–সন্ধ্যার খানিকটা পরেই বিভোর ভাই এবং মামি এলেন আমাকে নিতে।আমাকে তো নিতে আসার কথা ছিলো না।হঠাত করেই মামি আর বিভোর ভাই কে খানিক টা অবাক ও হলাম আমি।আমাকে তো মামি বা বিভোর ভাই কেউ আগে জানায় নি যে তারা আসবে।মামি বাড়িতে ঢুকেই আম্মুকে বললো কি ব্যাপার সানজিদা আমার মেয়েকে কি একেবারেই রেখে দিবে।আম্মু বললো, ভাবি তোমার মেয়ে তুমি নিয়ে যাও। আমাকে খুব জ্বালাচ্ছে পরে বলবা আমি না খাইয়ে রেখেছি।দেখো কয়েক দিন কিছুই খায় না দিয়া।গত তিনদিন দিয়া পানি ও খায় নি।আমার আর ভাল লাগছে না ভাবি।মেয়ের চোখে পানি,সারাদিন সুয়ে থাকে,হঠাত হঠাত কেঁদে উঠছে,বই নেই সামনে,প্রাইভেট যাচ্ছে না।এইদিকে বিহান বার বার বলেছে ফুপ্পি দিয়ার দিকে খেয়াল রেখো কিন্তু আমি কিভাবে খেয়াল রাখবো।বিয়ের পরে মেয়ে কি আর নিজের থাকে,মেয়ে আমার বড় হয়ে গিয়েছে আমার আগের সেই দিয়াকে খুজে পাচ্ছি না।মামির মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো।মামি বললো, সানজিদা আমি নিয়ে যাচ্ছি দিয়াকে দেখবো কি হয়েছে পাকা বুড়িটার,তুমি একটুও মন খারাপ করো না।তুমি ফোন না দিলে আমি তো জানতেই পারতাম না দিয়ার কি হয়েছে।তার মানে আম্মু ই ফোন দিয়ে নিয়ে এসেছে।
–কিছুক্ষণ পরেই বিভোর ভাই আমার রুমে প্রবেশ করলেন দরজায় নক করে।বিভোর ভাই ভেতরে এসে দেখলেন আমি সুয়ে আছি।বিভোর ভাই আমাকে বললেন বোন উঠে রেডি হয়ে নে কাকিমনি আর আমি নিতে এসেছি।আমি বেশ সন্দিহান ভাবে বললাম,এ সময় আমাকে নিতে আসলেন কেনো বিভোর ভাই।বিভোর ভাই বললেন,কাকিমনির তোর জন্য পরাণ পুড়ছে তাই আমাকে বললো।আমি কিছু না বলে রেডি হয়ে নিলাম।কেমন যেনো লাগছে সব অন্যবার আমার জন্মদিনে বিভোর ভাই সব আয়োজন করেন।সাত দিন আগে থেকে বিভোর ভাই সবাই কে বলেন,আমার বোনের৷ জন্মদিন শহরের সব মানুষ জড় করে সেলিব্রেশন করবো।রিয়া,ভাইয়া,তোহা আপু,তিয়াস ভাই,মেহু আপু সবাই কি ভুলে গিয়েছে আমার জন্মদিন।কেউ আমার সাথে এ ব্যাপারে কথায় বলছে না।অন্য বার ভাইয়া আমাকে বলে কি চাই দিয়া তোর বল,আমার একমাত্র বোন যা চাইবে আমি তাই দিবো।বাবা বাদে কেউ আমাকে এইবার কিছুই বলে নি।শুধু বাবা বলেছেন আমার দিয়ার জন্মদিন এ দিয়া যা চাইবে তাই দিবো।বাবা ছাড়া কি কেউ আমায় ভালবাসে না।
“এমন সময় ছুটতে ছুটতে আয়রা এসে বিভোর ভাই এর কোলে উঠতেই বিভোর ভাই বললেন,আমার একমাত্র শালিকা কেমন আছো?”
“আয়রা এক গাল হেসে বললো ভাল আছি ভাইয়া।জানেন রিয়াপু আমাকে মেরেছে।।”
“কেনো মেরেছে?.”
“আমি আপুর বই পড়েছি বলে।”
“কি এত সাহস আমার শালিকার গায়ে হাত তোলা।আজ রিয়ার খবর আছে।আমি শ্বাশুড়ির কাছে নালিশ দিচ্ছি চলো।”
“বিভোর ভাই ছোট কাকিমনিকে বললেন এইযে শ্রদ্ধেয় হবু শ্বাশুড়ি মা আপনার পায়ে আমার আদাব।আমার রাক্ষাসী রাণি কটকটি বড় মেয়ে আমার বউ কে মেরেছে কেনো?হুয়াই?আমি এর বিচার চাই।তা’না হলে আমার বউ এ বড়িতে আর থাকবে না।”
“আয়রা বিভোর ভাই এর কথা শুনে যেনো লজ্জা পেয়েছে।আয়রা অবুঝের মতো বললো,সবাই কি আপনার বউ ভাইয়া। আমি বিহান ভাইয়া কে বলে দিবো আপনি আমি, রিয়াপু সবাইকে বউ বলেন।”
“রিয়া বেরিয়ে এসে বললো,অত দরদ আপনার বউ নিয়ে ভাগেন তো।আমার বই এর পাতায় মেহেদী লাগিয়ে দিয়েছে খানিক টা।ওর সাথে আপনাকেও মারবো বিভোর ভাই।”
“বিভোর ভাই আয়রা কে বললেন,আচ্ছা আমি তোমাকে বই কিনে দিবো ডারলিং আপুর বই আর নিও না।সে ডাক্তার হলে তোমার এই দুলাভাই এর সেবাযত্ন করবে বুঝেছো।”
মামি আর বিভোর ভাই এর সাথে বিহান ভাই দের বাড়িতেই ফিরে গেলাম।বিহান ভাই এর রুমে ভীষণ মন খারাপ করে বসে আছি আমি।মামি আমার পাশে এসে বসে ‘বললো,কি হয়েছে মা তোর।’
‘মামির দিকে একবার তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিয়ে বললাম কিছু নাতো মামি এমনি ভাল লাগে না কিছু।’
‘তোর চোখ মুখ তো অন্য কিছু বলছে দিয়া।’
‘ও কিছুনা মামি,তুমি যাও না ঘুমিয়ে যাও।’
‘এভাবে না খেয়ে থাকলে আমার ছেলে এটা সহ্য করতে পারবে না।’মামি একটু রসিকতা করেই বললো আমাকে হাসানোর জন্য।
‘তোমার ছেলের কথা বলো না প্লিজ।আমি তার ব্যাপারে কিছুই বলতে চায় না।’
‘খেয়ে না মা, আয় আমি খাইয়ে দেই।’
‘আমি খেয়ে নিবো যাও মামি প্লিজ।’
‘এত মন খারাপ কেনো মা তোর।’
‘আমি নিশ্চুপ রইলাম।’
‘মামি বললো আজ কিছুই বলবো না দেখি কাল কিভাবে মন খারাপ থাকে।’
বিহান ভাই এর আলমারি ই এখন আমার আলমারি।উনার আলমারি খুলে একটা নীল শাড়ি বের করলাম।কেনো জানিনা মনে হচ্ছে উনি আসবেন আমার কল্পনায়।কল্পনাতেই না হয় আমাদের সাক্ষাত হবে।সেখানেই না হয় উনি আমার না বলা কথা,অনুভূতি সব বুঝে নিবেন।নীল শাড়ি,নীল চুড়ি,চোখে কাজল দিয়ে একটু সেজে নিলাম আনমনে।শাড়ির কুচি ধরতে আমি সব সময় দূর্বল উনি আমাকে বিরক্ত করে হলেও শাড়ির কুচি ধরে দিয়েছেন।প্রতিটি পদক্ষেপে উনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি আমি।এখন উনি থাকলে কয়েকটা বিরক্তিকর কথা বললেও ঠিক ই কুচিটা ধরে দিতেন।রুমের দরজা লাগিয়ে সুয়ে সুয়ে উনার ই ছবি দেখছি। এমন সময় বিভা আপুর ফোন।ঘড়িতে সময় রাত সাড়ে এগারোটা।এত রাতে বিভা আপুর ফোন কেনো?কারো কিছু হয় নি তো আবার।এইভাবে তো বিভা আপু আমাকে ফোন দেয় না কখনো।আমি ফোন হাতে নিয়েই দরজা খুলে দেখি বাইরে বিভা আপু দাঁড়িয়ে আছে।বিভা আপুকে আমি বললাম,কি হয়েছে আপু এত রাতে তুমি ফোন দিচ্ছো?
–বিভা আপু আমার দিকে ভাবুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো কিরে দিয়া প্রেম ট্রেম করছিস নাতো আবার।
–আমি অবাক হয়ে বললাম কেনো আপু?
–এই মধ্যরাতে কয়েক টা ছেলে চার চার টা ভ্যানে করে তোর জন্য গিফট নিয়ে এসছে।কি করি বলতো।বাড়ির মুরব্বিরা জানলে তো কেলেঙ্গকারি হয়ে যাবে।কে দিয়েছে গিফট দিয়া।
–আমি অবাক হয়ে বললাম আমাকে আবার কে গিফট দিবে আপু?আমি তো কিছুই জানিনা।আমার মতো এতিমের জন্য আবার মধ্যরাতে গিফট।আবেগে কাঁন্না পাচ্ছে শুনে।
–ফান করিস না দিয়া সত্যি গিফট এসছে, কোন মজনু দিয়েছে পরে দেখবো।
ছেলে গুলো বাইরে দাঁড়িয়ে আছে গিফট রিসিভ না করলে তারা নাকি যাবে না।তাহলে কি করা যায় দিয়া।
–আপু আমি ওসব নিতে টিতে পারবো না।বিহান ভাই জানলে আমাকে অক্কা পাওয়াবে।
–কিন্তু না নিলেও তো বিহান ভাই জেনে যাবে।তখন তো আরো জানাজানি হবে।তার থেকে চল দুজনে গিয়ে নিয়ে আসি।হয়তো বক্সের ভেতরে খুলে দেখলে আনুমান করা যাবে কে দিয়েছে।আপাতত ছেলে গুলোকে বিদায় করি।
আমি আর বিভা আপু চুপিচুপি রাস্তায় গেলাম।বাড়ির সাথেই রাস্তা।অচেনা কয়েকজন ছেলে চার চার টা ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আমার চোখ একদম ই কপালে এত পরিমানে গিফট আমাকে আবার কে দিবে।নিতেও ভয় করছে।ভয়ে বুক কাঁপছে কি থেকে কি হয়ে যায় আল্লাহ জানে।কেননা বিপদে বার বার আমি ই পড়ি।
‘ছেলে গুলোকে জিজ্ঞেস করলাম এগুলো কে পাঠিয়েছে?’
‘তারা উত্তর দিলো আমাদের দায়িত্ব প্রিয়জনদের সারপ্রাইজ দেওয়া।সারপ্রাইজ টা নষ্ট করলে আমাদের বিজনেস লাটে উঠবে।তাই এটা বলা যাবে না আপু।উই আর ভেরি ভেরি সরি।প্লিজ এক্সেপ্ট ইট।’
আমি আর বিভা আপু ছয় বার করে এসে গিফট গুলো নিয়ে গেলাম।সব গিফট নেওয়া হলে আমার রুমে দরজা লক করে লাইট অন করে প্রথম বক্স টা খুললাম।
প্রথম বক্স খুলেই ভীষণ ভাবে অবাক হলাম আমি।লাল,নীল,হলুদ,কমলা,খয়েরী বিভিন্ন কালারের রঙিন চিরকুট।
একটা চিরকুট খুলে দেখলাম,
“জীবনের সতেরো তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা পিচ্চি। এভাবে কেটে যাক তোমার জীবনের কতগুলো বছর,কত গুলো সুন্দর মুহুর্ত শুভ জন্মদিন পিচ্চি।”
–পিচ্চি সম্মোধন তো উনি ছাড়া আর কেউ করেন না।পিচ্চি দেখে শিউরে উঠলাম আমি।এটা বাস্তব নাকি কল্পণা।এই পৃথিবীতে তো আর কেউ নেই যে আমাকে এই নামে ডাকতে পারে।হার্টবিট এর স্পন্দন ক্রমশ বেড়ে চলেছে আমার।শরীর ভারী হয়ে আসছে আমার।বুকের মাঝে করছে ভীষণ ধুকপুক।
–আরেক টা চিরকুট তুলে নিলাম।সেখানে লেখা তুমি না চুড়ি পরতে খুব ভালবাসো।যতবার চুড়ি দেখেছি আর যেখানেই চুড়ি দেখেছি মনে হয়েছে এই চুড়ি সেই হাতের জন্য উপযুক্ত।তোমার সেই হাত ছাড়া চুড়িতে আর কাউকে এত সুন্দর লাগে না।এই চুড়ি একদিনে কেনা নয় আমার বিভিন্ন জায়গা ঘুরেছি আর চুড়ি কিনেছি।কয়েক বছর ধরে জমিয়েছি এই চুড়ি।ওই হলুদ বক্স টা খোলো ওর মাঝেই আছে তোমার জন্য রাখা চুড়ি পিচ্চি।
–দ্রুত হলুদ বক্স টা খুলে সারপ্রাইজড হয়ে গেলাম আমি।
এক বক্স চুড়ি,এত বড় এক বক্স চুড়ি পাবো কখনো ভাবতেই পারি নি আমি।এইগুলো যে পাঠিয়েছে নিঃসন্দেহে সে এবং তার পছন্দ অনেক সুন্দর সেটা অস্বীকার করা যাবে না।এই এত এত চুড়ি আমি আসলে কবে পরবো।
–আরেক টা চিরকুটে লেখা,সতেরো টা শাড়ি তোমার জন্য।তোমার প্রতিটা জন্মদিনে শাড়ি কিনেছি কিন্তু কখনো দেওয়া হয় নি।উপহার গুলো এতদিন আমার কাছে আগলে রেখেছিলাম আজ মনে হচ্ছে তোমাকে দেওয়া উচিত।লাল বক্সে দেখো শাড়ি আছে।
–লাল বক্স টা খুলে সতেরো টা শাড়ি দেখে ভীষণ ভাবে অবাক হয়ে গেলাম।এগুলো কি স্বপ্ন নাকি সত্য কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।আমি তো আবার যখন ই সারপ্রাইজ পাই কিছুক্ষণ পরে দেখি হয় সেটা কল্পনা ছিলো না হয় স্বপ্ন।
–আরেক টা চিরকুটে লেখা বারোটা বাজার আগেই ছাদে চলে এসো। কেক নিয়ে অপেক্ষা করছি আমি।
–এক হাজার চকলেট এর এক বক্স দেখে আরো বেশী সারপ্রাইজড আমি।একটা বক্সে দেখলাম এক হাজার চকলেট। বক্সের গায়ে লেখা চকলেট গার্ল এই এক হাজার চকলেটের থেকে মিষ্টি ফ্লেভার তোমার মাঝে আছে।
এই বিশাল বিশাল সতেরো টা পান্ডা দিয়ে কি হবে।প্রতিটি পান্ডার গলায় লেখা আছে আই লাভ ইউ দিয়া।এই যে সতেরো টা শারীর সাথে সতেরো টা গাজরা এগুলো কবে পরবো আমি।খুব ই অদ্ভুত ব্যাপার আজ পর্যন্ত যা যা আমার ভাল লাগে বলেছি তার সব কিছুই এখানে আছে।এখনো পর্যন্ত অন লাইনে করা যাবতীয় ড্রেস একটা একটাও বাদ নেই।এই যে এত্তগুলান লিপিস্টিক,এত্ত এত্ত কানের দুল,এত্ত এত্ত মালার সেট, এত্ত এত্ত কাজল মেকাপ এসব দিয়ে কি হবে।
আমার সব পছন্দের কালার ই এখানে আছে।
একটা মানুষের এত ইউনিক আইডিয়া কিভাবে হতে পারে।সতেরো বছরের না দেওয়া গিফট এক সাথে।
–একদিন বিহান ভাই কে বলেছিলাম আমার খুব শখ আমার সাজুগুজুর একটা দোকান হোক।প্রচুর সাজুগুজু থাকবে আমি শুধু দেখবো।
–উনি বলেছিলেন,হ্যাঁ তোর বরকে ফকির বানানোর ধান্দা।যে পরিমান দাম মেয়েদের জিনিসের তুই আবার তার দোকান ও চাস। কি ছোট্ট চাওয়া তোর দিয়া।এগুলো না চেয়ে দুইটা কিডনী চেয়ে নিলেই তো হয়।
–আমি কি আপনার কাছে চেয়েছি বিহান ভাই?
–আমার মতো গরীবের কি আর সাধ্য আছে এত কিছু দেওয়ার।তবে সিওর তোর বর তোর মনের আশা পূরণ করবে।যে পরিমান বউভক্ত লোক হবে ভাবা যায়।আর হবেই বা না কেনো?তুই কি কম দাজ্জাল মহিলা,এমন যাদু করবি সারাক্ষণ শুধু দিয়া দিয়া করবে তোর বর।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি বারোটা বাজবে বাজবে অবস্থা। বিভা আপুকে রেখেই এক ছুটে ছাদে গেলাম আমি।ছাদ দেখেই ভীষণ অবাক আমি পুরা ছাদ বেলুন আর ফুলে ফুলে সজ্জিত।অবাক হয়ে দুই গালে হাত দিলাম আমি।আমার কোনো হুঁশ নেই এটা কল্পনা নাকি বাস্তব সেটা ভাবার।আমি শুধুই আনন্দে উড়ছি,আর ভাবছি এক্ষুণি উনি আসবেন।এই সব কিছুর অংশিদার উনি ছাড়া কেউ হতে পারে না।এই সব উনার আয়োজন না হলে আমার মনে এতটা আনন্দে ভাষতো না।
ঘড়িতে বারোটা বাজবে এ সময়ে আকাশে কয়েকশ বেলুন উড়লো আমার মাথার উপর দিয়ে।আমি ভীষণভাবে সারপ্রাইজড আজ।যে বেলুনের ভিতরে লেখা শুভ জন্মদিন দিয়া। বারোটা বাজতেই আকাশে উড়লো ফানুশ, ছোট বড় অনেক রকমের ফানুশ।আর সেই সাথে আমাকে চমকে দিয়ে উনার আগমন ঘটলো।উনার মুখে শুভ জন্মদিন পিচ্চি শুনে আনন্দে কেঁদে দিলাম আমি।ছাদের মাঝে জোসনার আলোয় গায়ে কালো জ্যাকেট, পরনে ব্লু জিন্স হাতে ক্লাপ দিচ্ছেন আর বলছেন শুভ জন্মদিন পিচ্চি।আনন্দে আমার চোখ মুখ ছল ছল করছে। যে মুহুর্তে উনাকে পাগলের মতো খুজছি আমি,আমার মন চাতক পাখির মতো উনার জন্য ছটফট করছে সেই মুহুর্তে উনি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে পিচ্চি বলে ডাকছে।চারদিকের থেমে যাওয়া সব কিছু যেনো আবার চলতে শুরু করলো।উনার মুখের পিচ্চি ডাকে বিশেষ তো কিছু আছেই।আমি ছুটে গিয়ে উনাকে শক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম।আমার সামনে কোনো পাহাড় থাকলেও আমার দৌড়ের গতিবেগ এ ভেঙে চূর্ণ হয়ে যেতো।আমি ভীষণ শক্ত ভাবে আকড়ে ধরলাম উনাকে।উনার থুতনি ঠেকেছে আমার মাথায়।উনিও দু হাতে আলিঙ্গন করলেন আমাকে।উনার বুকে কিল দিতে দিতে বললাম এটা আপনি হতে পারেন না আমি বিশ্বাস ই করি না।আপনি আমার জন্য এত কিছু ভাবতে পারেন না।আমার কল্পনায় ভাবা আপনি কি সত্যি কল্পনা ছেড়ে এসেছেন।এখুনি আবার হারিয়ে যাবেন আপনি বিহান ভাই।এই কল্পনা কেনো সত্যি হয় না আমার।আমি পথে চেয়ে চেয়ে অন্ধ হয়ে যেতাম আরেক টু হলেই।হোক না এটা কল্পনা তবুও তো আপনি এসেছেন।কেনো আরো আগে আসেন নি আপনি।