থেকে থেকে দূরে হুতুম প্যাঁচা ডাকছে। যা ভুতুড়ে শোনাচ্ছে। গা কাঁপুনি ঠান্ডা। সময়টা যেন থমকে দাঁড়িয়ে চড়ছে দণ্ড শূলে। পদ্মজা ছুটে আসে পূর্ণার কাছে। পূর্ণা উবু হয়ে শুয়ে পড়েছে। কাঁদছে মা,মা করে। পদ্মজা এক হাতে শক্ত করে ধরে রেখেছে রুম্পাকে। আরেক হাতে পূর্ণার কাঁধে ছুঁয়ে দেখল কোথায় আঘাত পেয়েছে। ঠান্ডায় তার ঠোঁট কাঁপছে। কানে ভেসে আসছে দুজন পুরুষের ধস্তাধস্তির দুপদাপ শব্দ। পদ্মজার ঠান্ডা হাতে পূর্ণার আহত স্থানের রক্ত লাগতেই সে আঁতকে উঠল। রুম্পাকে ছেড়ে পূর্ণাকে জড়িয়ে ধরল। পাশে তাকিয়ে দেখল,যে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে সে লাঠির আগায় কাঁচি বাঁধা। পূর্ণার ঘাড়ের চামড়া ছিঁড়ে গেছে। গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে পূর্ণার পুরো শরীর। আলমগীর অজ্ঞাত লোকটির সাথে আর পারছে না। সে আকুতি, মিনতি করে পদ্মজাকে বলছে,’পদ্মজা,পদ্মজা, বোন সহায় হও।’
টানাপোড়নে পদ্মজার হাত পা কাঁপতে থাকল। সে পূর্ণাকে টেনে তোলার চেষ্টা করল। পূর্ণা কিছুতেই উঠতে পারছে না। যন্ত্রনায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে সে। পূর্ণার কান্না দেখে পদ্মজার বুক ব্যথায় বিষে যাচ্ছে। এই রাত, রাতের আঁধার এতো পাষাণ কেন হলো! আলমগীরের আর্তনাদ ভেসে আসে। পদ্মজা চমকে ফিরে তাকাল। অজ্ঞাত লোকটি আলমগীরের স্পর্শকাতর স্থানে অস্বাভাবিকভাবে আঘাত করেছে। ফলে সে দূর্বল হয়ে আর্তনাদ করে উবু হয়ে ছটফট করছে। অজ্ঞাত লোকটি দ্রুতগামী ঘোড়ার গতিতে ছুটে এসে রুম্পাকে ধরতে চাইল। পদ্মজা বাধা হয়ে দাঁড়াল। অজ্ঞাত লোকটি কর্কশ কণ্ঠে পদ্মজাকে হুংকার দিল,’আমার কাম আমারে করতে দে।’
একটা মানুষের কণ্ঠস্বর এতো ভয়ংকর কী করে হয়! এই কণ্ঠস্বর যে কাউকে কাঁপিয়ে তুলবে। পদ্মজা কিঞ্চিৎ চমকালেও থেমে থাকল না। উত্তরে হাওয়ায় তার চুল এলোমেলো হয়ে উড়ছে। সে অজ্ঞাত লোকটির মতোই হুংকার দিয়ে বলল,’নিজের ভালো চান তো আত্মসমর্পণ করুন।।
পদ্মজার কথা শুনে লোকটি ব্যঙ্গ করে হাসল। খুব কাছ থেকে অজ্ঞাত লোকটির মুখ দেখে পদ্মজা কপাল কুঁচকে ফেলল। লোকটির মুখ থেকে বিশ্রি একটা দূর্গন্ধ আসছে। স্বাস্থ্যবান দেহ,গায়ের রঙ কুচকুচে কালো। সাদা দাঁতকপাটি আর লাল ভয়ংকর চোখ দুটিই আগে নজর কাড়ছে। পদ্মজা কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই অজ্ঞাত লোকটি পদ্মজাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল। এরপর লাঠি হাতে তুলে নিল। রুম্পা ছুটে পালাতে চাইল। কিন্তু পারল না। অজ্ঞাত লোকটি তার গলা চেপে ধরল।
পদ্মজা দৌড়ে এসে অজ্ঞাত লোকটির পিঠে কিল ঘুষি দিল। তাও কাজ হলো না। পদ্মজার গায়ের শক্তি লোকটিকে এক চুলও নাড়াতে পারেনি। রুম্পা গোঙাচ্ছে। পূর্ণা যন্ত্রনায় কাঁদছে,ভয়ে জুবুথুবু হয়ে আছে। রাত গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। নিশাচর পাখিরা আজ যেন অদ্ভুত স্বরে ডাকাডাকি করছে। কেমন গা কাঁপিয়ে তোলা! ঝিঁঝিঁপোকাদের ডাক বেড়েছে,কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাতাসের বেগ।
অজ্ঞাত লোকটির হিংস্র থাবা রুম্পাকে গ্রাস করে নিয়েছে। লোকটি পা দিয়ে মাটি থেকে লাঠি তুলল। তারপর লাঠির আগা থেকে কাঁচি হাতে নিল।
আর একটু ক্ষণ তাহলেই সেই ধারালো কাঁচি রুম্পার গলার রগ টেনে নিবে। উড়ে যাবে রুম্পার রুহ। আলমগীর নিজের যন্ত্রণা ভুলে ছুটে আসে তার সহধর্মিণীর প্রাণ বাঁচাতে। তার আগেই ঘটে যায় ভয়ংকর এক দৃশ্য। পদ্মজা অজ্ঞাত লোকটির পড়ে থাকা রামদা তুলে তার পিঠেই কোপ বসিয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞাত লোকটি লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। ফলে রাম দা আরো গভীরে প্রবেশ করে। গরু জবাইয়ের পর গরু যেভাবে কাতরায় অজ্ঞাত লোকটি সেভাবে কাতরাতে থাকল। রক্ত ছিটকে পড়ে পদ্মজার শাড়িতে,মুখমণ্ডলে। কাতরাতে থাকা দেহটি ডিঙিয়ে আলমগীর রুম্পার কাছে যায়। তারপর পদ্মজার দিকে তাকাল। পদ্মজার বুক হাঁপড়ের মতো ওঠানামা করছে। চোখে যেন ধিকিধিকি আগুন জ্বলছে। ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায় দেহটি। নিস্তেজ হয়ে পড়ে পদ্মজাও। সে এলোমেলো পায়ে কয়েক কদম পিছিয়ে গেল। তার শরীর কিঞ্চিৎ কাঁপছে। এটা সে কী করেছে! এ যে অচিন্তনীয় কাজ! সব এলোমেলো লাগছে। মাথা ভনভন করে ঘুরছে। গা গুলিয়ে উঠছে।
পূর্ণা এই দৃশ্য দেখে নিজের রক্তক্ষরণ ভুলে যায়। ভয়ে কাঁপতে থাকে। নাভি উল্টে বমি বেরিয়ে আসে। আলমগীর তাড়াহুড়ো করে পদ্মজার পাশে এসে দাঁড়াল। পদ্মজার বুকে বইছে অপ্রতিরোধ্য তুফান! সে নিষকম্প চোখে তাকিয়ে আছে নিথর দেহটির দিকে। আলমগীর একটা চাবি পদ্মজার হাতে গুঁজে দিয়ে এক নিঃশ্বাসে বলল,’ভয় পেয়ো না। এই বাড়িতে দিন দুপুরে খুন হলেও তা বাইরের কেউ জানবে না। সকালে উঠে দেখবে এখানে বাবলুর লাশও নেই রক্তও নেই। কেউ না কেউ সরিয়ে দিবে। সব দুঃস্বপ্ন মনে হবে। দ্রুত ঘরে ফিরে যাও। আমার অনেক কথা বলার আছে। আমি চিঠি লিখব। তোমার বাপের বাড়ির ঠিকানায়। আসছি।’
রুম্পা দ্রুত পায়ে হেঁটে এসে পদ্মজাকে জড়িয়ে ধরল। তার বুকটা হাহাকার করছে। পদ্মজার কথা খুব মনে পড়বে। আলমগীর অস্থির হয়ে চারিদিক দেখছে। আতঙ্কে সে কাঁপছে। এই বুঝি কেউ এসে গেলো। আর রুম্পাকে আবার বন্দি করে দিল। এমন অশান্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। আতঙ্কে যেকোনো মুহূর্তে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। রুম্পা পদ্মজাকে কিছু বলতে চেয়েছিল,আলমগীর বলতে দিল না। তার আগেই টেনে নিয়ে দৌড়াতে থাকল। পদ্মজা তাদের যাওয়ার পানে চেয়ে থাকল। ঝিঁঝিঁপোকাদের আলোর ভীড়ে দুজন হারিয়ে যাচ্ছে। তারা বাঁচার আশায় দৌড়াচ্ছে। না হওয়া সংসার পাতার স্বপ পূরণ করতে দৌড়াচ্ছে। দুজন আড়াল হয়ে যেতেই পদ্মজা দুই হাতে নিজের মুখ ছুঁলো। এরপর দুই হাত সামনে এনে দেখল,টকটকে লাল রক্ত। সঙ্গে সঙ্গে সে বমি করতে থাকল। তারপরপরই সম্বিৎ ফিরল। সে পূর্ণাকে খুঁজতে থাকল। একটু দূরে পূর্ণা ঘাসের উপর নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে। পদ্মজা দৌড়ে আসে। পূর্ণা পিটপিট করে তাকায়। পূর্ণাকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে। একুশ বছর বয়সী একটা মেয়ের শরীর তো কম ভারি নয়। পদ্মজার শক্তিতে কুলোচ্ছে না। সে পূর্ণাকে আকুতি করে বলল,’উঠার চেষ্টা কর বোন।’
পূর্ণার শরীরে ভূমিকম্প বয়ে যাচ্ছে। সে পুরো ভর পদ্মজার উপর দিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল। পদ্মজা শরীরের পুরোটা শক্তি দিয়ে পূর্ণাকে আগলে ধরে সামনে হাঁটা শুরু করে। পদ্মজার পা জোড়া ঠকঠক করে কাঁপছে। সে জানে না এটা শীতের কাঁপুনি নাকি ভয়ংকর কোনো কিছুর প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ার উত্তেজনা। মনে হচ্ছে যেন ভয়ংকর একটা ঝড় হুট করে শুরু হয়ে হুট করে থেমে গেছে। আর রেখে গেছে নিঃশ্বাস থামিয়ে দেওয়া নিস্তব্ধতা। পদ্মজা ঘামছে, কাঁপছে। ঠোঁট শুকিয়ে কাঠ। মনে হচ্ছে,এই বুঝি মৃত বাবলু উঠে দাঁড়াল। অনেক অনেক প্রেতাত্মা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল দুই বোনের উপর!
জঙ্গলের গাছপালা থেকে প্যাঁচাদের দল তীক্ষ্ণ চোখে দেখছে,সদ্য খুন হওয়া একটা মৃত দেহ পড়ে আছে ঘাসের উপর। আরেকটু দূরে ছিমছাম গঠনের শাড়ি পরা একটা মেয়ে চুল খোলা রেখে এলোমেলো পায়ে আরেকটা দূর্বল দেহকে ধরে ধরে নিয়ে যাচ্ছে বাড়ির ভেতর! দুজনের গায়ে তাজা লাল রক্ত। এই দৃশ্য তো রাতের আঁধারের চেয়েও ভয়ংকর! যার স্বাক্ষী হয়ে রইল রাতের আঁধার আর নিশাচর পাখিরা।
প্রতিদিনের মতোই ভোরের আলো নিকষকালো রাতকে ঠেলে দূরে সরিয়ে পৃথিবীটাকে আলোকিত করে তুলেছে। পাখিরা কিচিরমিচির করে ডাকছে। নতুন করে শুরু হয়েছে আরেকটা দিন। শুধু পদ্মজার সময়টা থমকে গেছে। সে তার গোসলখানায় বসে আছে। কনকনে ঠান্ডায় গোসল করেছে। এরপর থেকেই উদাসীন হয়ে ভেজাকাপড়ে বসে আছে। পূর্ণা অন্য ঘরে ঘুমাচ্ছে। পদ্মজা রাতে ধীরেসুস্থে পূর্ণার ক্ষত সামলেছে। বুঝতে দেয়নি,সে মনে মনে কতোটা ভেঙে পড়েছে। যখন রাতে তারা দুই বোন দুই তলায় উঠছিল,তখন পিছনে কেউ যেন ছিল! এতো চিৎকার, চেঁচামিচি হয়েছে আর কেউ শুনেনি? অন্দরমহলের রিদওয়ান এবং মজিদের ঘরের মানুষদের তো শোনার কথা ছিল। কারণ তাদের ঘর ডান দিকে,আর ডান দিকেই এতো বড় ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে। পূর্ণা জোরে জোরে কেঁদেছে,আলমগীর চেঁচিয়েছে। বাবলু নামের সেই লোকটি খুন হওয়ার সময় আকাশ কাঁপিয়ে চিৎকার করেছিল। দুপদাপ শব্দ তুলে কাতরেছিল। তবুও কেউ আসেনি! কেন? তার কেন মনে হচ্ছে,সবাই শুনেছে কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। পদ্মজার চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে আসে। সবকিছু কেমন ওলটপালট লাগছে। কাউকে খুন করার মতো সাহস কী করে হলো? এ কী মা হেমলতার গুণ! পদ্মজা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। চোখ পড়ে আলমগীরের দেয়া চাবিটার দিকে। চাবিটা দেখতে অনেক বড়। সে অপলক চোখে চাবির দিকে তাকিয়ে থাকল।
আমির ঘুম থেকে উঠে পদ্মজাকে দেখতে না পেয়ে গোসলখানায় উঁকি দিয়ে পদ্মজাকে দেখে সে চমকে উঠল। পদ্মজার শাড়ি হাঁটু অবধি তোলা। আঁচল বুকে নেই। চুল এলোমেলো। গায়ের রঙ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। থেমে থেমে কাঁপছে। তাতেও পদ্মজার ভ্রুক্ষেপ নেই। আমির হন্তদন্ত হয়ে গোসলখানায় প্রবেশ করল। পদ্মজার দুই বাহু দুই হাতে চেপে ধরে উদ্বিগ্ন হয়ে জানতে চাইল, ‘পদ্মবতী, কী হয়েছে? এ কী অবস্থা তোমার।’
পদ্মজা কিছু বলল না। সে আমিরের চোখের দিকে নিজের চোখের দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রাখল। আমির দ্বিগুণ বিচলিত হয়ে বলল,’এই পদ্ম, তুমি কাঁপছো তো। কী হয়েছে?’
পদ্মজার ঠোঁট দুটি ভেঙ্গে আসে। আর চোখ ছাপিয়ে জল। আমির অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। পদ্মজা আচমকা আমিরকে জড়িয়ে ধরল। আমিরের পুরো শরীর মুহূর্তে ঠান্ডা বরফ হয়ে যায়। পদ্মজা বাঁধভাঙা নদীর মতো হু হু করে কাঁদতে থাকল। আমির শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,’বলো না কী হয়েছে? আমার চিন্তা হচ্ছে।’
পদ্মজা আরো শক্ত করে আমিরকে জড়িয়ে ধরল। কাঁদতে কাঁদতে বলল,’আমি…আমি খ..খুন করেছি।’
‘কী…কী বলছো! এই পদ্মজা।’
পদ্মজা আমিরের পিঠ খামচে ধরে বলল,’আ…আমি..এটা কেমনে করলাম!’
আমির পদ্মজাকে নিজের সামনাসামনি বসিয়ে বলল,’আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না। সব বলো না আমাকে! কান্না থামাও।’
পদ্মজা মেঝেতে দৃষ্টি রেখে ফোঁপাতে ফোঁপাতে পুরো ঘটনাটা বলল। সে নিজের কাজে নিজে অবাক। আমির পদ্মজাকে শান্ত করার জন্য বুকের সাথে চেপে ধরে বলল,’কিছু হয়নি। শান্ত হও। কান্না থামাও।’
পদ্মজার কান্না থামে। সে একটা ঘোরের মধ্যে আছে। তার মাথা কাজ করছে না। মস্তিষ্ক শূন্যের কোঠায়। আমির তা বেশ বুঝতে পেরেছে। আলমারি থেকে শাড়ি,ব্লাউজ নিয়ে আসল। নিজে পদ্মজাকে পরিয়ে দিল। পদ্মজার পুরো শরীর যেন শরীর না, বরফ। এতোই ঠান্ডা! আমির পদ্মজার চুল মুছে দিয়ে বলল,’ঘরে চলো। না, থাক। আমি নিয়ে যাচ্ছি।’
পদ্মজা তরঙ্গহীন স্বরে বলল,’তোমার ঘাড়ে টান পড়বে। আমি যেতে পারব।’
আমির পদ্মজাকে ধরে ধরে নিয়ে আসে। পদ্মজাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে লেপ জড়িয়ে দিল গায়ে। তারপর বলল,’আমি থাকতে তোমার কিছু হবে না। ডান দিকে তো?’
পদ্মজা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়াল। আমির সোয়েটার পরে বেরিয়ে পড়ে। বেশ কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরে এসে বলল,’কই কোথাও তো কিছু পাইনি।’
পদ্মজা চমকে গেল। দ্রুত উঠে বসল। তারপর চোখ বড়বড় করে জানতে চাইল,’লাশ বা রক্ত কিছুই নেই?’
আমির নির্বিকার ভঙ্গিতে বলল,’না তো। তুমি রাতে স্বপ্ন দেখেছো বোধহয়।’
পদ্মজা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে। অস্থির হয়ে পড়ে। এটা কী করে সম্ভব! এই কাকডাকা ভোরে লাশ থাকবে না কেন! আলমগীরের বলা কথাগুলো মনে পড়তেই পদ্মজা সব বুঝতে পারে। ধীরে ধীরে আবার শুয়ে পড়ে। চোখ বুজে। তার ঠোঁট দুটি তিরতির করে কাঁপছে!