সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে স্পুনে লেগে থাকা আইসক্রিম চেটে খাওয়ার জন্য মুখটা খুললো সাফওয়ান। আর এরপর মুখ হা করতেই সাফওয়ানের কুচকুচে কালো মুখগহ্বরের ভেতর ক্যানাইন দাঁতের জায়গায় রুমাইশা দেখতে পেলো দুইটা ঝকঝকে সাদা, তীক্ষ্ণ, ধারালো, লম্বা আর সরু দাঁত। আর তারপরই মুখ থেকে বেরিয়ে এলো প্রায় সাত ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের কালো, লকলকে, আগা থেকে দ্বিখণ্ডিত একটি জিহবা। আর সেই জিহবা দিয়ে আইসক্রিম এর স্পুন টি লেহন করলো সাফওয়ান।
ভয়ে, উত্তেজনায়, রুমাইশার মুখ থেকে আওয়াজ নির্গত হতে যাচ্ছিলো, দ্রুত মুখের ওপর হাত চাপা দিয়ে বহু কষ্টে সে আওয়াজ টা দমন করলো রুমাইশা। সাফওয়ান ততক্ষনে রুমাইশার কামরা পার হয়ে ছাদে যাওয়ার সিড়িতে উঠে গেছে৷ আর এরপর ধীরে ধীরে সাফওয়ানের পায়ের শব্দটা মিলিয়ে যেতেই হাফ ছেড়ে বাচলো ও।
দ্রুত গতিতে কামরার দরজা টা বন্ধ করে হাপাতে হাপাতে বিছানায় গিয়ে বসল রুমাইশা। চোখ দুটো বিস্ফোরিত! এটা কি দেখলো সে! এ- এটা সাফওয়ান! ওর সাফওয়ান ভাইয়া!
নিজের চোখ কে যেন বিশ্বাস করতে পারছে না রুমাইশা। অসংলগ্ন ভাবে হাত দিয়ে নিজের চোখ মুখে হাতড়াতে লাগলো ও। নাহ এটা স্বপ্ন না, সত্যি! সত্যিই, সত্যিই সাফওয়ান ভাইয়া এমনি!
তাহলে, তাহলে, ছোটবেলায় ওকে যে কামড়ে দিয়েছিলো ভাইয়া, ওই কামড়ের জন্যই তবে এত অসুস্থ হয়ে গেছিলো ও! ওই দাঁত দুইটা কি তবে বিষদাঁত!! তবে কি, তবে কি সাফওয়ান ভাইয়া এইজন্য কারো সামনে আসে না! আর এটা ফুপ্পি, ফুপ্পা, মা, বাবা, রাফসান ভাইয়া সবাই জানে!! সবাই! শুধু ও আর শাফিন জানে না! সিরিয়াসলি!!
এত বড় একটা সত্য কিভাবে ওরা লুকিয়ে রাখলো! কিভাবে পারলো? সাফওয়ান ভাইয়ার হঠাৎ করেই কাউকে না জানিয়ে সিঙ্গাপুরে চলে যাওয়ার কি তাহলে এটাই কারণ!
কিন্তু সাফওয়ান! সাফওয়ান ভাইয়া এরকম হলো কি করে? ছোটবেলায় তো ঠিকই ছিলো! কি হলো তবে! ভাইয়া এরকম বদলে গেলো কেন! ভাইয়ার এই হাল কিভাবে হলো! কে করল!
প্রশ্নে জর্জরিত হয়ে গেলো রুমাইশার মন মস্তিষ্ক! মাথাটা ঘুরছে ওর। এতসব কিছু ও নিতে পারছেনা! মাথায় কাজ করছে না ওর! চোখে মুখে ভয় আর বিস্ময় নিয়ে বিছানায় পিঠ ঠেকালো ও। সেরাতে আর ঘুম আসলনা রুমাইশার। সমস্ত রাত সাফওয়ানের সেই ভয়ঙ্কর চেহারা টাই চোখের সামনে ভাসতে থাকলো সারাক্ষণ!
১৩. সকাল বেলা ফোলা ফোলা চোখ মুখ নিয়ে নাস্তার টেবিলে এসে চেয়ার টেনে বসল রুমাইশা, শাফিন এলো তার কিছুক্ষণ পর। সে নিজেও একটা চেয়ার টেনে বসে রুমাইশার দিকে তাকিয়ে দেখলো। রুমির ফোলা ফোলা চোখ মুখ দেখে শাফিন উদ্বিগ্ন কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
—কি ব্যাপার আপু? তোমার চোখ মুখ এমন ফোলা ফোলা লাগছে কেন? রাতে ঘুমাওনি ঠিকঠাক?
রুমাইশা উদাস গলায় উত্তর দিলো,
—না রে, তেমন কিছু না, এমনিতেই ফোলা ফোলা লাগছে।
রুমাইশার গলা শুনে শাফিন বুঝলো কিছু একটা গন্ডগোল আছে, কিন্তু আর ঘাটালোনা ও কে৷
শাফিন নাস্তা শেষ করে উঠে চলে গেলো, রুমাইশা তখনও বসে রইলো টেবিলে। রুনিয়া কিচেন থেকে হন্তদন্ত হয়ে নাস্তার প্লেট নিয়ে সাফওয়ান কে দিতে যাচ্ছিলো ছাদে। রুমাইশা কে বসা দেখে অনুরোধের সুরে বলল,
—রুমি মা, সাফওয়ান কে এইটা একটু দিয়ে আয় তো! চুলার ওপর তরকারি আছে পুড়ে যাবে দেরি হলে৷ তার ওপর আবার তোর ফুপ্পা অফিসে যাবে তাকে দুপুরের খাবার করে দিতে হবে।
সাফওয়ানের কাছে যাওয়ার কথা শুনতেই গলা শুকিয়ে গেলো রুমাইশার, সাথে সাথেই কাল রাতে দেখা সেই দৃশ্যের কথা মনে পড়ে গেলো ওর, চোখ মুখ হঠাৎ করেই ফ্যাকাশে হয়ে গেলো। রুনিয়াকে একবার বলতে চাইলো, যে আমি রান্নাঘরে যাচ্ছি, তুমি না হয় ভাইয়া কে খাবার দিয়ে আসো!
কিন্তু ফুপ্পি যদি সেটাকে বেয়াদবি হিসেবে নেয়! বা ওকে যদি সন্দেহ করে! তাই আর কিছু বলল না রুনিয়া কে৷
— ঠিক আছে, দাও, আমি দিয়ে আসছি,
বলে চেয়ার ছেড়ে উঠে রুনিয়ার হাত থেকে নাস্তার ট্রে টা নিয়ে সিড়ির দিকে এগোলো ও। রুনিয়া পেছন থেকে বললেন,
— নাস্তাটা ওর রুমে দিতে হবে না, রুমের বাইরে যে টি টেবিল টা রাখা আছে তার ওপর রাখিস, আর ও কে বলে আসিস বাইরে থেকে যে নাস্তা দিয়েছিস!
রুমাইশা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো৷ তারপর ধীর পায়ে দোতলা পার হয়ে উঠে গেলো ছাদের সিড়িতে।
প্রতিটা কদম এগোনোর সাথে সাথে রুমাইশার ভয় বাড়ছে। বুকের ভেতর দিড়িম দিড়িম করছে ওর৷ যদিও এখন দিন, তারপর ও রুমাইশার শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে ভয়ে৷
ছাদে পৌছানোর পর রুমাইশার হাত অস্বাভাবিক ভাবে থরথর করে কাপতে লাগলো! কাপুনির চোটে ট্রের ওপরে থাকা পানিভর্তি গ্লাস থেকে ছলকে একটু পানি পড়লো বাইরে৷ রুমাইশা নিজেকে স্বাভাবিক রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করতে লাগলো, কিন্তু পারলোনা৷ দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে টি টেবিলের ওপর নাস্তার ট্রে টা রেখে কোনো রকমে বলে উঠলো,
— সাফওয়ান ভাইয়া, আ-আপনার নাস্তা।
কিন্তু সেটা বলতে গিয়েও গলা কেপে গেলো রুমাইশার৷ কথা টা বলেই সেখান থেকে একপ্রকার ছুটে পালিয়ে গেলো ও৷
সাফওয়ান এতক্ষন কামরার ভেতর থেকে জানালার থাই গ্লাসের ওপাশ থেকে রুমাইশা কে দেখছিলো। রুনিয়া কে সে কতবার করে বলেছে যে সে ছাড়া অন্য কেউ যেন তাকে নাস্তা দিতে না আসে! তারপর ও তার মা রুমাইশা কে পাঠালো! মনে মনে ভিষণ ক্ষিপ্ত হলো সাফওয়ান মায়ের ওপর৷ কিন্তু রুমাইশার আচরণ তার কাছে কেমন যেন অস্বাভাবিক ঠেকলো! রুমাইশার এইভাবে হাত কাপা, চোখ মুখের অস্বাভাবিকতা, আর কথা বলতে গিয়ে জড়তা সবই লক্ষ্য করেছে সাফওয়ান৷ কিন্তু সেটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামালো না ও। আবার নিজের কাজে মন দিলো।
রুমাইশা ছুটে চলে গেলো নিজের কামরায়। চারপাশের সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও রুমাইশা আর স্বাভাবিক হতে পারলোনা, ভুলতে পারলোনা ও সেদিনের দেখা দৃশ্যটা…..
১৪. পরদিন এক্সাম শেষ করে সন্ধ্যায় ফিরলো রুমাইশা৷ ক্লান্ত শরীর নিয়ে নিজের রুমে গেলো। গতকাল থেকে কারো সাথেই ঠিকভাবে কথা বলছে না ও৷ ব্যাপার টা কেউ লক্ষ্য না করলেও শাফিন করেছে৷ রাতের বেলা রুনিয়া যখন ঘুমাতে যাবে তখন শাফিন রুনিয়া কে গিয়ে বলল যে রুমাইশার অনেক মন খারাপ হয়তো, সে কারো সাথে ঠিকভাবে কথা বলছে না৷ যদিও শাফিন অনেক বার জিজ্ঞেস করেছে রুমাইশা কে, কোনো কিছু হয়েছে কিনা, কিন্তু আশানুরূপ কোনো উত্তর পায়নি৷
রুনিয়া শাফিন কে অভয় দিয়ে বললেন,
—ঠিক আছে, কাল সকালে আমি ওর সাথে কথা বলব। তুই চিন্তা করিস না৷
শাফিন ও মায়ের কথায় আশ্বস্ত হয়ে নিজের রুমে গেলো। শাফিনের সবচেয়ে দরদের হলো মা, তারপর রুমাইশা। অতটা বেশি দেখা না হলেও সারাক্ষন ফোনে যোগাযোগ রাখতো শাফিন আর রুমাইশা। নিজের বড়োবোনের চাইতেও বেশি কিছু ছিলো যেন রুমাইশা শাফিনের কাছে৷
সাফওয়ান সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি একা হয়ে যায় শাফিন৷ তাকে সারাক্ষণ কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সেই সাফওয়ান ভাইয়া যখন দেশের বাইরে চলে গেলো তখন ভাইয়ের জন্য পরাণ পুড়ে পুরো এক সপ্তাহ জ্বরে ভুগেছিলো ছোট্ট শাফিন। তখন এই বড়ো বোনের মতো রুমি আপুই তাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য সারাক্ষণ ফোনে যোগাযোগ রাখতো তার সাথে, কাউকে না জানিয়েই। তার সেই রুমি আপুকে এইভাবে মন খারাপ করে থাকতে দেখে মোটেও ভালো লাগছে না শাফিনের৷
রুনিয়া ও ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তিত৷ এটা নিয়ে ইশতিয়াক আহমেদের সাথেও তিনি কিছুক্ষন কথা বললেন। ইশতিয়াক আহমেদ বললেন,
—হয়তো বাড়ি থেকে দূরে আছে, এতদিন থাকা অভ্যাস না, এইজন্য মন খারাপ করে আছে, শামসুল আর আয়েশা কে বল এসে দুদিন থেকে যেতে, রুমি তো আর এক্সামের সময়ে এখন বাড়ি যেতে পারবেনা। আর রুমি কেও বলে দেখো, ও যদি গিয়ে দুদিন থেকে আসতে চায়, তাহলে আসুক৷
রুনিয়াও শামসুলের সাথে সায় মিলিয়ে বললেন,
—হ্যা, তাহলে তাই আসুক, নেক্সট এক্সামের আগে ৫ দিন বন্ধ আছে ওর৷ দুদিন গিয়ে বাড়ি থেকে ঘুরে আসুক।
রাতেই রুনিয়া শামসুলের কাছে ফোন দিয়ে আগামীকাল আসতে বললেন আয়েশা খানম কে সাথে নিয়ে।
.
ক্লান্তির কারণে আজ রুমাইশা ও সকাল সকাল শুয়ে পড়েছে। এমনিতেই সাফওয়ান ভাইয়ার ওই সমস্ত ব্যাপার নিয়ে অনেক প্রেশারে ছিলো ও। তারওপর আবার চার ঘন্টার এক্সাম। বিছানায় যাওয়ার আধা ঘন্টার ভেতরেই ঘুমিয়ে পড়লো রুমাইশা৷
পরদিন সকালে শামসুল আর আয়েশা এসে রুমাইশা কে নিয়ে গেলো বাড়িতে। যদিও দুই দিনও থাকলোনা রুমাইশা। যাওয়ার পর দিনই চলে আসলো৷ এসেই পরবর্তী এক্সামের জন্য প্রিপারেশন নিতে লাগলো। তবে বাড়ি থেকে ফিরে এসেও মন খারাপ কাটলোনা রুমাইশার৷ আগের মতোই নির্জীব হয়ে রইলো। কারো সাথেই ঠিক ভাবে কথা বলল না। শাফিন কয়েকবার ওকে চিয়ার আপ করতে গেলেও ব্যর্থ হলো। উলটো রুমাইশা শাফিন কে বলল,
—বিরক্ত করিস না, নেক্সট এক্সাম টা অনেক হার্ডি, পড়তে বসগে।
শাফিন বেচারা আর কি করবে, রুমাইশা কে ও নিজের মতোই থাকতে দিলো। কিন্তু পরক্ষনেই ও কিছু একটা ভাবলো, ‘মা কে দিয়ে তো কাজ হলো না, ভাইয়া কে বলে দেখবো? ভাইয়া নিশ্চই কোনো না কোনো ভাবে আপুর মন খারাপের কারণ জেনে ফেলবে।’
যেই ভাবা সেই কাজ। সাফওয়ান এর ফোনে ফোন দিলো শাফিন, সশরিরে তো আর তার নিকট উপস্থিত হওয়া সম্ভব না৷ সে সাহস শাফিনেত নেই। দুই বার রিং হওয়ার পর সাফওয়ান কল রিসিভ করলো, আর তারপরেই শাফিন কে কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ভারিক্কি কণ্ঠে ও বলে উঠলো,
—সিরিয়াস কোনো কথা হলে বল, নইলে বিরক্ত করিস না।
মনে মনে খুব রাগ হলো শাফিনের। সে ছোট বলে কি সবাইরে বিরক্তই করে? সে কি বাচ্চা! কিন্তু আপাতত রাগারাগি পাশে রেখে বলল,
— তোমার কাছে সিরিয়াস কিনা জানিনা, তবে আমার কাছে বিষয় টা সিরিয়াস।
সাফওয়ান তার কাঠিন্যতা বজায় রেখেই জিজ্ঞেস করলো,
— টাইটেল?
— রুমি আপু।
সাফওয়ান ল্যাপটপে একটা আর্টিকেল লিখছিলো, রুমি নাম টা শুনতেই লেখা থামিয়ে দিলো ও। তারপর আগের মতো করেই জিজ্ঞেস করলো,
—বল, কি ব্যাপার?
শাফিন এক নাগাড়ে বলতে শুরু করলো,
— রুমি আপু বিগত কয়েক দিন ধরে কেমন যেন মন খারাপ করে আছে, আগের মতো হাসছে না, কথাও বলছে না৷ সবসময় একটা উদাসী উদাসী ভাব। আমি জিজ্ঞেস করেছি আপুকে কয়েকবার, কিন্তু আপু কিছুই বলেনি৷ পরে আম্মুকে বললাম আপুর মন খারাপের বিষয় টা তদন্ত করে দেখতে, কিন্তু আম্মু কি করলো! ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলো।
রুমাইশা বাড়ি চলে গেছে শুনেই সাফওয়ান শাফিনের কথা বলা থামিতে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
—রিমু বাড়ি চলে গেছে?
— গেছিলো, আবার এসেছে, কালকে।
— আচ্ছা, তারপর?
— তারপর এখনো আপুর মন ভালো হয়নি। আগের মতোই আছে।
সিরিয়াস কন্ঠে বলল শাফিন। সাফওয়ান টেবিলে কনুই রেখে হাতের কলম টা আঙুলের ডগায় নিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে আগের মতোই গম্ভীর কন্ঠে বলল,
— এখানে আমার ভূমিকা কি? আমাকে কেন ফোন দিয়েছিস?
— তুমি আপুর সাথে একটু কথা বলে দেখবা? হয়তো এমন হতে পারে আপু কে কেউ ডিস্টার্ব করছে! কোনো ছেলে! বা ওকে কেউ বাজে কথা বলেছে! তোমার সাথে বলতে পারে। তুমি জিজ্ঞেস করলে তো আর মিথ্যা বলতে পারবে না৷ কারণ তুমি গুরুজন৷
জায়গা মতো কথা গুলো বলতে পেরে শাফিন খুব মজা পেলো, এতে নিশ্চই কাজ হবে। রুমাইশা কে কেউ ডিস্টার্ব করতে পারে ভেবেই ভ্রু কুঞ্চিত হয়ে গেলো সাফওয়ানের। বলল,
—হুম, হয়েছে৷ আমি কথা বলে দেখবো।
শাফিন খুশি হলো অনেক। কিন্তু ফোনে সেটা প্রকাশ করলো না, আগের মতো করেই বলল,
—ঠিক আছে ভাইয়া, আমি তাহলে রাখছি এখন।
কিন্তু ও রাখার আগেই সাফওয়ান নিজেই কল কেটে দিলো। আর সাফওয়ান কল কেটে দিতেই শাফিন খুশিতে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলো৷
—যাক, রুমি আপুকে আর মন খারাপ অবস্থায় দেখা লাগবে না৷ ভাইয়া সব সমস্যার সমাধান করে দেবে, ঠিক আগের মতো করে৷
১৫. রাতে পড়াশোনা শেষ করে একটু সকাল করেই শুয়ে পড়লো রুমাইশা। শরীর, মন কোনোটাই তার ভালো নেই। কিছুতেই যেন শান্তি পাচ্ছে না ও! ঘুম ও হচ্ছে না ঠিক ঠাক৷
নকশাদার পালঙ্কের বেগুনি নীল মিশেলের ফুলের বিছানার ওপর চিত হয়ে, পা দুইটা ডান পেশে করে বিছানার গায়ে রেখে সিলিং এর দিকে তাকিয়ে আছে রুমাইশা। কি যেন এক অশান্তি তাড়া করে চলেছে ওকে। কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারছে না ও৷ বিগত কিছুদিনের কথা ভাবতে ভাবতে দীর্ঘশ্বাস ফেললো রুমাইশা৷ এই অশান্তির কথা ও না কাউকে বলতে পারছে আর না সইতে পারছে! চোখ ফেটে পানি আসতে চাইলো ওর।
এমন সময় দরজায় হঠাৎ নক পড়লো…….