ত্রিধারে তরঙ্গলীলা | পর্ব – ৫৭

24 Min Read

মনের ভেতর অদ্ভুত অশান্তি চলছে। কাউকে ভালো লাগছে না। কোনোকিছুতে মন বসছে না। ঘরের দরজা বন্ধ করে বিবশ মুখে বসে রইল সিমরান। একটু আগে তার কাছে সুহাস এসেছিল। ভীষণ ক্রুদ্ধ হয়ে প্রশ্ন করেছে,
‘ সৌধ ফোন করেছিল? ‘
সে জবাব দেয়,
‘ হ্যাঁ। ‘
‘ কী বলল? ‘
‘ সন্ধ্যায় বেরুবে। এখন বন্ধুদের নিয়ে ক্লাবে আড্ডা দেবে। তুমিও তো যাচ্ছ? ‘
চটে যায় সুহাস। আইয়াজ ফোন করে ইনভাইট করেছে তাকে। সব শুনেই বোনের কাছে এসেছে। বোন সবটা জানে শুনে তেড়ে এসে বলল,
‘ তুই মেনে নিলি? ‘
‘ না নেয়ার কী আছে? বিয়ে করছে বলে সবকিছু জলাঞ্জলিতে তো দেবে না। আমি অমোন দজ্জাল বউ হতে পারব না৷ বরকে প্রাইভেসি দিব৷ ‘
সুহাস ফুঁসতে শুরু করে। যেখানে সৌধ আজ সিনুকে নিয়ে বেরুবে বলেছে। সেখানে প্ল্যান ক্যানসেল হয় কী করে? সৌধ কোন সাহসে তার বোনের সঙ্গে বেরুবার কথা ভঙ্গ করে? বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে? আচমকা সুহাসের মনে নিধি বিঁধতে শুরু করল৷ সৌধ কি নিধির জন্য তার বোনকে অবমূল্যায়ন করছে? সিনুর চেয়ে নিধিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে? একবার ভাবল সে যাবে না৷ আবার মত পাল্টালো। তাকে যেতে হবে। সৌধ এখন শুধু তার বন্ধু না। বোন জামাইও হতে যাচ্ছে। আর নিধি সৌধর দুর্বলতা। ওখানে না যাওয়াটাই নির্বুদ্ধিতা। বরং গিয়ে বুঝতে হবে আসল পরিস্থিতি আর সৌধর মনোভাব। সিমরানের জন্য সৌধ কতটুকু যোগ্য, মঙ্গলকর দু’চোখে প্রমাণ সমেত নিশ্চিত হতে হবে। বোনের স্বার্থে কারো সঙ্গে আপোষ করতে রাজি নয় সুহাস৷ সে হোক সৌধ, বা নিধি৷ আগে বোন পরে বন্ধুত্ব। প্রচণ্ড ক্ষেপেছে সুহাস। এমনিতেই মনে শান্তি নেই। এর ওপর বোনের শান্তি বিনষ্ট হওয়ার পথে৷ ভাইয়ের ক্রোধে জর্জরিত মুখটা দেখে সিমরান শান্ত করার চেষ্টা করে বলল,
‘ তুমি রাগ করছ কেন? ব্যাচেলের জীবনের শেষ আড্ডা তার। আমি কেন বাঁধা দিব? তাছাড়া বলেছে তো সন্ধ্যায় আমাকে নিয়ে বেরুবে। অহেতুক রাগ করো না ব্রো। যাও গিয়ে ঝটপট রেডি হয়ে বের হও। কতদিন পর সব বন্ধুরা একসঙ্গে হচ্ছো। স্পেশালি নিধি আপু আসছে। কতদিন পর তোমাদের সেই পুরোনো বন্ধুমহল এক হতে যাচ্ছে…। ‘
সিমরানের কণ্ঠে চাপা উত্তেজনা। চোখে, মুখে খুশির ঝলক। যা সুহাসের বুকের ভেতরও শিহরণ জাগালো। সব ক্রোধ ছাপিয়ে নম্র হলো মন। সত্যিই তো! কতদিন পর তারা সব বন্ধুরা এক হচ্ছে। আড্ডা হবে, মজা, মস্তি। গল্পের আসর, গানের আসর একদম জমে ক্ষীর। সে শুধু শুধু রাগ করছে। বোনের প্রতি তীব্র ভালোবাসা থেকে সৌধকে ভুল বুঝছে সে। সৌধ কঠিন ব্যক্তিত্বের পুরুষ। চরিত্রে এক বিন্দু ত্রুটি ধরাও মুশকিল। নিধির প্রতি অতীতে আসক্ত ছিল ঠিক৷ বর্তমানে দুর্বলও। তাই বলে তার বোনকে ঠকাবে না৷ কারো প্রতি অন্যায় করতে পারে না সৌধ। সেখানে মানুষটা যদি হয় সিনু, তার বোন। ক’দিন বাদে সৌধর বউ হবে যে মেয়েটা। তাকে ঠকানোর সাধ্য সৌধর হবে না৷ ভেবেই দীর্ঘশ্বাস ফেলল। পরোক্ষণেই একটু চমকাল। বিস্মিত কণ্ঠে বলল,
‘ নিধি আসবে কে বলল তোকে? ‘
সিমরান প্রশান্তিময় হেসে উত্তর দেয়,
‘ কে আবার সৌধ ভাই। ‘
চোখ দু’টো কপালে ওঠে গেল সুহাসের। মনে মনে বলল,
‘ ও বাবা এতদূর? শা’লা দেখি পাক্কা খেলোয়াড়, আমার মতো কাঁচা না। ‘
নিমেষে বোনের দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক হলো। কী সব ভাবছে। সৌধ এখন শুধু তার বন্ধু না। ছোটো বোনের হবু বরও। রয়েসয়ে মন্তব্য করতে হবে। ভেবেই ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে বোনকে মৃদু হাসি বিনিময় করে বেরিয়ে গেল। ভাই বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই সিমরানের অশান্তি শুরু…
সে অশান্তি দূর করতে ফোন করে বান্ধবী লুনাকে। তার স্বস্তির মানুষ। নিজের মনের অস্থিরতা জানালে
লুনা পরামর্শ দেয়, ঝটপট লেকের পাড়ে চলে যেতে। সে আর বাকি বন্ধুরা সেখানে আড্ডা দিচ্ছে। বাড়ি ভর্তি মানুষ। মামাত ভাই, বোনরা এসেছে। বাবার দিকের আত্মীয়তেও ভরপুর। এত মানুষের মাঝে কারো সঙ্গেই স্বস্তি অনুভব করে না সিমরান৷ তাই বান্ধবীকে সায় দিয়ে ত্বরিত পোশাক পাল্টে নিল৷ এরপর বেরিয়ে পড়ল বাবার অনুমতি নিয়ে। বিয়ের কনে একা একা বেরুচ্ছে বলে নানুমনি গজগজ করল। তাকে সামলে নিল সোহান খন্দকার।
.
.
তিন রাস্তার মোড়। পশ্চিম পাশে দোতলা বিল্ডিং। নিচে দোকান উপরে দু’টো ফ্ল্যাটের পাশে একটি ঘর৷
হলঘরের মতো। যার সামনে সাইনবোর্ডে লেখা- “বিগবস ক্লাব” পুরো বিল্ডিংটাই সুজা চৌধুরীর। ক্লাবের অংশ বাদে বাকি অংশ ভাড়া দেয়া। সৌধর বন্ধুরা আগেই উপস্থিত হয়েছে। তারা নিজেদের মতো করে আড্ডা দিচ্ছে। সৌধ এলো তারা উপস্থিত হওয়ার ঘন্টাখানিক পর। এক গাড়িতে চার বন্ধু এলো। সৌধ, আইয়াজ, আজিজ আর প্রাচী। ওরা উপস্থিত হতেই সকলে মিলে স্বাগতম জানালো, কুর্নিশ করতে করতে একবাক্যে বলল,
‘ সৌধ ভাইয়ের আগমন শুভেচ্ছার স্বাগতম। ‘
সৌধ বাঁকা হাসিতে ভেতরে প্রবেশ করল। কাঁধ থেকে গিটার খুলে সামনে এগিয়ে ধরতেই একজন সেটা নিয়ে নিল। প্রাচী চোখ, মুখ কুঁচকে ঢুকতে ঢুকতে বলল,
‘ কী সমস্যা। সৌধ কি একাই আসছে? ওরে একাই স্বাগত জানাবি? আমরা কি এলিয়েন নাকি! ‘
সকলে হো হো করে হেসে ওঠল। সৌধকে যেভাবে স্বাগত জানালো একই ভাবে এবার প্রাচীকে জানিয়ে বলল,
‘ প্রাচী আফার আগমন শুভেচ্ছার স্বাগতম। ‘
‘ হইছে, হইছে। সেধে সেধে আর সম্মান নিতে চাই না।’
চোখে চশমা ঠেলতে ঠেলতে আইয়াজ গিয়ে বসল চেয়ারে। এদিকে আজিজ সবাইকে পূর্ণ দৃষ্টিতে দেখে বলল,
‘ কীরে শা’লা, কীরে ভাতিজারা খবর ভালো? ‘
বলতে বলতেই একটু দূরে স্টেজ সিস্টেম ইট সিমেন্টের উঁচু জায়গাটায় ওঠে দাঁড়াল। এরপর বক্তৃতার ভঙ্গিতে দু-হাত তুলে বিজ্ঞের মতো বলতে লাগল,
‘ হে বন্ধুগণ, আপনারা শান্ত হন। আজ আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। কারণ খুব তাড়াতাড়ি আমাদের জাতির ডক্টর, জাতির চৌধুরী সাহেব এবং জাতির ভাই সৌধ ভাইয়ের বলিদান সেলিব্রেশন করতে। ‘
‘ বলিদান! ‘
হকচকিয়ে গিয়ে আইয়াজ কথাটা বলতেই দাঁত ক্যালিয়ে হাসল আজিজ। আইয়াজকে ইশারা করে বুক টানটান করে দাঁড়িয়ে পুনরায় বলতে লাগল,
‘ এই তো বলি প্রাপ্ত বন্ধু আমার! এই তো তাহারা একই পথের পথিক হতে যাচ্ছে। ‘
কান্না আসে না। তবু জোর করে কান্নার ঢঙ করে আজিজ৷ আইয়াজ হতভম্ব মুখে বসে। আজো কী পরিমাণ নাটকবাজ রয়ে গেছে আজিজ! প্রাচী হাসতে হাসতে পেট চেপে ধরে বসে পড়েছে৷ সৌধ এদের হাড়ে হাড়ে চেনে। তাই অবাক হলো না। ওদেরকে ওদের মতো ছেড়ে দিয়ে আইয়াজকে ইশারা করে কাছে ডাকল। জিজ্ঞেস করল,
‘ খাবারের ব্যবস্থা করেছিস? ‘
‘ সুহাস করবে। বাসমতী চালের খাসির কাচ্চি, স্প্রাইট, স্পিড ক্যান। এখন চা, কফি পাচ্ছি শুধু। ‘
‘ কোথায় ও? ‘
‘ কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাবে বলল। ‘
.
.
ক্লাবের সামনে বাইক থামতেই নিধির ডাক শুনতে পেল সুহাস,
‘ এই সুহাস, এই। ‘
আচমকা পিছনে ঘুরতেই বাচ্চা কোলে নিধিকে দেখতে পেল সে। নিমেষে বুকের ভেতর জমে থাকা সব রাগ, অস্বস্তি দূর হয়ে গেল। ঠোঁটের কোণে আলতো হাসির রেখা ফুটল সুহাসের। ত্বরিত বাইক থেকে নেমে এগিয়ে গিয়ে অনিরূপকে কোলে তুলে নিল। নিধি যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। রিকশা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে বলল,
‘ কেমন আছিস? ‘
‘ এইতো আছি.. তোর কী খবর? ‘
অনিরূপের সঙ্গে খেলা করতে করতে জিজ্ঞেস করল সুহাস৷ নিধি ছোট্ট একটি নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল,
‘ আজ আমি ভীষণ ভালো আছিরে দোস্ত। কতদিন পর তোদের একসঙ্গে পাচ্ছি। আই এম সো হ্যাপি। ওরা সব কোথায়? এসে গেছে? ‘
‘ হ্যাঁ আমি আর তুইই লেট। ‘
অনিরূপের বুকে নাক ঘষল সুহাস। খিলখিল করে হেসে ওঠল ছেলেটা৷ সুহাস আশ্চর্য কণ্ঠে বলল,
‘ কিইরে দোস্ত! ও তো তোর মতো খলখল করে হাসে। ‘
নিধি হা হয়ে গেল৷ সুহাসের গাল টেনে দিয়ে বলল,
‘ আমি খলখল করে হাসি? ‘
সুহাস দুষ্টুমি ভরে উত্তর দিল,
‘ ঘোড়া ছুটলে চারপাশে যে ধ্বনি বাজে তুই ঠিক অমন হাসিস বিলিভ না হলে সৌধকে জিজ্ঞেস করে দেখিস। ‘
অনেকদিন পর দেখা। অনুভূতি জেগে ওঠেছে পুরোনো দিনের মতোই৷ তাই তো কথার ছলে পুরোনো স্বভাবে মুখ ফস্কে সৌধর নাম বলে ফেলল সুহাস৷ সহসা দু’জনের মুখই চুপসে গেল। চারপাশ যেন সুনসান নীরবতায় আচ্ছন্ন। সুহাস আর খেলা করছে না। যত্ন নিয়ে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে রেখেছে অনিরূপকে। অনিরূপ ওর চুল নাড়াচাড়া করতে ব্যস্ত। নিধি স্মিত হাসল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বলল,
‘ চল ভেতরে যাই। ‘
সায় দিল সুহাস৷ ওরা দু’জন যখন ক্লাবের দরজার সামনে উপস্থিত হলো শুনতে পেল, সবাই মিলে সৌধকে জেরা করছে, তাদের হবু ভাবি কোথায়? সুহাসের সঙ্গে আসবে নাকি? সৌধ গম্ভীর গলায় বিরক্ত হয়ে সেসব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে,
‘ ওর আসার কথা ছিল না। অহেতুক গ্যান্জাম করিস না তো। ‘
কতদিন? বহুদিন? হ্যাঁ বহুদিনই বটে। বহু এবং বহুদিন পর সৌধর দেখা পেল নিধি৷ বুকের ভেতরটা আবেগে টইটম্বুর। এক সময় কত ভালো বন্ধু ছিল দু’জন। কত ভালো সময় কাটিয়েছে তারা৷ যেখানেই সৌধ সেখানেই নিধি৷ সৌধর চারধারে এক নিধির অস্তিত্ব। চোখ দু’টো টলমল হয়ে ওঠল ওর৷ কেউ দেখার আগেই তা অস্পষ্ট করে রুদ্ধশ্বাস ছাড়ল৷ সকলের প্রশ্নে বিরক্ত হলো কিঞ্চিৎ। এরা কি নিজেদের বোধবুদ্ধি গিলে খেয়েছে? বিগবস ক্লাবে সিনু কেন আসবে? এটা সৌধর বন্ধুহলের ক্লাব। আজ তারা বন্ধুরা মিলে মিট করতে এসেছে। বন্ধুদের মাঝখানে কেন সিনু আসবে? বউ আর বন্ধু দু’টো দু জায়গাতেই মানানসই৷ এক জায়গাতে না। বউ কখনো বন্ধু হতে পারে না৷
সুহাস, নিধিকে দেখে খুশিতে চিৎকার করে ওঠল প্রাচী, ‘ ওহ নিধি। ‘ বলেই একছুটে এসে নিধিকে জড়িয়ে ধরল সে৷ এবার আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না নিধি। কেঁদে ফেলল আচমকা। ওদের দু’জনের জড়িয়ে ধরা দেখে স্টেজ থেকে লাফিয়ে ছুটে এলো আজিজ। দু হাত এগিয়ে ধরে ঢঙ করে বলল,
‘ ওহ নিধি আয় বুকে আয়। ‘
আজিজের কথা শুনে লাফিয়ে সরে গেল নিধি প্রাচী দু’জনই। আজিজ নিধির দিকে যেতে যেতে বাঁক নিল। সুহাসের দিকে৷ নিধির ছেলে অনিরূপকে কোলে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরল। আফসোসের স্বরে বলল,
‘ আয় ভাই তুইই বুকে আয়। তোর মা তো আসবে না তুইই আয়। ফা টা কপাল আমার। ‘
বান্ধবীর ছেলেকে ভাই! এই আজিজ পারেও বটে৷
সকলের মাঝে হাসির রোল পড়ল৷ এক সৌধ ছাড়া। সে নির্লিপ্ত ভাবে বসে আছে৷ এদিকে আজিজের শক্ত বুকে শক্ত চাপ খেয়ে অনিরূপ উচ্চ গলায় কান্না করে দিল। তার কান্না শুনতেই নিধির বুকের ভেতর ছ্যাঁত করে ওঠল যেন। তড়াক করে এসে আজিজকে বকতে বকতে ছেলেকে কোলে তুলে নিল।
‘ কীরে তুই! এখনো শুধরালি না। বাচ্চাদের সাথে কেউ এমন করে। সব জায়গায় মজা নেস। ভয় পেয়েছে ছেলেটা। ‘
ছেলেকে পরম মমতায় বুকে আগলে নিল নিধি৷ এরপর উপস্থিত সকলের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করে নির্দ্বিধায় চলে গেল সৌধর সামনে৷ সৌধ যে চেয়ারটায় বসে আছে তার পাশের চেয়ারে বসে নিজেকে সুস্থির করল। এরপর তাকাল সৌধর পানে। সহসা বুকের ভেতর ধক করে ওঠল। সৌধ তাকায়নি তার দিকে। সে এসেছে অথচ সৌধর মাঝে বিন্দু পরিমাণ উৎসাহও নেই। এই যে পাশে বসল এতেও ভ্রুক্ষেপহীন। আহত হলো নিধি। গাঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
‘ কেমন আছিস? ‘
উত্তর দিতে সময় নিল না সৌধ। কৃপণতাও করল না। সহজ গলায় বলল,
‘ ভালো। তুই? ‘
একটুক্ষণ চুপ রইল নিধি। অপেক্ষা করল সৌধর তাকানোর। তাকাল না সৌধ। নিরাশ হলো সে। ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল,
‘ আছি, ভালোই। ‘
কথাটা বলে খেয়াল করল সৌধর ঠোঁটের কোণায় বাঁকা হাসি৷ নিধির হৃদয়টা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল এ হাসিতে। পুরোনো দিন গুলো আর ফিরে আসবে না৷ তাই বলে এতখানি পার্থক্য মানতে কষ্ট হলো। কেমন অস্থির অস্থির লাগছে৷ কী করবে কী বলবে বুঝতে না পেরে অনিরূপের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘ অনিরূপকে দেখবি না? আমার ছেলে। বাচ্চাদের সঙ্গে রেগে থাকতে নেই। ‘
নিধি যখন এ কথাটা বলল সৌধর বুকের ভেতর কাঁটা হয়ে বিঁধল, অনিরূপ অর্পণ শিকদার আর নিধির সন্তান। নিজেকে যথাসম্ভব সামলে নিল সৌধ। নিধির দিকে তাকাল না একবারো। তবে নিষ্পাপ শিশুটার দিকে তাকাল। অনিরূপের ফর্সা গুলুমুলু মুখ, মায়ের মতো বাদামি রঙের নিষ্পাপ চাহনি হৃদয় শীতল করে দিল তার। স্মিত হাসল সে। সহসা ডান হাত বাড়িয়ে অনিরূপের ডান হাত স্পর্শ করে বলল,
‘ হেই লিটল স্টার, উই ক্যান বি ফ্রেন্ডস? ‘
সৌধ, নিধিকে আশ্চর্য করে দিয়ে অনিরূপ মুগ্ধ করা এক হাসি দিল। দু-হাত বাড়িয়ে প্রায় লাফিয়ে চলে গেল সৌধর কোলে। সৌধ আগলে ধরল অনিকে। দু’হাতে উঁচিয়ে ধরে চোখে চোখ রেখে বলল,
‘ ওকে ফাইন পাক্কা দোস্ত হয়ে গেলাম আমরা। ‘
এবারে নিধির দিকেও তাকাল সৌধ। বহুদিন না দেখা মুখটায় তাকিয়ে হাসল অমায়িক ভঙ্গিতে। যে হাসিতে নিধি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল৷ সৌধ দৃষ্টি সরিয়ে নিল নিধির হালকা লালচে চোখ দু’টো থেকে। তার মনে হলো ভেতরে ভেতরে কাঁদছে নিধি৷ কেন কাঁদছে? উত্তর জানতে চায় না। নিধি অপলকভাবে সৌধর কোলে অনিরূপকে দেখছে৷ সৌধ ওর সঙ্গে অল্প অল্প কথা বলছে, হাসাতে চেষ্টা করছে। অনিরূপ বার বার সৌধর নাকে আঙুল ঢুকিয়ে দিতে লাগলে সৌধ মুখ সরাতে সরাতে নিধিকে বলল,
‘ ভালো ইয়ার্কি মারে তোর ছেলে। ঠিক তোর মতো। বন্ধু পাতাতে না পাতাতেই ইয়ার্কি শুরু করে দিয়েছে।’
একটু দূরেই প্রাচী। সবই শুনছিল৷ হঠাৎ কাছে এসে বলল,
‘ বাব্বাহ বন্ধু পাতিয়ে ফেললি? ‘
‘ এটাই ব্যাটার। ‘
দৃঢ় স্বর সৌধর৷ প্রাচী টের পেয়ে কথা বাড়াল না৷ দূর থেকে ওদের তীক্ষ্ণ চোখে খেয়াল করল সুহাস৷ সৌধ নিধির সঙ্গে বিরবির করছে৷ কী বলছে ওরা? কৌতূহল নিয়ে এগিয়ে এলো সে। তক্ষুনি আজিজ গিটারে টুংটাং বাজাতে লাগল। কী বিশ্রী শুনালো! সুহাস রেগে গিয়ে বলল,
‘ ছাগল দিয়ে হাল চাষ হয় না। দে এদিকে দে। ‘
প্রাচী হঠাৎ চ্যাঁচিয়ে ওঠল,
‘ এই সৌধ, এই সুহাস গান ধর তো একটা। ‘
বাকি বন্ধুরা প্রতিবাদ করল।
‘ এই না এভাবে না। এক এক করে গাইতে হবে। তার আগে সবাই শান্ত হয়ে বোস। ‘
ওরা সবাই শান্ত হয়ে বসল। নিচ থেকে সবার জন্য চা নিয়ে এলো কয়েকজন। ওরা সবাই মিলে চা খেতে খেতে আড্ডা দিল। নিধির ছেলের বয়স সাড়ে সাত মাস। আড্ডার কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই ছেলেটা ক্ষুন ক্ষুন করে কাঁদতে লাগল। নিধি টের পেল, খিদে পেয়েছে। বার বার মায়ের কোলে আসতে বাহানা খুঁজল। নিধি কোলে নিলে বুকের দিকে মুখ ঘষতে শুরু করল অনিরূপ। সকলে আড্ডায় ব্যস্ত৷ আড্ডার ফাঁকে সৌধর চোখ চলে যায় নিধির অস্বস্তি ভরা মুখে। বুঝতে পারে সমস্যা। তাই প্রাচীকে ইশারা করে নিধিকে নিয়ে ওপাশে চলে যেতে। ছোটো বাচ্চা নিয়ে মায়েদের এই সমস্যা। ওরা পরিস্থিতি বুঝে না৷ খিদে পেয়েছে ওদের খাবার চাই। এতে মা যতই বিব্রত হোক ওরা সেসব কেয়ার করে না৷ করবে কী? ওরা তো বুঝতেই পারে না৷ ভেবেই আচমকা মুচকি হাসল সৌধ।
.
সকলে আড্ডা দিচ্ছে। আড্ডার পাশাপাশি ফোন টিপছিল সৌধ৷ ফেসবুক স্ক্রলিং করতে গিয়ে হঠাৎ দৃষ্টি থমকাল সিমরানের আইডিতে লুনার একটি লাইভ ট্যাগ দেখে। ভ্রু কুঁচকে ফেলল সে৷ লাইভ শো করল। দেখতে পেল লুনা সহ আরো গুটিকয়েক ছেলেমেয়ে। লেকের ধারে বসে আড্ডা দিচ্ছে। সেখানে সিমরানও আছে৷ লুনা সিগারেট খাচ্ছে আর লাইভে তার ফ্যান, ফলোয়ারদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে। নিমেষে চোয়াল শক্ত হয়ে গেল তার৷ লুনা মেয়েটাকে একদম পছন্দ নয় তার। এর আগে একবার ওর সঙ্গে মিশতে নিষেধ করেছে সিমরানকে। বেস্ট ফ্রেন্ড বলে মেলামেশা বন্ধ করতে পারেনি৷ তাই বলে রাস্তাঘাটে, বাইরে মেয়েটা এভাবে সিগারেট খাবে? এ কেমন অসামাজিকতা! অসভ্য, বর্বর একটা মেয়ে! ক্রোধে দেহ শক্ত মূর্তি হয়ে গেলো সৌধ৷ এতদিন সিমরান শুধু ওর বন্ধুর বোন ছিল৷ এখন হবু বউ৷ সুজা চৌধুরীর হবু পুত্রবধূ। একটু হিসেব করে চলা উচিত ছিল৷ মেজাজ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ল। ক্রুদ্ধ কণ্ঠে সুহাসকে ডাকল। সুহাস কাছে আসতেই ফোন এগিয়ে ধরে বলল,
‘ লুনার সাথে ওকে মিশতে না করিস না কেন তুই? ‘
চমকে ওঠল সুহাস। বিস্ময়ে বড়ো বড়ো চোখ করে একবার ফোন আর একবার সৌধর দিকে তাকাল। ঢোক গিলতে গিলতে ভাবল, সিনু তো বাড়ি ছিল। কখন বের হলো? যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়। সৌধ কেমন ছেলে, কোন বাড়ির ছেলে, সৌধর কী অপছন্দ, তাদের বাড়ির চোখে কী অপরাধ। সমস্তটাই অবগত সুহাস৷ এদিকে বোন যে ভুল করেছে সেটা মনে মনে স্বীকার করলেও সৌধর সামনে স্বীকার করতে নারাজ৷ তাই দোষ সৌধকেই দিল৷ ঠিক বাচ্চাদের মতো করে বলল,
‘ সিনু তো বাড়িতে ছিল৷ কখন বের হলো? সব দোষ তোর। তুই আজ এ সময় ওকে নিয়ে বেরুতে চেয়েছিলি। যদি কথা রাখতি ও কি লুনার কাছে যেত? ‘
বিগড়ানো মেজাজটা আরো বিগড়ে গেল সৌধর৷ এই সুহাস কোনোদিন ঠিক হবে না৷ ভুল তারই হয়েছে। সুহাসের থেকে সমাধান পাবে না সে৷ অহেতুক কথা বাড়ল। দীর্ঘশ্বাস ফেলল সৌধ। বাকি বন্ধুদের দিকে তাকাল একবার। ওরা ফিসফাস করছে। শুনতে পেল, তার হবু বউকে দেখার আগ্রহ অনেকের। কেউ কেউ আশায় ছিল আজ হবু বউকে নিয়েই আসবে। পরিচয় করাবে তাদের সঙ্গে। হঠাৎ করেই সৌধর মনে কী চাপল কে জানে? কল করল সিমরানকে। যেহেতু লুনার লাইভ চলছে সেহেতু দেখতেই পেল সিমরান কী করে।
আচমকা সৌধর কল পেয়ে কেঁপে ওঠে সিমরান। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে লুনার থেকে দূরে সরে যায়৷ কল রিসিভ করে হ্যালো বলতেই সৌধ তিরিক্ষি মেজাজে বলে,
‘ কোথায় আছিস? ‘
ঢোক গিলে সিমরান। আমতা আমতা করে সত্যিটাই বলে সে কোথায় আছে। সত্যি বলাতে একটু ঠান্ডা হয় সৌধ। আদেশ করে,
‘ পনেরো মিনিটের মধ্যে ক্লাবের সামনে আসবি। এসে কল করবি আমাকে, অপেক্ষায় থাকলাম। ‘
আর একটা কথাও বলল না সৌধ। যা বলার সামনাসামনি বলবে। যতই বেস্ট ফ্রেন্ড হোক। মেয়েটা বিশৃঙ্খল লাইফ লিড করে৷ লুনাকে হয় ওই লাইফ ত্যাগ করতে হবে৷ নয়তো সিমরানের সাথে বন্ধুত্বের বিচ্ছেদ ঘটাতে হবে। মনে মনে কঠিন পণ করল সৌধ।
অনিরূপকে খাইয়ে শান্ত করে ফিররে এলো নিধি। বসল সৌধর পাশের সিটে৷ পুরোনো অভ্যাস তার। বরাবর সৌধর পাশের সিটটা তার জন্যই বরাদ্দ ছিল৷ সে অনুযায়ী বিনা দ্বিধায় আজো বসে পড়ে। যা সুহাসের কাছে দৃষ্টিকটু লাগছে খুব৷ আবার বন্ধুত্বের জায়গা থেকে মেনে নিচ্ছে। সৌধকে ঠিক বুঝতে পারছে না সুহাস৷ কেমন শান্ত, শীতল আচরণ দিচ্ছে। শক্ত ধাঁচের মানুষ নিয়ে এই হলো সমস্যা। ভেতরে ভাঙছে না মচকাচ্ছে বোঝা মুশকিল।
গানের আসর জমে ওঠেছে৷ সৌধকে হাজার জোরাজোরি করেও গান গাওয়ানো যায়নি। শেষ পর্যন্ত নিধি অনুরোধ করল। সৌধ ভেবেছিল গাইবে না৷ নিশ্চিত ছিল সুর আসবে না৷ নিধি অনুরোধ করতে করতে হঠাৎ যখন তার বাহু চেপে ধরল৷ একদম বিনা সংকোচে। চমকে ওঠল সৌধ। অনুভব করল নিধির এই স্পর্শ যন্ত্রণা দিচ্ছে তাকে। মেনে নিতে পারছে না এই স্পর্শকে। অথচ একদিন এই স্পর্শের জন্য অভুক্তের ন্যায় অপেক্ষা করেছে সে। অবাক দৃষ্টিতে তাকায় সৌধ। সুক্ষ্মতার সাথে খেয়াল করে নিধির হালকা লাল চোখ দু’টোকে। যে চোখের ভাষা সে কোনোদিনও বুঝে ওঠতে পারেনি৷ সেই চোখের ভাষা আজ তাকে বিস্মিত করছে। কাঁদছে মেয়েটা৷ ওর মন কাঁদছে। কেন কাঁদছে? কেন কাঁদবে? প্রশ্ন গুলো তীব্র জেদ তুলে দেয় মনে। আলগোছে তীব্র অবজ্ঞায় সরিয়ে দেয় নিধির ধরে রাখা হাতটি। এরপর ওঠে গিয়ে সম্মুখে সুহাসের পাশে বসে। গিটার তুলে নিয়ে সুহাসকেও বলে আজিজের হাতের গিটারটা নিতে। সুহাস গিটার নিতেই সে কোন গান গাইবে বলে৷ এরপর দু বন্ধু গিটার বাজায়। গান গায় শুধু সৌধ একা।
—- পৃথিবীটা নাকি ছোটো হতে হতে
Satellite আর cable এর হাতে
Drawing room-এ রাখা বোকা বাক্সতে বন্দি
আ-হা-হা-হা, আ হা, আ-হা-হা-হা
আ হা, আ-হা-হা ——
মাথা নত সৌধর। দৃষ্টিজোড়া আবদ্ধ। একমনে গিটারে আঙুল চালাচ্ছে। মৃদু মৃদু মাথা নাড়াচ্ছে আর গাইছে। পাশে বসে সুহাস। ওর গিটারের ধ্বনি একটু বিধ্বংসী। সৌধর ধ্বনিতে যত আবেগ সুহাসের ধ্বনিতে ততই ক্রুদ্ধতা।
—- ঘরে বসে সারা দুনিয়ার সাথে
যোগাযোগ আজ হাতের মুঠোতে
ঘুচে গেছে দেশ-কাল-সীমানার গণ্ডি
আ-হা-হা-হা, আ হা, আ-হা-হা-হা
আ হা, আ-হা-হা-হা —–
নিধির বুকের ভেতরটা অশান্ত হয়ে ওঠেছিল। যা গাঢ় হলো সৌধর গলায় পরের লিরিক শুনে,
—- ভেবে দেখেছো কি
তারারাও যত আলোকবর্ষ দূরে
তারও দূরে
তুমি আর আমি যাই ক্রমে সরে সরে
ভেবে দেখেছো কি
তারারাও যত আলোকবর্ষ দূরে
তারও দূরে
তুমি আর আমি যাই ক্রমে সরে সরে —–
সহসা বুকে কম্পন সৃষ্টি হলো নিধির৷ চোখ দু’টো টলমল। তারদিকে সৌধর কোনো খেয়াল নেই৷ ওর সমস্ত খেয়াল আজ নিজের দিকে। হাতে থাকা গিটারের সুরে।
—- সারি সারি মুখ আসে আর যায়
নেশাতুর চোখ TV পর্দায়
পোকামাকড়ের আগুনের সাথে সন্ধি
আ-হা-হা-হা, আ হা, আ-হা-হা-হা
আ হা, আ-হা-হা-হা–
পাশাপাশি বসে একসাথে দেখা
একসাথে নয়, আসলে যে একা
তোমার-আমার ভাড়াটের নয়া ফন্দি
আ-হা-হা-হা, আ হা, আ-হা-হা-হা
আ হা, আ-হা-হা-হা
ভেবে দেখেছো কি
তারারাও যত আলোকবর্ষ দূরে
তারও দূরে
তুমি আর আমি যাই ক্রমে সরে সরে
ভেবে দেখেছো কি
তারারাও যত আলোকবর্ষ দূরে
তারও দূরে
তুমি আর আমি যাই ক্রমে সরে সরে….
কেউ নিশ্চুপ। কেউ হতবিহ্বল। কেউ তীব্র ক্লেশে বিভোর। কেউ বা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গান শুনছে৷ এমনই ক্ষণে আচমকা সৌধর ফোন বেজে ওঠল। আঙুলে চলন থামে সৌধর৷ কণ্ঠে সুর বন্ধ হয়। আলগোছে পকেট থেকে ফোন বের করে রিসিভ করতেই সিমরান ভীত কণ্ঠে বলে,
‘ সৌধ ভাই, এসেছি আমি। ‘
সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দেয় সৌধ। প্রাচীকে উদ্দেশ্য করে বলে,
‘ প্রাচী ক্লাবের সামনে সিনু দাঁড়িয়ে আছে৷ নিয়ে আয় ওকে। ‘
সুহাস চমকে ওঠল। সকল বন্ধুরা প্রথমে বিস্মিত হয়। এতবড়ো চমক রেখেছিল সৌধ! ‘ হুররেএ ‘ ওরা খুশিতে হৈচৈ শুরু করে। নিধি ছেলে কোলে হতভম্ব মুখে বসে। সৌধ কি ইচ্ছে করে সিনুকে ডেকে আনল? তীব্র অসন্তুষ্টির ছাপ নিধির মুখে। বন্ধুমহলে সিমরানকে সে মেনে নিতে পারল না৷ সিমরান সুহাসের ছোটো বোন৷ আজ বাদে কাল সৌধর বউ হবে, হয়ে যায়নি তো আর। ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়ল নিধি৷ অবিশ্বাস্য চাউনিতে তাকিয়ে রইল সৌধর মুখপানে। অনুভব করল তার বুকের ভেতর ভয়াবহ কম্পন সৃষ্টি হচ্ছে। ইচ্ছে করে এক্ষুনি ছুটে পালিয়ে যেতে৷ সময় থাকতে যে অনুভূতি তাকে ছুঁতে পারেনি। অসময়ে সে অনুভূতি কেন আষ্টেপৃষ্ঠে ধরল।
যা সৌধর মুখোমুখি হতে আরো প্রগাঢ়তায় রূপ নিচ্ছে। তবে কি বন্ধুত্বের দিকে তাকিয়ে এখানে আসা ভুল হলো? বিধ্বংসী এক ঝড়ের পূর্বাভাস নিধির বক্ষগহ্বর জুড়ে…।

Share This Article
Leave a comment

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।