অন্য দিকে আয়রা একটা নদীর পারে বসে আছে।ওকে ঘিরে বসেছে বাকি সবাই।সেই আসার পর থেকেই ওরা একের পর এক প্রশ্ন করেই যাচ্ছে।কিন্তু আয়রার মুখে কোনো কথা নাই।অবশেষে আয়রা বলতে শুরু করলো,,,,
আয়রা:তোরা সবাই বারবার একটাই প্রশ্ন করছিস যে আমি কেন তোদেরকে আরুশ অর্থাৎ আমার মি.পারফেক্ট এর কথা জানায়নি।এর উত্তর একটায়।আমি ভেবেছিলাম হয়তো আমি কখনোই আর আমার মি.পারফেক্ট কে নিজের করে পাবো না।এই ভাবনা থেকেই আমি কাউকে কিচ্ছু জানায়নি।
আয়রার কথা শুনে সবাই চুপ করে আছে।এর মধ্যেই আয়রার আপিরা,ভাইয়ু আর তাদের সাথে আরুশ এসে হাজির হলো।
আয়রা আরুশকে দেখে উঠে অন্যদিকে চলে যেতেই আরুশ একটানে আয়রাকে ওর দিকে ঘুরিয়ে বুকের সাথে জরিয়ে নিলো।আয়রা ছটফট করেও আরুশের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারছে নাহ।
আরুশ:সায়ু বেবি,,,এতো ছটফট করছো কেন?তুমি আর আমার কাছ থেকে ছাড়া পাবে না।(কানের কাছে ফিসফিস করে)
(এখানে বলে দেই আয়রার ডাক নাম সাইয়ারা।তাই আরুশ ওকে সায়ু বলে ডাকে।)
আয়রা:কেন এসেছো তুমি আমার কাছে?কেন আবার আমার জীবনে ফিরে এসেছো?বলো(ধরা গলায়)
আরুশ:কারণ,আমি যে বড্ড ভালোবাসি আমার “রোজ কুইনকে”
আয়রা:চাইনা তোমার এই ভালেবাসা যেখানে আনন্দের চেয়ে কষ্ট আর কান্নাটাই বেশি!(কাঁদতে কাঁদতে)
আরুশ:খবরদার,,আর কখনো যেন আমি তোমার চোখে পানি না দেখি।বুঝলে?(চোখের পানি মুছে দিতে দিতে)
আয়রা:হুহহহ,,,আমি কাঁদলেই বা তোমার কি?(নাক টানতে টানতে)
আরুশ:আমারই তো সব।কারণ তুমি পুরোটাই যে আমার(আয়রার দিকে তাকিয়ে)
আয়রা আর কিছু না বলে শক্ত করে আরুশকে জড়িয়ে ধরলো।আরুশও আলতো হাতে আয়রাকে জড়িয়ে ধরলো।
কিছুক্ষণ পর আয়মানরা এসে ওদেরকে এই অবস্থায় দেখে গলা খাঁকারি দিলো……
ঐশি:উহুম উহুম
ঝিনুক:আমরা কিছু দেখিনি(বলেই চোখ ঢাকার ভান করলো)
সবার কন্ঠ পেয়ে আয়রা তাড়াতাড়ি করে আরুশকে ছেড়ে একটু দূরে গিয়ে দারালো।
নিলয়:বাব্বাহ,,,বোনু দেখি আমার লজ্জা পাচ্ছে হুম(আয়রার কাছে গিয়ে)
বিন্দিয়া:আরে এতো লজ্জা পেতে হবে নাহ।আমরা আমরাই তো নাকি(আয়রাকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে)
আয়রা:হুম।
সাদাফ:এই এই সবাই এইভাবেই থাকো আমরা একটা গ্রুপ সেলফি তুলি।এই বলেই সাদাফ গ্রুপ সেলফি তুললো।
এরপর ওরা সবাই আয়রাকে নিয়ে বাসায় গেলো।বাসায় গিয়ে ওকে রেখে সবাই আলোচনায় বসলো যে আয়রা আর আরুশের ব্যাপারে কে কি ভাবছে।সবাই বললো যে ওদের বিয়ে দিতে।তখন আয়রার বাবা বললেন যে এই ব্যাপারে পরে ভাবা যাবে এখন আয়রাকে একটু সময় দেওয়া দরকার।এই কথা শুনে আর কেউ কিছু বলেনি।সেদিনের মতো সবাই আয়রাদের বাসাতেই থেকে গেলো।শুধু আরুশ চলে গেলো ওর বাসায়।
এরপর ১ মাস পর ঘটে সেই বাজে ঘটনা যার জন্য পাল্টে যায় সবার জীবন।।।
১মাস পর আয়রা একদিন শুয়ে ঘুমাচ্ছিল।তখন ওর ফোনে কল আসে।সেই কল রিসিভ করে বিন্দিয়া।রিসিভ করার পর যা শুনে তার জন্য ওও মোটেও প্রস্তুত ছিলো নাহ।কলে একজন পুলিশ বলে যে “শুভ চৌধুরী” নামে একজনকে কেউ গুরুতরভাবে মেরেছে।তার ডায়াললিষ্টে এই নাম্বারটা সবার উপরে ছিলো বিধায় তারা কল করেছে।শুভ আপাতত পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আইসিইউ তে অ্যাডমিট।এই কথা শুনেই বিন্দিয়া এক চিৎকার দিয়ে উঠে ওর চিৎকারে আয়রা ধরফর করে উঠে বসে আর বাকিরাও ততক্ষণে চলে আসে।এসেই ওকে জিজ্ঞেস করে যে কি হয়েছে?তখন ওও বলে,,,,
বিন্দিয়া:শ,,শু,,,শুভকে কেউ মেরেছে।ওর অবস্থা ভা,,,ভালো নাহ।ওও এখ,,,এখন আই,,সি,,ইউতে আছে(কাঁদতে কাঁদতে)
আয়রা:কিহহহহহহহহহহহহ(চিল্লিয়ে)
সাদিয়া:কি বলছিস তুই এসব বিন্দু?
নোশিন:মাথা ঠিক আছে তোর?
জারিন:তোকে কে বলেছে এইসব?
নিলয়:আর শুভ তো আমেরিকায়,তাহলে এখানে কিভাবে আসলো?
বিন্দিয়া:আমি ঠিকই বলছি আর আজ শুভ তোদের সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিল এখানে এসে।কিন্তু তার আগেই,,,,(বলেই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো)
আয়রা:ক্রাশ কোথায় এখন?
বিন্দিয়া:পপুলার হসপিটালে
এরপর সবাই হসপিটালে চলে যায়।সেখানে গিয়ে জানতে পারে যে শুভর অবস্থা খুব ক্রিটিক্যাল।বাঁচানো মুশকিল কিন্তু ডক্টররা সবাই আপ্রাণ চেষ্টা করছে ওকে বাঁচানোর।ওকে যেভাবে গুলি করা হয়েছে তাতে ওর বুকের একপাশে ফুটো না হলেও মারাত্মকভাবে ক্ষতি হয়েছে।এইসব শুনে বিন্দিয়াসহ সবাই খুব ভেংগে পড়ে।কিন্তু কথা হচ্ছে শুভর সাথে কার এমন শত্রুতা থাকতে পারে যে ওকে একদম মেরে ফেলতে চেয়েছিল?ওও তো বিডির তেমন কিছুই চেনেনা এই প্রথমবার বিডিতে আসা ওর।তবে কে হতে পারে সেই শত্রু যার এতো বড় সাহস যে আরহাম চৌধুরীর ভগ্নিপতিকে খুন করতে চায়?
(আসলে শুভ হলো বিন্দিয়ার হাসবেন্ড।ওদের আরো সাত মাস আগে বিয়ে হয়েছে।শুভর সাথে বিন্দিয়ার আমেরিকাতেই পরিচয়।শুভর জন্মস্থানও আমেরিকায়।ওখানেই দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় বিন্দিয়া আর শুভর।এই প্রথমবার ওও বিডিতে আসছিলো আয়রাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।আয়রা শুভকে ক্রাশ বলে ডাকে আয়রার সাথে ওর খুব খুব ভালো সম্পর্ক।ওদের সম্পর্কটা এমন যে বেস্টফ্রেন্ড,ভাই,অ্যাডভাইজার সবই বলা চলে।এতোটায় ভালো সম্পর্ক আয়রা আর শুভর।)
চলবে?????
(আমি জানি আজকের পর্বটা খুব ছোট হয়েছে। এজন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত।আসলে কর্ম ব্যস্ততার জন্য আজকের পার্টটা বেশ ছোট হয়েছে।তবে নেক্সট পার্ট বড় করে দিবো ইনশাআল্লাহ!)
চলবে???