নিমিষেই মনে হলো খানিকটা থুতু আমার পেটে প্রবেশ করলো।ওয়াক থুঃনিজের থুতু তাই ফেলে দেই আমি।আর অন্য একজনের টা ভাবতেই কেমন বমি বমি পাচ্ছে আমার।দৌড়ে গিয়ে উনার জানালা দিয়ে সেকেন্ডে সেকেন্ডে থু ফেলছি আমি।বুঝলাম না ওই অসভ্য মানব টা কি অমৃত পান করেছে।উনার ঠোঁটের কোনায় যেনো মহা প্রশান্তি দুষ্টু হাসি।ভ্রু কুচকে তাকিয়ে দেখছেন আমি কি করি না করি।টিস্যু দিয়ে ঠোঁট মুখ মুছেই যাচ্ছি উনার প্রায় এক বক্স টিস্যু শেষ করে ফেলেছি আমি।উনি অবাক হয়ে তাকিয়েই আছেন।
উনার দিকে তাকিয়ে বললাম, “আমি আপনার শরীর ভরে এবার বমি করে দিবো।ইয়াক এত বিশ্রি আপনি।আশ্চর্য ব্যাপার আপনার ঘেন্না লাগছে না বিহান ভাই।আর আপনিও চুমু টুমু খেতে জানেন খুব অবাক হয়েছি আমি। ”
“হুম আগে ঘৃণা লাগতো যখন প্রেমিকা ছিলো না।প্রেমিকার যেখানে চুমু ভাল লাগে সেখানে প্রেমিক কে তো চুমু দিয়েই রেকর্ড ভাঙতে হবে তাইনা দিয়া।ঘর আমার বসত করবে আরেকজন সেটা কি বিহান হতে দিতে পারে।প্রেমিকা আমার ছোট বেলা থেকে দেখে শুনে রাখছি আর বড় হয়ে চুমু পাঠাবে আরেকজন এত বড় অনর্থ বিহান হতে দিতে পারে না।”
“চুমুর ইমুজি তে এত রিয়্যাক্ট তাহলে চুমু দিলে কি করতেন।আমাকে কি মেরে ফেলতাম।”
“তোকে মেরে ফেললে আমার বেঁচে থাকা অসম্ভব।তাই আমার নিজের বেঁচে থাকার জন্য তোকে প্রয়োজন অক্সিজেন এর মতো।যে চুমু দেওয়ার মতো সাহস দেখাতো তাকে মেরে ফেলতাম ঝামেলা শেষ।”
“মানে একজন কে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছেন।”
“অন্য অপশন ও আছে দিয়া।তোকে মেরে নিজেও মরে যাবো এটাও বেটার আইডিয়া তাইনা।”
“উনার কথা শুনতে শুনতে ওয়াক করে বমি করে দিলাম।আর দ্রুত জানালার কাছে গেলাম।”
“বিহান ভাই আমার কাছে এসে বললেন,কি সমস্যা তোর এইভাবে বমি করছিস কেনো?”
“আপনি যা করেছেন তাতে কি করবো?”
“জাস্ট একটু চুমুতেই সুখবর শুনবো বাহ।”
“এই কিসের সুখবর শুনি।”
“যে সুখবরে আমি বাবা হবো।”
“রাক্ষস একটা।আপনার জন্য আম্মু আমাকে মেরেছে।আরো ভেবেছে আমি সব বাজে ছেলেদের সাথে রিলেশন করি।একটা ছেলে আরো কি করেছে জানেন।”
“হুম জানি ফুপ্পি আমাকে সব বলেছে।নে তোর ফোন। এইবার হ্যাপি।”
“ফোন টা পেয়ে প্রাণ ফিরে পেলাম আমি।ফোন টা আমার হাতে এনে দেওয়ার জন্য উনাকে মাফ করে দিলাম।”
“উনি আমার দিকে তাকিয়ে এক চোখ টিপ দিয়ে বললেন, আমি সাওয়ার নিতে যাচ্ছি।যাবি।”
“খেয়ে আমার কাজ নেই তাইনা?”
“রাগলে খারাপ লাগে না কিন্তু তোকে।ভালোই লাগে দিয়া।”
_______________________________
সন্ধ্যার পর পর ই বিভোর ভাই,তিয়াস ভাই,রিয়া, আর তোহা আপুর আগমন ঘটলো।মামি অসুস্থ এটা শুনেই তারা এসছে।বিহান ভাই বিছানায় বসে ল্যাপটপ এ পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছেন।কি করছেন তা কি জানি।আমি কফি বানিয়ে তোহা আপুদের খেতে দিলাম আর এক কাপ কফি বিহান ভাই এর জন্য নিয়ে গেলাম।উনার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম কিন্তু খেয়াল ই করছেন না।উনাকে আমার দিকে মনোযোগ করানোর জন্য ছোট ছোট কাশি দিচ্ছি তবুও তাকাচ্ছেন ই না।চোখ কপাল ভাজ করে মন দিয়েছেন ল্যাপটপ এ।কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বেডের পাশে থাকা টি-টেবিলে কফিটা রেখে রওনা হতেই পেছন থেকে টি-শার্ট টেনে ধরলেন বিহান ভাই।ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি,কফি হাতে নিয়ে কফি তে চুমুক দিয়েছেন।কফি খেতে খেতে বললেন বাহ সুন্দর কফি বানানো শিখেছিস তো তুই।হেসে দিয়ে বললাম,দেখতে হবে কে কফি বানিয়েছে।
উনি আমাকে এক টান দিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলতে শুরু করলেন,,
“হলদেটে কিছুক্ষণ আগের সন্ধার সেই অপরূপ সৌন্দর্য্যের রুপ যদি ধরে রাখতে পারতাম তাহলে সে সন্ধ্যার রক্তিম আভায় লাল তোমার ওই মুখের বদন বন্দি করে রাখতে পারতাম।বন্দি রেখে এক জনম কাটিয়ে দিতাম দেখতে দেখতে।লজ্জা পাচ্ছো শ্যামাপাখি।এই লাজুকতা কখনো অন্য কাউকে দেখিও না নির্ঘাত তার আমার মতোই সর্বনাশ হয়ে যাবে।আর সেটা আমার সহ্য হবে না।এই মিষ্টি লাজুক মুখ টা শুধু আমার। আমি শুধু দেখতে চাই।এই লাজুক মুখের চাহনি তে কি আছে বলোতো আমি ঢাকায় মন দিতে পারি না।এখানে ছুটে আসতে হয় বার বার তোমারি টানে।”
এমন সময় কারো পায়ের শব্দ শুনেই উঠে দাঁড়ালাম আমি।রুমের ভেতরে প্রবেশ করলো কাজিন দের গুষ্টি।
তোহা আপু লাফিয়ে উঠলো,”বিহান ভাই আপনি এসেছেন।ইয়াহু লায়লা মে লায়লা। ”
বিহান ভাই ভ্রু কুচকে বললেন, “হয়ার ইজ ইওর মজনু।”
“তোহা আপু লাজুক ভাব নিয়ে বললো আছে আছে।”
“বিভোর ভাই বললেন,,বিহান অনেক দিন বাইরের কিছু খাই না।চল খাওয়াবি।”
“বিহান ভাই ভ্রু নাচিয়ে বললেন,আমার বউ কফি বানিয়েছে ওটা খেয়ে নে।”
“রিয়া সন্দিহান ভাবে বললো,আপনার বউ।”
“আপাতত বোন বানিয়েছে, ফিউচারে তো বউ ই হবে তাইনা।”
“বউ? কথাটা বলেই ভ্রু কুচকালেন বিভোর ভাই।”
“বউ ছাড়া কি ভাই?আজ বউ নেই তাই দিয়া।বউ থাকলে তো বউ ই বানিয়ে দিতো।”
উনার যুক্তি শুনে আমরা সবাই ই ভড়কে গেলাম।
______________________________
সন্ধার পর ব্রিজে সবাই মিলে আড্ডা দিতে গেলাম।অনেক দিন একসাথে ঘোরা হয় না আমাদের।বিভোর ভাই এর দাবি আজ বিহান ভাই কে আমাদের খাওয়াতেই হবে।এইদিকে বিহান ভাই এর কথা আমাদের মতো অপদার্থ দের সে খাওয়াবে না।মানে কিছুতেই খাওয়াবে না।।
বিহান ভাই এর নামে ১৫০০ টাকা বাকি খেলাম বসে বসে। বিহান ভাই জানেন ও না উনার নামে এত কিছু খেয়েছি আমরা।দোকান দার বিহান ভাই এর টাকা চাইতেই বিহান ভাই বললেন কিসের টাকা।
দোকান দার বললেন,তোমার ভাই বোনেরা খেয়েছে বললো তুমি টাকা দিয়ে দিবে।
সরি কাকু আমি তাদের চিনি না।যারা খেয়েছে তাদের থেকে টাকা নিন।আমি তো আর বলি নি আপনাকে দিতে তাইনা।এর আগে পরে ওদের দেখি নি আমি।বলেই বিহান ভাই ব্রিজের নিচের দিকে রওনা দিলেন।
আমরা পড়লাম মহা সংকটে টাকা না দিতে পারলে ইজ্জত যবে।বিভোর ভাই আমাকে পাঠালেন দ্রুত ওর পিছ পিছ যা দিয়া।যেভাবেই হোক টাকা নিয়ে আসবি।উনার কাছে দৌড়ে গিয়ে বললাম,,কোথায় যাচ্ছেন?হঠাত দেখি মেহু আপু আর শুভ ভাই।ওরা তো এত সময় আমাদের কাছেই ছিলো এখানে এলো কিভাবে।
বিহান ভাই আমাকে বললেন চুপ।দেখতে দে ব্যাপার টা।শুভ ভাইয়া মেহু আপুকে কিস করার ট্রাই করছে কিন্তু পারছে না।এই নিয়ে কয়েক বার ট্রাই করেও ফেইল হলেন।
বিহান ভাই বলে উঠলেন,,”শুভ মেহুকে যদি এইভাবে কিস করতে যাস ২০৫০ সাল কেটে যাবে তাও কিস হবে না।”
উনার কথা শুনে ভাইয়া আর মেহু আপু চমকে গেলেন।আর দুজনেই মারাত্মক লজ্জা পেয়ে গেলো।
Leave a comment