A Destination Wedding | পর্ব – ২

6 Min Read

পরের দিন আমি ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য ঐশিদের জন্য আমাদের বাসার মোড়ে অপেক্ষা করছিলাম।এমন সময়ই একটা গাড়ি খুব স্পিডে আমার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো আর রাস্তার পাশে থাকা সব কাঁদা আমার জামায় লেগে গেলো।আমি খুব রেগে ঐ গাড়িটার দিকে রাস্তা থেকে একটা ইটের টুকরো নিয়ে ছুড়ে মারলাম।ওমনি গাড়ির পেছনের কাচ ঠাসসসসসসস!!!করে ফেটে গেল।আর গাড়িটাও থেমে গেল।আমি তখন আমার জামা ঝারতে লাগলাম যাতে একটু হলেও কাদাগুলো উঠে যায়।
আরুশ:আমি গাড়ি নিয়ে খুব দ্রুত যাচ্ছিলাম।কারণ আজ আমার অফিসে খুব ইম্পর্ট্যান্ট একটা মিটিং আছে।কিন্তু হঠাৎই আমি কাচ ভাঙ্গার আওয়াজে পিছনে তাকিয়ে দেখি যে আমার গাড়ির কাচ ভেঙে গেছে।এইটা দেখে তো আমার মাথায় আগুন লেগে গেল।রাগে আমার শরীর কাপছে।এরপর আমি গাড়ি থেকে নামলাম ঐ গুণধর ব্যক্তিকে দেখার জন্য যে আমার গাড়ির কাচ ভেঙ্গেছে।
গাড়ি থেকে নেমে আমি দেখলাম যে ওখানে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে।নিশ্চয় ঐ মেয়েটায় আমার গাড়ির কাচ ভেঙ্গেছে।তাই আমি ঐ অসভ্য মেয়েটার দিকে এগিয়ে যেতেই আমার গায়ে কাঁদা লেগে গেল।মুলতঃ মেয়েটার জামায় কাঁদা লেগে ছিল।ওও যখন জামাটা ঝারছিলো তখনই আমার গায়েও সেই কাঁদা লাগলো।এইটা দেখে আমার মাথা পুরোই খারাপ হয়ে গেলো।
আরুশ:হেই স্টুপিড গার্ল।ওয়াট’স আর ইউ ডুয়িং?(প্রচন্ড রেগে)
আমি:একেই তো কাঁদা লেগে আমার অবস্থা কাহিল।তার উপর কারো একজনের এমন ফালতু কথা শুনে আমি উপরে মাথা তুলে দেখি,,,এইটা কালকের সেই ছেলেটা,,,,যা দেখে আমি খুব রেগে গেলাম।
আরুশ:মেয়েটা আমার দিকে তাকাতেই দেখলাম যে এইটা কালকের সেই মেয়েটা,,,,
আমি:আরেহ্,,,,,এখানেও আপনিইইইইইই(চিল্লিয়ে)
আরুশ:আমারো তো একই প্রশ্ন,,,,তুমি এখানে কি করছো,,,,,আর তুমিই আমার গাড়ির কাচ ভেঙ্গেছো,,,তাইনা(আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে)
আমি:হ্যা,,,ভেঙ্গেছি তো বেশ করেছি।আপনি আমার জামায় কাঁদা লাগিয়েছেন কেন,,,রাস্তায় কি চোখগুলো জিএফ এর কাছে রেখে বেরিয়েছেন নাকি যে পাগলের মতো ড্রাইভ করছিলেন,,,,(আমিও রেগে)
আরুশ:জাস্ট সাট আপ,,,,,কি বললে তুমি আমি পাগল?তুমি পাগল,,,,(চিল্লিয়ে)
আমি:ওইটা পাগলি হবে(হেঁসে)
আরুশ:হাহাহাহাহাহা
আমি:কি হলো,,,আপনি হাসছেন কেন(আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে)
আরুশ:তুমি নিজের মুখেই শিকার করলে যে তুমি পাগল,,,ওহ্ সরি,,,পাগলি(হাসতে হাসতে)
আমি:আ,,আমি ক,,কখন বললাম যে আমি পাগলি,,আপনি মেয়েদের পাগল বলছিলেন তাই ভুলটা শুধরে দিলাম(টাস্কি খেয়ে)
আরুশ:যাই বলো,,,তুমি শিকার তো করলে যে তুমি পাগলি(আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি,,,,এই দেখুননননননন,,,,
আরুশ:কি দেখবোওওওওও,,,,
আমি:আন্নের মাথার তার ছেরা,,,
আরুশ:ইউউউউউউ,,,
আমি:ভিইইইইইই,,,
আরুশ:তুমি আসলেই একটা ইডিয়ট,,,
আমি:আর আপনি মি.অন্ধ,,,
আরুশ:আমার নাম নিহান আহমেদ আরুশ,,,,নট মি.অন্ধ,,,,,গট ইট মিস.স্টুপিড(আমার দিকে আঙ্গুল তুলে)
আমি:আমিও আয়রা ইবনাত সাইয়ারা,,,,নট মিস.স্টুপিড,,,,,মাইন্ড ইট
আমাদের ঝগড়ার মাঝেই সাদাফরা গাড়ি নিয়ে সামনে এসে নেমে দাড়ায়,,,আর আমাদের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
ঝিনুক:কি ব্যাপার,,,তোর এই অবস্থা কেন?(আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি:আর বলিস না,,,কাল থেকে এই মি.অন্ধ আমার পিছনে পড়ে আছে(বিরক্তিকর সুরে)
আরুশ:এই সাট আপ,,,আমি না,,,বরং তুমি আমার পিছনে পড়ে আছো(রেগে)
আমি এর উত্তরে কিছু বলতে যাবো তার আগেই আরিয়ান আমাকে থামিয়ে বলে উঠলো,,,,
আরিয়ান:এই অনেক হয়েছে,,,আর একটাও কথা নাহ,,,,আরু,,তুই বাসায় যা,,,আজ আর তোর ভার্সিটিতে যাওয়া লাগবে নাহ।
ঝিনুক:হ্যা,,,তুই বরং বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নে,,,
ঐশি:আর ভাইয়া আপনিও এখন যান,,,,,
এরপর আমি কোনো রকমে বাসায় আসি,,,আর এক দৌড়ে রুমের ভিতরে ঢুকে গেলাম।কারণ আম্মুরা কেউ দেখলে আমাকে অনেক প্রশ্ন করতো যার উত্তর দিতে আমার এখন ইচ্ছে করছে নাহ।তাই আমি ওয়াশরুমে গিয়ে চট করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
তারপর আমি ফোন নিয়ে একটু ফেসবুক স্ক্রোল করতে করতে হঠাৎই “Adiyat Ahmed Ahil” নামে একটা আইডি থেকে আমার কছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসলো।
আমি কিছু না ভেবেই চট করে এক্সেপ্ট করে নিলাম।অথচ আমি সচারচর ছেলেদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করি নাহ খুব একটা।আমি এগুলো ভাবার মাঝেই আইডিটা থেকে ম্যাসেজ আসলো,,,,,
আদিয়াত:Hi!
আমি:রিপ্লাই দিবো কি দিবো নাহ ভাবতে ভাবতেই আবার ম্যাসেজ আসলো,,,,
আদিয়াত:কি হলো মায়াপরি,,,রিপ্লাই দিচ্ছো নাহ কেন?
আমি:কে আপনি?
আদিয়াত:আমার নাম প্রোফাইলে দেয়ায় আছে।তোমার নাম কি?
আমি:আমারটাও প্রোফাইলে দেয়া আছে।
আদিয়াত:ওও আচ্ছা,,,তোমার নাম তাহলে “Ayra Ibnat”
আমি:হুম,,
আদিয়াত:আচ্ছা তুমি কোথায় থাকো?
আমি:আমার রুমে,,
আদিয়াত:না মানে তোমার বাসা কোথায়?
আমি:মাটির উপর,,ছাঁদের নিচে।
আদিয়াত:আমি বলছিলাম যে তোমার বাসা কোন এলাকায়?
আমি:যেখানে আমরা থাকি।
আদিয়াত:এ তো দেখি সেই ফাজিল,,(মনে মনে)আচ্ছা,,,তুমি কিসে পড়ো?
আমি:চেয়ার,টেবিলে,,,,
আদিয়াত:উফফফফফ,,,,এতো মহা মুশকিল,,,সব প্রশ্নেরই কিসব আজব আজব উত্তর দিচ্ছে,,,(মনে মনে)
আমি:হাহ,,,আমাকে প্রশ্ন করছে আর আমি এতো সহজে উত্তর দিবো,,,এতোই সহজ নাকি(মনে মনে হেঁসে)
আদিয়াত:আচ্ছা,,,কেমন আছো?
আমি:যেমন থাকি।
আদিয়াত:কেমন থাকো?
আমি:এখন যেমন আছি,,,
আদিয়াত:হায় আল্লাহ,,,,এতো সেই লেভেলের ফাজিল,,,আমি মনে হয় এখন পাগল হয়ে যাবো,,,(মনে মনে)
আমি:আচ্ছা,,,বাই।
আদিয়াত:কেন কেন?
আমি:এখন আমি ছাঁদে যাবো তাই,,,,,আল্লাহ হাফেজ।
আদিয়াত:আচ্ছা আল্লাহ হাফেজ।
তারপর আমি একটা বই নিয়ে ছাঁদে যাওয়ার সময় আম্মুর সাথে দেখা হয়ে গেল,,,
আম্মু:কিরে,,,তুই বাসায় আসলি কখন?
আমি:আসলে আজ ভার্সিটিতে যেতে ইচ্ছে করছিলো নাহ,,তাই ইভাদের সাথে দেখা করেই চলে আসলাম।
আম্মু:তোর শরীর ঠিক আছে তো?(কপালে,গলায় চেক করতে করতে)
আমি:ওহ মাই জান,,,,আমি একদম ঠিক আছি,,,আচ্ছা সীমা চাচিকে দিয়ে আমার জন্য এক কাপ কফি পাঠিয়ে দাও তো ছাঁদে।(সীমা চাচি আমাদের বাসার অনেক আগেকার কেয়ার টেকার)
আম্মু:আচ্ছা,,,তুই যা,,আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি।
এই বলে আম্মু কিচেনে চলে গেলো,,,আর আমিও ছাঁদে গিয়ে এক জায়গায় বসে পড়লাম।কিছুক্ষণ পর চাচি এসে আমাকে কফি দিয়ে গেল।আমি কফিতে চুমুক দিতে দিতে পড়তে লাগলাম।।।

চলবে?????

Share This Article
Leave a comment

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।