দুই বিঘা জমির উপর কবিরদের বাড়িটি। চারখানা বড় বড় টিনের ঘর। চারভাই চার ঘরে থাকেন। রান্নাঘর গোসলখানা সব আলাদা। পুরো বাড়ির চারপাশে টিনের বেড়া দেওয়া। যাতে বাইরের পুরুষ ভেতরে না আসতে পারে। আম আর কাঁঠাল গাছে ভরা বাড়িতে। দুএকটা অন্য গাছও আছে। বাড়ির পেছনে শান বাধানো বড় একটা পুকুর আছে। সেখানে মাছ চাষ করা হয়। মাছ বিক্রি করে অনেক টাকা রোজগার হয় কবিরের। তাছাড়া পরীদের বাড়িতেও মাছ পাঠানো হয়। ফলমূল তো পাঠায়ই।
এছাড়াও কবিরসহ বাকি তিন ভাইয়ের ও বেশ কয়েক বিঘা জমি আছে।
বাড়িটা দেখলে যে কেউ এই বাড়িতে নিজের মেয়ে দিতে চাইবে। স্বনামধন্য পরিবারের মেয়েদের ই ঘরে তুলেছে রুপালির শ্বশুর। রুপালি এবাড়ির সেজ বউ। রুপালির বিয়ের ছ’মাস পর ওর দেওরের বিয়ে হয়।
তবে তিন জা মিলে হিংসে করে রুপালিকে। কেননা তারা রুপালির মতো অতো সুন্দর নয়। অতিরিক্ত সাজগোজ করেও রুপালির মতো সুন্দর তারা হতে পারে না। অথচ খুব সাদামাটা ভাবেই রুপালিকে কোন রাজকন্যার থেকে কম লাগে না। সবসময় রুপালির রূপে ঈর্ষান্বিত হন তারা। রুপালি সব বুঝেও না বোঝার ভান করে থাকে। কারণ এদের সাথে কথা বলে সময় নষ্ট করার কোন মানেই হয় না।
কিন্ত আজ তারা তিনজনই ছুটে এসেছে পরীকে দেখতে। কারণ এতোদিন ধরে তারা শুধু পরীর সুনামই শুনেছে কিন্ত চোখের দেখা দেখেনি। রুপালির বিয়ের পর এই প্রথম পরী এই বাড়িতে পা রাখলো। তাই ওনারা তিনজন ছুটে এলে পরীকে দেখতে।
পরী সবেমাত্র পালঙ্কের উপর বসেছে। নেকাব এখনো খোলেনি। তার মধ্যেই ওরা এসে হাজির। এসেই রুপালির বড় জা কাকলি বলে উঠল,’দেখি দেখি রুপার বোন কেমন দেখতে??’
মালা জেসমিন জলচৌকি পেতে বসে আছে পরীর কাছে। কুসুম গোমড়া মুখে জেসমিন আর মালাকে বাতাস করছে। শেফালি পরীকে বাতাস করছে। কাকলির কথা শুনে সবাই চমকে তাকালো। ততক্ষণে রুপালিও চলে এসেছে। পরীর ভাবান্তর না দেখে কাকলি আবার বলল,’কই নেকাব সরাও দেখি তোমার চাঁদবদন খানি!!’
বলেই খিলখিল করে হেসে উঠল তিনজন। পরী রুপালিকে জিজ্ঞেস করে,’আপা এখানে কোন পুরুষ আসবে না তো??’
রুপালিকে উওর দিতে না দিয়ে ওর মেজ জা পাখি বলল,’কেন গো??পুরুষ দেখলে তোমার রূপ কমে যাবে নাকি??’
হাসির ছলে অপমান করছে পরীকে তা পরী ঠিকই ধরতে পারলো। নেকাব খুলে আলতো হেসে বলল, ‘যেখানে এক নারী অন্য নারীর সৌন্দর্য দেখে হিংসা করে সেখানে পুরুষদের বিশ্বাস করি কিভাবে?? আপনাদের বর যদি আমাকে দেখে পাগল হয়ে যায় তখন তো আমাকেই দোষ দিবেন। তাই আগে থেকেই সাবধান হচ্ছি। আমার আবার কারো ঘর ভাঙ্গার ইচ্ছে নেই।’
হাসির ছলে পরী ও পাল্টা জবাব দিলো। রুপালি মুখ টিপে হাসে ওদের কান্ড দেখে।
তিন জা পরীর দিকে বিষ্মিত হয়ে তাকিয়ে রইল। সত্যি অনেক সুন্দর পরী। রুপালির থেকেও বেশি সুন্দর। কাজল বর্ণ আঁখি যুগল যখন পলক ফেলে তখন কি সুন্দর ই না লাগে!!বদনে ছড়িয়ে আছে একরাশ মায়া। আল্লাহ যেন নিজ হাতে ওকে বানিয়েছে। তবে পরীর বলা তিক্ত কথাগুলো ওনাদের পছন্দ হয়নি। তাই সবার সাথে কুশলাদি করে চলে গেলেন। বোরখা খুলে মাথায় কাপড় জড়ালো পরী। একে একে মহিলারা এসে পরীকে দেখে যাচ্ছেন। আর ওর প্রসংশা করে যাচ্ছে। নূরনগর থেকে যেন এক টুকরো নূর এসেছে। পরীর বিরক্ত লাগছে এসব। মনে হচ্ছে আজ যেন ওর নিজেরই বিয়ে। মালা আছে বলে পরী চুপ করে আছে। নাহলে দুকথা শুনিয়ে বিদায় করে দিতো।
মেজাজ গরম হচ্ছে পরীর। শেফালির হাতপাখার বাতাসও ঠান্ডা হচ্ছে না পরীর মাথা। রুপালির জা রা যে একটু কটু কথা বলে তা জানে পরী। শ্বশুরবাড়ি নিয়ে অনেক গল্প করেছে রুপালি ওর কাছে। সেখান থেকেই এই বাড়ির প্রত্যেকের স্বভাব সম্পর্কে সে অবগত।
সাত মাসের পেটটা নিয়ে পরীর পাশে বসে পরী। মা আর পরীর সাথে টুকটাক কথা বলছে। আর পরী চুপ করে শুনছে।
বিয়ে খেতে এসে পরীর বিয়ের কথা তুলে বসে নওশাদের বাবা শামসুদ্দিন মাতুব্বর। তিনি চান তাড়াতাড়ি বিয়েটা সেরে ফেলতে। কিন্ত এখানে আফতাব বেঁকে বসেন। তিনি খবর পেয়েছেন নওশাদের পা নাকি কখনোই ঠিক হবে না। হাটতে পারবে কিন্ত লাঠির সাহায্য নিয়ে। তাই তিনি পরীর সাথে নওশাদের বিয়ে দেবেন না। একথা শুনে শামসুদ্দিন বলে,’আপনারা কিন্ত কথা দিয়েছেন জমিদার সাহেব। কথার খেলাপ কইরেন না।’
-‘আমি কথা দেইনি কথা দিয়েছে আমার ছোট ভাই। আর আমি আমার মেয়েকে কোথায় বিয়ে দেবো তা আমিই বুঝবো। আপনার ছেলে এখন অচল হয়ে গেছে। আমার মেয়েকে বিয়ে করার কোন যোগ্যতা তার নেই। তাছাড়া আপনার ছেলে আমার মেয়েকে সুখি রাখতে পারবে না।’
-‘আমার ছেলের এই অবস্থার জন্য তো আপনারাই দায়ী। আপনাদের বাড়িতে গিয়েই তো পা ভাঙলো।’
-‘আমরা কেউ তো আপনার ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেইনি। আপনার ছেলেই নিজেকে সামলাতে পারেনি। তবুও সমস্যা নেই,আপনার ছেলের সমস্ত ভরন পোষন এবং চিকিৎসার দায়িত্ব আমি নিলাম। তবুও আমার মেয়ে আমি বিয়ে দেবো না।’
-‘আপনি কি টাকার গরম দেখাচ্ছেন জমিদার সাহেব??আমার কি টাকা পয়সার অভাব নাকি? আপনার মেয়ের মতো অনেক মেয়ের ভরন পোষনের ক্ষমতা আমার আছে। আমাকে টাকার গরম দেখাবেন না। তাহলে ভাল হবে না।’
-‘তা কি করবেন আপনি হুম??’
পাল্টা জবাব দিল শামসুদ্দিন। দু এক কথায় কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে গেল। লোকজন জড়ো হয়ে ও গেলো। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছে না। লোক জানাজানি বেশি হওয়ার আগেই শায়ের আফতাব কে সরিয়ে নিলো। আলাদা ঘরে টেনে নিয়ে বলল,’এখন মাথা গরম করবেন না। নওশাদের বাবা কিন্ত ভালো লোক নয়। তিনিও প্রভাবশালীদের একজন। প্রতিশোধ নিতে সে পাগল হয়ে যাবে। আর এই গ্রামের কেউ কিন্ত আপনাকে জমিদার মানবে না। তাই একটু শান্ত হন। হিতে বিপরীত হতে পারে।’
আফতাব একটু শান্ত হলো। ভাবতে লাগল সত্যিই তো। এখন যদি তার কোন ক্ষতি করতে চায় শামসুদ্দিন??তখন কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন তিনি??এখানের কেউ তো তার হয়ে লড়াই করতে আসবে না। কবির ও তো কিছু করতে পারবে না। কারণ দুপক্ষই ওর আত্মীয়। কার হয়ে সাফাই গাইবে সে?কবিরের উপর সে ভরসা করতে পারছে না। তাছাড়া ওরা যদি রুপালির কোন ক্ষতি করে দেয়?
আখির চলে এসেছে সব শুনেছে সে। আফতাব কে উদ্দেশ্য করে আখির বলল,’ভাই ঝামেলা বাড়বে অনেক। আমি বলি কি বিয়েটা দিয়ে দেন।’
-‘আমার মেয়েকে আমার ইচ্ছাতে বিয়ে দেব। তোর কিছু বলতে হবে না। তোর জন্যই তো সব হয়েছে। আগ বাড়িয়ে কথা দিলি কেন তুই??’
আখির চুপ করে গেল। আফতাবের মাথা এখন গরম আছে। কুটুম বাড়িতে এসে যা করেছে এতে লোকজন কথা বলা শুরু করে দিয়েছে। তাছাড়া এখানে আর বেশিক্ষণ থাকাটা নিরাপদ নয়। খাওয়া শেষ হতেই আফতাব,জেসমিন ও মালাকে গরুর গাড়ি ভাড়া করে দিলো শায়ের। সাথে দুজন দেহরক্ষী। আর পরী,জুম্মান,শেফালি,কুসুম গেল ওদের গাড়িতে। তবে এবার শায়ের ও ওদের সাথে গেল। কারণ যদি ওদের ক্ষতি করতে আসে তখন কি হবে?? তাই গাড়ি চালকের পাশে গিয়ে বসে সে।
শায়ের ঠিকই সন্দেহ করেছিল। গ্রামের শেষ মাথায় আসতেই সাত আট জন লোকদের লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলো। তারা ওদের পথ আগলে দাঁড়িয়েছে। গাড়ি থামতেই ওদের একজন পেছনে এসে বলল,’সবাই বের হও। কথা না শুনলে টেনে নামাবো।’
সবাই নেমে পড়ল। পরী আর শায়ের বাদে সবাই ভয়ে কাঁপছে। কুসুমের তো বেহাল অবস্থা। আসার পথে এক দৌড়ানি খেয়েছে এখন যাওয়ার পথে আরেক দৌড়ানি। শেফালি জুম্মান কে ঝাপটে ধরে আছে। ভয়ে ওরাও সিটিয়ে গেছে।
শায়ের ভেবেছিল ওরা হয়তো আফতাবের গাড়ি আটকাবে তাই আগেই ওদের পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্ত ওদের গাড়ি আটকানোর কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছে না।
একজন লোক বলে উঠল,’জমিদার কন্যা পরীকে আমাদের সাথে যেতে হবে। আর বাকিদের সবাই চলে যাও।’
পরী শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করে,’কারণটা কি??’
-‘সেকথা আপনাকে বলতে বাধ্য নই।’
-‘আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করিনি।’ অতঃপর পরী শায়েরের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বলল,’কি হয়েছে??’
-‘এরা নওশাদের বাবার লোক। মনে হয় আপনাকে নিয়ে নওশাদের সাথে বিয়ে দেবে এরা। বিয়ে করতে চাইলে চলে যেতে পারেন।’
-‘আমি আপনার কোন কথাই বুঝতে পারছি না।’
-‘আপনার বোঝার বয়স হয়নি।’
-‘বেশি কথা বলেন কেন??আমি যথেষ্ট বড়। সব বুঝতে পারি।’
-‘তাহলে আমার কথা বুঝলেন না কেন??’
কুসুম,শেফালি,জুম্মান ওদের ঝগড়া দেখছে। বিপদের মুখে পড়েও যে কেউ ঝগড়া করতে পারে তা এই প্রথম দেখলো ওরা। পরীর পাল্টা জবাব দেয়ার আগেই জুম্মান বলল,’আপা আমার ডর করতাছে। আর তুমি ঝগড়া করতাছো??এখন কি হইবো?’
পরীর হুশ ফিরল। সত্যি তো ওদের এখন বিপদ। আগে বিপদ থেকে মুক্ত হোক তারপর না হয় ঝগড়া করা যাবে।
এর মধ্যে একজন বলল,’না যেতে চাইলে জোর করে নিয়ে যাব। তাই বলছি ভালোয় ভালোয় চলুন।’
শায়ের শান্ত থেকেই বলল,’আচ্ছা নিয়ে যান আপনারা।’
পরী নেকাবের আড়ালে ঢাকা চোখদুটো বড় বড় করে তাকালো শায়েরের দিকে। বলল,’কি বলছেন আপনি এসব??’
শায়ের গরুর গাড়ি থেকে দুটো শক্ত লাঠি বের করলো। একটা পরীর হাতে দিয়ে বলল,’আপনি তো একদিন নিজেকে আমার কাছে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন। তো আজকে করুন। দেখি জমিদার কন্যা কেমন লাঠিয়াল!!’
হাসলো পরী। তবে সে হাসির মাধুর্য কালো নেকাবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে রইল। পরী দুপা এগিয়ে যেতেই জুম্মান চিৎকার করে বলে,’আপা যাইও না।’
-‘তুই চুপ থাক জুম্মান। আমাকে দেখতে দে।’
পরী এগিয়ে যেতেই একজন দ্রুত ওর সামনে এসে বলে,’আপনার গায়ে হাত ওঠানোর হুকুম আমাদের কাছে নেই। আর আপনি পারবেন না আমাদের সাথে। তাড়াতাড়ি চলুন।’
কথা না শুনে পরী তাকে আক্রমণ করে বসে। লাঠি দিয়ে আঘাত করে লোকটার মাথায়। ওরা কেউ আশা করেনি পরী এমনটা করে বসবে। মাথায় হাত দিয়ে লোকটা মাটিতে পড়ে যেতেই তিনজন লাঠি নিয়ে দৌড়ে এলো। পরী ওদের ওপর ও আক্রমণ করে। উপায়ন্তর না দেখে তারাও লাঠি চালালো পরীর উপর। দক্ষ পরী প্রতিহত করতে লাগল শত্রুর আক্রমণ। লাঠি ঘুরিয়ে নাস্তানাবুদ করতে লাগল সবাইকে। কিন্ত এতো জনের সাথে লড়াই করা একটা মেয়ের পক্ষে অসম্ভব। তাই একটা লাঠির আঘাত এসে পড়ে পরীর বাহুতে। ছিটকে দূরে পড়ে যায় পরী।
আরেকজন এসে লাঠি চালালো পরীর গায়ে। পরী চোখ বন্ধ করে নিলো। কিন্ত আঘাত অনুভব করতে না পেরে চোখ মেলে তাকালো। শায়ের তার লাঠি দ্বারা শত্রুর লাঠি আটকে দিয়েছে। সে পরীকে উদ্দেশ্য করে বলল,’উঠে দাঁড়ান,পড়ে গেলে উঠে দাঁড়াতে হয়।’
পরী উঠে দাঁড়াল আবার। ওরা দুজন মিলে সবকটাকে কুপোকাত করে দিলো। কিন্ত সমস্যা আবার হলো। ওরা দূর থেকে দেখতে পেল এবার পুরো বাহিনী আক্রমণ করতে চলেছে। ওদের সাথে পেরে ওঠা সম্ভব নয়। শায়ের সবাইকে বলল,’বাঁচতে চাইলে দৌড়ান সবাই। আমার সাথে আসুন।’
সাথে সাথেই সবাই দৌড় দিলো। রাস্তা দিয়ে গেলে নূরনগরে পৌঁছাতে সময় লাগবে তাই ধান ক্ষেতের আইল বরাবর ওরা নেমে পড়ে। পেছনে তাকানোর সময় নেই। গাড়িওয়ালা চাচা দৌড়াতে দৌড়াতে বলল,’আমার গরু দুইডা ফালাই আইছি অহন আমার কি হইবো?’
শেফালি বলল,’নিজে বাঁচলে বাপের নাম। ভাগো তাড়াতাড়ি।’
জুম্মান হাপাতে হাপাতে বলে,’বাঁইচা ফিরলে আব্বায় গরু কিনে দিবো তোমারে। অহন পালাও’
শত্রুরাও ওদের পিছন পিছন দৌড়াচ্ছে কিন্ত পরীরা তাদের থেকে অনেক এগিয়ে। তাই ওদের ধরতে পারছে না। কিছুক্ষণ পর কুসুম বলে উঠল,’পরী আপা আর পারি না। আমার কষ্ট হইতাছে।’
-‘মনে কর তোরে সুখান পাগল ধাওয়া করছে। এখন দৌড়া।’
পরীর কথায় কুসুমের শক্তি যেন বেড়ে গেল। পরনের কাপড় একটু তুলে ধরে দিলো দৌড়। শায়ের কে পিছনে ফেলে সে এগিয়ে গেলো। এই বিপদের মধ্যে থেকেও সবাই হেসে উঠল। সবাই আরো কিছুক্ষণ দৌড়ে পরবর্তী একটা গ্রামে ঢুকলো। কিন্ত ওদের পা আর চলছেই না। কোনরকমে এগিয়ে চলছে। তবে এই গ্রাম পেরোলেই নূরনগর। তবুও ওদের পা চলছে না। মনে হচ্ছে শত্রুর হাতে এবার ধরা দিতেই হবে।
কিন্ত তখনই আফতাবের লোকেরা এসে হাজির। লাঠিসোটা নিয়ে তারা ঝাপিয়ে পড়লো। শায়ের যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। এবার সবাই দৌড় থামিয়ে রাস্তা ধরে হাটতে লাগলো। নূরনগরের গন্ডি পেরোতেই পরী রাস্তার ধারে বসে পড়ল। ততক্ষণে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। পরীর দেখাদেখি বাকি সবাই বসে পড়ল।
অনেক দৌড়েছে আজ। আর হাটার শক্তি নেই ওর।
বন্যা যেতে না যেতেই শুরু হয়ে গেছে মারামারি। এসব ভাল লাগে না পরীর। এর আগেও সে শুনেছে আফতাব কে কেউ মারার চেষ্টা করেছে। কিন্ত তাতে ও মাথা ঘামায়নি। এখন নিজেই দেখতে পেল সব। তবে কে বা কারা ওদের ওপর আক্রমণ করলো সেটাই বুঝতে পারছে না পরী। আক্রমণ করার কারনই কি হতে পারে??
পরী শায়েরের দিকে তাকিয় জিজ্ঞেস করল,’এবার তো বলুন ওরা কেন আমাদের তাড়া করলো??’