়ে তার কোলে মাথা রেখে শান্তিতে ঘুমাচ্ছে।
ওয়াসেনাতের প্রচণ্ড কান্না আসছে।কারন আজ তার এস্প্যাশাল ক্লাস ছিলো।সে করতে পারে নাই।আর আজ তো তাকে শপিং করতেও যেতে হবে কাল কে একটা পার্টির অর্গানাইজেশনও করতে হবে।তার এত এত important কাজের মাঝে সে কিনা একটা বুড়া ধামরা টাইপের ছেলেকে কোলে শুইয়ে ঘুম পাড়াছে।ব্যাপারটা নিতান্তই হাস্যকর।তবে তার এখন হাসির চাইতে কান্না বেশি পাচ্ছে।কিন্তু সে এমন কিছুই করতে পাড়ছেনা।
ইহান চৌধুরী ভিলায় পৌছে গেছে।আজ অনেক বছর পরে দেশে এসেছে।জনাব ইমান চৌধুরীর এক মাএ ছেলে তাই ধুমধাম করে তাকে বরণ করা হয়েছে।ইহান তার মায়ের কাছে যায়।অমিতা চৌধুরী ছেলের মাথায় গালে অনেক চুমু খেলেন।তারপর সকলে মিলে খাবারদাবার খেলেন সাথে গল্প গুজোক তো আছেই।
ইহান তার বাবার পাশে এসে বসে পরে।তার বাবা টিভি দেখতে দেখতে বলে উঠে……….
__কি চাই ইহান বাবা (আদুরে গলায়)
__তুমি কিভাবে বুঝে যাও আমি কখন কি বলবো(অবাক হয়ে)
__আমি তোমার বাবা। মনে রেখো এবার বলো কি চাই??
__বাবা আমার একটা মেয়েকে পছন্দ হয়েছে।
__কোন সময়ের জন্যে চাও বলো।
__যদি বলি সারা জীবনের জন্যে।
ইমান চৌধুরী ছেলের কথায় বেশ অবাক হলেন। এটা প্রথম না। তার ছেলে মাঝে মাঝেই যে সকল মেয়েকে নিজের জালে ফাঁসাতে পারে না ঠিক তখন বাবার কাছে আবদার করে তবে কাউ কে সারা জীবনের জন্যে তো ধুর দুই দিনের জন্যেও চায় নাই আর আজ কি না ছেলে বলছে সারা জীবনের জন্যে চায়। ব্যাপারটা আসলেই ভাবার মুখ্য বিষয়।তবে সে ভাবার বিষয়টা পাশে রেখে তার ছেলেকে জিগ্যেস করে……..
__মানে।
__মানে আমি সেই মেয়েটাকে বিয়ে করতে চাই।
__কোন মেয়ে।
__ছাগলের মা পরীটাকে।(আনমনেই ওয়াসেনাতের কথা ভাবতে ভাবতে)
__ what তুমি ছাগলের মাকে বিয়ে করবে নাকি।পাগল হয়েছ।
__না বাবা ও মানুষই। কিন্তু কি সুন্দর করে ছাগলটাকে আগলে রেখে ছিলো।তাই ছাগলের মা নামে ডেকেছি।দেখতে একদমই হুর পরী।
__ওও তাই বলো।আমি তো ভেবেছি যাই হোক নামকি মেয়েটার??
__নাম নাম ওওওও হুম মনে পরেছে ওই শয়তানটা আমার ওয়াসেনাত বলেছিলো।কিন্তু এটা তার ভুল ধারনা ওটা আমার ওয়াসেনাত হবে।ইহান চৌধুরীর।যাই হোক। আমি এটা বলতে এসেছি ওর ডিটেল্স চাই। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। ও আমার love at first sight তাই ওর ব্যাপারে আমি রিক্স নিতে চাই না।কোনো ভাবেই না।
কথাটা বলেই উপড়ে চলে গেলো।ইমান সাহেব হা করে ছেলের দিকে তাকিয়ে আছে।তার মাথায় তেমন কিছু ডুকেছে বলে আমার মনে হয় না।😁😁
অরিএানের ঘুম ভেঙে যায় ওয়াসেনাতের মাথার সাথে ধাক্কা লেগে।কারন ওয়াসেনাত বসে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পরে ফলে তার মাথাটা ঝুকে অরিএানের মাথার সাথে বারি খায়।অরিএান মাথাটা একটু ঘুরাতেই নিজের ঠোঁটে হাত দিয়ে দেয়।কারন তার ঠোঁট ওয়াসেনাতের সাথে লেগে যায় যায় অবস্থা। ওয়াসেনাতকে এভাবে দেখে অরিএানের মাথা কাজ করা বন্ধ হয়ে গেছে।অরিএানের নিঃশ্বাস আটকে যায় যায় অবস্থা। তার এখন ইচ্ছে করছে নিজের হাতটা সরিয়ে ওয়াসেনাতের লাল লাল ঠোঁটে নিজের লাল ঠোঁট জোড়া মিলিয়ে দিয়ে অক্সিজেন বিলাশ করতে।তবে প্রতিবারের মত এবারও নিজের ইচ্ছে ধমন করে। না পারতে ওয়াসেনাতকে হালকা ধাক্কা দেয়।সাথে সাথে ওয়াসেনাত উঠে নিজেদেরকে এভাবে দেখে বেশ লজ্জা পায়।এই প্রথম অরিএান ওয়াসেনাতের লজ্জা মাখা মুখ দেখেই ফেট মানে সেন্সলেস। 🙄🙄ওয়াসেনাত ব্যাপারটা বুঝতে পারলো না।তবে সেন্সলেসর ব্যাপারটা বুঝতে পেরে দৌড়ে গাড়ি থেকে পানির বোতল নিয়ে এসে অরিএানের মখু ছিটিয়ে দেয়।অরিএানের হুশ আসতে আসতে ওয়াসেনাতের লজ্জা মাখা মুখ চিন্তিত হয়ে গেছে।ফলে ব্যাচারা মিসস করে গেছে।ভালোই হয়েছে।কে বলছে ব্যাটা তোকে অজ্ঞান হতে।ফাউললল😒😒😒😒।আসলে অরিএানের ও দোষ নাই।লজ্জা পেলে ওয়াসেনাতকে যা লাগে না যে কোনো ছেলে এমন হয়ে যাবে।
অরিএান উঠে নিজের ঘড়ি দেখে খুব অবাক হয়।কারন সে ১২ বাজে ঘুমিয়ে ছিলো আর এখন ৫টা বাজে। তাই আর দেরি না করে ওয়াসেনাতকে নিয়ে তার বাসার উদ্যেশে রওনা দেয়।অরিএান আজ শান্তির ঘুম দিয়েছে।যা অনেক বছর ধরে সে দেয় নাই।………………….
চলবে……………….
ভুল গুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন..
ধন্যবাদ 🍁