প্রচন্ড মন খারাপ নিয়ে আজ কলেজে গেলাম মুখে হাসি নেই মনের মাঝে গুমট কালো মেঘ জমেছে।ভাইয়াকে ভীষন মিস করছি ছোট বেলা থেকেই ভাইয়া ছাড়া কোথাও গিয়ে থাকিনি।আজ তিনটা মাস ভাইয়া ছাড়া আছি।এই শহরের অলি গলিতে ভাইয়াকে খুজে চলেছি কিন্তু কোথাও ভাইয়ার দেখা পাই নি আমি।আর কোনদিন কি দেখা হবে না আমাদের।মেহু আপু ও কি ভুলে গিয়েছে আমাকে।ভাবতে ভাবতে রিয়ার সাথে কলেজে গেলাম।কলেজে ঢুকতেই অনিকা বললো এই দিয়া শোনো।অনিকা মেয়েটার শত শত মেসেজ আমি বিহান ভাই এর ফোন থেকে পরেছি।মেসেজ রিকুয়েষ্ট এ মেসেজের শেষ নেই।তাই এই মেয়েটাকে আমার একটুও পছন্দ না।দাঁড়িয়ে গিয়ে বললাম যা বলবা দ্রুত বলো।
“অনিকা আমার দিকে গম্ভীর ভাবে তাকিয়ে বললো বিহান স্যার এর সাথে এত কি কথা বলো।উনি কারো সাথে কথা বলেন না।তোমার সাথে এত কথা কি বলে?”
“এটা বলার জন্য আমাকে ডেকেছো?”
“হুম সতর্ক করতে।বিহান স্যার আমার সো ভুলেও উনাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখো না।তোমাকে দেখেছি স্যারের কেবিনে রেগুলার যাও। আমাকে দেখো আমাকে তাই পাত্তা দিচ্ছে না তুমি অহেতুক সময় নষ্ট করো না।”
“বিহান স্যার তোমার সিরিয়াসলি?আচ্ছা তুমি কি সেই মেসেজ করো স্যার আপনাকে ক্লাসে দেখলে আমি একভাবে তাকিয়ে থাকি।আপনাকে নিয়ে কল্পনার জগতে পাড়ি জমায় আমি।”
“তুমি কিভাবে জানলে?”
“তোমার বিহান স্যার আমাকে বলেছে?আর একটা সিক্রেট কথা শুনবা?”
“কি সিক্রেট।।”
“এই রিয়া সিক্রেট টা বল তো।”
“তাহলে দিয়া বলেই ফেলি।”
“হ্যাঁ বল”
“না থাক।”
রিয়া আর আমি একটু খানি মজা নিয়ে ক্লাসে চলে গেলাম।
ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে বসে আছি।প্রথম ক্লাস টা বিহান ভাই এর আজ।পাশের বেঞ্চে বসে থাকা অনিকা বলছে বিহান স্যার কে এক হাজার মেসেজ করেছি উত্তর দেয় না। উনি এতটা ডিমান্ডি কেনো?আবার ওই দিয়াকে নাকি আমার মেসেজ দেখিয়েছে।আমার প্রেজটিজ যা ছিলো তা আর নেই।অনিকার বেষ্ট ফ্রেন্ড বলছে এত সুন্দরী হয়ে কি করলি জীবনে একজন প্রফেসরের থেকে যদি রিপ্লে না পাস।দিয়ার প্রতি স্যারের অন্যরকম ফিলিংস আছে দেখে বুঝিস না।স্যার ক্লাস নেওয়ার ফাকে বার বার দিয়াকে লক্ষ করে।অনিকা বলে উঠলো,কতদিন রিপ্লে দিবে না একদিন না একদিন ঠিক ই রিপ্লে দিবে।সাইড থেকে আরেক টা মেয়ে বলছে প্রেয়সী ম্যাম আর বিহান স্যারের মাঝে অনেক ঝামেলা। প্রেয়সী ম্যাম নাকি বিহান স্যার কে ভালবাসেন কিন্তু বিহান স্যার পাত্তা দেন না শুনেছি বিহান স্যার এর প্রেমিকা আছে। অনিকার বেষ্ট ফ্রেন্ড আছে প্রেয়সি ম্যাম যেখানে পাত্তা পান না সেখানে আমরা ভাবা যায়।
রিয়াকে বললাম,রিয়া এই অনিকাকে চুপ করতে বল আমার কিন্তু এমনি আজ মুড অফ।ক্লাস করতে এসছে নাকি স্যারের সাথে প্রেম করতে এসছে।
সাথে সাথেই বিহান ভাই ক্লাসে প্রবেশ করলেন।উনি পড়াচ্ছেন আর আমি মাথা নিচু দিক দিয়ে বসে আছি।বিহান ভাই আমার কাছে এসে বললেন,
“মিস দিয়া নিচু হয়ে বসে আছেন কেনো?কিছুক্ষণ আগে কি পড়িয়েছি বলুন তো?”
“জানিনা।”
“মন কোথায় ছিলো?”
“জানিনা।”
“আপনি কিছুই জানেন না সমস্যা কি আপনার?আমার ক্লাসে মনোযোগী হতে হবে না হলে ক্লাসে আসা যাবে না।”
অনিকা বললো স্যার দিয়াকে ক্লাস থেকে বের করে দিন।আপনার সাথে আমরা কেউ এমন বেয়াদবি করি নাহ।কিন্তু দিয়া করে দেখেছেন স্যার।
বিহান ভাই অনিকার দিকে তাকিয়ে বললো,আপনাকে কথা বলতে কে বলেছে মিস অনিকা।আপনি কোন রাইটে আমাকে ডিসিশন নিতে বলছেন।কারো কথা শুনে আমি ডিসিশন নেয় না।নেক্সট এমন ভুল করবেন না।
সো দিয়া ক্লাসে মনোযোগী হতে হবে।সময় চলে গেলে সে সময় আর ফিরে পাওয়া যাবে না।তাই প্রতিটি মিনিট অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ক্লাস শেষে দেখে করবেন আমার চেম্বারে।
ক্লাস শেষে নির্বাণ স্যারের সাথে দেখা।স্যার আমাকে দেখলেই যেনো কেমন কেমন করেন।হয়তো বিহান ভাই বলেছেন খেয়াল রাখতে।
“স্যার এগিয়ে এসে বললেন দিয়া কেমন আছো?”
“স্যার আলহামদুলিল্লাহ।”
“দিয়া ভাবছি বিয়ে করবো।”
“স্যার করূন না।এটা ভালো কথা।”
“হুম বাট সে কি আমায় গ্রহন করবে সেটাই ভাবছি।”
“কে স্যার।”
“যাকে খুব বেশী পছন্দ করি।”
“আপনার মতো ছেলেকে অপছন্দ করে এমন মেয়ে কোথাও নেই স্যার।হয়তো সে আপনার প্রপোজ এর অপেক্ষায় আছে। প্লিজ স্যার দেরি না করে ডিরেক্ট বিয়ের প্রস্তাব টা দিয়েই দিন।”
“তুমি বলছো?”
“হ্যাঁ স্যার।”
“ধন্যবাদ দিয়া। আমাকে টেনশন মুক্ত করলে তুমি?”
“বিহান ভাই এর কেবিনে গিয়ে মুড নিয়ে বললাম আমাকে ডাকা হয়েছে কেনো?”
“আমার বউ কি আমাকে রেখে প্রেম করছে তার ক্লাসে কোনো মনোযোগ নেই।”
“আপনার ক্লাস আর একদিন ও করার ইচ্ছা নেই বুঝেছেন।ওই অনিকা আপনাকে ভালবাসে।ইচ্ছা করে ওর গলা টিপে দেয় আমি।কিন্তু পারি নাহ।ভদ্র লোকের মতো যদি আমার আইডির সাথে রিলেশনশিপ স্টাটাস না দেন আজকে যদি ব্রেক আপ না করি আমার নাম দিয়া না বলে রাখলাম।”
“রিলেশনশিপ স্টাটাস?”
“হ্যাঁ রিলেশনশিপ স্টাটাস। আপনাকে তো লয়াল ভাবতাম বিহান ভাই আপনি তো কম না। মেয়েদের ইমপ্রেস করতে আইডির স্টাটাস সিঙ্গেল দিয়ে রেখেছেন।ক্যানো এক মেয়েতে মন ভরে না আপনার।”
“আমি এক মেয়েতেই আসক্ত মিসেস বিহান।দুনিয়াতে আর কোনো মেয়ে আছে কিনা খেয়াল নেই আমার।”
“এসব পাম মারলে কাজ হবে না।রাগে হাত পা জ্বলছে পুড়ছে? এক্ষুণি আমার সামনে স্টাটাস দেন।”
“ম্যারেড স্টাটাস দিয়ে দেই।তাহলে সবাই বুঝবে তুই আমার ঝগড়ুটে বউ।”
“এখন তো আমাকে ঝগড়ুটে মনে হবেই তাইনা।আপনার যে মনের ভিতর জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।কার না ভাল লাগে রোজ রোজ নতুন নতুন মেয়ের মুখ থেকে ভালবাসি কথা শুনতে।আই লাভ ইউ জান,পরাণ, কলিজা ঢং।এইসব কারণে আমাকে পাত্তা দেওয়া হয় না।পাত্তা দিবেন ই বা ক্যানো?জানেন যে দিয়া তো আছেই দিয়া আমাকে ভীষণ ভালবাসে আমি যেটাই করি না ক্যানো দিয়া আমাকে ছেড়ে কিছুতেই যাবে না তাই ফাউ ফাউ মানুষের ভালবাসা গুলো ইগনোর করবো ক্যান?”
“বউ তো নয় যেনো সিসি ক্যামেরা।এত সিরিয়াস কেনো শ্বশুরের মেয়ে আজ।”
“শুনেন আপনি আগে রিলেশনশিপ স্টাটাস দিবেন মানুষ বুঝবে বিহান স্যার প্রেম করে তারপর ম্যারেড স্টাটাস দিবেন।তাহলে মেয়েরা ভাল ভাবে বুঝতে পারবে আমার সাথে রিলেশন করে বিয়ে আপনার।”
“আজ কি প্রতিজ্ঞা করেছো আমার সাথে ভীষণ ঝগড়া করবে তুমি?বাট আমার আজ ঝগড়ার মুড নেই মিসেস বিহান।”
“আজ যে নিজের ভুল তাই চুপ আছেন।আপনাকে কি আর আমি চিনি না।আপনি কি আর চুপ থাকার বান্দা।নিশ্চয়ই ভেবেছেন দিয়া যা বলছে সব ই ঠিক।আমার চরিত্র হুইল দিয়ে ধোয়া দরকার।”
“আচ্ছা তুমি যেটাই বলেছো আমি কি কোন কিছু না বলেছি?তাহলেও এমন রণচন্ডী মুডে তুমি।যদি রাজি না হতাম তাহলে কি ছিলো কপালে আল্লাহ জানে।আমি যে এর আগে কতবার বলেছি স্টাটাস দেই আপনি তো নিষেধ করেন যে না না ভুলেও না।সবাই দেখবে কে কি ভাববে এখন সব দোষ আমার।”
“তখন আর এখন কি এক হলো।”
“আচ্ছা দিচ্ছি নটিফিকেশন চেক করেন।”
“আহ শান্তি মেয়েদের ফিলিংস হার্ট ব্রোকেন।”
বিহান ভাই এর টেবিলে দেখি এত্তগুলা লোশন আর ক্রিম আর লিপিস্টিক ওয়াও?আমি দেখে লোভ সামলাতে না পেরে বললাম আমাকে একটা লিপিস্টিক দিবেন বিহান ভাই?
বিহান ভাই হেসে দিয়ে বললেন কিভাবে বাচ্চাদের মতো চাইছো দিয়া।একটা কোম্পানী থেকে দিয়েছে।আমি রাখি না কোম্পানির জিনিস।বাট আমার ফ্রেন্ড রেনেটা কোম্পানীর ম্যানেজার। অনেক রিকুয়েষ্ট করলো বউ কে দিস কি আর করা রেখে দিলাম।একটা ক্যানো সব গুলাই তোমার।খুশিতে বললাম ওয়াও বিহান ভাই থ্যাংক ইউ সো মাস বলেই এক্সসাইটেড হয়ে উনার গালে চুমু দিয়ে দিলাম।চুমু দিয়েই চোখ গোল গোল হয়ে গেলো আমার আমি উনাকে এইভাবে চুমু দিয়ে ফেলছি।উনি উনার গালে হাত দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।হুট হাট রিয়ার গালে চুমু দিতে দিতে উনাকেও দেওয়া হয়ে গিয়েছে।তো তো করে বললাম রি রিয়া ভেবে দিয়েছি।বিহান ভাই মনে হয় কারেন্ট শকড খেয়েছেন গাল থেকে হাত ই নামছে না উনার।
“আমার গালে আরেক টা চুমু দিয়ে বললেন আমি ভেবে দিলে কি ক্ষতি হতো মিসেস বিহান।”
“লজ্জা নিয়ে উনার দিকে তাকালাম।”
“লজ্জা পেতে হবে না চলো একটা জায়গা নিয়ে যাবো।”
কোথায় তা আর জিজ্ঞেস করলাম না।গাড়ি বের করলেন সামনে আমি পেছনে রিয়া বসছে।কোথায় যাচ্ছি জানিনা।শুনলেও বলবেনা।রিয়াকে কয়েক টা লিপিস্টিক দিলাম।
গাড়ির আয়নায় বসে লিপিস্টিক লাগাচ্ছি।বিহান ভাই বার বার তাকিয়ে দেখছেন আমার দিকে।বিহান ভাই আড়চোখে তাকিয়ে গাড়ির স্টিয়ারিং কেমনে যে ঘুরালো ঝাঁকি লেগে পুরা লিপিস্টিক চোখে মুখে লেগে গেলো।এটা উনার ইচ্ছা কৃত কাজ সেটা আমি ভাল ভাবে জানি।আয়নআয় তাকিয়ে দেখি পুরাই পেত্নি আমি।উনি মুখ চেপে হেসে যাচ্ছেন।ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিয়ে বললাম এটা কি করলেন অসভ্য ড্রাইভার।বিহান ভাই কানের কাছে এগিয়ে এসে বললেন টিস্যু দিয়ে দ্রুত মুছে নে। তা না হলে মানুষ বলবে,এই লিপিস্টিক এর এই অবস্থার জন্য আমি দায়ী।আমি মুখ মুছতে মুছতে বললাম আপনি ই তো করেছেন।এমন সময় ট্রাফিক সিগনালে লাল বাতি জ্বলাতে গাড়ি থেমে গেলো।কাচের সাইড থেকে একটা ছেলে বললো আপু আপনার মুখের লিপিস্টিক এর এই অবস্থা কেনো?আমি বিহান ভাই এর দিকে আঙুল দিয়ে দেখালাম উনি করেছেন।ছেলেটা বিহান ভাই কে বললো এই যে ভাইয়া যা করার বাড়ি গিয়ে করবেন এইভাবে রাস্তাঘাটে কি শুরু করেছেন।আমি ছেলেটাকে বললাম জানেন ভাইয়া উনি বাড়িও সব সময় এমন করেন এটা তো রাস্তা বলে একটু কম করেছেন।ছেলেটা মাথায় হাত দিয়ে বললো ওহ মাই গড।বিহান ভাই আমার হাত চেপে ধরে মুখের লিপিস্টিক মুছে দিয়ে বললেন উনি কি ভাবছেন জানিস।
যা করেছেন তাই ভাবছে।
উনি যা ভাবছে আমি তা করিনি।রাস্তাঘাটে গাধির মত কথা বলবি না।
বিহান ভাই গাড়ি নিয়ে একটা বাড়ির সামনে গেলো।বাড়িতে প্রবেশ করে,,
ভাইয়া আর মেহু আপুকে দেখে আমি আর রিয়া দুজনেই অবাক।ভাইয়া কে দেখেই কেঁদে দিয়ে জরিয়ে ধরলাম।তুমি এখানে ভাইয়া।কেনো ছেড়ে এলে আমাদের বলো।ভাইয়া আমি তোমায় ছাড়া থাকতে পারি না।আমাকে একটুও ভালবাসো না তুমি।আমাকে কেনো ফোন করো নি তুমি বলো।আম্মু অনেক কাঁদে।
দিয়া আমি আর মেহু একটা দিন ও ভালো নেই।তোদের ছাড়া সেই আড্ডা ছাড়া ভাল থাকতে পারি।বাবা তো আমাকে মেনে নিবে না বলেছে।
এই মেহু আপু এই নিষ্টুর আমাকে ভুলে গিয়েছো।কথা নেই তোমার সাথে।আপু আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদলো।রিয়া ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে ভীষণ কাঁদলো।অনেক দিন পর মনে হলো প্রাণ ফিরে পেলাম।ভাইয়া মেহু আপুকে নিয়ে সারাদিন ঘুরলাম।ভাইয়ার জন্মদিন সেলিব্রেশন করলাম।আম্মুকে ভিডিও কল দিলাম।আম্মু আর ভাইয়া আজ অনেক কথা বললো।আম্মু বলেছে বাবাকে বুঝিয়ে খুব শিঘ্রই ভাইয়াকে বাড়ি ফিরিয়ে নিবে।
“মেহু আপুকে বললাম,তোমার চোখ মুখ এভাবে শুকানো কেনো?”
“আমি প্রেগন্যান্ট দিয়া।”
“সত্যি?”
“হ্যাঁ দিয়া তুই ফুপ্পি হতে চলেছিস।”
এই কথা টা শুনে আনন্দে আত্মহারা আমি।আমার ভাইয়া বাবা হতে চলেছে।
সাতদিন পর ————–
দিয়া আমি একটু বিদেশ যাচ্ছি সাত দিনের জন্য।সাবধানে থাকবি পুচকি।নো মন খারাপ দিয়া।আমি অনেক ঝামেলায় থাকবো ফোন করার সুযোগ না পেলে কিন্তু একটুও মন খারাপ করবি না।সাত দিন পর ফিরে এসে আমি তোর বাবাকে বলে ধুম ধুম করে পরিচয় করাবো তুই মিসেস বিহান।উনার মেসেজ টা ঘুম থেকে উঠে পড়েই মন টা খারাপ হয়ে গেলো উনি নেই। সাত টা দিন উনাকে দেখতে পাবো না।কলেজ ও সাত দিনের জন্য অফ হয়ে গিয়েছে।ফোন থেকে উনার ছবি বের করে দেখছি আর অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি ঝরে পড়ছে।সাজ সকালে দেখি বাবা আমাদের বাসায়।বাবাকে দেখে রিয়া আর আমি অবাক হয়ে গেলাম।বাবা তো এ সময়ে ঢাকায় আসার কথা না।আর আসলেও তো বলে আসবে।বাবাকে বললাম তুমি এত সকালে কারো কি কিছু হয়েছে বাবা।বাবা বললেন না দিয়া মা শুনলাম কলেজ বন্ধ তাই তোমাকে আর রিয়াকে নিতে এসছি।দ্রুত দুজনে ব্যাগ গুছিয়ে নাও।রিয়া আর আমি দুজনেই বুঝে উঠতে পারলাম নাহ বাবা এত সকালে ঢাকা কেনো আর নিতেই বা এসছে কেনো?দুজনের কাছেই সন্দেহ লাগছে ব্যাপার টা।ব্যাগ গুছিয়ে রিয়া আর আমি রওনা হলাম ঢাকা ছেড়ে।বাবা প্রাইভেট কার নিয়ে এসছে নড়াইল থেকে।ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার সময় বুকতা ফেটে যাচ্ছে আমার ভালবাসা, আমার বিহান ভাই সব টা এই ঢাকাতেই।আমি নড়াইলে গেলেও আমার মন পড়ে আছে এই ঢাকা শহরেই।বিহান ভাই আর আমার অনেক স্মৃতি এই ঢাকাতেই।বিহান ভাই এর ফোন অফ বিদেশে কি পৌছে গিয়েছে নাকি কিছুই জানিনা।মন টা বিহান ভাই এর দিকেই পড়ে আছে।সাত ঘন্টা পর নড়াইলে পৌছালাম।বাড়িটা বেশ সাজানো গোছানো বিভিন্ন আত্নীয়েরা এসেছে বাড়িতে।আমি রিয়া কিছুই বুঝছি না কাহিনী কি?বাড়িতে ঢুকে আম্মুকে বললাম আম্মু এত মানুষ জন কেনো বাড়িতে কি হয়েছে।আম্মু বললো আগে ফ্রেশ হয়ে নাও দুজনে অনেক টা জার্নি করে এসেছো।বাড়িতে মনে হচ্ছে কোনো উৎসব।বিহান ভাই এর বাবা মানে মামা আমাকে বললো কেমন আছিস মা।মামাকে বললাম ভালো মামা আপনি।মামা আমাকে বললো তোর বিহান ভাই এর বিয়ে ঠিক হয়েছে দিয়া মা।মামার কথা শুনে মাথার মাঝে চক্কর দিয়ে ঘুরে উঠলো।নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম বিহান ভাই জানে মামা উনার বিয়ে।মামা বললেন না বিহান এখনো জানেনা।বিদেশ থেকে আসলে সোজা বিয়ের পিড়িতে বসাবো।মেয়ে ডাক্তার বিহানের সাথেই পাশ করে বেরিয়েছে।এইদিকে তোর মামি বলছে তোমার ছেলে অন্য কাউকে পছন্দ করে এই বিয়ে করবে না শুধু শুধু বিয়ে ঠিক করো না।ভেতর থেকে কাঁন্না বেরিয়ে আসছে।দম বন্ধ লাগছে।সামনে কি সব উলটা পালটা হবে।তবে বিশ্বাস আছে বিহান ভাই কে দিয়ে জোর করানো যাবে না।
মেহু আপুর প্রেগ্ন্যাসির খবর শুনে বাবার মন নরম হয়ে গিয়েছে।ফুপ্পিকে ডেকে বাবা খুব কেঁদেছে।ফুপ্পি ও খুব কেঁদেছে।ভাইয়ারা কাল ই ফিরে আসছে বাড়িতে।বাড়িতে খুশির অন্যরকম আমেজ।
বাট আমি এখনো সিওর না আমাদের বাড়িটা এত সাজানো কেনো?ভাইয়ার ফিরে আসার জন্য নাকি অন্য কোনো কারণ।একটা দিন বিহান ভাই নেই আমি এক গোলক ধাঁধায় ফেসে গেছি।কেউ আমাকে কিছুই বলছে না।
Leave a comment